ismielabir
commited on
Upload 6 files
Browse files- text datasets/bird.txt +309 -0
- text datasets/cat.txt +0 -0
- text datasets/dog.txt +164 -0
- text datasets/flower.txt +113 -0
- text datasets/fruit.txt +0 -0
- text datasets/tree.txt +0 -0
text datasets/bird.txt
ADDED
@@ -0,0 +1,309 @@
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
1 |
+
পাখি
|
2 |
+
English
|
3 |
+
পাখি Aves শ্রেণীর উষ্ণরক্তবিশিষ্ট, দেহ পালকে আবৃত এবং অগ্রপদ ডানায় রূপান্তরিত মেরুদন্ডী প্রাণী। এদের মস্তিষ্ক অপেক্ষাকৃত বড়, দৃষ্টি তীক্ষ্ণ ও শ্রবণশক্তি প্রখর, কিন্তু ঘ্রাণশক্তি কম। ভারী চোয়াল ও দাঁতের পরিবর্তে শক্ত চঞ্চু এবং ফাঁপা হাড় ও অন্যান্য অংশে বায়ুথলী থাকায় পাখির দেহের ওজন কম। প্রায় ১৫ কোটি বছর আগে জুরাসিক সময়ে পাখিদের উৎপত্তি। জানামতে Archaeopteryx lithographica নামের প্রাচীনতম পাখির জীবাশ্ম (১৮৬১ সালে দক্ষিণ জার্মানির বাভারিয়ায় প্রাপ্ত) আবিষ্কৃত হওয়ার ফলেই এই ধারণার জন্ম। এ পাখি জুরাসিক সময়ের শেষ দিকে প্রায় ২০ কোটি বছর আগে বেঁচে ছিল। Archaeopteryx পাখিদের সঙ্গে সর্ম্পকিত হলেও এটির অধিকাংশ হাড়ের গঠন theropod ডাইনোসরদের মতো।সরীসৃপ ও পাখি একই পূর্বপুরুষ থেকে উদ্ভূত। প্রত্নতত্ত্ববিদদের বিশ্বাস, জীবিত সরীসৃপের মধ্যে Crocodilians বা কুমিররাই পাখিদের নিকটতম জ্ঞাতি। পাখির মধ্যে দুটি বড় ধরনের শারীরস্থানগত অভিযোজন ঘটেছে: ১. পালক, সম্ভবত সরীসৃপের অাঁশ থেকে উদ্ভূত যা দেহ আবরকের কাজ করে এবং শরীরের স্থির তাপমাত্রা রক্ষার সামর্থ্য যোগায় এবং ২. ডানা, সম্ভাব্য সরীসৃপীয় পূর্বপুরুষের ৫ আঙুলবিশিষ্ট অগ্রপদ অত্যধিক পরিবর্তিত হয়ে অভিযোজিত পালকসহ পাখনায় রূপান্তরিত হয়েছে, যা পাখিকে ওড়ার ক্ষমতা দিয়েছে।
|
4 |
+
|
5 |
+
বর্তমানে প্রায় ৯,০০০ প্রজাতি নিয়ে Aves শ্রেণী গঠিত। Passeriformes (passerines বা গায়ক পাখি হিসেবে পরিচিত) বর্গভুক্ত পাখির প্রজাতির সংখ্যা জানামতে অর্ধেকেরও বেশি। অবশিষ্ট সবগুলি বর্গকে একত্রে non-passerines বলা হয়। পাখির আকার ও আকৃতি বহুবিধ: উটপাখির (Struthio camelus) দাঁড়ানো অবস্থায় উচ্চতা ২.৫ মিটার, আর পৃথিবীর ক্ষুদ্রতম পাখি হামিংবার্ডের (Mellisuga healenae) লেজের ডগা থেকে ঠোঁটের আগা পর্যন্ত দৈর্ঘ্য ৬ সেন্টিমিটারের কম। ভারত উপমহাদেশে ১২ শতাধিক প্রজাতির পাখির বাস। বাংলাদেশে রয়েছে ৬৫০ প্রজাতির পাখি (১৬ বর্গ, ৬৪ গোত্র; ২৭৬ গায়ক, ৩৭৪ অগায়ক)। এগুলির মধ্যে ৩০১ আবাসিক (১৬ বর্গ ও ৬০ গোত্র; ১৭১ গায়ক ও ২১৭ অগায়ক) এবং ২৪৯ পরিযায়ী (১০ বর্গ ও ৩৩ গোত্র; ১০৫ গায়ক ও ১৩৫ অগায়ক)। উপমহাদেশের বৃহত্তম পাখি (দাঁড়ানো উচ্চতা প্রায় ১.৭৫ মিটার) সারস (Grus antigone), সম্প্রতি বাংলাদেশে কদাচিৎ দেখা যায়। গুটিকয় মধুপায়ী ও সানবার্ড চড়ুই অপেক্ষা ছোট, সম্ভবত এরাই এখানকার ক্ষুদ্রতম পাখি। পৃথিবীতে পাখির সংখ্যা প্রতিদিন কমছে। প্রতি ৯ প্রজাতির মধ্যে ১ প্রজাতি বিলুপ্তির পথে। বাংলাদেশে এই মুহূর্তে ৪১ প্রজাতির (৩০১ আবাসিক প্রজাতির মধ্যে) পাখি হুমকিগ্রস্ত। তন্মধ্যে ১৯টি বিপন্ন, ১৮টি বিপন্নপ্রায় ও ৪টি বিপদসীমায়। এখানকার ৩০১ আবাসিক প্রজাতির মধ্যে তথ্যাভাবে ১৪৮ প্রজাতির বর্তমান অবস্থা মূল্যায়ন সম্ভব হয় নি। বাস্ত্তসংস্থানিক পরিবর্তন পাখিকুলের সংস্থিতি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। কয়েক ধরনের বনাঞ্চল বা জলাভূমি সংশ্লিষ্ট আবাসের সঙ্গে জড়িত পাখির সংখ্যা কমেছে। বাংলাদেশে ৭০-৮০ বছর আগে পিঙ্কহেড বা গোলাপী-শির হাঁস (Rhodonessa caryophyllacea), বুঁচা বা কোম্ব হাঁস (Sarkidiornis melanotos), ময়ূর (Pavo cristatus) ও বর্মী ময়ূর (Pavo muticus) যথেষ্ট সংখ্যায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল যা বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে লোপ পেয়েছে।
|
6 |
+
|
7 |
+
প্রাক-মুগল আমলের ভারতীয় পাখি সম্পর্কে তথ্যের অভাব রয়েছে। তথ্যের অন্যান্য উৎসের মধ্যে আছে কয়েকটি সংস্কৃত শব্দকোষ। পাখির ডাকভিত্তিক কিছু নাম আছে যেমন, কাউয়ার জন্য ধ্বন্যাত্মক শব্দ ‘কাক’; অন্যগুলি রং, আচরণ, ভঙ্গি, আহার-পদ্ধতি ইত্যাদি ভিত্তিক। কতকগুলি নাম সহজে শনাক্তযোগ্য, আবার কতকগুলি দুর্বোধ্য। পাখি বিশারদ রঘুবীর ওইসব সংস্কৃত নাম থেকে পাখিগুলি সঠিকভাব শনাক্ত করার চেষ্টা করেন এবং জ্ঞাত ভারতীয় পাখি প্রজাতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ২৫০টি সংস্কৃত শব্দ চিহ্নিত করেন। বৈদিক প্রাজ্ঞরা ভারতীয় কোকিলের পরভৃৎ স্বভাব (brood parasitism) সম্পর্কে সুপরিচিত ছিলেন এবং সংস্কৃত সাহিত্যে তার বর্ণনা দিয়েছেন।বাবর থেকে শাহজাহান পর্যন্ত সকল মুগল সম্রাট দক্ষ ক্রীড়াবিদ ও সর্বতোমুখী প্রকৃতিপ্রেমিক ছিলেন। বাবর ও তাঁর পৌত্র জাহাঙ্গীর ছিলেন একজন প্রকৃতিবিদ। পাখির স্বভাব এবং আচরণ সম্পর্কে তাঁদের ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণের কিছু বৈজ্ঞানিক বিবরণী রয়েছে। ব্রিটিশ আমলে পুলিশ, আমলা, বন ও সেনা কর্মকর্তাদের প্রদত্ত তথ্যাদি বিভিন্ন অঞ্চলের পাখি পর্যবেক্ষণের সুযোগ সৃষ্টি করে। ব্রায়ান হজসন (Brain Hodgson), টি.সি জার্ডন (TC Jerdon) ও এডওয়ার্ড ব্লাইদ (Edward Blyth) প্রমুখ ব্যক্তি পাখি বিষয়ক দিগদর্শী গ্রন্থাদি রচনা করেন। ১৮৬২-১৮৬৪ সালে প্রকাশিত জার্ডনের দুই খন্ডের Birds of India শীর্ষক গ্রন্থ রচনা থেকেই এদেশে যথার্থ পক্ষিবিজ্ঞানের সূচনা। গ্রন্থকার ব্রিটিশ পাখির সঙ্গে সাদৃশ্যের ভিত্তিতে সকল ভারতীয় পাখির একটি ই���রেজি নাম দেন। এদের অনেকগুলিই যুক্তিসঙ্গতভাবে যথার্থ হলেও পরবর্তী গ্রন্থকাররা এসব নামের কিছু সংশোধনের চেষ্টা করেন। দশ খন্ডে প্রকাশিত সালিম আলী ও ডিলন রিপ্লি (Dillon Ripley) প্রণীত Handbook of the Birds of India and Pakistan (১৯৬৮-৭৩) গ্রন্থাবলির সর্বশেষ সংস্করণ পাখির নামকরণ চূড়ান্তরূপ ধারণ করেছিল। ইদানিং পাখির নামকরণে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে।
|
8 |
+
|
9 |
+
ভারতীয় পাখি সম্পর্কে প্রাচীনতম ‘আধুনিক’ বিবরণীটি মাদ্রাজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সার্জন এডওয়ার্ড বাকলে ১৭১৩ সালে প্রকাশ করেন। এতে ছিল সেন্ট জর্জ দুর্গ ও তার আশেপাশের ২২টি পাখির সচিত্র বর্ণনা। আরও কিছু পাখি সংগ্রাহক ও গ্রন্থকার আঠারো শতকের অবশিষ্ট সময়ে একই ধরনের কাজ করে গেছেন। এদের মধ্যে অনেকে হয়তো নতুন আবিষ্কৃত পাখির বর্ণনা দিয়ে বা স্বনামে ঐ নতুন প্রজাতির পাখির নামকরণ করে ও অন্যভাবে ভারতীয় পক্ষিবিজ্ঞানে অবদান রেখে গেছেন। ভূতত্ত্ববিদ ক্যাপ্টেন জেমসের ভারতের আঞ্চলিক পাখি শনাক্তকরণের প্রথম একনিষ্ঠ প্রয়াস ১৮৩১ সালে একটি বৈজ্ঞানিক সাময়িকীতে (Proc. Zool. Soc., London) প্রকাশিত হয়। তিনি বিন্ধ্যপর্বতের শিলা গবেষণায় মধ্যপ্রদেশ ও যুক্তপ্রদেশ অভিযানে যান এবং এইসঙ্গে এশিয়াটিক সোসাইটির জন্য পাখিও সংগ্রহ করেন। সংগৃহীত ১৫৬ জাতের ২০০ পাখির নমুনার মধ্যে ৩০টি ছিল নতুন প্রজাতি।
|
10 |
+
|
11 |
+
টি.সি জার্ডনের পর Fauna of British India গ্রন্থমালায় ১৮৮৯ ও ১৮৯৮ সালের মধ্যে ইউজিন ডব্লিউ ওটিস ও ডব্লিউ টি ব্ল্যানফোর্ড প্রণীত পাখির ওপর ৪ খন্ড যুক্ত হওয়ার ফলে ভারতীয় পাখিবিজ্ঞানের আরেকটি মৌলিক অগ্রগতি ঘটে। পূর্বসূরীদের কাজের মতো এতেও অন্তর্বর্তী ২৭ বছরের মাঠ পর্যায়ে ও জাদুঘরে সম্পন্ন ব্যাপক গবেষণার যাবতীয় জ্ঞান সংকলিত হয়।
|
12 |
+
|
13 |
+
স্টুয়ার্ট বেকার (Stuart Baker) ঢাকা ও বাংলার অন্যত্র এলাকার পাখি সম্পর্কে সামান্য কিছু কাজ করেন, তবে তাঁর প্রধান কর্মক্ষেত্র ছিল আসাম। ঢাকার মার্কিন কনসাল ই হজ (E Hodge) (১৯৫৭-১৯৬০) দাপ্তরিক কাজে বা ছুটির দিনে বাইরে গেলে যেসব পাখি দেখতেন সেগুলির একটি তালিকার ৫টি মিমিওগ্রাফিক কপি প্রস্ত্তত করেন। বাংলাদেশে হারুন-অর-রশিদের Systematic List of the Birds of East Pakistan (১৯৬৭) শীর্ষক প্রথম সমন্বিত তালিকা এশিয়াটিক সোসাইটি অব পাকিস্তান (১৯৬৯) প্রকাশ করে। স্বাধীনতার পর কাজী জাকের হোসেন ১৯৭৯ সালে Birds of Bangladesh প্রণয়ন করেন। মোহাম্মদ আলী রেজা খানের Wildlife of Bangladesh (১৯৮২) গ্রন���থেও পাখির একটি তালিকা রয়েছে। ডব্লিউ জি হার্ভে লিখিত Birds in Bangladesh তালিকাটিও প্রসঙ্গত উল্লেখ্য।
|
14 |
+
|
15 |
+
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগেই পাখি বিষয়ক প্রথম শিক্ষা ও গবেষণার সূত্রপাত। বর্তমানে ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগে পক্ষিবিজ্ঞানের কোর্স চালু রয়েছে। গত ২০০০ সালে ইন্টারন্যাশন্যাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (IUCN) বাংলাদেশের বিপন্ন পাখির তালিকা প্রকাশ করেছে এবং সেখানে বিভিন্ন প্রজাতির পাখির বর্তমান অবস্থা বর্ণিত হয়েছে।
|
16 |
+
খাঁচার পাখি (Cage bird) খাঁচায় বন্দি করে সফলভাবে পোষ মানানো যায় এমন পাখি। তারা সেখানেই বংশবৃদ্ধি করে, ফলে তাদের প্রাকৃতিক ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য অনেকটা বদলে যায় ও শেষ পর্যন্ত তারা প্রায় গৃহপালিত হয়ে ওঠে।
|
17 |
+
|
18 |
+
পোষাপাখির উদাহরণ হলো তোতা (Psittacines or Parrots) এবং ক্যানারি ও মুনিয়ার মতো কিছু চড়ুই জাতীয় পাখি। এদের মধ্যে প্রাচীনতম পোষাপাখি হলো অস্ট্রেলীয় বাজারিগার (Melopsittacus undulatus)। জন গোল্ড অস্ট্রেলিয়া থেকে ১৮৪০ সালে এই তোতাপাখি যুক্তরাজ্যে প্রথম আনেন এবং তখন থেকেই এই পাখি বন্দী অবস্থায় বংশবৃদ্ধি করছে এবং আন্তঃপ্রজনন ও নতুন আনা নমুনাগুলির সঙ্গে আন্তঃপ্রজননের মাধ্যমে নানা রঙের কয়েক ডজন প্রকারভেদ সৃষ্টি করেছে। এই পাখিদের আদি চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যে এতটা পরিবর্তন ঘটেছে যে অনেকে একে ‘পোষা’ প্রজাতি বলে। এটি অস্ট্রেলিয়ায় প্রাকৃতিক প্রজাতি হিসেবে এখনও টিকে আছে। বাজারিগার ১৭-১৯ সেমি লম্বা, ছোট ও হালকা ওজনের পাখি, লেজ দেহের তুলনায় লম্বা।এই পাখির প্রকৃত রং নীলাভ-কালচে, মাথার সামনে থেকে পিঠ পর্যন্ত সাদা ও সবুজ, অনেকটা জেব্রার দেহের মতো সাদা-সবুজে ডোরাকাটা। পাখনা চিত্রবিচিত্র। খাঁচার এই পাখিদের মধ্যে অবশ্য খাঁটি হলুদ ভ্যারাইটিসহ অনেকগুলি মধ্যবর্তী রকমফের রয়েছে।
|
19 |
+
|
20 |
+
বাংলাদেশে সচরাচর দৃষ্ট জনপ্রিয় অন্যান্য পোষা পাখিদের মধ্যে রয়েছে ক্যানারি (Serinus canaria), মুনিয়া (Longchura species), লালমুনিয়া (Amandava amandava, Syn. Estrilda amandava), জাভাচড়ুই (Padda oryzivora), সোনালি ফিনচ (Carduelis carduelis), সবুজ ফিনচ (Carduelis chloris) ও ষাঁড় ফিনচ (Pyrhula pyrrhula), লাভ বার্ড (Agapornis species), জেব্রা ফিনচ (Peophila guttata) এবং কোকাটিয়েল (Nymphicus hollandicus), যা আবার হরবোলা কিংবা বহুরূপী। ক্যানারি পাখিরা এসেছে আলজেরিয়ার পশ্চিমের আটলান্টিক মহাসাগরের অ্যাজোরস, ম্যাডেইরা ও ক্যানারি দ্বীপ থেকে। মুনিয়া ও চড়ুই ইত্যাদির আবাস বাংলাদেশ ও এশিয়ার অন্যান্য অংশে। ফিনচজাতীয় পাখিদের আদি বাসভূমি ইউরোপ।
|
21 |
+
|
22 |
+
শিকারের পাখি (Game bird) শৌখিন শিকারিরা প্রায় নিয়মিত বন্দুক দিয়ে হত্যা করে এমন পাখি। উড়ন্ত পাখির নিশানা ভেদ বা স্রেফ মজা করার জন্যও পাখি মারা হয়। শিকারের পাখিদের অধিকাংশই Galliformes অর্থাৎ বনমোরগ, ময়ূর ও কাঠময়ূর বর্গভুক্ত। Scolopacidae গোত্রভুক্ত কারলিউ, কাদাখোচা, বড়চাগা বা বুনোচাগা পাখি Otididae গোত্রভুক্ত বাস্টার্ড পাখির সঙ্গে সম্পর্কিত। বেঙ্গল ফ্লোরিকান পাখিও শিকারের পাখি হিসেবে গণ্য। পৃথিবীর নানা অঞ্চলের অন্য আরও কিছু গোত্রের পাখি শিকারের পাখির তালিকায় রয়েছে।
|
23 |
+
|
24 |
+
বাংলাদেশে সাধারণত শিকারের পাখি হলো বনমোরগ (Gallus gallus), কাঠময়ূর (Polyplectron bicalcaratum), মথুরা বা কালোময়ূর (Lophura leucomelanos), তিতির (Francolinus) প্রজাতি, কোয়েল (Coturnix) প্রজাতি, Turnix-এর দুটি প্রজাতি, এবং Arboriphila ও Bambusicola-র অন্তর্ভুক্ত তিন প্রজাতির প্যাট্রিজ (Patridge) পাখি।
|
25 |
+
কয়েক দশক আগে বাংলাদেশে ভারতীয় ময়ূর (Pavo cristatus), সবুজ ময়ূর বা বর্মী ময়ূর (Pavo muticus) দেখা যেত। বর্তমানে এসব ময়ূর এদেশ থেকে লোপ পেয়েছে। চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলের জঙ্গলে এখনও বেশ কিছু বনমোরগ ও মথুরা পাখি দেখা যায়।বনমোরগ সুন্দরবনেই বেশি। বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের তৃণভূমির একসময়ের বাসিন্দা বেঙ্গল ফ্লোরিকান (Eupodotis bengalensis) সম্ভবত বাংলাদেশ থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
|
26 |
+
|
27 |
+
শিকারের পাখিদের এক গোত্র Scolopacidae-এর সব পাখিই পরিযায়ী। এদের মধ্যে সহজদৃষ্ট পরিযায়ী পাখি হলো: গুলিন্দা/Numenius-এর ২টি প্রজাতি, জুরালি/Limosa-এর ২টি প্রজাতি, চাপাখি/Tringa-এর ১৩-১৪ প্রজাতি, চহা বা কাদাখোচা/Gallinago-এর ৫-৬ প্রজাতি, বড়-চাগা বা বুনো-চাগা/Scolopax rusticola, বামন চাপাখির ৩-৪ প্রজাতি, Calidris এবং Ruff (Philomachus pugnax)। এদের মধ্যে কাদাখোঁচা ও বুনোচাগা এককভাবে থাকে এবং অন্য পাখিদের একত্রে কয়েকটি থেকে কয়েক হাজার দেখা যায়। সমুদ্র উপকুলীয় অঞ্চল, নদীর মোহনা, চরাঞ্চল, বিল, হাওর, বাঁওড়, পাহাড়ি নদী ও পুকুরে এদের বেশি দেখা যায়। বড় দল থাকে বড় জলাশয়ের এলাকায়। বুনো-চাগার বসবাস পার্বত্য জেলার গভীর বনের স্রোতস্বিনীর পাড়ে।
|
28 |
+
|
29 |
+
পরিযায়ী পাখি (Migratory bird) শীতকালে ও মাঝে-মধ্যে অন্য ঋতুতে বাংলাদেশে আসা কিংবা যাত্রাপথে কিছু দিনের জন্য বিরতি নেয়া অতিথি পাখি। বাংলাদেশে পরিযায়ী পাখিদের বেশির ভাগই আসে উপমহাদেশের উত্তরাংশের পর্বতময় এলাকা অর্থাৎ হিমালয় বা হিমালয়ের ওপাশ থেকে। কিছু প্রজাতির পাখি আসে ইউরোপের বিভিন্ন অঞ্চল ও দূরপ্রাচ্য, যেমন সাইবেরিয়া থেকে। সুতরাং ইউরেশিয়া থেকে দক্ষিণ, দক্ষিণ-পূর্ব ও পূর্ব-এশিয়ায় অর্থাৎ দক্ষিণ দিকেই বিপুল সংখ্যক পাখি পরিযায়ী হয়। কয়েকটি মাত্র প্রজাতি উত্তরমুখে এবং বাংলাদেশ হয়েই যাতায়াত করে। আবার কতকগুলি প্রজাতির পাখি আরও দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বে যাওয়ার পথে বাংলাদেশের মাটিতে নামে ও দু’একদিন থাকে। এরাই যাত্রাবিরতিকারী (transit) প্রজাতি। আরও কিছু পাখি হেমন্তে দক্ষিণে বা বসন্তে উত্তরে যাত্রাকালে বাংলাদেশে থামে এবং যাত্রাবিরতি অপেক্ষা কিছু বেশি সময় কাটায়। এমন প্রজাতির পাখিও রয়েছে যারা কেবল হেমন্তে বা বসন্তে তাদের গন্তব্যে পৌঁছার সময় বাংলাদেশের আকাশসীমা দিয়ে উড়ে যায়। কিছু পাখি পূর্ব থেকে পশ্চিমেও যায় যারা সম্ভবত বাংলাদেশে আসে না। একই দেশের বা ক্ষুদ্র অঞ্চলের মধ্যে গমনকে স্থানীয় পরিযায়ী বলে।বাংলাদেশে ৬ শতাধিক প্রজাতির পাখি রয়েছে যাদের অন্তত ২০০ প্রজাতি পরিযায়ী। জানা যায় যে, ইউরেশিয়ায় ৩০০ প্রজাতির বেশি প্রজননকারী পাখির এক-তৃতীয়াংশ দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া বা আফ্রিকায় পরিযান করে। এসব পাখির এক-তৃতীয়াংশ বাংলাদেশে আসে। বাংলাদেশে সাইবেরিয়া থেকে কম সংখ্যক পাখিই আসে, অধিকাংশই আসে হিমালয় ও উত্তর এশিয়া থেকে। [আলী রেজা খান]
|
30 |
+
|
31 |
+
শিকারি পাখি (Bird of prey) অন্য প্রাণী, বিশেষত মেরুদন্ডী প্রাণী শিকার করে খায় এমন পাখি। এদের বোধশক্তি অত্যন্ত তীক্ষ্ণ এবং ঠোঁট ও নখর খুব ধারাল ও মজবুত। শিকারি পাখিরা দুটি দলভুক্ত: দিবাচর ও নিশাচর। প্রথম দলে আছে ঈগল, শিকরা, বাজ, বাজার্ড, ফ্যালকন, হ্যারিয়ার, চিল, ওসপ্রে (osprey) ও শকুন। আর দ্বিতীয় দলের পাখি হলো পেঁচা।
|
32 |
+
|
33 |
+
সারা পৃথিবীতে দিবাচর ও নিশাচর শিকারি পাখির প্রজাতি সংখ্যা প্রায় ৪০০। বাংলাদেশের ৬২৮ প্রজাতির পাখির ৬৮ প্রজাতি শিকারি, তন্মধ্যে ৩৭ আবাসিক ও ৩১ পরিযায়ী। এদের সবগুলি প্রজাতিই Ciconiiformes বর্গভুক্ত এবং শিকারি পাখিরা প্রায় একান্তভাবেই মাংসাশী; খায় উভচর, সরীসৃপ, পাখি ও স্তন্যপায়ী এবং কখনও মাছ। তাদের আছে মজবুত বাঁকা ঠোঁট এবং শিকার আটকে রাখা ও ছিঁড়ে খাওয়ার সহায়ক সুগঠিত পেশিতন্ত্র। আঙুলগুলির ৩টি আছে সামনের দিকে ও ১টি পিছনের দিকে এবং তাতে থ��কে লম্বা ধারালো বাঁকা নখর। ওসপ্রে পৃথিবীর সর্বত্র বিস্তৃত। এরা মাছ শিকারি, ছোঁ-মেরে নখর দিয়ে শিকার গেঁথে কাঁটাযুক্ত পায়ের তলায় চেপে ধরে।অধিকাংশ হক ও ঈগল মাটিতে শিকার না দেখা পর্যন্ত আকাশে চক্কর দিতে বা গাছের ডালে বসে থাকে এবং দেখামাত্র উপর থেকে ঝাপিয়ে পড়ে শিকারকে আহত বা নিহত করে। উত্তর গোলার্ধের পেরেগ্রিন ফ্যালকন, হবি ও গোসহকরা উড়ন্ত অবস্থায় তাড়া করে শিকার ধরে। পূর্ব ও পশ্চিম গোলার্ধের শকুনরা শবভুক। মরা প্রাণী আহারের জন্য ওদের মাথা ও ঘাড় পালকহীন এবং ঠোঁট ধারালো। অবশ্য তারা বিভিন্ন গোত্রভুক্ত এবং তাদের সাদৃশ্য আসলে অভিসৃত (convergent) বিবর্তনেরই সাক্ষ্য। ক্ষুদে মিশরীয় শকুন পশুর বিষ্ঠা খায়, বিশেষত সিংহের মল, তাতে থাকে প্রচুর অজীর্ণ প্রোটিন। এরা পাথর দিয়ে ডিম ভেঙ্গেও খায়। শকুনের ডানা লম্বা ও চওড়া এবং নখর অপেক্ষাকৃত সোজা। মৃত প্রাণীর খোঁজে তারা ডানা মেলে আকাশে চক্কর দেয়। এদের শিকারকে বাগ মানাতে হয় না, ছেঁড়ার সময় শুধু আটকে ধরতে হয়।
|
34 |
+
|
35 |
+
ফ্যালকনদের শরীর সাধারণত পেশিবহুল, ডানা লম্বা ও চোখা, আঙুল লম্বা যা উড়তে ও উড়ন্ত শিকার ধরার জন্য আবশ্যক। অনেক জাতের চিলের শরীর অপেক্ষাকৃত হালকা গড়নের, পায়ের পাতা দুর্বল ও মোটা অর্থাৎ তারা ততটা শিকারদক্ষ নয়, খায় মরা জীবজন্তু, কিংবা খোঁজে সহজ শিকার। লম্বা-পা হ্যারিয়ার ও স্প্যারোহক ঝোপঝাড়ে হানা দেয়। মজবুত-পা ফ্যালকন প্রায়শ ছুটে গিয়ে উড়ন্ত শিকারকে সজোরে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। কিছু জংলি ঈগলের পাগুলি মোটাসোটা, নখরগুলিও ধারালো, গাছ থেকে ছোঁ-মেরে ধরতে পারে বানর ও অন্যান্য বড়সড় স্তন্যপায়ী। ফ্যালকনরা ঘা মেরে কিংবা ঘাড়/শিরদাঁড়া ভেঙ্গে শিকারকে কাবু করে। Accipitridae গোত্রের হক ও অন্যরা জোরে চেপে ধরে শিকার মারে। সব জাতের শিকারি পাখি থাবা দিয়ে শিকার ধরে ও ঠোঁট দিয়ে ছিড়ে ফেলে।
|
36 |
+
|
37 |
+
স্কারলেট ম্যাকাও:
|
38 |
+
মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকার চিরস্থায়ী আর্দ্র বনাঞ্চলের বাসিন্দা স্কারলেট ম্যাকাও। এরা ম্যাকাও প্রজাতির মধ্যে সবচেয়ে বৃহত্তম ও সুন্দরতম সদস্য। উজ্জ্বল লাল, নীল ও হলুদ রঙের সমাহারে স্কারলেট ম্যাকাওয়ের মোহনীয় রূপ সকলকেই মুগ্ধ করে। সেইসঙ্গে এর উপরের দিকের হলুদ ডানার শেষাংশে সবুজ রঙেরও বেশ সুন্দর একটা প্রলেপ রয়েছে। শক্তিশালী বাঁকা ঠোঁট, দীর্ঘতম সময় উড়তে পারার ক্ষমতাও এদের আলাদা করে চিনিয়ে দেয়। দক্ষিণ-পূর্ব মেক্সিকো থেকে আমাজনীয় পেরু ও বলিভিয়ায় এই পাখি বেশি দেখা যায়। কোইয়া দ্বীপেও রয়েছে বহু স্কারলেট ম্যাকাও। হন্ডুরাস এই পাখিটিকে জাতীয় পাখি ঘোষণা করেছে। স্কারলেট ম্যাকাও বাঁচে প্রায় ৪০-৪৫ বছরের মতো, স্বাভাবিক কারণেই এরা দীর্ঘ আয়ুর পাখি হিসেবেও বিবেচিত হয়। বিশ্বের সবচেয়ে বুদ্ধিমান পাখি বলা হয় এদের, মানুষের কণ্ঠস্বর হুবহু নকল করতে পারে এরা।
|
39 |
+
|
40 |
+
গোল্ডেন ফিজ্যান্ট:
|
41 |
+
গোল্ডেন ফিজ্যান্টের মাথায় ক্রেস্টের মতো দুর্দান্ত গোল্ডেন ফার্ন-সহ একটি প্রাণবন্ত লালচে-কমলা ঘাড় রয়েছে। প্রধানত পশ্চিম চিনের ঘন বনাঞ্চলে দেখা যায় এদের। পাখিটি প্রায় ৯০-১০৫ সেমি পর্যন্ত বড় হয় এবং লেজের দৈর্ঘ্য পাখির আকারের দুই-তৃতীয়াংশ। তবে গোল্ডেন ফিজ্যান্ট নামটি প্রাচীন গ্রীক শব্দ 'খরাসোলোফোস' থেকে এসেছে, যার অর্থ 'আঁকা'। পুরুষ পাখিগুলির ওজন ১.৪ কেজি মতো হয়, এবং স্ত্রী পাখিদের ওজন ১.২ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। সঙ্গমের সময় তার সৌন্দর্য্য প্রদর্শনে সহায়তা করার জন্য গোল্ডেন ফিজ্যান্টের ঘাড়ে কমলা কেপ বিশেষ লক্ষ্যনীয়। প্রতি মরসুমে একটি স্ত্রী গোল্ডেন ফিজ্যান্ট ৪০টি পর্যন্ত ডিম দিয়ে থাকে।
|
42 |
+
|
43 |
+
ফ্ল্যামিংগো:
|
44 |
+
আন্টার্কটিকা ছাড়া প্রায় সব দেশেই দেখতে পাওয়া যায় ফ্ল্যামিংগো। পাখিটি মুগ্ধ করে তার কমলা সৌন্দর্য্যে। ফ্ল্যামিংগো নামটি পর্তুগিজ বা স্প্যানিশ শব্দ 'ফ্লামেঙ্গো' থেকে এসেছে, যার অর্থ বর্ণযুক্ত শিখা। ফ্ল্যামিংগোর শরীরে শিখার মতো স্তর দেখতে পাওয়া যায়। দীর্ঘ দূরত্ব একেবারে অতিক্রম করার ক্ষমতা রয়েছে এদের। শুধু তাই নয়, প্রতি ঘন্টায় ৫৬ কিলোমিটার গতিতে উড়ে যেতে পারে এরা। ফ্ল্যামিংগোকে 'ওয়েডিং বার্ড'ও বলা হয়। সাঁতার কাটতেই অত্যন্ত পটু এরা। পৃথিবীতে প্রায় ৬ প্রজাতির ফ্ল্যামিংগো রয়েছে। পূর্ণবয়স্ক ফ্ল্যামিংগো দৈর্ঘ্যে ৪-৫ ফুট ও ওজনে প্রায় সাড়ে তিন কেজি পর্যন্ত হয়। এদের দীর্ঘ গলা ও দীর্ঘ পা কাদা থেকে ছোট মাছ, প্ল্যাঙ্কটন খেতে সাহায্য করে।
|
45 |
+
|
46 |
+
ময়ূর:
|
47 |
+
ময়ূরকে বলা হয় বর্ষার রাণী। এই সময় স্ত্রী ময়ূরের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য নয়নাভিরাম পেখম মেলে ধরে পুরুষ ময়ূর। এতে বিশেষ দুর্বলতা তৈরি হয় এবং তখনই আকর্ষণীয় নাচ যে পুরুষ ময়ূর দেখাতে পারে, তাকেই সঙ্গী হিসেবে বেছে নেয় স্ত্রী ময়ূর। ফ্যাজিয়ানিডি পরিবারের অন্তর্ভুক্ত অত্যন্ত সুন্দর একটি প��খি হল ময়ূর। এশিয়ায় মূলত নীল ও সবুজ- দুই প্রজাতির ময়ূরের দেখা মেলে। তবে মাঝে মধ্যে জিনগত কারণে সাদা ময়ূরের দেখা পাওয়া যায়। ময়ূর সর্বভুক পাখি। এরা মুরগির মতো ডিম পাড়ে, ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়। ময়ূর বন্য পাখি। এরা মাটির গর্তে বাস করে ও গাছে বিশ্রাম নেয়। শত্রুর হাত থেকে রক্ষার জন্য পায়ের নখ ব্যবহার করে তারা। দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বত্রই ময়ূরের দেখা মিললেও ক্রমেই কমে আসছে তাদের সংখ্যা।
|
48 |
+
|
49 |
+
ব্লু জে:
|
50 |
+
মূলত পূর্ব ও মধ্য উত্তর আমেরিকার বনাঞ্চলের পাখি ব্লু জে। নীল, সাদা ও কালো রঙের সমাহারে সাজানো হয় এরা, যা এদের সৌন্দর্য্যের মাত্রা বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। সাধারণত দুষ্ট স্বভাবেপ হওয়ায় এবং শরীরে নীল রঙের প্রভাব বেশি থাকায় এদের নামকরণ হয়েছে ব্লু জে হিসেবে। এমনকী ডাকের সময়ও এরা জে জে বলেই ডাকাডাকি করে। মোহনীয় চেহারা ছাড়াও এই পাখিটির নিজের বুদ্ধিমত্তার জন্যও বিশেষ সুনাম রয়েছে। অন্য পাখিদের ডাক অনুকরণের এক অনন্য ক্ষমতা এদের রয়েছে, যা অন্য পাখিদের বিব্রত করে দেয় মাঝেমধ্যে। অন্য পাখির ডিম ও বাসাও চুরি করে এরা। অন্য পাখিদের ভয় দেখাতে ঈগলের ডাক হুবহু নকল করতেও এদের নাম রয়েছে।
|
51 |
+
|
52 |
+
বসন্তবৌরি:
|
53 |
+
কলকাতার পাখি বলতে কোয়েল, দোয়েল, হাঁড়িচাচা, বউ কথা কও – এরা সবাই বাংলার পাখি। সুন্দর হলুদ পাখি বউ কথা কও-কে সেলিম আলি ‘বাংলার পাখি’ বলে উল্লেখ করেছেন, কারণ বাংলার নানা অঞ্চলে এদের বেশি পাওয়া যায়। নগরায়নের সঙ্গে সঙ্গে পাখি অনেক কমে গিয়েছে কলকাতায়। পাখিদের খাদ্য ও নিরাপত্তা বিঘ্নিত হলে স্থান পরিবর্তন করাটাই স্বাভাবিক। আর প্রধান কারণ বাসস্থানের অভাব। প্রতিদিন রাস্তাঘাট বড়ো হচ্ছে। গড়ে উঠছে বিশাল বিশাল কমপ্লেক্স। বড়ো গাছপালা কমে যাওয়ার দু’টি কারণ। এক, নির্বিচারে গাছ কেটে ফেলা। দুই, আয়লা, আমফানের মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়। এসবের ফলে পাখিরা লোকালয় থেকে শহরের বাইরে চলে যাচ্ছে।
|
54 |
+
|
55 |
+
হাঁড়িচাচা:
|
56 |
+
ঝুট শালিক, নীল গলা বসন্তবৌরি, হাঁড়িচাচা, বসন্তবৌরি, দোয়েল পাখি প্রচুর ছিল কলকাতায়। সকালবেলায় দোয়েলের সুন্দর গান শুনে অনেকের ঘুম ভেঙে যেত। তার জন্য দোয়েলকে বাংলার নাইটিঙ্গেল বলা হয়ে থাকে। এদের কম সংখ্যা চোখে পড়ার মতো। কাক, শালিক, চড়ুই পাখিরা মূলত খাদ্যাভ্যাসের জন্যই লোকালয়ে থাকতে ভালোবাসে। আগে এদের দেখা যেত পাড়ায় পাড়ায় – এখন সেভাবে পাওয়া যায় না। বাড়ির ঘুলঘুলিতে আগে চড়ুইয়ের মতো পাখি���া বাসা করত। শহরের বাড়িঘরে ঘুলঘুলি দেখা যায় না আজকাল। হাঁড়িচাচা, কাঠঠোকরাও কম দেখা যাচ্ছে। পরিযায়ী পাখিরাও খুব কম সময়ের জন্য এসে ফিরে যায়। রবীন্দ্র সরোবর, সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্কের মতো বাগানে অবশ্য বেশ কিছু পাখি থাকে। টিয়া ও হলুদ পা হরিয়াল দু-একটার দেখা মেলে। বনবিতানে আগে যেমন গাছে কয়েকটা পেঁচা প্রায় দেখা যেত, এখন আর নেই। বন বিভাগের তরফ থেকে ওখানে নতুনভাবে গাছ লাগানোর প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে এবং কিছু উদ্ধার করা পাখিকে ওখানে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। দেখা যাক এতে পাখির সংখ্যা বাড়বে কিনা। সরোবরে চেষ্টা চলছে গাছপালা সংরক্ষণের। বিশেষ করে যাতে আরও বেশি ফলের গাছ লাগানো যায়, সেদিকে জোর দেওয়া হচ্ছে। এই মুহূর্তে ৫৬ রকম প্রজাতির পাখি কলকাতা ও তার আশেপাশে দেখা যায়।
|
57 |
+
|
58 |
+
ইষ্টিকুটুম, বেনেবউ:
|
59 |
+
এক সময় রাজারহাটে তৃণভূমি এবং জলাভূমিতে অনেক পাখি ছিল। এখন তারা সংখ্যায় অনেক কম। স্বল্প সময়ের জন্য হলেও ইকো পার্কের পিছনে ও রাজারহাট গ্রাসল্যান্ডে লালমুনিয়া দেখতে পাওয়া গিয়েছে। হিডকোর সভাপতি দেবাশিস সেন পাখিদের জন্য অনেক উদ্যোগ নেন। ইকো পার্কে গড়ে তোলা হয়েছে পাখিবিতান। বাগানগুলোয় ফলের গাছ যাতে বেশি লাগানো হয়, সেদিকে নজর দেয় হিডকো। দুঃখের কথা, এমন কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ে না কলকাতায়। সল্টলেকের বনবিতানে আগে ছিল অনেক মৌটুসি। ফুলের গাছ কাটা হচ্ছে বলে সেগুলো বিরল হয়ে এসেছে। আমি সল্টলেকের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, আগে যেমন সকালে পাখির ডাক শোনা যেত, এখন প্রায় যায়ই না। চিন্তামণি অভয়ারণ্যের আশেপাশে প্রচুর বসতবাড়ি। তার থেকে শ্যামখোলা এবং বারুইপুরে অনেক বেশি পাখি রয়েছে।
|
60 |
+
|
61 |
+
বক পাখি :আমাদের দেশের সবখানেই বক পাখি দেখতে পাওয়া যায় । বক পাখি বিভিন্ন প্রকারের হয়ে থাকে। ছােটো ছােটো এক প্রকার বক পাখি আছে, যাদের পালক খয়েরি রঙের । আর এক প্রকার বক পাখি দেখা যায় ধূসর রঙের। এছাড়াও লাল রঙের ক্ষুদ্রাকৃতির আর এক শ্রেণির বক পাখিকে বর্ষাকালে আমাদের দেশে প্রায় সবখানেই দেখা যায়।
|
62 |
+
|
63 |
+
তবে সবচেয়ে জনপ্রিয় বক পাখি হলাে লম্বা গলার সাদা বক। এরা খুবই সুন্দর এবং একসাথে অনেক বক পাখি যখন আকাশের গায়ে সারিবদ্ধভাবে উড়ে, তখন দেখতে একটি বিরাট ফুলের মালার মতাে লাগে। অত্যন্ত মনােমুগ্ধকর হয়ে থাকে দৃশ্যটি । এরা সব সময় ঝাক বেধেই চলাফেরা করে। থাকে। এরা খাল-বিলের এলাকায় অবস্থ���ন করে থাকে। এদের প্রিয় খাবার মাছ ও ব্যাঙ।
|
64 |
+
|
65 |
+
কাঠঠোকরা পাখি : কাঠঠোকরা আমাদের দেশের এক অদ্ভুত সুন্দর পাখি। এরা গাছের শুকনাে ডালে ঠোট দিয়ে ঠোকর মেরে কাঠ। কেটে গর্ত করে এবং সেখানে অবস্থান করে। কাঠ যতই শক্ত হােক না কেন এরা ঠোট দিয়ে ঠোকর মেরে তাতে গর্ত করতে পারে ।
|
66 |
+
জলচর পাখি :
|
67 |
+
বাংলাদেশের হাওড়-বাঁওড় ও খাল-বিলের আশেপাশে ডাহুক, পানকৌড়ি এবং আরও নানা প্রকার পাখির আনাগােনা। দেখা যায়। এরা বর্ষাকাল এলেই সােচ্চার হয়ে ওঠে। এরা ছােটো ছােটো মাছ শিকার করে খায়। এদের জলচর পাখি বলা হয়।
|
68 |
+
|
69 |
+
পাখি
|
70 |
+
কৃষ্ণ চূড়ার ডালে বসি
|
71 |
+
গান গাইল একটি অচেনা পাখি ,
|
72 |
+
নয়ন মেলে দেখি -
|
73 |
+
এই যে গানের পাখি ।
|
74 |
+
সেই মধুর গান শুনে আমি
|
75 |
+
পাখির পানে চেয়েছিলাম একটুখানি ।
|
76 |
+
পাখিটিকে ছোঁয়ার জন্য আমি -
|
77 |
+
ভালোবাসার হাত বাড়ালাম ।
|
78 |
+
গান ফুরালেই পাখি গেলো উড়ে
|
79 |
+
আমার তরে রইল পড়ে
|
80 |
+
পাখির বেদনার সুর ।
|
81 |
+
সেই পাখির গান মনে করে
|
82 |
+
আমার হৃদয়ে জাগে আজ ব্যাথার বালুচর ।
|
83 |
+
অচেনা পাখিটি যখন হারিরে গেলো অজানায় -
|
84 |
+
পথ চেয়ে চেয়ে ক্লান্ত দু' নয়ন
|
85 |
+
পাখিটিকে খুঁজে ফিরে আমার মন ।
|
86 |
+
হৃদয়ের স্বপ্নপুরীতে বেদনার কম্পন জাগে ।
|
87 |
+
উচ্ছল প্রাণবন্ত ঠোঁটে -
|
88 |
+
গড়িয়ে পড়েনা মিষ্টি হাসি ।
|
89 |
+
বড় নিঃসঙ্গ লাগে বুক ভারী -
|
90 |
+
হয়ে যায় নীল বেদনায় ।
|
91 |
+
পৃথিবীর সব কোলাহোল সাঙ্গ করে
|
92 |
+
রক্রিম সূর্যটা যখন আস্ত যায় পরন্ত বিকালে
|
93 |
+
গোধূলি আলোর বর্ণচ্ছায়ায় নানানরঙের
|
94 |
+
ছোপ ছোপ ছবি আঁকি এই হৃদয়ে ।
|
95 |
+
নিশিথের আগোমনে - স্বপনের মাঝে
|
96 |
+
যখন মনে পরে পাখির গান
|
97 |
+
পাখির উপর হয় যে আমার বড় অভিমান ।
|
98 |
+
আমিতো পাইনা ভেবে -
|
99 |
+
কেন ভালোবাসি অচেনা পাখির গান?
|
100 |
+
বুকে জড়িয়ে নিয়ে রিক্ত হাহাকার ,
|
101 |
+
শুন্য হয় আমার হৃদয়ের চারিধার ।
|
102 |
+
আমি হতে পারিনি পাখির প্রেয়সী ,
|
103 |
+
তাইতো আজ কাঁদে মন নিরালায় বসি ।
|
104 |
+
আমার বুকে কাঁদছে আশা
|
105 |
+
পাখির তরে রইল আমার অবুঝ ভালোবাসা ।
|
106 |
+
যে চলে যায় - সেতো চলে যায়
|
107 |
+
শুধু হৃদয়ের ভিতর , জীবনের মাঝে
|
108 |
+
রেখে যায় রিক্ততা আর বিষণ্ণতা ।
|
109 |
+
বনের পাখি বনে উড়ে
|
110 |
+
মায়ার বাঁধন ছিন্ন করে ।
|
111 |
+
আমার তরে রইল কেবল
|
112 |
+
পাখির বেদনার গান ।
|
113 |
+
পাখি তোমায় বলছি শোনো
|
114 |
+
আমি যখন থাকবো নাকো
|
115 |
+
পাখি তুমি গেয়ে নিও আমার লিখা গান ।
|
116 |
+
আমার উপর আর করোনা কোনো অভিমান ।।
|
117 |
+
দিন যায় , রাত যায়
|
118 |
+
সীমাহীন শুন্যতায় -
|
119 |
+
তবু জীবনের এই অভিরাম পথচলা
|
120 |
+
|
121 |
+
|
122 |
+
|
123 |
+
পাখির প্রেমে পড়িসনে ফুল
|
124 |
+
|
125 |
+
পাখির প্রেমে পড়িসনে ফুল
|
126 |
+
তোর তো দুটো ডানা নেই,
|
127 |
+
গহীন বনে তার বিচরণ
|
128 |
+
সে খবর কি জানা নেই?
|
129 |
+
রূপে��� জালে আটকে যাওয়ার
|
130 |
+
গল্পটা ঠিক পাখির না,
|
131 |
+
গল্প পাখির প্রেম বিষয়ক
|
132 |
+
কিংবা মাখামাখির না।
|
133 |
+
এক ডালে তার মন বসে না
|
134 |
+
শুনছি নদীর কূলেও যায়,
|
135 |
+
অনেক সময় উড়াল দিয়ে
|
136 |
+
ঘরের কথা ভুলেও যায়।
|
137 |
+
সাবধান তাই পাখির প্রেমে
|
138 |
+
মোটেও যেনো পড়িসনে,
|
139 |
+
ফুটেই মহা ভুল করেছিস
|
140 |
+
আরেকটা ভুল করিসনে।
|
141 |
+
|
142 |
+
|
143 |
+
পাখিরা কথা কয়
|
144 |
+
|
145 |
+
পাথর চুপ থাকে পাখিরা কথা কয়
|
146 |
+
পাখিরা কথা কয় শিকারী গুলি ছোড়ে
|
147 |
+
শিকারী গুলি ছোড়ে পাখির লাশ পড়ে,
|
148 |
+
পাখির লাশ পড়ে, পাখির লাশ পড়ে…
|
149 |
+
হঠাৎ একদিন পাথর কথা কয়,
|
150 |
+
পাখিরা চুপ থাকে পাথর কথা কয়!
|
151 |
+
সবাই বিস্ময়ে লাশের চারপাশে সেদিন জড়ো হয়,
|
152 |
+
কিভাবে চুপ থাকে পাখিরা আর সব
|
153 |
+
পাথর কথা কয়!?
|
154 |
+
পাথর চুপ থাকে পাখিরা কথা কয়
|
155 |
+
পাখিরা কথা কয় শিকারী গুলি ছোড়ে
|
156 |
+
|
157 |
+
এলোমেলো মেঘ ওড়ো
|
158 |
+
|
159 |
+
এলোমেলো মেঘ ওড়ো
|
160 |
+
যেদিকে ইচ্ছে যাও
|
161 |
+
তোমার তো নেই মানা;
|
162 |
+
আকাশ তোমার বাড়ি।
|
163 |
+
আমিও তোমার মতো
|
164 |
+
যদি পারতাম উড়ে যেতে;
|
165 |
+
যদি পিছু না ডাকতো আমার
|
166 |
+
এই শূন্য ভাতের হাঁড়ি!
|
167 |
+
|
168 |
+
|
169 |
+
পাখি
|
170 |
+
|
171 |
+
ঘুমায়ে রয়েছ তুমি ক্লান্ত হ'য়ে, তাই
|
172 |
+
আজ এই জ্যোৎস্নায় কাহারে জানাই
|
173 |
+
আমার এ-বিস্ময়- বিস্ময়ের ঠাঁই,
|
174 |
+
নক্ষত্রের থেকে এলো;- তুমি জেগে নাই,
|
175 |
+
আমার বুকের 'পরে এই এক পাখি;
|
176 |
+
পাখি? না ফড়িং কীট? পাখি না জোনাকি?
|
177 |
+
বাদামি সোনালী নীল রোম তার রোমে-রোমে রেখেছে সে ঢাকি,
|
178 |
+
এমন শীতের রাতে এসেছে একাকী
|
179 |
+
নিস্তব্ধ ঘাসের থেকে কোন্
|
180 |
+
ধানের ছড়ার থেকে কোথায় কখন,
|
181 |
+
রেশমের ডিম থেকে এই শিহরণ!
|
182 |
+
পেয়েছে সে এই শিহরণ!
|
183 |
+
জ্যোৎস্নায়- শীতে
|
184 |
+
কাহারে সে চাহিয়াছে? কতোদূরে চেয়েছে উড়িতে?
|
185 |
+
মাঠের নির্জন খড় তারে ব্যথা দিতে
|
186 |
+
এসেছিলো? কোথায় বেদনা নাই এই পৃথিবীতে।
|
187 |
+
না- না- তার মুখে স্বপ্ন সাহসের ভর
|
188 |
+
ব্যথা সে তো জানে নাই- বিচিত্র এ-জীবনের 'পর
|
189 |
+
করেছে নির্ভর;
|
190 |
+
রোম- ঠোঁট- পালকের এই মুগ্ধ আড়ম্বর।
|
191 |
+
জ্যোৎস্নায়- শীতে
|
192 |
+
আমার কঠিন হাতে তবু তারে হলো যে আসিতে,
|
193 |
+
যেই মৃত্যু দিকে-দিকে অবিরল- তোমারে তা দিতে
|
194 |
+
কেন দ্বিধা? অদৃশ্য কঠিন হাতে আমিও বসেছি পাখি,
|
195 |
+
আমারেও মুষড়ে ফেলিতে
|
196 |
+
দ্বিধা কেহ করিবে না; জানি আমি, ভুল ক'রে দেবে নাকো ছেড়েঃ
|
197 |
+
তবু আহা, তারের শিশিরে ভেজা এ রঙিন তূলোর বলেরে
|
198 |
+
কোমল আঙুল দিয়ে দেখি আমি চুপে নেড়ে-চেড়ে,
|
199 |
+
সোনালি উজ্জ্বল চোখে কোন্ এক ভয় যেন ঘেরে
|
200 |
+
তবু তার; এই পাখি- এতটুকু- তবু সব শিখেছে সে- এ এক বিস্ময়
|
201 |
+
সৃষ্টির কীটেরও বুকে এই ব্যথা ভয়;
|
202 |
+
আশা নয়- সাধ নয়- প্রেম স্বপ্ন নয়
|
203 |
+
চারিদিকে বিচ্ছেদের ঘ্রাণ লেগে রয়
|
204 |
+
পৃথিবীতে; এই ক্লেশ ইহাদেরো বুকের ভিতর;
|
205 |
+
ইহাদেরো; অজস্র গভীর রঙ পালকের 'পর
|
206 |
+
তবে কেন? কেন এ সোনালি চোখ খুঁজেছিলো জ্যোৎস্নার সাগর?
|
207 |
+
আবার খুঁজিতে গেল কেন দূর সৃষ্টি চরাচর।
|
208 |
+
|
209 |
+
|
210 |
+
পাখির শয়ন
|
211 |
+
|
212 |
+
কতোটা সতর্ক হয়ে জল হয় মেঘের শরীর, ক নিয়মে
|
213 |
+
মুয়ে থাকে পাখি
|
214 |
+
ঘাসে, পুরু বাতাসের ভাঁজে, খোলা পুষ্প পল্লবের ছাদে
|
215 |
+
এই তো পাখিরা বেশ, হিংসা দ্বেষ কিছু নেই তার।
|
216 |
+
পাখি বড়ো স্বভাব সজ্জন মেলে আছে শরীরের সীমা
|
217 |
+
কেমন উদাস নগ্ন ওরা পাখি, তাই মানে অরণ্য-আবাস
|
218 |
+
এমনটি শব্দ আছে পাখির শয়ন বলো
|
219 |
+
ভেঙে যাবে ভয়ে!
|
220 |
+
পাখি তো শয়ন করে যেভাবে জলের বেগ কোনোখানে
|
221 |
+
হয়ে যায় নম্র নতজানু
|
222 |
+
যে নিয়মে বৃক্ষের শরীর ফেটে জন্ম নেয় ফুল
|
223 |
+
দেহের সমস্ত লজ্জা খুলে দিয়ে সেভাবে শয়ন করে পাখি।
|
224 |
+
ওরা তো শয়ন জানে, শয়নের লজ্জা তাই নেই!
|
225 |
+
কীভাবে চোখের নিচে অনায়াসে ধরে রাখে ঘুমের কম্পন
|
226 |
+
ওরা পাখি, সুখূ ওরা
|
227 |
+
সবুজ শব্দের চিহ্ন পান করে চলে যায় কুয়াশার
|
228 |
+
গাঢ় কোলাহলে
|
229 |
+
এই তো শয়ন এই পাকিরই শয়ন
|
230 |
+
আমার চেয়েও ভালো শুয়ে থাকে পাখি!
|
231 |
+
এই তো শয়ন শিল্পরীতি, পাখিরাই জানে!
|
232 |
+
|
233 |
+
|
234 |
+
|
235 |
+
বাদল-রাতের পাখি কবিতা
|
236 |
+
|
237 |
+
বাদল-রাতের পাখি!
|
238 |
+
কবে পোহায়েছে বাদলের রাতি, তবে কেন থাকি থাকি
|
239 |
+
কাঁদিছ আজিও ‘বউ কথা কও’শেফালির বনে একা,
|
240 |
+
শাওনে যাহারে পেলে না, তারে কি ভাদরে পাইবে দেখা?…
|
241 |
+
তুমি কাঁদিয়াছ ‘বউ কথা কও’সে-কাঁদনে তব সাথে
|
242 |
+
ভাঙিয়া পড়েছে আকাশের মেঘ গহিন শাওন-রাতে।
|
243 |
+
বন্ধু, বরষা-রাতি
|
244 |
+
কেঁদেছে যে সাথে সে ছিল কেবল বর্ষা-রাতেরই সাথে!
|
245 |
+
আকাশের জল-ভারাতুর আঁখি আজি হাসি-উজ্জ্বল ;
|
246 |
+
তেরছ-চাহনি জাদু হানে আজ, ভাবে তনু ঢল ঢল!
|
247 |
+
কমল-দিঘিতে কমল-মুখীরা অধরে হিঙ্গুল মাখে,
|
248 |
+
আলুথালু বেশ – ভ্রমরে সোহাগে পর্ণ-আঁচলে ঢাকে।
|
249 |
+
শিউলি-তলায় কুড়াইতে ফুল আজিকে কিশোরী মেয়ে
|
250 |
+
অকারণ লাজে চমকিয়া ওঠে আপনার পানে চেয়ে।
|
251 |
+
শালুকের কুঁড়ি গুঁজিছে খোঁপায় আবেশে বিধুরা বধূ,
|
252 |
+
মুকুলি পুষ্প কুমারীর ঠোঁটে ভরে পুষ্পল মধু।
|
253 |
+
আজি আনন্দ-দিনে
|
254 |
+
পাবে কি বন্ধু বধূরে তোমার, হাসি দেখে লবে চিনে?
|
255 |
+
সরসীর তীরে আম্রের বনে আজও যবে ওঠ ডাকি
|
256 |
+
বাতায়নে কেহ বলে কি, “কে তুমি বাদল-রাতের পাখি!
|
257 |
+
আজও বিনিদ্র জাগে কি সে রাতি তার বন্ধুর লাগি?
|
258 |
+
যদি সে ঘুমায় – তব গান শুনি চকিতে ওঠে কি জাগি?
|
259 |
+
ভিন-দেশি পাখি! আজিও স্বপন ভাঙিল না হায় তব,
|
260 |
+
তাহার আকাশে আজ মেঘ নাই – উঠিয়াছে চাঁদ নব!
|
261 |
+
ভরেছে শূন্য উপবন তার আজি নব নব ফুলে,
|
262 |
+
সে কি ফিরে চায় বাজিতেছে হায় বাঁশি যার নদীকূলে?
|
263 |
+
বাদলা-রাতের পাখি!
|
264 |
+
উড়ে চলো – যথা আজও ঝরে জল, নাহিকো ফুলের ফাঁকি!
|
265 |
+
|
266 |
+
|
267 |
+
সুখ পা���ি
|
268 |
+
|
269 |
+
সুখ পাখি সুখ খুঁজে আপন মনে
|
270 |
+
চারিদিকে ছুটে বেড়ায় সুখের সন্ধানে
|
271 |
+
যেখানেই খুঁজে পায় সুখের নীড়
|
272 |
+
বুকে তার জেগে উঠে আশার তীর
|
273 |
+
পরকে করে নেয় মুহূর্তেই আপন
|
274 |
+
সর্বস্ব করে ত্যাগ রক্ষার্থে মন
|
275 |
+
মজে থাকে কিছুদিন সেই সুখের ছলে
|
276 |
+
নিজের অস্তিত্বকে যায় সে ভুলে
|
277 |
+
বিধাতার এ যেন আজব খেলা
|
278 |
+
সুখের সন্ধানে সে আবার ভাসায় ভেলা
|
279 |
+
ফিরে আসে সে আবার আপন নীড়ে
|
280 |
+
বের হয় আর্তনাদ তার বুক চিরে
|
281 |
+
প্রকৃত সুখ দেখি এখানেই আছে
|
282 |
+
তাহলে ছুটলাম কোন সুখের পিছে?
|
283 |
+
|
284 |
+
|
285 |
+
একটি অসহায় পাখিকে নিয়ে সত্য গল্প
|
286 |
+
|
287 |
+
স্কুল বন্ধ। ঘরের বাইরে যেতে পারি না। আর এতে আমার সময় কাটছে না। সময় কাটানোর জন্য একটি গল্প লিখছি। আমার গল্পটি একটি অসহায় পাখিকে নিয়ে, কিন্তু গল্পটি সত্যি।
|
288 |
+
একটি টিয়া পাখি তার নিজের বাসায় ডিম পাড়ে। কিছুদিন পর ডিমটি ফুটে ছানা বের হয়। ছানাটি আস্তে আস্তে উড়তে শিখে যায়। কিন্তু তখনও টিয়ার ছানাটি ভালো করে উড়তে শেখেনি। একদিন ছানাটি উড়তে উড়তে নিজের বাসা ছেড়ে পাশের একটি গাছের ডালে গিয়ে বসে।
|
289 |
+
এমন সময় কয়েকটি কাক এসে তাকে আক্রমণ করে। কাকের ঠোকরে ছানাটির মাথার সব পালক পড়ে যায়। টিয়ার ছানাটি তার ডানায় ব্যথা পায় এবং গাছের ডাল থেকে নিচে মাটিতে পড়ে যায়।
|
290 |
+
তখন সেখান দিয়ে একজন মানুষ যাচ্ছিল। সে আহত ছানাটিকে দেখতে পায় আর কোলে তুলে নেয়। এভাবে সে টিয়ার ছানাটিকে কাকেদের হাত থেকে বাঁচায়। সেবা-যত্ন পেয়ে টিয়ার ছানাটি এখন সুস্থ। কিন্তু সে খাঁচায় থাকতে চায় না। তাকে খাঁচায় বন্দি করলে সে খুব রাগ করে। তার ঠোঁট দিয়ে খাঁচার গায়ে ঠোকর মারে। সে শুধু মুক্ত থাকতে চায়।
|
291 |
+
পাখিদের মুক্ত থাকতে দাও। তাদের কষ্ট দিও না। পাখিরা মুক্ত আকাশে উড়তে চায়। পাখি শিকার করা খুব অন্যায়। কেউ পাখি শিকার করো না।
|
292 |
+
|
293 |
+
একটি পাখির গল্প
|
294 |
+
|
295 |
+
একটি পাখির ছানা পেয়েছিলাম। তার পালক গুলো কেবলই গজাচ্ছে। কী সুন্দর দেখতে পাখিটি। তার কালো চোখগুলো কী অপরূপ। তার ঠোটের রং যেনো লাল গোলাপের পাপড়ির মতো।
|
296 |
+
তার কচি কচি কালো পশমগুলো দেখে আমার মন ভরে যায়। অনেক শখ করে পাখিটি এনেছি, পোষ মানাবো বলে। ওকে আমি কথা বলা শিখাবো, গান শিখাবো- পাখিটি সারা বেলা শুধু আমাকে ডাকবে, আমার পাশে থাকবে। তাতে প্রাণ ভরে যাবে আমার। অনেক শখের পাখি আমার।
|
297 |
+
লোকে যা কিছু বলুক আমি তা পরোয়া করিনা, আমি পাখিটিকে নিজের হাতে পালন করে বশ মানাবো। অনেক আশা আর ভরসা নিয়ে প্রতিদিন, প্রতিক্ষন পাখিটিকে আমি কথ�� শিখাই, আচরন শিখাই। ওকে রেখে আমার খাওয়া-দাওয়া, ঘুমানো সব যেনো শূন্যতায় ভরে থাকে। আমি পাখিটিকে প্রাণ দিয়ে ভালবেসে ফেলেছি। পাখির প্রেমে পড়ে গেছি আমি।
|
298 |
+
ওকে ছাড়া আমার এক বেলাও ভাল লাগেনা। ছোট্টো পাখি তাই ও আমাকে এখনো চিনতে পারেনি। আমার ইচ্ছাগুলো পাখিটি এখনো বুঝতে পারেনি। তাই এখনো বশ মানেনি ও। কিন্তু একটু একটু বলতে শিখেছে।
|
299 |
+
আমার কিছু আচরন দেখতে পাই ওর ভেতর। ও আমাকে কথা দিয়েছে আমাকে ডাকবে প্রাণ ভরে। আমি সে অপেক্ষাতেই আছি। সেদিন রাতে পাখিটির ব্যবহারে আমি খুব দুঃখ পেয়েছিলাম। তাই সারা রাত ঘুমাতে পারিনি।
|
300 |
+
পাখিটিকে আমার চেয়ে বেশি ভালবাসে এমন কেউ নেই এখানে। ওকে শেখাতে গিয়ে আমি ওর প্রতি রেগে গিয়েছিলাম । কিন্তু ও আমাকে বুঝে ওঠতে পারিনি। আমাকে দেখিয়ে দেখিয়ে পাখিটা অন্য কাউকে ডাকুক তা আমি চাই না। আমাকে রেখে অন্য কারো পাশে গিয়ে বসুক তা আমি চাই না।
|
301 |
+
কারন, পাখিটিকে আমি পালন করি, আমি ওকে হৃদয় দিয়ে ভালবাসি। অনেক কষ্ট করে বোল শিখাচ্ছি, ভাষা শিখাচ্ছি। তাই সেদিন খুব দুঃখ পেয়েছিলাম। হৃদয়ের স্পন্দন বন্ধ হয়ে এসেছিলো সে রাতে। কিন্তু পাখিটি জানে না সে কথা।
|
302 |
+
এখনো ভালবাসা বুঝতে পারেনা ও। আমি ওকে সব শিখাবো। ভালবাসা কাকে বলে, হৃদয়ের ব্যথা কি- আমি কথা দিয়েছি পাখিটিকে আমি সব শিখাবো। অনেক সাধের পাখি আমার, চেয়েছি ওকে আমার মতো বড় করে তুলবো। আমার রূপ ওকে দিবো।
|
303 |
+
আমার হৃদয়ের এক টুকরো মাংশ ওকে দিবো। তার বিনিময়ে কিছু চাই না ওর কাছে। শুধু চাই ওর ভালবাসা। আমার পাশে এসে বসা। তারপর একদিন পাখিটি উড়িয়ে দিবো শুন্য আকাশে আর আমি পথিক হয়ে চলে যাবো পথ বেয়ে শেষের পথে.
|
304 |
+
|
305 |
+
টিয়া
|
306 |
+
|
307 |
+
টিয়া (Parrot) Psittaciformes বর্গের অতি পরিচিত পাখি। এদের বড় মাথা ও বাঁকানো হুকের মতো ঠোঁট বৈশিষ্ট্যময়। এদের লেজ লম্বা। এরা মানুষের স্বর অনুকরণ করায় সক্ষম এবং এদের মধ্যে প্যারাকিট, লাভবার্ড ও বাজারিগার ও সেসঙ্গে অপেক্ষাকৃত বড় আকারের ম্যাকাউ, আমাজান টিয়া, কাকাতুয়া ইত্যাদি পাখি রয়েছে। এদের জিহবা বেলুনাকার ও মাংসল। ফল ও বীজ খাওয়ার জন্য টিয়া ও এর স্বগোত্রীয়দের ঠোঁট মজবুত। বৃক্ষের শাখার ভিতর দিয়ে চলাচলের জন্য এরা কৌশলে এটিকে ব্যবহার করে। এদের পায়ের প্রথম ও চতুর্থ আঙুল পেছনমুখী। গাছে আরোহণের জন্য আঙুলের এক ধরনের অভিযোজন ঘটে থাকবে। এসব আঙুলের সাহায্যে এরা হাতের অনুরূপ খা���্যবস্ত্তকে ধরে নিয়ে মুখে পুরতে পারে, যা অন্য কোনো প্রজাতির পাখিতে দেখা যায় না।অধিকাংশ প্রজাতির টিয়া গাছে গর্ত খুঁড়ে বাসা বানায়। ছোট আকারের পাখির প্রজাতিতে ১৬-১৯ এবং বড় প্রজাতিতে প্রায় ৩০ দিন ডিমে তা’ দেওয়া হয়। তা’ দেওয়ার পর ডিম ফুটে যে বাচ্চা বের হয় তা সচরাচর অন্ধ থাকে। বাসায় বাচ্চারা দুই থেকে তিন মাস পিতামাতার যত্নে কাটায় এবং এসময় বাচ্চাদের ওগরানো খাবার খাওয়ানো হয়। দীর্ঘদিন পিতামাতার যত্নে থাকার সঙ্গে এদের মগজের আকার বড় হওয়ার বিষয়টি সম্পর্কিত হতে পারে। বড় মগজ টিয়ার সহজে জটিল কৌশল শেখা ও শব্দধারণ করার ক্ষমতার সঙ্গে সম্পর্কিত।
|
308 |
+
অনেক টিয়া ৫০ বছরেরও বেশি বাঁচে। মানুষ প্রথম যেসব টিয়ার সঙ্গে পরিচিত হয়েছিল সেগুলি ছিল ভারতীয় টিয়া। প্রায় ৩২৮ খ্রিস্টপূর্বে অ্যারিস্টটলের ছাত্র আলেকজান্ডার শিক্ষকের কাছে জীবিত টিয়া এনেছিলেন। আফ্রিকার গ্রে (gray) টিয়া কথা বলায় সবচেয়ে চৌকস, আমাজনের টিয়াও কথা বলে ভালো, যদিও এদের স্বর খুবই কর্কশ। টিয়ারা প্রাচীনকাল থেকেই পরিচিত। খাঁচায় পোষমানা পাখি হিসেবে এরা সবসময়ই জনপ্রিয়। কারণ এরা মানুষকে বিনোদন দান করে, বেশ বুদ্ধিমান এবং ঠোঁট ও পায়ের সাহায্যে নানা ধরনের খেলা দেখায়। মাঝে মাঝে ফল ও শস্য ক্ষেতে ঝাঁক বেঁধে আসে। ফলে শস্য ও ফল উৎপাদনের ক্ষেত্রে মারাত্মক হুমকির সৃষ্টি হয়। অন্যদিকে, এরা বহু আগাছার বীজ ধ্বংস করে। খাঁচায় পোষার জন্য টিয়া রপ্তানি একটি লাভজনক বাণিজ্য।
|
309 |
+
উষ্ণমন্ডলীয় ও অর্ধ-উষ্ণমন্ডলীয় অঞ্চলসমূহে প্রায় ৩৫০টি প্রজাতির অধিকাংশ টিয়া বাস করে, কয়েকটি আছে ভারত ও মধ্য আফ্রিকায়। বাংলাদেশে ছয় প্রজাতির মধ্যে চন্দনা অতি বিপন্ন।
|
text datasets/cat.txt
ADDED
The diff for this file is too large to render.
See raw diff
|
|
text datasets/dog.txt
ADDED
@@ -0,0 +1,164 @@
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
1 |
+
কুকুর
|
2 |
+
কুকুর কার্নিভোরা অর্থাৎ শ্বাপদ বর্গ ভুক্ত এক প্রকারের মাংসাশী স্তন্যপায়ী প্রাণী।
|
3 |
+
|
4 |
+
প্রায় ১৫ হাজার বছর আগে একপ্রকার নেকড়ে মানুষের শিকারের সঙ্গী হওয়ার মাধ্যমে গৃহপালিত পশুতে পরিণত হয়। তবে কারও কারও মতে কুকুর মানুষের বশে আসে প্রায় ১০০,০০০ বছর আগে। অবশ্য অনেক তথ্যসূত্র অনুযায়ী কুকুরের গৃহ পালিতকরণের সময় আরও সাম্প্রতিক বলে ধারণা প্রকাশ করে থাকে। নেকড়ে ও শিয়াল কুকুরের খুবই ঘনিষ্ঠ প্রজাতি (নেকড়ে আসলে একই প্রজাতি)। তবে গৃহপালিত হওয়ার পরে কুকুরের বহু বৈচিত্র্যময় জাত তৈরি হয়েছে, যার মধ্যে মাত্র কয়েক ইঞ্চি উচ্চতার কুকুর (যেমন চিহুয়াহুয়া) থেকে শুরু করে তিন ফুট উঁচু (যেমন আইরিশ উলফহাউন্ড) রয়েছে।
|
5 |
+
|
6 |
+
কুকুর এর দেহ
|
7 |
+
গৃহপালিত কুকুর (Dog) বিভিন্ন আচরণ, সংবেদনশীল ক্ষমতা এবং শারীরিক বৈশিষ্ট্যের জন্য সহস্রাব্দ ধরে বেছে বেছে প্রজনন করা হয়েছে।
|
8 |
+
আধুনিক কুকুরের জাতগুলি অন্যান্য গৃহপালিত প্রাণীর তুলনায় আকার, চেহারা এবং আচরণে বেশি বৈচিত্র্য দেখায়। কুকুর (Dog) শিকারী এবং মেথর; অন্যান্য অনেক শিকারী স্তন্যপায়ী প্রাণীর মতো, কুকুরের শক্তিশালী পেশী, মিশ্রিত কব্জির হাড়, একটি কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেম যা স্প্রিন্টিং এবং সহনশীলতা উভয়কেই সমর্থন করে এবং ধরা এবং ছিঁড়ে ফেলার জন্য দাঁত রয়েছে।
|
9 |
+
কুকুর এর শারীরিক দৈর্ঘ্য
|
10 |
+
কুকুর (Dog) উচ্চতা এবং ওজন অত্যন্ত পরিবর্তনশীল. সবচেয়ে ছোট পরিচিত প্রাপ্তবয়স্ক কুকুরটি ছিল একটি ইয়র্কশায়ার টেরিয়ার, যেটি কাঁধে মাত্র 6.3 সেমি (2.5 ইঞ্চি), মাথা এবং শরীরের দৈর্ঘ্য 9.5 সেমি (3.7 ইঞ্চি) ছিল,
|
11 |
+
এবং ওজন মাত্র 113 গ্রাম (4.0 oz)। সবচেয়ে বড় পরিচিত কুকুরটি ছিল সেন্ট বার্নার্ড যার ওজন ছিল 167.6 কেজি (369 পাউন্ড) এবং থুতু থেকে লেজ পর্যন্ত 250 সেমি (98 ইঞ্চি)। সবচেয়ে লম্বা কুকুরটি একটি গ্রেট ডেন যা কাঁধে 106.7 সেমি (42.0 ইঞ্চি) দাঁড়িয়ে থাকে।
|
12 |
+
কুকুর এর ইন্দ্রিয়
|
13 |
+
কুকুরের ইন্দ্রিয়গুলির মধ্যে রয়েছে দৃষ্টি, শ্রবণশক্তি, গন্ধের অনুভূতি, স্বাদ অনুভূতি, স্পর্শ এবং পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের সংবেদনশীলতা। আরেকটি গবেষণায় বলা হয়েছে যে কুকুররা পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্র দেখতে পারে।
|
14 |
+
কুকুরের দাঁত
|
15 |
+
কুকুরের দুই সেট দাঁত থাকে। 28টি পর্ণমোচী দাঁত ছয় থেকে আট সপ্তাহ বয়সের মধ্যে ফুটে ওঠে এবং কুকুরছানা ছয় থেকে সাত মাস বয়সে এই পর্ণমো���ী দাঁতগুলি 42টি প্রাপ্তবয়স্ক দাঁত দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়।
|
16 |
+
স্থায়ী দাঁতের মধ্যে রয়েছে ইনসিসর, যা নিপ এবং কামড়াতে ব্যবহৃত হয়; ক্যানাইনস, যা মাংস ছিঁড়ে ফেলে; এবং premolars এবং molars, যা শিয়ার এবং চূর্ণ। সংক্ষেপে, একটি কুকুরের দাঁত অস্ত্র এবং খাদ্য কাটা বা ছিঁড়ে ফেলার সরঞ্জাম হিসাবে কাজ করে।
|
17 |
+
ক্যানাইনগুলি হল উপরের এবং নীচের ফ্যাং যার জন্য কুকুর (Dog) পরিবারের নামকরণ করা হয়েছিল। বেশিরভাগ মাংসাশী প্রাণীর মতো, দাঁতগুলি উঁচু-মুকুটযুক্ত এবং সূঁচযুক্ত, অনেক তৃণভোজী প্রাণীর চওড়া, পিষে যাওয়া দাঁতের মতো নয়
|
18 |
+
|
19 |
+
মানুষের সাথে কুকুরের সম্পর্ক
|
20 |
+
মানুষ এবং কুকুরের সম্পর্ক একটি পুরাতন এবং পরিপূর্ণ প্রাণী সম্পর্ক। মানুষ খুব পুরাতন সময় থেকেই কুকুরকে নিয়ে সম্পর্ক রাখছে। এই সম্পর্ক বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়েছে। কুকুরকে মানুষ পালন করে এবং তাদের সাথে ভালো সম্পর্ক রাখতে হয়।
|
21 |
+
নিচে কুকুর ও মানুষের সম্পর্কে কিছু উল্লেখযোগ্য তথ্য দেয়া হলো:
|
22 |
+
কুকুর হিসেবে মানুষ তাদের পালন করে এবং সম্পর্ক রাখে। সাধারণত কুকুর একটি পালতু প্রাণী হিসাবে পরিচিত।
|
23 |
+
কুকুর মানুষের জন্য বিভিন্ন কাজে সাহায্যকারী হতে পারে। এগুলোর মধ্যে সম্পর্ক রাখা, নিরাপত্তা বিষয়ক কাজে সহায়তা, খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
|
24 |
+
|
25 |
+
কুকুরের জীবনকাল
|
26 |
+
কুকুরের জীবনকাল প্রকৃতির প্রতি নির্ভর করে ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। সাধারণত এর জীবনকাল প্রথম সন্তান হওয়া পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ে ভাগ করা যায়।
|
27 |
+
নিচে কুকুরের জীবনকালের কিছু উল্লেখযোগ্য পর্যায় দেওয়া হলো:
|
28 |
+
১. জন্ম: কুকুর (Dog) জন্ম নিয়ে সাধারণত বিশেষ কিছু নেই। তারা সাধারণত ৮ থেকে ১২ সপ্তাহ পর্যন্ত মায়ের গর্ভে থাকে এবং এরপর জন্ম নেয়।
|
29 |
+
২. বাল্যবস্থা: কুকুরের বাল্যবস্থা প্রায় দুই মাস থেকে ছয় মাস পর্যন্ত সময় ধারণ করে। এই সময়ে কুকুর মা তার সন্তানকে শুষক খাবার খাওয়ানো শুরু করে দেয়। এছাড়াও কুকুর এই সময়ে আকার বা আকৃতি পরিবর্তন করে।
|
30 |
+
৩. যৌবন: কুকুরের যৌবনের সময় প্রায় ছয় মাস থেকে এক বছর পর্যন্ত হতে পারে।
|
31 |
+
|
32 |
+
কুকুর সম্পর্কে কিছু তথ্য –
|
33 |
+
কুকুর (Dog) মানুষের একটি পরিচিত প্রাণী যা সাধারণত পাল্তু প্রাণী হিসাবে পরিচিত। কুকুরদের বিভিন্ন জাতি ও প্রকার থাকতে পারে এবং তাদের প্রকৃতি ও বৈশিষ্ট্যগুলি জাতি অনুযায়ী পার্থক্য দেখাতে পারে। নিচে কিছু কুকুর সম্পর্কিত তথ্য দেয়া হলো:
|
34 |
+
কুকুর (Dog) সাধারণত মানবের সঙ্গে জীবনযাপন করে। তারা সাধারণত মানবের সঙ্গে থাকার জন্য একটি পরিচিত পালতু প্রাণী।
|
35 |
+
কুকুর (Dog) সাধারণত বড় প্রাণী না হলেও তার জ্ঞান এবং সমস্ত প্রকৃতির সাথে ভালো সম্পর্ক থাকলে তা একটি বড় অবদান করতে পারে।
|
36 |
+
বিভিন্ন জাতির কুকুরের বিভিন্ন আচরণ পদ্ধতি থাকে। কিছু জাতি ভালো খাওয়া পছন্দ করে, কিছু জাতি খেতে ভালোবাসে না। কিছু জাতি পরিবারের সাথে থাকতে ভালোবাসে, আর কিছু জাতি একা থাকতে পছন্দ করে।
|
37 |
+
|
38 |
+
লোভী কুকুর
|
39 |
+
একদিন এক লোভী কুকুর একটি কসাইয়ের দোকান থেকে এক টুকরা মাংস চুরি করল। তা দেখে কসাই তার পেছনে তাড়া করল, কিন্তু কিছুদূর গিয়ে সে তার দোকানে ফিরে এলো। এদিকে কুকুরটা ভীষণ ভয়ে ছুটতে লাগল প্রাণপণে।
|
40 |
+
অনেকটা পথ যাওয়ার পর সে পেছন ফিরে দেখল কসাইটা আসছে কি না। কাউকে আসতে না দেখে সে তার গতি কমিয়ে ধীরে-সুস্থে হাঁটতে লাগল। কিছুক্ষণ পর সে এসে পৌঁছল একটা ছোট্ট নদীর কাছে।
|
41 |
+
সে তখন মুখে মাংসের টুকরাটা নিয়ে সেতুর ওপর দিয়ে নদী পার হতে লাগল । সে সময় নদীর পরিষ্কার পানিতে তার প্রতিবিম্ব ভেসে উঠল। লোভী আর বোকা কুকুরটা নিজের প্রতিবিম্বকে মনে করল মাংস মুখে নিয়ে অন্য একটি কুকুর দাঁড়িয়ে আছে। সেই মাংসের টুকরাটাও পাওয়ার জন্য তার খুব লোভ হলো।
|
42 |
+
সে এবার অন্য কিছু চিন্তা-ভাবনা না করে নদীর পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়ল। সঙ্গে সঙ্গে স্রোত তাকে ভাসিয়ে নিয়ে গেল। বহু কষ্টে সাঁতরে তীরে এসে কুকুরটা মনে মনে বলল, আরেকটু হলেই মরেছিলাম। লোভে পাপ, আর পাপে বিপদ।
|
43 |
+
সে আর কখনও লোভ না করার শপথ নিয়ে বাড়ির পথে হাঁটতে শুরু করল।
|
44 |
+
|
45 |
+
|
46 |
+
এক বুদ্ধিমান কুকুরের গল্প
|
47 |
+
|
48 |
+
একজন বিত্তবান লোক সিদ্ধান্ত নিলেন, শিকারের উদ্দেশ্যে আফ্রিকায় কিছুদিনের জন্য ঘুরে আসবেন। তাই তিনি একমাত্র সহকারী হিসেবে তার বিশ্বস্ত কুকুরটিকে নিয়ে বের হয়ে পড়লেন। একদিন কুকুরটি একটা প্রজাপতিকে খেলাচ্ছলে তাড়া করতে করতে হটাৎ লক্ষ্য করল যে সে তার বাসস্থান থেকে অনেক দূরে চলে এসেছে এবং পথ হারিয়ে ফেলেছে। তাই সে পথভ্রষ্ট হয়ে উদ্দেশ্যহীনভাবে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় ঘুরে বেরাচ্ছিল। এমতাবস্থায় হটাৎ সে খেয়াল করল একটা চিতা মধ্যাহ্নভোজের উদ্দেশ্যে তার দিকে ক্ষিপ্রবেগে ছুটে আসছে। কুকুরটা নিজের মনে মনে ভাবল “মহা বিপদে পড়লাম দেখি!” তারপর সে খেয়াল করল পাশেই মাটির উপর কিছু হাড় পরে আছে। তৎক্ষনাৎ সে হাড়গুলোর কাছে গেল এবং তার দিকে আসা চিতার দিকে পিছন ফিরে হাড়গুলো চিবোতে শুরু করল। ঠিক যখন চিতাটা লাফ দিয়ে তাকে ধরার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে ঠিক তখনি কুকুরটা জোড়ালো কন্ঠে বলা শুরু করল- “চিতাটা তো খুব-ই মুখরোচক, মনে হয় এদিকে আশেপাশে খুজলে এরকম আরও পাওয়া যাবে।” বলার সাথে সাথে সে একটা জোরালো ঢেকুর ছাড়লো। এই কথা শোনার চিতাটা তার আক্রমনে দ্রুত বিরতি দিল, দেখে মনে হচ্ছিল যে তাকে ভীতি চেপে ধরেছে এবং সে আস্তে আস্তে লুকিয়ে গাছের আড়ালে সটকে পড়ল। ভয়মাখা কন্ঠে চিতাটা মনে মনে বলে উঠল, “কুকুরটা খুব কাছাকাছি এবং যে কোনো মূহুর্তে আমাকে পেয়ে যেতে পারে।” ঠিক এ সময়, একটা বানর কাছাকাছি কোনো গাছে বসে পুরো ব্যাপারটা প্রত্যক্ষ করছিল। সে চিন্তা করল যে, “এই পুরো ব্যাপারটা চিতাকে বুঝিয়ে বলতে পারলে চিতার সাথে বানর গুষ্টির সম্পর্কটা আরও মজবুত হবে এবং তাদের জাতিকে রক্ষার জন্য চিতার সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন বেশ জরুরী।”
|
49 |
+
যেই চিন্তা সেই কাজ। এদিকে কুকুরটা শুধু দেখল যে বানরটা খুব দ্রুতবেগে চিতার দিকে ছুটে যাচ্ছে এবং সাথে সাথে সে বুঝতে পারল নিশ্চয়ই কিছু হতে চলেছে। বানরটি খুব দ্রুতই চিতার কাছে পৌছে গেল এবং নিজের নিরাপত্তার আশায় সে পুরো ঘটনাটি চিতাকে খুলে বলল। নিজের এই বোকামি বুঝতে পেরে বাঘটি ক্রোধে উন্মত্ত হয়ে বানরটিকে বলল- “তবে তাই যদি ঠিক হয় তবে আমার পিঠে চড়ে বস, দেখ আমি কিভাবে বজ্জাত কুকুরটিকে কিভাবে শায়েস্তা করি।” তখন কুকুর দেখল চিতা তার পিঠে বানরকে নিয়ে কাছে আসছে। সে মনে মনে ভাবছিল “প্রাণপনে দৌড়ানো বাদে আমার এখন আর কি করার আছে?” তবুও কুকুরটি আক্রমনকারীদের দিকে পেছন ফিরে বসে এমন ভাব ধরল যে সে তখনও তাদেরকে দেখতে পায় নি। এবং যখন তারা কুকুরের কথা শোনার মত কাছাকাছি চলে এসেছে ঠিক তখনি কুকুর বিরক্তভরা কন্ঠে বলে উঠল “বজ্জাত বানরটা কই গেল!!! আমি ওকে ঠিক বিশ্বাস করতে পারি না। আধ ঘন্টা হল ওকে আরেকটা চিতা (ভুলিয়ে-ভালিয়ে) আনতে পাঠালাম এবং এখন পর্যন্ত সে ফিরে আসেনি।” এটা শোনার পর চিতা নিজের প্রাণের নিরাপত্তার কথা ভেবে ছুটে পালাল।
|
50 |
+
|
51 |
+
কুকুরের সত্য গল্প
|
52 |
+
‘কুকুরের বিশ্বস্ততা নিয়ে আমরা অহরহ ঘটনা বা গল্প শুনেছি, কিন্তু আপনি জানেন কি কুকুরই একমাত্র প্রাণী যে নিজের জীবনের চেয়ে তাঁর মাস্টারকে বেশি ভালবাসে’। অবাক হয়েছেন হয়তো, কিন্��ু এর চেয়েও বেশি অবাক হবেন কিছু সত্য ঘটনা পড়লে। আপনাদের সাথে ৫টি রিয়েল ডগস টেইল (কুকুরের গল্প) শেয়ার করব আজ...
|
53 |
+
|
54 |
+
১. চিয়াও বাও
|
55 |
+
|
56 |
+
চলতি বছরে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা দিয়েই শুরু করছি। ঘটনাটি ঘটেছে চিনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান শহরে। ডেইলি মেইল জানিয়েছে, গত ফেব্রুয়ারিতে চীনে যখন মহামারী মারাত্মক পর্যায়ে ওই কুকুরটি তখন হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান শহরের তাইকং হাসপাতালে তার প্রবীণ মালিকের সঙ্গে আসে। দুর্ভাগ্যবশত তার মালিক পাঁচদিনের মাথায়ই মারা যায়। মালিক মারা গেছে সেই তিন মাস আগে। বিশ্বস্ত কুকুর সেটি ‘মানতে নারাজ’। দিনের পর দিন বসে আছে হাসপাতালের লবিতে। মালিক ফিরবেন বলে…।
|
57 |
+
সাত বছর বয়সী পুরুষ মনগ্রিল কুকুরটির নতুন নাম দেয়া হয়েছে জিয়াও বাও (ছোট্ট প্রহরী)। হাসপাতালের ক্লিনার ৬৫ বছর বয়সী সু ইউসেন জানান, ‘উহানে করোনায় মৃত ৩ হাজার ৮৬৯ জনের মধ্যে কুকুরটির মালিকও একজন। তিন মাস আগে তিনি মারা যান। এরপর থেকে চিয়াও বাওকে হাসপাতাল থেকে অনেক চেষ্টা করেও সরানো যায়নি। বাধ্য হয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে খাওয়াচ্ছে।
|
58 |
+
|
59 |
+
২. হাচিকো
|
60 |
+
|
61 |
+
যে কুকুরের কথা না বললে বিশ্বস্ততার গল্প বলা অসম্পূর্ণ থাকে তাঁর নাম হাচিকো। সত্য এই ঘটনাটি জাপানের। ১৯২৩ সালে ইজাবুরো উনো টোকিও ইউনিভার্সিটির কৃষি বিভাগের একজন নামকরা প্রফেসর। তার আদরের কুকুরটি তার নিত্যসঙ্গী, আকিতাইনু প্রজাতির এই পশমী কুকুরের নাম হাচিকো। আদর করে প্রফেসর তাকে ডাকতেন হাচি।
|
62 |
+
প্রফেসর ইজাবুরো প্রতিদিন ট্রেনে জাপানের শিবুয়া স্টেশন থেকে টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া আসা করতেন। সকালবেলা হাচিকোকে সাথে নিয়ে শিবুয়া স্টেশনে আসতেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবার জন্য ট্রেনে উঠতেন হাচিকে বিদায় দিয়ে। লেকচার শেষ করে বিকাল ৩টার সময় তিনি আবার ফিরে আসতেন শিবুয়া স্টেশনে, হাচি তার জন্য অপেক্ষা করতো। এরপর দুজনে মিলে হেঁটে একসাথে বাড়ি ফিরতেন। হাচির ছোট্ট পৃথিবীতে এই সময়গুলোই ছিল সত্যিই আনন্দের।
|
63 |
+
হাচিকো বাকি জীবনটা এভাবেই হয়তো কাটিয়ে দিতে পারত, কিন্তু সেটা আর হয়ে উঠল না। ১৯২৫ সালে প্রফেসর ইজাবুরো যখন ক্লাসে লেকচার দিচ্ছিলেন, সেই অবস্থাতেই তার হঠাৎ করে স্ট্রোক হয়। পরবর্তীতে হাসপাতালে নেবার পর সেখানে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। এদিকে বিকাল ৩টায় হাচিকো উৎসাহ নিয়ে শিবুয়া স্টেশনে অপেক্ষা করে রইলো তাঁর মাস্টারের প্রত্যাবর্তনের জন্য, কিন্তু কেউ এলো না।
|
64 |
+
বিশ্বস্ত হাচিকো পরেরদিন ঠিক ৩টা বাজে শিবুয়া স্টেশনে গিয়ে একই জায়গায় বসে রইল। ভাবখানা এমন, প্রফেসর এখনই ট্রেন থেকে নেমে তাকে কোলে তুলে নেবে আর সে লেজ নেড়ে তাকে সম্ভাষণ জানাবে। কিন্তু প্রিয় মাস্টার আজও এলো না। কিন্তু হাচি হাল ছেড়ে দিল না। পরের ১০ বছর হাচিকো তাঁর মাস্টারের জন্য শিবুয়া স্টেশনে একই ভাবে অপেক্ষা করেছে।
|
65 |
+
একসময় প্রফেসরের ছাত্রদের কানে এই ঘটনাটি গেলো। একদিন তার একজন ছাত্র ট্রেনে চেপে শিবুয়া স্টেশনে হাচিকোকে দেখতে এলো। সেখানে হাচিকোকে দেখে সে অবাক হয়ে গেল। ফিরে গিয়ে সে একটি দৈনিক পত্রিকায় হাচিকোর এই প্রভুভক্ততা নিয়ে কলাম ছেপে দিল, এতে সমগ্র পৃথিবী জেনে গেলো হাচিকোর কথা। বিশ্বস্ততা আর বন্ধুবাৎসল্যের প্রতীক হিসেবে সবাই হাচির উদাহরণ দিতে লাগলো। বিভিন্ন দেশ থেকে লোকজন হাচিকোকে একনজর দেখার জন্য জাপানে আসতে লাগলো।
|
66 |
+
টানা ১০ বছর ধরে ঝড়-বৃষ্টি, ঠান্ডা এমনকি বার্ধক্য আর আর্থ্রাইটিসকে উপেক্ষা করে শিবুয়া স্টেশনে হাচি তাঁর মাস্টারের জন্য অপেক্ষা করে অবশেষে ১৯৩৫ সালের এক শীতল সন্ধ্যায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে প্রাকৃতিকভাবেই। তার মৃতদেহ শহরের লোকজন রাস্তায় আবিষ্কার করলো। সবাই গভীর আলিঙ্গনে তাকে বুকে তুলে নিল, তার শেষকৃত্য সম্পন্ন করলো প্রফেসর ইজাবুরোর কবরের পাশেই। ১০ বছর পর প্রিয় মাস্টারকে পাশে পেয়ে হাচিকোর কেমন লাগছিল, তা আর জানা সম্ভব হয়নি।
|
67 |
+
হাচিকো সমস্ত বিশ্বের মানুষের হৃদয়ে নাড়া দিয়েছিল, তার মৃত্যুতে কেঁদেছিল হাজারো মানুষ। তার স্মরণে শহরবাসী শিবুয়া স্টেশনে একটি ব্রোঞ্জের মূর্তি তৈরি করে ঠিক সেই জায়গাটায়, যেখানে সে প্রফেসরের জন্য প্রতিদিন অপেক্ষা করতো। তাকে নিয়ে তৈরি করা হয়েছে ‘হাচিকো: এ ডগস টেইল’ চলচ্চিত্র, যা অনেক জনপ্রিয়তা অর্জন করে
|
68 |
+
|
69 |
+
৩. ববি: দ্য ওয়ান্ডার ডগ
|
70 |
+
|
71 |
+
এবারের গল্পটা আমেরিকার অবিস্মরণীয় কুকুর ববিকে নিয়ে, যে মাস্টারের ভালবাসার টানে অসম্ভবকে সম্ভব করে ফেলেছিল। ২ বছর বয়সী এই স্কচ কলি প্রজাতির কুকুরটি ছিল ফ্র্যাঙ্ক ব্রেজিয়ারের চোখের মণি।
|
72 |
+
|
73 |
+
১৯২৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে ফ্র্যাঙ্ক ও এলিজাবেথ ব্রেজিয়ার দম্পত্তি ছুটি কাটানোর জন্য নিজ শহর সিলভারটন থেকে ইন্ডিয়ানা স্টেটের উদ্দেশ্যে গাড়ি করে বেরিয়ে পড়েন। সঙ্গে নিয়ে যান আদরের কুকুর ববি কে। কিন্তু কিভাবে যেনো ইন্ডিয়ানায় পৌঁছে ছোট্ট বব�� আলাদা হয়ে গেল ফ্র্যাঙ্ক ব্রেজিয়ার থেকে। অনেক খুঁজেও ববিকে না পেয়ে ববিকে খুজে পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়ে ভগ্ন হৃদয়ে ফ্র্যাঙ্ক-ব্রেজিয়ার সিলভারটনের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলেন।
|
74 |
+
|
75 |
+
১৯২৪ সালের ফেব্রুয়ারির এক সকালে সিলভারটনে নিজেদের বাড়ির দরজায় আঁচড়ের শব্দে এলিজাবেথ ব্রেজিয়ার একটু যেন ভয়ই পেলেন। ধীরে ধীরে গিয়ে সদর দরজা খুলতেই যা দেখলেন তা বিশ্বাস করা যায় না। তার আদরের ববি দরজায় সটান দাঁড়িয়ে আছে! ববির অবস্থা অবশ্য খুবই খারাপ। ববির শরীর হাড্ডিসার, বিভিন্ন অংশ লোমহীন, পায়ের নখ বালি আর পাথরে লেগে ক্ষয়ে গেছে। টানা ছয় মাসেরও বেশি সময় নিয়ে প্রায় দুই হাজার ৫৫১ মাইল পথ পাড়ি দিয়ে ইন্ডিয়ানা থেকে সিলভারটন এসেছে ববি।
|
76 |
+
|
77 |
+
ছোট্ট এই চারপেয়ে নায়কের কথা রাতারাতি সবাই জেনে গেল। ববির অভাবনীয় কীর্তির জন্যে সে পেয়েছিল অজস্র পুরষ্কার। তার মাঝে রয়েছে অনেকগুলো মেডেল, ট্রফি, শহরের বিভিন্ন স্থানের চাবি, এমনকি দামি পাথরখচিত কলারও। ববিকে নিয়ে ‘রিপ্লি’স: বিলিভ ইট অর নট’ এ একটি লেখাও স্থান পেয়েছিল, এমনকি তার এই নায়কোচিত ভূমিকায় ববি নিজেই অভিনয় করেছিল একটি ফিল্মে।
|
78 |
+
|
79 |
+
তিন বছরের মাথায় ১৯২৭ সালে ছোট্ট সাহসী ববির মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর পোর্টল্যান্ডে পোষা প্রাণীদের কবরস্থানে তাকে কবর দেয়া হয়। সিলভারটনের মানুষ তখন তার সম্মানে একটি পোষা প্রাণীদের প্যারেডের আয়োজন করে। এরপর থেকে প্রতিবছর এই প্যারেডটি নিয়মিত হয়ে আসছে। সিলভারটন শহরে ববির ছোট্ট একটি বাড়ি এবং অবিকল ববির মতো দেখতে একটি ছোট্ট ভাস্কর্যও তৈরি করে শহরবাসী। তাকে দেয়া হয় শহরের নাগরিকের মর্যাদাও।
|
80 |
+
|
81 |
+
৪. রুসওয়ার্প
|
82 |
+
|
83 |
+
রুসওয়ার্প বাদামি-কালো রঙের ইংলিশ কলি জাতের এই কুকুরটি ছিল শহরের বাসিন্দা গ্র্যাহাম ন্যুটেলের বিশ্বস্ত সঙ্গী। ১৯৮০ সালের দিকে ইংল্যান্ডের গার্সডেল ছোট একটা রেলস্টেশনের রেললাইনকে টিকিয়ে রাখতে শহরের প্রায় ৩২ হাজার মানুষের পিটিশন সাক্ষর পায়ের থাবাও সংযুক্ত করে অংশ নেয় রুসওয়ার্প নিজেও। ১৪ বছর বয়সী রুসওয়ার্পের পায়ের ছাপকে বৈধ একটি সাক্ষর হিসেবেই পিটিশনে রাখা হয়েছিল। তবে মূল গল্প এটি নয়।
|
84 |
+
১৯৯০ সালের ২০ জানুয়ারির সুন্দর এক সকালে মাস্টার গ্র্যাহাম ন্যুটেল সঙ্গী রুসওয়ার্পকে সঙ্গে করে তার হোম টাউন বার্নলি থেকে সারাদিনের জন্যে ঘুরতে বের হন, গন্তব্য ল্যান্ড্রিনড্রড ওয়েলস। কিন্তু সেদিন সারাদিন শেষেও গ্র্যাহাম আর রুসওয়ার্প বাড়ি ফিরে এলো না। দিন গড়িয়ে যখন পরদিন সকাল হলো, তখন টনক নড়ল প্রতিবেশীদের, শুরু হলো খোঁজাখুঁজি। সপ্তাহজুড়ে পোস্টার লিফলেট ইত্যাদি বিলি করা হলো, কিন্তু গ্র্যাহাম আর রুসওয়ার্পের কোন খোজ কেউ পেল না।
|
85 |
+
এর প্রায় তিন মাস পর অবশেষে এপ্রিলের ৭ তারিখ একটি পাহাড়ি ঝর্ণার পাশে তাদের খোঁজ পাওয়া যায়। গ্র্যাহাম জীবিত ছিলেন না, কিন্তু রুসওয়ার্প বৃষ্টি আর ১১ সপ্তাহের ভয়াবহ শীত উপেক্ষা করেও মাস্টারের মৃতদেহকে পাহারা দিয়ে রেখেছিল। ক্ষুধা-তৃষ্ণা আর ঠান্ডায় জর্জরিত রুসওয়ার্প মারাত্মক দুর্বল হয়ে পড়েছিলো। সে এতই দুর্বল ছিল যে, তাকে পাহাড় থেকে বয়ে নিয়ে আসতে হয়। কিন্তু এত কিছুর পরও সে তাঁর মাষ্টারের মৃতদেহ ফেলে কোথাও যায়নি।
|
86 |
+
শহরে পর্যাপ্ত চিকিৎসার পর রুসওয়ার্প খানিকটা সুস্থ হয়ে ওঠে। কিন্তু বেঁচে থাকার ইচ্ছা বুঝি মাস্টারের সাথেই চলে গিয়েছিল তার। আর তাই অনেক সেবা-শুশ্রূষার পরও মাস্টারের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার একটু পর সে-ও পৃথিবী ছেড়ে চলে যায়। গ্র্যাহামের কফিনটি কবরে নামানোর সময় রুসওয়ার্প করুণ গলায় যেভাবে আর্তনাদ করেছিল, গার্সডেলের বাসিন্দারা বহুদিন তা মনে রেখেছে।
|
87 |
+
|
88 |
+
৫. নাম নেই (হুমায়ুন আহমেদ পরিবারের পোষ্য)
|
89 |
+
|
90 |
+
বরেণ্য সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ তার আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ ‘আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই’-তে একটি ঘটনা উল্লেখ করেছেন। তার পিতা তখন ময়মনসিংহ জেলার কোনো এক থানার ওসি। বাসভবন হিসেবে পেয়েছেন পুরনো কোনো এক জমিদার বাড়ি। চারদিকে ঝোপজঙ্গল। এক দুপুরে হুমায়ূন আহমেদ ভাই-বোন নিয়ে উঠোনে খেলছিলেন। দালানের সিঁড়িতে বসে ছিল তার সবচেয়ে ছোটভাই আহসান হাবীব (বর্তমানে প্রখ্যাত কার্টুনিস্ট ও লেখক)। হঠাৎ একটি গোখরো সাপ বেরিয়ে এসে ফণা তুলে আহসান হাবীবকে ছোবল মারতে উদ্যত হয়। সবাই কিংকর্তব্যবিমূঢ়।
|
91 |
+
হুমায়ূন আহমেদের বাবার একটি পোষা কুকুর ছিল। কালবিলম্ব না করে কুকুরটি হুংকার দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে সাপটির ওপর, কামড়ে ধরে সাপটির উদ্যত ফণা সমেত মাথা, কামড়ে ওটাকে ছিঁড়ে ফেলে। সাপের নিশ্চল দেহ পড়ে থাকে সিঁড়িতে, নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পায় শিশু আহসান হাবীব।
|
92 |
+
তিন দিন পর কুকুরটির দেহে সাপের বিষক্রিয়া দেখা দিতে শুরু করে। নিস্তেজ হয়ে পড়তে থাকে আস্তে আস্তে। একপর্যায়ে শরীরে ঘা হয়ে যায়। তীব্র যন্ত্রণায় দিন-রাত কাতরাতে থাকে কুকুরটি। সপ্তাহ খানেক এ দ���শ্য দেখে আর সহ্য করতে পারলেন না ওসি ফয়জুর রহমান আহমেদ। নিজের ব্যক্তিগত বন্দুক দিয়ে গুলি করে মেরে যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিলেন কুকুরটিকে।
|
93 |
+
হুমায়ূন আহমেদ লিখেছেন— ‘মৃত কুকুরটিকে মাটিচাপা দেয়ার পর তাঁর পিতা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলেছিলেন, যে আমার পুত্রের জীবন রক্ষা করল, আমি তাকে নিজ হাতে হত্যা করলাম!’ (এখানে হুমায়ূন আহমেদের পিতার কোনো অপরাধ নেই। যদিও তিনি অপরাধবোধে ভুগছিলেন। প্রিয় কুকুরটিকে অসহ্য যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিতেই তিনি ওটাকে হত্যা করেছিলেন।)
|
94 |
+
|
95 |
+
৬. গেলার্ট (বোনাস গল্প)
|
96 |
+
|
97 |
+
সত্য ঘটনার পাশাপাশি এবার একটি পুরানো লোকগাঁথার বিখ্যাত একটি কুকুরের করুণ গল্প শোনা যাক। অনেক আগে উত্তর ওয়েলসের বেডগেলার্ট গ্রামে লিওয়েলিন নামে এক রাজপুত্র ছিল। তারই পোষা কুকুরের নাম গেলার্ট (জানা গেছে, ইংল্যান্ডের রাজা জন লিওয়েলিনকে উপহার হিসেবে গেলার্টকে দিয়েছেলেন)। মাস্টারের জন্য সর্বদা নিজের জীবন দিতেও প্রস্তুত থাকতো গেলার্ট। আর তাই তো রাজপুত্র কখনও তাকে কাছছাড়া করতেন না, করতেন অসম্ভব আদর।
|
98 |
+
রাজপুত্র লিওয়েলিন ছিলেন খুব ভাল মাপের একজন শিকারী। শিকারে যাওয়ার সময় কখনওই গেলার্টকে রেখে যেতেন না। প্রতিটি শিকারে যাওয়ার সময় তিনি বিশেষ এক ধরনের ভেঁপু বাজাতেন, আর সেই শব্দে তার সবগুলো কুকুর বুঝে ফেলতো এটি শিকারে যাবার সংকেত। তৎক্ষণাৎ সবাই ছুটে আসতো, সেই সাথে গেলার্টও।
|
99 |
+
দুর্ভাগ্যজনক একদিন রাজপুত্র শিকারে যাওয়ার জন্য ভেঁপুতে আওয়াজ করেন। সেই আওয়াজ পেয়ে তার সব কুকুর ছুটে এল, কিন্তু কেন যেন গেলার্ট ভেঁপুর আওয়াজ খেয়াল করতে পারলো না। রাজপুত্র খানিকক্ষণ তাকে এদিক ওদিক খুঁজে মন ভার করে তাকে ছাড়াই শিকারে চলে গেলেন। প্রাসাদে রয়ে গেল তার স্ত্রী ও এক বছর বয়সী ছোট্ট ছেলে।
|
100 |
+
শিকার শেষে রাজপুত্র সন্ধ্যায় প্রাসাদে ফিরলেন। সবার প্রথমেই গেলার্ট তাকে স্বাগত জানাতে দৌড়ে এল। হঠাৎ রাজপুত্র খেয়াল করলেন, গেলার্টের সারা শরীরে আঁচড়ের চিহ্ন। চোয়াল রক্তমাখা, লাল টকটকে তাজা রক্ত ফোঁটায় ফোঁটায় ঝরে পড়ছে দাঁত বেয়ে নিচে। গেলার্ট মহা উত্তেজিত আর উৎফুল্ল। অজানা আশংকায় রাজপুত্রের মন ভারি হয়ে গেল, তিনি দৌড়ে নিজ কামরায় এলেন, গেলার্টও তাকে অনুসরণ করল। কামরায় এসে তিনি আঁতকে উঠলেন, তার ছোট ছেলেটির বিছানা ওলটানো, সমস্ত কামরা লন্ডভন্ড।
|
101 |
+
কিন্তু ছোট বাচ্চাটির কোনো চিহ্নই নেই কোথাও। রাজপুত���র গেলার্টের দিকে তাকিয়ে ভয়ঙ্কর রেগে উঠলেন। নিশ্চয়ই তার অনুপস্থিতিতে জানোয়ারটা তার বাচ্চাকে মেরে ফেলেছে, হয়তো খেয়েও নিয়েছে। আর দেরি করলেন না, খাপ থেকে তলোয়ার বের করে তিনি উৎফুল্ল গেলার্টের হৃৎপিণ্ড বরাবর তীক্ষ্ণ তলোয়ারটি ঢুকিয়ে দিলেন। পুরো সময়টা গেলার্ট অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল তাঁর মাস্টারের দিকে।
|
102 |
+
গেলার্ট যখন কাতর শব্দ করতে করতে মৃতপ্রায়, ঠিক তখন রাজপুত্র কোথায় যেন বাচ্চার একটি আওয়াজ শুনতে পেলেন। কী হচ্ছে বুঝতে না পেরে তিনি ছেলের বিছানাটি সরিয়ে দেখলেন, তা ছেলে হাসিমুখে শুয়ে আছে। আর ছেলেটির পাশেই বিশাল বড় এক নেকড়ে রক্তাক্ত অবস্থায় মরে পড়ে আছে। ঘটনাটি বুঝতে রাজপুত্রের এক মুহূর্তও দেরি হল না। তিনি বুঝলেন গেলার্ট আসলে নেকড়েটিকে মেরে বাচ্চাটিকে বাঁচিয়ে দিয়েছে।
|
103 |
+
আর সেই ঘটনাটি দেখাতেই মনিবের কাছে দৌড়ে গিয়েছিল সে। রাজপুত্র ছুটে গেলেন গেলার্টের কাছে, কিন্তু ততক্ষণে সে তার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে ফেলেছে। প্রিয় কুকুরকে নিজ হাতে হত্যা করে রাজপুত্র শোকে প্রায় পাগল হয়ে গেলেন। তারপর ভগ্ন হৃদয়ে গেলার্টের মৃতদেহ তার রাজ্যের সবচাইতে উঁচু জায়গায় সমাধিস্থ করলেন, যাতে সবাই তার এই বিশ্বস্ত কুকুরের কথা জানতে পারে। এরপর থেকে গেলার্ট মানুষের মনে ও গল্পে স্থান করে নিয়েছে।
|
104 |
+
|
105 |
+
বাঘ ও কুকুরের গল্প
|
106 |
+
রাত থেকে প্রচন্ড শীত পড়েছে। সকালেও হাড় কাঁপাকাঁপি অবস্থা। গুহা থেকে মুখ বের করে সূর্যের আলোর সন্ধান করছে সিংহ। বাঘ, শিয়াল, হরিণ, বানর, কিংবা হাতি কেউই নিজ নিজ বাসস্থান থেকে বের হওয়ার সাহস পাচ্ছে না। অপেক্ষা করছে সোনালি আলোর। কিন্তু সেও যেন আজ গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। তাই বনের সবাই চুপ মেরে শুয়ে আছে।
|
107 |
+
সকাল গড়িয়ে দুপুর। একই অবস্থা। এদিকে বাঘের পেটে প্রচন্ড ক্ষুধা পেয়েছে। ছোঁ ছোঁ ডনকুস্তি খেলছে পেটের ভেতর। বাইরেও ভীষণ ঠান্ডা। বিপাকে পড়ে যায় বাঘ। অবশেষে শরীর ঝেরে উঠে পড়ে। গুহার বাইরে এসে দেয় এক ভোঁ-দৌড়। দৌড় দেওয়ার কারণে শরীরটা বেশ গরম হয়েছে। এবার শিকার খুঁজতে থাকে বাঘ। ঘুরতে ঘুরতে ক্লান্ত হয়ে পড়ে সে। কোনো শিকারই খুঁজে পাচ্ছে না। এই শীতে কী কেউ বাসার বাইরে যায়! এই ভেবে বাঘ হতাশ হয়। তারপর ভাবে যাই নদীর কিনারে গিয়ে দেখি কিছু পাই কি না।
|
108 |
+
পাশেই তিতির নদী। নদীর পাড়ে গিয়ে কিছুই খুঁজে পায় না সে। শেষে নদীর জলের দিকে তাকিয়ে মাছ খুঁজতে থাকে। কিন্তু একটি মাছও দেখতে না পেয়ে সে ভাবে, জলের নিচেও কি তবে শীত পড়েছে! পেটের ক্ষুধা আর শিকার না পাওয়ার বেদনায় বাঘের হাত-পা যেন ঝিমিয়ে আসছে। নড়তে পারছে না আর। কোনো রকম ধীরে ধীরে হেঁটে নিজের বাসস্থানে ফেরার চেষ্টা করছে।
|
109 |
+
পাশ দিয়েই হেঁটে যাচ্ছিল এক কুকুর। সে দেখল, বাঘের অবস্থা নাজেহাল। কুকুর মনে মনে ভাবছে, এই তো সুযোগ। সেদিন বাঘ আমার ছয়টি বাচ্চাকে গিলে খেয়েছিল। আজ আমি এর প্রতিশোধ নেব। সে একটু দূর থেকে বাঘকে ডেকে বলে, ‘ও মশাই, এত বিমর্ষ দেখাচ্ছে কেন আপনাকে? বাঘ বলে, ‘আর বলিস নে ভাই। অনেকক্ষণ ধরে শিকার খুঁজে খুঁজে আমি ক্লান্ত। কিছুই পেলাম না। পেটের ক্ষুধায় হাঁটতেও পারছি না।’ কুকুর মুচকি হেসে বলে, ‘এদিকে আপনি শিকার খুঁজছেন আর ওদিকে ঝর্ণার কিনারে এক মহিষ মরে পড়ে আছে। যান ওদিকে যান। গিয়ে পেটভরে খেয়ে আসুন। বাঘ বলে, সত্যি! এক্ষুনি যাচ্ছি। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।’
|
110 |
+
কুকুর বাঘের পেছন পেছন ঝর্ণার দিকে যাচ্ছে। সে ফন্দি আঁটছে। সুযোগ পেলেই বাঘকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেবে খাদে। এদিকে বাঘের যেন রাস্তা ফুরোয় না। যেতে যেতে দেখা হলো এক বাঘিনির সঙ্গে। কুশলবিনিময় করে বাঘ তাকে রাতের খাবারের দাওয়াত দেয়। কারণ বাঘ মনে মনে ভাবছে একটি মহিষের মাংস একা খেয়ে শেষ করা যাবে না। কিছু মাংস গুহায় নিয়ে যাবে। তারপর রাতের খাবারে বাঘিনির সঙ্গে বসে আড্ডা হবে আর খাওয়াও হবে।
|
111 |
+
বাঘিনির কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাঘ ঝর্ণার কাছে চায়। কিন্তু কিছুই দেখতে পেল না। সে একেবারে পাহাড়ের কিনারে গিয়ে ঝর্ণার নিচের দিকে তাকায়। আর তক্ষুনি কুকুর দৌড়ে এসে বাঘকে ধাক্কা মারে। অমনি বাঘ গিয়ে খাদে পড়ে যায়। রক্তে লাল হয় খাদ। বাঘ মারা যায়। কুকুর তার সন্তান হত্যার প্রতিশোধ নেয়। সে মনে মনে বলতে থাকে, কারো সঙ্গে অন্যায় করলে তার ফল এক দিন না এক দিন ভোগ করতেই হয়।
|
112 |
+
|
113 |
+
উত্তম ও অধম
|
114 |
+
কুকুর আসিয়া এমন কামড়
|
115 |
+
দিল পথিকের পায়
|
116 |
+
কামড়ের চোটে বিষদাঁত ফুটে
|
117 |
+
বিষ লেগে গেল তাই।
|
118 |
+
ঘরে ফিরে এসে রাত্রে বেচারা
|
119 |
+
বিষম ব্যথায় জাগে,
|
120 |
+
মেয়েটি তাহার তারি সাথে হায়
|
121 |
+
জাগে শিয়রের আগে।
|
122 |
+
বাপেরে সে বলে র্ভৎসনা ছলে
|
123 |
+
কপালে রাখিয়া হাত,
|
124 |
+
তুমি কেন বাবা, ছেড়ে দিলে তারে
|
125 |
+
তোমার কি নাই দাতঁ?
|
126 |
+
কষ্টে হাসিয়া আর্ত কহিল
|
127 |
+
“তুই রে হাসালি মোরে,
|
128 |
+
দাঁত আছে বলে কুকুরের পায়ে
|
129 |
+
দংশি কেমন করে?”
|
130 |
+
কুকুরের কাজ কুকুর করেছে
|
131 |
+
কামড় দিয়েছে পায়,
|
132 |
+
তা বলে কুকুরে কামড়ানো কিরে
|
133 |
+
মানুষের শোভা পায়?
|
134 |
+
|
135 |
+
ল্যাব্রাডর কুকুরঃ
|
136 |
+
বিগত ৩০ বছর ধরে এ প্রজাতির কুকুর মানুষের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে অবস্থান করছে। এ প্রজাতির কুকুর মানুষের কাছে সবচেয়ে পছন্দীয় থাকার জন্য এরা সবধরনের কাজ করে থাকে। এতে করে তারা তাদের মালিকের প্রতি সবচেয়ে অনুগত থাকে। এ ধরনের কুকুরকে অলরাউন্ডার বলা চলে। কেননা এরা একাধারে শিকার, অভিব্যাক্তি প্রকাশ, ট্রাকিং করে থাকে এবং অনুগত।
|
137 |
+
জার্মান শেপার্ডঃ
|
138 |
+
এ প্রজাতির কুকুর যে কারও পছন্দের। কারন এরা দুরে কোথাও ভ্রমণের সময় বিশ্বস্ত সঙ্গী হিসাবে নিজেদের অনেকবার প্রমান করেছে। এজন্য এরা পুলিশ এবং মিলিটারীর বিশ্বস্ত সঙ্গী হয়। এদের সার্ভিস কুকুরও বলা হয়। কারন এরা নির্দিষ্ট কাজের জন্য সঠিকভাবে সার্ভিস দেয়। তবে এরা তাদের আসল মালিকের প্রতি অনেক বিশ্বস্ত থাকে।
|
139 |
+
|
140 |
+
গোল্ডেন কুকুরঃ
|
141 |
+
এরা সবচেয়ে বুদ্ধিমান কুকুরদের মধ্যে একটি। অন্য প্রজাতির কুকুরের চেয়ে এরা মানুষের সাথে বেশি মিশুক প্রকৃতির। বিভিন্ন সিনেমাতে অনেক সময় কুকুর ব্যবহার করা হয়। স্টার গ্রুপ সহ অন্য প্রোডাকশনের ছবিতে এ প্রজাতির কুকুর ব্যবহার করা হয়। স্টার গ্রুপের “এয়ার বাড” “ফুল হাউস” “হোমওয়ার্ড বাউন্ড” ইত্যাদি সিনেমাতে অলরেডি এ প্রজাতির কুকুর অভিনয় করে জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
|
142 |
+
ফ্রেঞ্চ বুলডগঃ
|
143 |
+
ফরাসিদের বড় ব্যাক্তিত্ব রয়েছে। এ প্রজাতির কুকুরের ক্ষেত্রে কথাটি অনেক গুরুত্বপূর্ন। তবে এরা একটু অলস প্রকৃতির এজন্য এদের সামান্য এক্সারসাইজের প্রায়োজন হয়। তবে পরিবারের সাথে পোষা প্রানী হিসাবে এদের দারুন মানায়। কারন এদের আকার-আকৃতি সহ আরও অনেক দিক থেকে মানুষের কাছে পোষা প্রাণী হিসাবে অনেক প্রাধান্য পায়। মানুষের নিকট জনপ্রিয়তার জন্য এদের দাম একটু বেশি
|
144 |
+
বুলডগঃ
|
145 |
+
এ প্রজাতির কুকুর আমেরিকা, হাঙ্গেরি এবং যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। এদের দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি মানুষের পছন্দ তালিকায় অনেক উপরে রয়েছে। এদের উৎপত্তি ত্রয়োবিংশ শতাব্দীতে । এদের অনেক ক্ষেত্রে বিশেষ ভাবে ট্রেনিং দেওয়া হয়।
|
146 |
+
বীগলস কুকুরঃ
|
147 |
+
এ প্রজাতির কুকুর দেখতে অনেকটা মাঝারি আকৃতির। এদের ঘ্রানশক্তি অনেক বেশি। এরা দেখতে অনেকটা শিয়ালের শাবকের মত। এদের জীবনকাল ১২-১৫ বছর পর্যন্ত হয়ে থাকে। এ প্রজাতির কুকুরের উৎপত্তি ইংল্যান্ড, গ্রেট ব্রিটেন, যুক্তরাজ্য দেশগুলোতে।
|
148 |
+
পোডল কুকুরঃ
|
149 |
+
এ প্রজাতির কুকুরের যতগুলো জাত ���ছে সবগুলোই এই নামে পরিচিত। এটি একটি জনপ্রিয় জাতের কুকুর। এ জন্য এটি খেলনা অথবা টেডী হিসাবেও ব্যবহার করে থাকে। এদের শরীরের লোম সুন্দর ভাবে কাটা থাকে। এর লোমই এদের বাকি সব কুকুর থেকে আলাদা করে থাকে।
|
150 |
+
রটওয়েলার কুকুরঃ
|
151 |
+
এ কুকুরের উৎপত্তিস্থল জার্মানীতে। এদের জীবনকাল ৮-১০ বছর পর্যন্ত হয়ে থাকে। কিন্তু এরা এদের অভিভাবক বা মানুষকে বিশেষভাবে সুরক্ষা করে। তবে এরা তাদের মালিকের প্রতি সবচেয়ে বেশি অনুগত থাকে। যেহেতু এরা মালিকের প্রতি সবচেয়ে বেশি আনুগত্য থাকে সেহেতু এরা সহজেই ফ্যামিলিতে থাকতে পারে। বাহিরের দেশগুলোতে এসব কুকুরের সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের যথেষ্ট সখ্যতা থাকে। এদেরকে পারিবারিক সদস্যের মত আচরন করা হয়।
|
152 |
+
জার্মান পয়েন্টারঃ
|
153 |
+
এরা বাকিসব কুকুরের মত শিকার করতে পারে। তবে এদের বিশেষত্ব হল এরা বুদ্ধিমত্তার জন্য বিশেষ ভাবে পরিচিত। এদের ঘ্রানশক্তি প্রখর এবং এরা কোনকিছু অনুসন্ধান করতে পারদর্শী। এদের জীবনকাল ১২-১৪ বছর এবং এদের ট্রেনিং দিয়ে বিশেষ ভাবে উপযুক্ত করা যায়। কুকুরের সঙ্গে অন্য প্রানীর বিশ্বস্ততা তুলনা করা যায় না কারন এরা নিজেদের জীবন দেয় কিন্তু এদের মালিকের সর্বদা অনুগত থাকে।
|
154 |
+
ইয়োর্কোশায়ার কুকুরঃ
|
155 |
+
কুকুরদের মধ্যে যদি ফ্যাশন শো করা হয় তাহলে এরা অনায়সে ট্রফি জিতে নিবে। প্রাচীন ভিক্টোরিয়ার আমল থেকে যুগ যুগ ধরে এরা এদের রূপের জন্য প্রশংসিত। এজন্য এরা ফ্যাশান করতে পছন্দ করে। তবে এদের জীবনকাল ১৩-১৬ বছর পর্যন্ত হয় এবং এদের সর্বোচ্চ ওজন ৭ পাউন্ড পর্যন্ত হয়ে থাকে।
|
156 |
+
|
157 |
+
কুকুর কত দিন বাঁচে?
|
158 |
+
প্রাণী হিসেবে অনেকেরই কুকুর বেশ পছন্দ। সেটা পোষা হোক বা রাস্তার। ছোটখাটো এই প্রাণীটির বিশ্বস্ততা প্রবাদতুল্য। মানুষের সংস্পর্শে আসা প্রাণীদের মধ্যে কুকুরের চেয়ে বেশি বিশ্বস্ত প্রাণী খুব একটা দেখা যায় না। প্রয়োজনে জীবন দিতেও পিছপা হয় না। তা ছাড়া কুকুরের ঘ্রাণশক্তিও বেশ ভালো। তাই মানুষের আগেই অনেক কিছু বুঝতে পারে। বিপদে আগে থেকে সতর্ক করে দেয়। এরকম নানা কারণে হাজার বছর ধরে কুকুর পুষছে মানুষ। শিকার, অপরাধ শনাক্ত করা বা সঙ্গ দেওয়ার মতো কাজে এখনও কুকুর মানুষের নিত্য সঙ্গী।
|
159 |
+
বর্তমানে পৃথিবীতে প্রায় ৪৫০ জাতের কুকুর আছে। জাতভেদে কুকুরের আচরণ যেমন কিছুটা ভিন্ন হয়, তেমনি আকারেও হয় ছোটবড়। প্রশ্ন হলো, জাতভেদে কি কুকুরের আয়ু ভিন্ন হয়? কুকুর মূলত কতদিন বাঁচে?
|
160 |
+
নানাজাতের কুকুরের জীবনকালের গড় নির্ণয় করলে করলে দেখা যায়, এগুলোর আয়ু ১০ থেকে ১৩ বছরের মতো। তবে জাতসহ আরও কিছু বিষয়ভেদে এটা অনেক কম-বেশি হতে পারে। এখন পর্যন্ত পৃথিবীর সবচেয়ে বয়স্ক কুকুর হিসেবে বিবেচনা করা হয় ‘ব্লুয়ি’কে। অস্ট্রেলিয়ান ক্যাটল প্রজাতির এই কুকুর বেঁচে ছিল প্রায় সাড়ে ২৯ বছর।
|
161 |
+
কুকুরের জীবনকাল নিয়ে প্রচুর গবেষণা হয়েছে পৃথিবীজুড়ে। বর্তমানেও যুক্তরাষ্ট্রে এমন একটি গবেষণা চলমান। এর নাম ‘দ্য ডগ এজিং প্রজেক্ট’। এর মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা বোঝার চেষ্টা করছেন, জিন, জীবনযাপন পদ্ধতি এবং পরিবেশ কুকুরের বয়সবৃদ্ধি প্রক্রিয়ায় কেমন প্রভাব ফেলে।
|
162 |
+
এ গবেষণা বলছে, কুকুরের বেঁচে থাকার ‘গড়’ বয়স ১৫ থেকে একটু বেশি। গবেষণা যেহেতু, একটি সঠিকভাবে বলা প্রয়োজন। এখানে ‘গড়’ মানে, মধ্যক। গড় তিনভাবে হিসাব করা যায়। এক, এভারেজ বা মিন বা গড়; দুই, মিডিয়ান বা মধ্যক এবং তিন, মোড বা প্রচুরক। সহজ করে বললে, যে সংখ্যাগুলো নিয়ে হিসাব করা হচ্ছে, তাদের ঠিক মধ্যিখানের মানটিকে বলা হয় মধ্যক। তবে অনেকক্ষেত্রেই গড় ও মধ্যক এক হয় না। তা ছাড়া গড়মান নির্ণয়ের আরও নানা পদ্ধতি আছে। তবে বাংলায় এগুলোকে সাধারণত এক কথায় ‘গড়’-ই বলা হয়।লিঙ্গ, অর্থাৎ স্ত্রী-পুরুষ ভেদে কুকুরের জীবনকাল কিছুটা ভিন্ন হয়। আকারে ছোট প্রজাতির কুকুরগুলো তুলনামূলক বেশি বাঁচে। সবকিছুরই অবশ্য ব্যাতিক্রম আছে। যেমন ফ্রেঞ্চ ম্যাস্টিফ। তুলনামূলক ছোটজাতের কুকুর। গড় জীবনকাল ৫ থেকে ৬ বছর। কুকুরের মধ্যে এটাই সবচেয়ে কম বাঁচে বলে মনে করা হয়।কুকুরের আয়ুষ্কাল তো জানা গেল। এবার এগুলোর আয়ু কীভাবে কাজ করে, সেটা একটু জানা যাক। বিষয়টা বেশ অদ্ভুত। কুকুরের বয়স মানুষের মতো একই হারে বাড়ে না। মানুষ ১৫ বছরে যতখানি বাড়ে, কুকুর জীবনের প্রথম এক বছরেই সে পরিমাণ বেড়ে ওঠে। অর্থাৎ মানুষের বৃদ্ধির সঙ্গে তুলনা করলে, কুকুরের প্রথম বছরটিকে বলা যায় মানুষের ১৫ বছরের সমান। এই প্রথম বছরেই কুকুর জৈবিকভাবে প্রায় ১৫ বছরের মতো বেড়ে ওঠে, পরিপক্ব হয়।
|
163 |
+
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক কুকুরের বয়স প্রায় নিখুঁতভাবে বের করার একটি উপায় আবিষ্কার করেছেন। কুকুরের আসল বয়স বের করার জন্য স্বাভাবিক বয়সের প্রকৃত লগারিদমকে (Natural logarithm) ১৬ দিয়ে গুণ করতে হবে। এরপর গুণফলের সঙ্গে যোগ করতে হবে ৩১।
|
164 |
+
ধরা যাক, একটি কুকুর আমাদের হিসেবে ১০ বছর আগে জন্ম নিয়েছে। সেই কুকুরের জৈবিক বয়স বের করতে চাইলে, ১০-এর প্রকৃত লগারিদম (Natural Logarithm), অর্থাৎ প্রায় ২.৩-কে ১৬ দিয়ে গুণ করতে হবে। এরপর গুণফলের সঙ্গে ৩১ যোগ করলে পাওয়া যাবে প্রায় ৬৮ বছর। (২.৩×১৬)+৩১=৬৮। তার মানে, আমাদের হিসেবে এই কুকুরের বয়স ১০ হওয়ার কথা থাকলেও জৈবিক পরিপক্কতার দিক থেকে এর বয়স পেরিয়ে গেছে প্রায় ৬ দশক।
|
text datasets/flower.txt
ADDED
@@ -0,0 +1,113 @@
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
1 |
+
ফুল
|
2 |
+
বা পুষ্প হল উদ্ভিদের বিশেষ একটি মৌসুমী অঙ্গ যা উদ্ভিদের প্রজননে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এটি উদ্ভিদের পরিবর্তিত বিটপ। ফুল এর সৌন্দর্যের জন্য জনপ্রিয়। ফুল থেকে উদ্ভিদের ফল হয়।
|
3 |
+
|
4 |
+
সপুষ্পক উদ্ভিদের যে রুপান্তরিত অংশ ফল ও বীজ উৎপাদনের মাধ্যমে বংশবিস্তারে সাহায্য করে তাকে ফুল বলে। কাণ্ড, শাখা-প্রশাখা শীর্ষে অথবা পাতার কক্ষে ফুল জন্মায়। ফুল উদ্ভিদের সবচেয়ে দৃষ্টি নন্দন অংশ। সমস্ত সপুষ্পক উদ্ভিদের ফুল ফোটে ও এরা উদ্ভিদের বংশবিস্তারে সাহায্য করে। ফুলের জৈবিক কাজ হলো প্রজনন সহজতর করা, সাধারনত ডিম্বানু দিয়ে শুক্রানু মিলনের জন্য একটি প্রক্রিয়া সরবরাহ করে। পরাগায়ন দুই ধরনের। যথা:স্ব-পরাগায়ন এবং ক্রস পরাগায়ন। স্ব-পরাগায়ন তখন ঘটে যখন অ্যান্থার থেকে পরাগ একই ফুলের কলষ্কে বা একই গাছের অন্য কোন ফুলের উপর জমা হয়। অন্যদিকে ক্রস পরাগায়ন হলো একই প্রজাতির ভিন্ন গাছের উপর এক ফুলের অ্যান্থার থেকে অন্য ফুলের কলষ্কে পরাগ স্থানান্তর।ফুলের মধ্যে স্ব-পরাগায়ন ঘটে যেখানে স্ট্যামেন এবং কার্পেল একই সময়ে পরিপক্ক হয় এবং অবস্থান করা হয় যাতে পরাগ ফুলের কলষ্কে অবতরণ করতে পারে। কিছু ফুল নিষেক ছাড়াই ডায়াস্পোরস তৈরি করে (পার্থেনোকার্পি)।ফুল গুলিতে স্পোরাঙ্গিয়া এবং গেমটোফাইট গুলি বিকাশ ঘটে এমন সাইট থাকে। অনেক ফুল প্রানিদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে,যাতে তাদের পরাগ জন্য ভেক্টর হতে পারে। নিষেকের পরে ফুলের ডিম্বাশয় বীজ সমন্বিত ফলের মধ্যে বিকাশ লাভ করে। ফুলের পুনঃ উৎপাদন সহজতর করার পাশাপাশি, ফুল দীর্ঘদিন ধরে মানুষের দ্বারা তাদের পরিবেশের সৌন্দর্য আনতে এবং রোম্যান্স , অনুষ্ঠান, জাদুবিদ্যা,ধর্ম, ওষুধ এবং খাবারের উৎসব হিসেবে ব্যবহার হয়েছে।
|
5 |
+
|
6 |
+
ফুলের অংশসমূহ
|
7 |
+
একটি ফুলের দুটা প্ৰধান অংশ থাকে: অঙ্গজ অংশ, আর প্ৰজনন অংশ। একটি আদৰ্শ ফুলের চার প্রকারের অংশ বোঁটার ওপর অবস্থিত পুষ্পাক্ষ নামক একটা অংশের উপর চক্রাকারে বিন্যস্ত থাকে। পুষ্পাক্ষ এর উপর সাজানো এই প্ৰধান অংশ চারটি হল: বৃতি মণ্ডল, দল মণ্ডল, পুং স্তবক আর স্ত্ৰী স্তবক।
|
8 |
+
অংশসমূহ
|
9 |
+
ফুলের দুটি অত্যাবশ্যকীয় অংশ রয়েছে: উদ্ভিজ্জ অংশ যা পাপড়ি এবং পেরিয়ান্থে সংশ্লিষ্ট কাঠামো নিয়ে গঠিত এবং প্রজনন বা যৌন অংশ।একটি স্টিরিওটাইপিক্যাল ফুল একটি ছোট বৃন্তের শীর্ষে যুক্ত চার ধরনের কাঠামো নিয়ে গঠিত। এই ধরনের প্রতিটি অংশ আধারের উপর একটি ঘূর্ণায়মানভাবে সাজানো হয়।
|
10 |
+
|
11 |
+
একটি ফুল একটি রূপান্তরিত অঙ্কুর বা অক্ষের উপর একটি নির্ধারিত শীর্ষমুকুল(apical meristem) থেকে বিকশিত হয় ( নির্ধারিত মানে অক্ষটি একটি সেট আকারে বৃদ্ধি পায়)।এটিতে সংকুচিত মধ্যপর্ব রয়েছে, এমন কাঠামো বহন করে যা শাস্ত্রীয় (classical) উদ্ভিদের রূপবিদ্যায় অত্যন্ত পরিবর্তিত পাতা হিসাবে ব্যাখ্যা করা যায়। [৩]তবে বিশদ উন্নয়নমূলক গবেষণায় দেখা গেছে যে পুংকেশরগুলি প্রায়শই কমবেশি পরিবর্তিত কাণ্ডের ( কৌলোম ) মতো শুরু হয় যা কিছু ক্ষেত্রে এমনকি প্রশাখার মতোও হতে পারে। [৪] [৫]সপুষ্পক উদ্ভিদের পুংস্তবকের বিকাশে সমগ্র বৈচিত্র্যকে বিবেচনায় রেখে, আমরা পরিবর্তিত পাতা (ফাইলোম), পরিবর্তিত কান্ড (কৌলোম) এবং পরিবর্তিত শাখা (shoot) এর মধ্যে একটি ধারাবাহিকতা খুঁজে পাই।
|
12 |
+
কার্যাবলী
|
13 |
+
ফুলের প্রধান উদ্দেশ্য হল ব্যক্তি এবং প্রজাতির প্রজনন।সমস্ত সপুষ্পক উদ্ভিদ হেটারোস্পোরাস, অর্থাৎ, প্রতিটি পৃথক উদ্ভিদ দুই ধরনের স্পোর তৈরি করে ।মিয়োসিসের মাধ্যমে মাইক্রোস্পোরগুলি পরাগধানীর(anther) ভিতরে উৎপাদিত হয় এবং ডিম্বাশয়ের মধ্যে থাকা ডিম্বাণুগুলির মধ্যে মেগাস্পোরগুলি উৎপাদিত হয়।পরাগধানী(anther) সাধারণত চারটি মাইক্রোস্পোরাঞ্জিয়া নিয়ে গঠিত এবং ডিম্বাণু একটি ইন্টেগুমেন্টেড মেগাস্পোরাঞ্জিয়াম।উভয় ধরনের স্পোর স্পোরাঞ্জিয়ার অভ্যন্তরে গ্যামেটোফাইটে বিকাশ লাভ করে।সমস্ত হেটেরোস্পোরাস উদ্ভিদের মতো, গ্যামেটোফাইটগুলোও স্পোরের অভ্যন্তরে বিকশিত হয়, অর্থাৎ, তারা এন্ডোস্পোরিক।
|
14 |
+
|
15 |
+
বেশিরভাগ উদ্ভিদ প্রজাতির মধ্যে, প্রত্যেক ফুলে কার্যকরী গর্ভপত্র(carpel) এবং পুংকেশর( stamen) উভয়ই থাকে।উদ্ভিদবিদরা এই ফুলগুলিকে নিখুঁত বা উভলিঙ্গ এবং প্রজাতিগুলিকে হারমাফ্রোডিটিক হিসাবে বর্ণনা করেন।উদ্ভিদ প্রজাতির একটি সংখ্যালঘুর মধ্যে, তাদের ফুলে দুই ধরনের প্রজনন অঙ্গের মধ্যে একটি বা অন্য প্রজনন অঙ্গের অভাব থাকে এবং তাদেরকে অপূর্ণ বা একলিঙ্গ হিসাবে বর্ণনা করা হয়।যদি একটি প্রজাতির পৃথক উদ্ভিদের প্রতিটিতে পুং ও স্ত্রীলিঙ্গের প্রতিটির একলিঙ্গী ফুল থাকে তবে প্রজাতিটি মনোইসিয়াস।বিকল্পভাবে, যদি প্রতিটি পৃথক উদ্ভিদে একই লিঙ্গের শুধুমাত্র একলিঙ্গী ফুল থাকে তবে প্রজাতিটি দ্বিজাতিক ।
|
16 |
+
|
17 |
+
এছাড়াও ফুল থেকে ফল তৈরি হয়
|
18 |
+
বীজের ক্রমবিকাশ
|
19 |
+
মূল নিবন্ধ: বীজের ক্রমবিকাশ
|
20 |
+
|
21 |
+
জাইগোট গঠনের পরে এটি নিউক্লিয়াস এবং কোষীয় বিভাজনের মাধ্যমে বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, যাকে মাইটোসিস বলা হয় এবং অবশেষে কোষের একটি ছোট গ্রুপে পরিণত হয়।এর একটি অংশ ভ্রূণে পরিণত হয়, অন্যটি সাসপেন্সর এ পরিণত হয়; এটি এমন একটি কাঠামো যা ভ্রূণকে এন্ডোস্পার্মে পরিণত করে এবং পরে এটিকে সনাক্ত করা যায় না।এই সময়ে দুটি ছোট প্রাইমর্ডিয়াও তৈরি হয়, যা পরবর্তীতে কটাইলেডনে বা বীজপত্রে পরিণত হয় এবং এটি শক্তির ভাণ্ডার হিসেবে ব্যবহৃত হয়।যে সমস্ত উদ্ভিদের মধ্যে এই প্রাইমর্ডিয়ার একটি জন্মায় তাদের বলা হয় একবীজপত্রী(মনোকটাইলেডন), আর যদি প্রাইমর্ডিয়ার দুটি জন্মায় তবে তাদের বলা হয় (ডাইকোটাইলেডন) দ্বিবীজপত্রী ।পরবর্তী পর্যায়টিকে টর্পেডো পর্যায় বলা হয় এবং এতে বেশ কয়েকটি বীজের মূল গঠনের বৃদ্ধি জড়িত, যার মধ্যে রয়েছে: রেডিকেল (ভ্রুণ মূল), এপিকোটাইল ( ভ্রূণীয় স্টেম), এবং হাইপোকোটাইল , (মূল/অঙ্কুর সংযোগস্থল)।শেষ ধাপে বীজের চারপাশে ভাস্কুলার টিস্যু বিকশিত হয়
|
22 |
+
|
23 |
+
ক্রমবিকাশ
|
24 |
+
একটি ফুল একটি রূপান্তরিত অঙ্কুর বা অক্ষের উপর একটি নির্ধারিত শীর্ষমুকুল (apical meristem) থেকে বিকশিত হয় (নির্ধারিত মানে অক্ষ একটি সেট আকারে বৃদ্ধি পায়)। এটিতে সংকুচিত ইন্টারনোড বা মধ্যপর্ব রয়েছে, এমন গঠন রয়েছে যা শাস্ত্রীয় উদ্ভিদের রূপবিদ্যায় সম্পূর্ণ রূপান্তরিত পাতা হিসাবে ব্যাখ্যা করা যায়।[৯]তবে বিশদ উন্নয়নমূলক গবেষণায় দেখা গেছে যে পুংকেশরগুলি প্রায়শই কমবেশি পরিবর্তিত কাণ্ডের ( কৌলোম ) মতো শুরু হয় যা কিছু ক্ষেত্রে এমনকি শাখার মতোও হতে পারে। [৪] [৫]সপুষ্পক উদ্ভিদের এন্ড্রোসিয়ামের বিকাশে সমগ্র বৈচিত্র্যকে বিবেচনায় রেখে, আমরা পরিবর্তিত পাতা (ফাইলোম), পরিবর্তিত ডালপালা (কৌলোম) এবং পরিবর্তিত শাখা (কান্ড) এর মধ্যে একটি ধারাবাহিকতা খুঁজে পাই।
|
25 |
+
রূপান্তর
|
26 |
+
ফুলের রূপান্তর হল একটি উদ্ভিদের জীবনচক্রের সময় ঘটা প্রধান পর্যায়ের পরিবর্তনগুলির মধ্যে একটি।রূপান্তরটি অবশ্যই এমন একটি সময়ে ঘটতে হবে যা নিষিক্তকরণ এবং বীজ গঠনের জন্য অনুকূল, সুতরাং সর্বাধিক প্রজনন সাফল্য নিশ্চিত করা।এই চাহিদাগুলি পূরণ করার জন্য একটি উদ্ভিদ গুরুত্বপূর্ণ এনডোজেনাস এবং পরিবেশগত সংকেতগুলি ব্যাখ্যা করতে সক্ষম হয় যেমন উদ্ভিদ হরমোনের স্তরের পরিবর্তন এবং মৌসুমী তাপমাত্রা এবং ফটোপিরিয়ড পরিবর্তন। [১২]অনেক বহুবর্ষজীবী এবং বেশিরভাগ দ্বিবার্ষিক উদ্ভিদের ফুলের জন্য স্থানীয়করণের( vernalization)প্রয়োজন হয়।এই সংকেতগুলির আণবিক ব্যাখ্যা হল ফ্লোরিজেন নামক একটি জটিল সংকেতের স্থানান্তরের মাধ্যমে, যাতে কনস্ট্যানস, ফ্লাওয়ারিং লোকাস সি এবং ফ্লাওয়ারিং লোকাস টি সহ বিভিন্ন ধরনের জিন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ফ্লোরিজেন প্রজননের জন্য অনুকূল অবস্থায় পাতায় উৎপাদিত হয় এবং কুঁড়িতে ও বর্ধনশীল শীর্ষে বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় এবং রূপগত পরিবর্তনের জন্য ভূমিকা রাখে।
|
27 |
+
|
28 |
+
সূর্যমুখী ফুল
|
29 |
+
একটি সূর্যমুখী ফুলে ২ থেকে ৩ হাজার বীজ থাকে। এ গাছ প্রায় ৩ মিটার লম্বা হয়। ফুল সূর্যের মতো দেখতে এবং সূর্যের দিকে মুখ করে থাকে বলে, এর নাম সূর্যমুখী। এর বীজ হাঁস মুরগির খাদ্যরূপে ও তেলের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই বীজ যন্ত্রে মাড়াই করে তেল বের করা হয় ৷ তেলের উৎস হিসেবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সূর্যমুখীর ব্যাপক চাষ হয়। সমভুমি এলাকায় শীত ও বসন্তকালে, উঁচু লালমাটি এলাকায় বর্ষাকালে ও সমুদ্রকুলবর্তী এলাকায় শীতকালীন শস্য হিসাবে চাষ করা হয়। ১৯৭৫ সাল থেকে সূর্যমুখী একটি তেল ফসল হিসেবে বাংলাদেশে আবাদ হচ্ছে। বর্তমানে রাজশাহী, যশোর, কুষ্টিয়া, নাটোর জেলা, পাবনা, দিনাজপুর, গাজীপুর, টাংগাইল প্রভৃতি জেলাতে এর ব্যাপক চাষ হচ্ছে।
|
30 |
+
সূর্যমুখীর তেল[২] ঘিয়ের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যা বনস্পতি তেল নামে পরিচিত। এই তেল অন্যান্য রান্নার তেল হতে ভাল এবং হৃদরোগীদের জন্য বেশ কার্যকর। এতে কোলেস্টেরলের মাত্রা অত্যন্ত কম। এছাড়া এতে ভিটামিন এ, ডি ও ই রয়েছে।
|
31 |
+
|
32 |
+
গোলাপ
|
33 |
+
গোলাপ হল রোজেই পরিবারের রোসা গণের এক প্রকারের বহুবর্ষজীবী ফুলের গাছ।[১] এখানে তিন শতাধিক প্রজাতি এবং কয়েক হাজার হাজার জাত রয়েছে।[১] এগুলি এমন এক ধরনের গাছপালা গঠন করে যা ডালপালা খাড়া করে উঠতে বা পিছনে যেতে পারে, ডালপালাগুলির সাথে প্রায়শই তীক্ষ্ন কাঁটা সজ্জিত থাকে।[১] ফুল আকার এবং আকারে পৃথক হয় এবং সাধারণত বড় এবং শোভাকর হয়, সাদা থেকে হলদে এবং লাল রঙের হয়ে থাকে।[১] বেশিরভাগ প্রজাতি এশিয়ার স্থানীয়, এছাড়াও ইউরোপ, উত্তর আমেরিকা এবং উত্তর-পশ্চিম আফ্রিকার স্বল্প সংখ্যক দেশীয় প্রজাতিও দেখা যায়।[১] প্রজাতি, জাত এবং হাইব্রিড সমস্তই তাদের সৌন্দর্যের জন্য ব্যাপকভাবে জন্মানো হয় এবং প্রায়শই সুগন্ধযুক্ত হয়। গোলাপ বহু সমাজে সাংস্কৃতিকভাবে তাৎপর্য অর্জন করেছে।[১] ছোট, ক্ষুদ্রাকৃতি গোলাপ থেকে শুরু করে পর্বতা্রোহী আকার পর্যন্ত গোলাপ গাছের আকার বিস্তৃত হয়, যার উচ্চতা সাত মিটার পর্যন্ত পৌঁছতে পারে।[১] বিভিন্ন প্রজাতি সহজেই সংকরিত হয় এবং এটি গার্ডেন রোজের বিস্তৃত আকারের বিকাশে ব্যবহৃত হয়েছে।[১]
|
34 |
+
গোলাপ নামটি ল্যাটিন রোসা থেকে এসেছে, যা সম্ভবত ওসকান থেকে নেওয়া হয়েছিল, গ্রীক (আইলিক-ক্র্যাডন) থেকে নেওয়া হয়েছিল, যা নিজেই পুরানো ফারসি শব্দ (ওড়্দি) থেকে ধার করা হয়েছিল, যা আভেস্টান ওয়ারিয়া, সোগদিয়ান ওয়ার্ড, পার্থিয়ান ওয়ারের সাথে সম্পর্কিত।কাণ্ড পাতাগুলোকে পর্যায়ক্রমে বহন করে। বেশিরভাগ প্রজাতিতে এগুলি ৫ থেকে ১৫ সেন্টিমিটার (২ থেকে ৫.৯ ইঞ্চি) লম্বা, পিনাতে (৩–) ৫–৯(১৩) প্ত্রক এবং উপপত্র সহ; পত্রকগুলিতে সাধারণত একটি মার্জিন থাকে এবং প্রায়শই কাণ্ডের নীচে কয়েকটি ছোট ছোট কাঁটা থাকে। বেশিরভাগ গোলাপগুলি পাতলা হয় তবে কয়েকটি (বিশেষত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে) চিরসবুজ বা প্রায় সবুজাভ হয়।
|
35 |
+
|
36 |
+
রোজা সেরিসিয়া ব্যতীত বেশিরভাগ প্রজাতির ফুলের পাঁচটি পাপড়ি থাকে, যার সাধারণত চারটি থাকে। প্রতিটি পাপড়ি দুটি স্বতন্ত্র ভাগে বিভক্ত এবং সাধারণত সাদা বা গোলাপী হয় যদিও কয়েকটি প্রজাতিতে হলুদ বা লাল। পাপড়িগুলির নীচে পাঁচটি বৃত্যংশ রয়েছে (বা রোসা সেরিসিয়ার ক্ষেত্রে, চারটি)। এগুলি উপরের থেকে দেখার সময় দৃশ্যমান হওয়ার জন্য যথেষ্ট দীর্ঘ হতে পারে এবং বৃত্তাকার পাপড়িগুলির সাথে পর্যায়ক্রমে সবুজ পয়েন্ট হিসাবে প্রদর্শিত হয়। একাধিক উচ্চতর ডিম্বাশয় রয়েছে যা অ্যাকেনেসে পরিণত হয়।[৪] গোলাপ পতঙ্গপরাগী হয়।
|
37 |
+
|
38 |
+
গোলাপের সামগ্রিক ফলগুলি বেরি জাতীয় কাঠামো বিশিষ্ট, যা গোলাপ হিপ নামে পরিচিত। চাষীরা সাধারণত ফল উৎপাদন করে না, কারণ ফুলগুলির পাপড়ি এত শক্তভাবে লাগানো থাকে যে, তারা পরাগায়নের জন্য জায়গা পায় না। বেশিরভাগ প্রজাতির ফল লাল বর্ণের হয় তবে কয়েকটি (যেমন: রোজা পিম্পিনেলিফোলিয়া) গাঢ় বেগুনি থেকে কালো রঙের থাকে। প্রতিটি হিপের মধ্যে একটি বহিরাগত মাংসল স্তর থাকে, হাইপানথিয়াম, এতে ৫-১৬০টি "বীজ" থাকে (মূলত শুকনো একজাতীয় ফল যাকে অ্যাকেনেস ��লে) একটি সূক্ষ্ম, তবে শক্ত ও চুলযুক্ত। কিছু প্রজাতির গোলাপের হিপ, বিশেষত ডগ রোজ (রোজা ক্যানিনা) এবং রুগোসা গোলাপ (রোজা রুগোসা) যে কোনও উদ্ভিদের উৎসগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ। হিপগুলি ফল ভোজী পাখি যেমন গায়ক পাখি এবং ওয়াক্সওয়িংস দ্বারা ভক্ষিত হয়, যা তাদের চারপাশে বীজ ছড়িয়ে দেয়। কিছু পাখি, বিশেষত ফিঞ্চগুলিও বীজ খায়।
|
39 |
+
|
40 |
+
গোলাপের ডাল বরাবর তীক্ষ্ন বৃদ্ধি, যদিও সাধারণত "কাঁটাগাছ" বলা হয়, প্রকৃ্তপক্ষে কাঁটা, হলো এপিডার্মিসের বহির্মুখ (কান্ডের টিস্যুটির বাইরের স্তর),যা সত্যিকারের কাঁটার তুলনায় পরিবর্তিত ডালপালা হয়। গোলাপের কাঁটাগুলো সাধারণত কাস্তে আকৃতির হয়, যা গোলাপের উপর অন্য গাছের সাথে ঝুলতে সহায়তা করে। কিছু প্রজাতিতে যেমন- রোজা রুগোসা এবং রোজা পিম্পিনেলিফোলিয়াতে ঘনভাবে সোজা কাঁটা রয়েছে, সম্ভবত প্রাণী দ্বারা আক্রমণ হ্রাস করার জন্য এটি একটি অভিযোজন, তবে সম্ভবত ক্ষয় কমাতে এবং তাদের শিকড়কে সুরক্ষিত করার জন্য অভিযোজন (উভয় প্রজাতিই প্রাকৃতিকভাবে উপকূলীয় বালিতে ও টিলাতে জন্মায়)। কাঁটার উপস্থিতি সত্ত্বেও, গোলাপকে প্রায়শই হরিণ আক্রমণ করে। কয়েকটি প্রজাতির গোলাপের কেবলমাত্র গবেষণামূলক কাঁটা রয়েছে, যার কোনও তীক্ষ্নবিন্দুও নেই।ফুল কাটা
|
41 |
+
গোলাপি গোলাপের একটি তোড়া
|
42 |
+
গোলাপ দেশীয় এবং বাণিজ্যিকভাবে ফুল কাটা উভয়ের জন্য একটি জনপ্রিয় ফসল। সাধারণত একে কুঁড়ি অবস্থায় কাটা হয় এবং তাদের বিক্রয় সময়ে প্রদর্শনের জন্য প্রস্তুত না হওয়া পর্যন্ত রেফ্রিজারেটেড অবস্থায় রাখা হয়।
|
43 |
+
শীতকালীন জলবায়ুতে, কাটা গোলাপগুলি প্রায়শই গ্রীনহাউসে জন্মানো হয় এবং উষ্ণ দেশে এগুলি ফুলের আবহাওয়ার দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এবং কীটপতঙ্গ এবং রোগ নিয়ন্ত্রণ কার্যকরভাবে করা যায় তা নিশ্চিত করার জন্য তারা আচ্ছাদনের অধীনেও জন্মাতে পারে। কয়েকটি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় দেশে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে গোলাপ জন্মে এবং এগুলি সারা বিশ্বের বাজারে বিমানের মাধ্যমে প্রেরণ করা হয়।[১০]
|
44 |
+
রঙিন জল ব্যবহার করে কিছু ধরনের গোলাপ কৃত্রিমভাবে বর্ণযুক্ত অরা হয়, যেমন- রংধনু গোলাপ।
|
45 |
+
সুগন্ধি
|
46 |
+
জেরানিয়ল (C
|
47 |
+
10H
|
48 |
+
18O)
|
49 |
+
গোলাপের সুগন্ধিগুলো গোলাপ তেল (গোলাপের আতরও বলা হয়) থেকে তৈরি করা হয়, যা গোলাপের চূর্ণিত পাপড়িগুলিকে ছড়িয়ে দিয়ে বাষ্প দ্বারা প্রাপ্ত অস্থায়ী প্রয়োজনীয় তেলের মিশ্রণ। সম্পর্কিত পণ্য হ'ল গোলাপ জল যা রান্না, প্রসাধনী, ঔষধ এবং ধর্মীয় অনুশীলনের জন্য ব্যবহৃত হয়। উৎপাদনের কৌশলটি পার্সিয়ায় উদ্ভূত হয়েছিল এবং এরপরে আরব এবং ভারত এবং আরও সম্প্রতি পূর্ব ইউরোপে ছড়িয়ে পড়ে। বুলগেরিয়া, ইরান ও জার্মানিতে গোলাপ ( রোসা × দামাসসিনা 'ত্রিগিন্টাপেতেলা') ব্যবহার করা হয়। বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলে সাধারণত রোজা সেন্টিফোলিয়া ব্যবহৃত হয়। তেল স্বচ্ছ ফ্যাকাশে হলুদ বা হলুদ-ধূসর বর্ণের হয়। 'রোজ অ্যাবসুলিউট' হেক্সেন দিয়ে দ্রাবক-আহরণ করা হয় এবং একটি গাঢ় রঙ এর তেল উৎপাদিত হয়, যা গাঢ় হলুদ থেকে কমলা রঙের হয়। উত্তোলিত তেলের ওজন ফুলের ওজনের প্রায় এক-তিন হাজার থেকে এক ছয়-হাজার ভাগ; উদাহরণস্বরূপ, এক গ্রাম তেল উৎপাদন করতে প্রায় দুই হাজার ফুলের প্রয়োজন।
|
50 |
+
গোলাপের আতরের প্রধান উপাদান হল সুগন্ধযুক্ত অ্যালকোহল জেরানিয়োল এবং এল সিট্রোনেলল এবং গোলাপ কর্পূর, অ্যালকানেস দ্বারা গঠিত একটি গন্ধহীন কঠিন, যা গোলাপ তেল থেকে পৃথক হয়।[১১] β- দামাসসিনোন ঘ্রাণ সৃষ্টিতে একটি উল্লেখযোগ্য অবদানকারী।খাদ্য এবং পানীয়
|
51 |
+
|
52 |
+
রোজা ক্যানিনার হিপ
|
53 |
+
রোজ হিপগুলি মাঝে মধ্যে জাম, জেলি, মারমেলড এবং স্যুপ তৈরিতে ব্যবহৃত হয় বা মূলত তাদের উচ্চ ভিটামিন c-এর জন্য চায়ের সাথে তৈরি করা হয়। গোলাপ হিপ সিরাপ তৈরি করতে এগুলি ফিল্টার করা হয়। গোলাপ হিপগুলি গোলাপ হিপ বীজ তেল উৎপাদন করতে ব্যবহৃত হয় যা ত্বকের পণ্য এবং কিছু মেকআপ পণ্যগুলিতে ব্যবহৃত হয়।[১২]
|
54 |
+
|
55 |
+
গোলাপজল দিয়ে তৈরী গোলাপজাম
|
56 |
+
গোলাপজল খুব স্বাদযুক্ত এবং এটি মধ্যপ্রাচ্য, পার্সিয়া এবং দক্ষিণ এশীয় খাবারগুলিতে বিশেষত তুর্কি ডিলাইট,[১৩] বারফি, বাকলভা, হালভা, গোলাপ জামুন, কানাফেহ এবং নওগাত মিষ্টিতে ব্যবহৃত হয় । গোলাপের পাপড়ি বা ফুলের কুঁড়ি মাঝে মধ্যে সাধারণ চা স্বাদযুক্ত করতে ব্যবহার করা হয়, বা ভেষজ চা তৈরির জন্য অন্যান্য গুল্মের সাথে মিলিত হয়। গুলকান্দ নামে গোলাপের পাপড়িগুলির একটি মিষ্টি সংরক্ষণ ভারতীয় উপমহাদেশে প্রচলিত।
|
57 |
+
ফ্রান্সে গোলাপের সিরাপের প্রচুর ব্যবহার রয়েছে, যা সাধারণত গোলাপের পাপড়ি থেকে বের করে নেওয়া হয়। ভারতীয় উপমহাদেশে, রুহ আফজা নামে একটি ঘন স্কোয়াশ জনপ্রিয় যা আইসক্রিম এবং কুলফির মতো গোলাপের স্বাদযুক্ত হ���মায়িত মিষ্টান্নগুলিতে ব্যবহার করা হয়।[১৪][১৫]
|
58 |
+
গোলাপ ফুল খাদ্য হিসাবে ব্যবহৃত হয়, সাধারণত স্বাদকারক হিসাবে বা খাবারে তাদের গন্ধ যুক্ত করতে ব্যবহৃত হয়। অন্যান্য ছোট ছোট ব্যবহারের মধ্যে রয়েছে ক্যান্ডিড গোলাপের পাপড়ি।
|
59 |
+
ঔষধ
|
60 |
+
দ্যা গোলাপ হিপ, যা সাধারণত আর.ক্যানিনা থেকে পাওয়া যায়, ভিটামিন সি এর ক্ষুদ্র উৎস হিসাবে ব্যবহৃত হয়। বহু প্রজাতির ফলের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ভিটামিন থাকে এবং এটি খাদ্য পরিপূরক হিসাবে ব্যবহৃত হয়। বহু গোলাপ ভেষজ এবং লোক ঔষধে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। রোজা চিনেনসিস দীর্ঘকাল ধরে চীনা ঐতিহ্যবাহী ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এটি এবং অন্যান্য প্রজাতিগুলি পেটের সমস্যাগুলির জন্য ব্যবহৃত হয়েছে, এবং ক্যান্সার বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের জন্য পরীক্ষা করা হচ্ছে
|
61 |
+
|
62 |
+
শাপলা
|
63 |
+
শাপলা (বৈজ্ঞানিক নাম: Nymphaeaceae) সপুষ্পক উদ্ভিদ পরিবারের এক প্রকার জলজ উদ্ভিদ। এ পরিবারভূক্ত সকল উদ্ভিদই শাপলা নামে পরিচিত। সাদা শাপলা ফুল বাংলাদেশের জাতীয় ফুল। এই ফুল সাধারণত ভারত উপমহাদেশে দেখা যায়। হাওড়-বিল ও দিঘিতে এটি বেশি ফোটে। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের কিছু জেলায় একে নাইল বা নাল বলা হয়।এই উদ্ভিদ প্রাচীনকাল থেকে বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। থাইল্যান্ড ও মায়ানমারে এই ফুল পুকুর ও বাগান সাজাতে খুব জনপ্রিয়। সাদা শাপলা বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, ইয়েমেন, তাইওয়ান, ফিলিপাইন, কম্বোডিয়া, লাওস, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, মিয়ানমার প্রভৃতি দেশের পুকুর ও হ্রদে দেখা যায়। এই ফুল পাপুয়া নিউগিনি এবং অস্ট্রেলিয়ার কিছু এলাকায়ও দেখা যায়। এই ফুল যেমন দেখা যায় চাষের জমিতে, তেমনই হয় বন্য এলাকায়। কাটা ধান ক্ষেতের জমে থাকা অল্প পানিতে এই ফুল ফুটে থাকতে দেখা যায়। বিশ্বে এই উদ্ভিদের প্রায় ৩৫টি প্রজাতি পাওয়া গেছে।শাপলা ফুল ভোর বেলা ফোটে এবং দিনের আলো বাড়ার সাথে সাথে পাঁপড়ি বুজে যায়। সরাসরি কাণ্ড ও মূলের সাথে যুক্ত থাকে। শাপলার পাতা আর ফুলের কাণ্ড বা ডাটি বা পুস্পদণ্ড পানির নিচে মূলের সাথে যুক্ত থাকে। আর এই মূল যুক্ত থাকে মাটির সঙ্গে এবং পাতা পানির উপর ভেসে থাকে। মূল থেকেই নতুন পাতার জন্ম নেয়। পাতাগুলো গোল এবং সবুজ রঙের হয় কিন্তু নিচের দিকে কালো রঙ। ভাসমান পাতাগুলোর চারদিক ধারালো হয়। পাতার দৈর্ঘ্য ২০-২৩ সে���্টিমিটার এবং এদের ব্যাপ্তি প্রায় ০.৯-১.৮ মিটার। শাপলা ফুল নানা রঙের দেখা যায় যেমনঃ গোলাপী, সাদা, নীল, বেগুনি ইত্যাদি। এই ফুলে ৪-৫টি বৃতি থাকে ও ১৩-১৫টি পাপড়ি থাকে। ফুলগুলো দেখতে তারার মত মনে হয়। কাপের সমান বৃতিগুলো ১১-১৪ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে। প্রায় বছরের সব সময় শাপলা ফুটতে দেখা যায় তবে বর্ষা ও শরৎ এই উদ্ভিদ জন্মানোর শ্রেষ্ঠ সময়.পলা ফুল অনেক রঙের হলেও কেবল সাদা শাপলা বাংলাদেশের জাতীয় ফুলের মর্যাদা পেয়েছে। এছাড়াও বাংলাদেশের পয়সা, টাকা, দলিলপত্রে জাতীয় ফুল শাপলা বা এর জলছাপ আঁকা থাকে।
|
64 |
+
|
65 |
+
এই ফুল শ্রীলংকারও জাতীয় ফুল। শ্রীলংকায় এই ফুল Nil Mānel নীল মাহানেল নামে পরিচিত। শ্রীলংকার ভাষায় নীল থেকে এই ফুলকে ইংরেজিতে অনেক সময় blue lotus বলা হয়। শ্রীলংকায় বিভিন্ন পুকুর ও প্রাকৃতিক হ্রদে এই ফুল ফোটে। এই জলজ উদ্ভিদের ফুলের বিবরণ বেশ কিছু প্রাচীন বই যেমন - সংস্কৃত, পালি ও শ্রীলংকান ভাষার সাহিত্যে প্রাচীনকাল থেকে "কুভালয়া", "ইন্ধিয়ারা", "নীলুপ্পালা", "নীলথপালা", "নীলুফুল" নামে পাওয়া গেছে যা শ্রেষ্ঠতা, শৃংখলা, পবিত্রতার প্রতীক। শ্রীলংকার বুদ্ধদের দৃঢ় বিশ্বাস গৌতম বুদ্ধের পায়ের ছাপে পাওয়া ১০৮ টি শুভ চিহ্নের মাঝে একটি ছিল এই শাপলা ফুল।শাপলা প্রাচীন যুগ থেকেই বিভিন্ন জাতীর প্রার্থনা বা বাগান সাজানোর পাশাপাশি খাবার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। যেমন: মিশর, চীন, জাপান ও এশিয়ার বিভিন্ন এলাকা শাপলার কাণ্ড বা ডাটা বা পুস্পদন্ড সবজী হিসেবে খাওয়া হয়। পূর্ণবিকশিত শাপলা ফুলের গর্ভাশয়ে গুড়ি গুড়ি বীজ থাকে। আঠালো এই বীজ বাংলাদেশের গ্রামের মানুষদের খেতে দেখা যায়। এই বীজ ভেজে একধরনের খাবার খৈ তৈরি হয় যার নাম “ঢ্যাপের খৈ”। উদ্ভিদটির গোড়ায় থাকে আলুর মত এক ধরনের কন্দ যার নাম শালুক, অনেকে এটি সব্জি হিসেবে খেয়ে থাকে।
|
66 |
+
নীল শাপলা ফুল ও লাল শাপলা ফুল ঘর সাজাতে ব্যবহৃত হয়। এটি বাগানের জলাধারে লাগানো বা অ্যাকোয়ারিয়ামে রাখার জন্য খুব জনপ্রিয় একটি উদ্ভিদ। কখনো কখনো এই উদ্ভিদ তাদের ফুলের জন্য বেড়ে উঠে।
|
67 |
+
ভারতে আম্বাল নামের আয়ুর্বেদিক ঔষুধ বানাতে শাপলাকে ঔষধি গাছ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এই ঔষধ অপরিপাকজনিত রোগের পথ্য হিসেবে কাজ করে। সাম্প্রতিক গবেষণায় পাওয়া গেছে এই উদ্ভিদে ডায়াবেটিক রোগের জন্য প্রয়োজনীয় ঔষুধি গুণাগুন রয়েছে।[৪] এই উদ্ভিদ পানি থেকে তুলে রোদে শুঁকিয়ে গবাদিপশুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
|
68 |
+
|
69 |
+
টিউলিপ
|
70 |
+
|
71 |
+
টিউলিপ (বৈজ্ঞানিক নাম: Tulipa) পাত্রে চাষাবাদের উপযোগী এক প্রকার পুষ্পজাতীয় উদ্ভিদ। এছাড়াও এটি বাগানে কিংবা বাণিজ্যিকভিত্তিতে জমিতেও চাষ করা হয়। অনেক প্রজাতির উদ্ভিদ দেখা যায়। গৃহের অঙ্গসৌষ্ঠব বৃদ্ধিকারী ফুল হিসেবে এর সুনাম রয়েছে।
|
72 |
+
বর্ষজীবি ও কন্দযুক্ত প্রজাতির এ গাছটি লিলিয়াসিয়ে পরিবারভূক্ত উদ্ভিদ। সংকরায়ণসহ টিউলিপের সকল প্রজাতিকেই টিউলিপ নামে ডাকা হয়। টিউলিপ প্রায় ১৫০ প্রজাতিতে বিভাজ্য এবং অগণিত সংকর প্রজাতি রয়েছে।টিউলিপ বর্ষজীবি ও বসন্তকালীন ফুল হিসেবে পরিচিত। এটি মুকুল থেকে জন্মায়। বিভিন্ন প্রজাতিতে এর উচ্চতা ভিন্নরূপ হয়। সচরাচর ৪ ইঞ্চি (১০ সে.মি.) থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ২৮ ইঞ্চি (৭১ সে.মি.) পর্যন্ত উচ্চতাসম্পন্ন হয়। অধিকাংশ টিউলিপই ডাঁটা থেকে একটিমাত্র মুকুলের মাধ্যমে বিকশিত হয়। কিন্তু কিছু প্রজাতিতে (যেমন - টিউলিপ তুর্কেস্টানিকা) কয়েকটি ফুল হতে পারে।
|
73 |
+
জমকালো ও আড়ম্বরপূর্ণ ফুলগুলো সাধারণতঃ কাপ কিংবা তারার আকৃতি হয়ে থাকে। এর তিনটি পুষ্পদল এবং তিনটি বহিঃদল রয়েছে। ফলে এর অভ্যন্তরভাগ গাঢ় রঙের দেখায়। টিউলিপে খাঁটি নীলাভ রঙ ব্যতীত বিভিন্ন রঙের হয়।[২][৩] এর ফল মোড়কে ঢাকা থাকে যা অনেকটা ক্যাপসুল আকৃতির। দুই সারিতে বীজ থাকে।[৪] হাল্কা থেকে ঘন বাদামী বর্ণের বীজগুলো খুবই পাতলা আবরণবিশিষ্ট। টিউলিপের ডাঁটায় অল্প কিছু পাতা থাকে। বৃহৎ প্রজাতিতে অনেকগুলো পাতা থাকতে পারে। সাধারণতঃ দুই থেকে ছয়টি পাতা থাকে। প্রজাতিভেদে এ পাতার সংখ্যা সর্বোচ্চ ১২টি হতে পারে। পাতাগুলো নীলাভ সবুজ রঙের হয়।বাণিজ্যিকভিত্তিতে অটোম্যান সাম্রাজ্যে চাষাবাদ শুরু হলেও পরবর্তীকালে নেদারল্যান্ডে বাণিজ্যধর্মী আবাদ শুরু হয়। হল্যান্ড বিশ্বের প্রধান টিউলিপ উৎপাদনকারী এলাকা হিসেবে পরিচিত। বার্ষিক তিন বিলিয়নেরও অধিক টিউলিপ কন্দ উৎপাদন করে ও রপ্তানী আয়ের অন্যতম প্রধান উৎসরূপে বিবেচিত।[৫] নেদারল্যান্ডের সাথে টিউলিপের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিদ্যমান। চাষাবাদ প্রণালীকে প্রায়শঃই ডাচ টিউলিপ নামে আখ্যায়িত করা হয়। টিউলিপকে ঘিরে শিল্প গড়ে উঠেছে এবং টিউলিপ উৎসব পালন করা হয়।
|
74 |
+
|
75 |
+
দু'টি প্রধান কারণে টিউলিপ উৎপাদন করা হয় - (ক) ফুল উৎপাদন এবং (খ) শুষ্ক কন্দ উৎপাদন। উদ্যান, বাগান, গৃহে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে কন্দ উৎপাদন করা হয়। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ফুলের বিনিময় মূল্য প্রায় এগার হাজার মিলিয়ন ইউরোতে দাঁড়িয়েছে যা সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে সচল করে রাখছে।পামির মালভূমি এবং হিন্দুকুশ পর্বতমালার এলাকা থেকে উদ্ভূত হয়ে কাজাখস্তানে[৬] স্থানান্তরিত হয় যা পরবর্তীতে মধ্যপ্রাচ্য, আফগানিস্তান, ইউরোপের দক্ষিণাংশ, উত্তর আমেরিকা, এশিয়ার আনাতোলিয়া থেকে ইরানের পূর্বাংশ, চীনের উত্তর-পূর্বাংশ এবং জাপানে এ উদ্ভিদ পাওয়া যায়। টিউলিপের সাথে হল্যান্ডের সম্পর্ক অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। ষোড়শ শতাব্দী থেকে টিউলিপের চাষ হয়ে আসছে।[৭]
|
76 |
+
টিউলিপকে ইরান ও তুরস্কে ফার্সি ভাষায় লালে নামে ডাকা হয়। ধারণা করা হয় যে, টিউলিপের অনেক প্রজাতির আদি আবাসস্থল হিসেবে এশিয়া, ইউরোপ এবং উত্তর আফ্রিকায় গড়ে উঠেছে।
|
77 |
+
পারস্যে লাল টিউলিপকে ভালবাসার প্রতীক হিসেবে চিত্রিত করা হয়। লাল টিউলিপের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত কালো অংশের মাধ্যমে প্রেমিক-প্রেমিকার হৃদয় ভেঙ্গে খানখান ও কয়লার ন্যায় পুড়ে যাওয়া এবং হলুদ টিউলিপ বিনিময় করাকে আশাহীন ও সম্পূর্ণভাবে নিরাশাগ্রস্ত আকারে তুলে ধরা হতো।
|
78 |
+
|
79 |
+
জবা
|
80 |
+
জবা ফুল হল মালভেসি গোত্রের অন্তর্গত একটি চিরসবুজ পুষ্পধারী গুল্ম, যার উৎপত্তি পূর্ব এশিয়াতে। এটি চীনা গোলাপ নামেও পরিচিত।জবা একটি চিরসবুজ গুল্ম যার উচ্চতা ২.৫-৫ মি(৮-১৬ ফিট) ও প্রস্থ ১.৫-৩ মি(৫-১০ ফিট)। এর পাতাগুলি চকচকে ও ফুলগুলি উজ্জ্বল লাল বর্ণের ও ৫টি পাপড়ি যুক্ত। ফুলগুলির ব্যাস ১০ সেমি(৪ ইঞ্চি) এবং গ্রীষ্মকাল ও শরৎকালে ফোটে।বাগানের গাছ হিসেবে জবাকে গ্রীষ্মমণ্ডল এবং উপগ্রীষ্মমণ্ডল অঞ্চলে সর্বত্র ব্যবহার করা হয়। যেহেতু জবা ১০°সেলসিয়াসের নিচের তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে না, তাই নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে জবা গাছকে গ্রীনহাউসে রাখা হয়। জবা গাছের বিভিন্ন রকমের সংকর প্রজাতি আছে, যাদের ফুলের রঙ সাদা, হলুদ,কমলা, ইত্যাদি হতে পারে।
|
81 |
+
|
82 |
+
জুঁই
|
83 |
+
জুঁই (বৈজ্ঞানিক নাম: Jasminum)[৪]shrub এবং vine গণের একটি সদস্য; যারা অলিভ পরিবারে অবস্থিত(Oleaceae)।এতে ইউরেশিয়া,অস্ট্রেলেশিয়া এবং ওশেনিয়ার মতো উষ্ণ অঞ্চলের ২০০ এর বেশি প্রজাতি রয়েছে। জুঁই তার আপন বৈশিষ্ট্যের কারণে বেশি চাষ হয়। এটি তিউনিসিয়ার জাতীয় ফুল।জু���ই পত্রঝরা (শীতকালে পাতা ঝরে এমন) অথবা চিরহরিত্ (সারা বছর সবুজ থাকে) উভয় প্রকারেরই হতে পারে। তাদের পাতা উল্টোদিকে গজায়। ফুলগুলো সাধারণত ২.৫ সেমি (০.৯৮ ইঞ্চি) হয়ে থাকে। তারা সাদা অথবা হলুদ হয়ে থাকে, যদিও র্যাডিশ রঙে তাদের খুবই কম দেখা দেয়। জুঁইয়ের ফল,জাম পাকলে কালো হয়।তামিলনাড়ুর মাদুরাই শহর জুঁই উত্পাদনের জন্য বিখ্যাত । অন্ধ্র প্রদেশ, কর্ণাটক, কেরালা, মহারাষ্ট্র এবং তামিলনাড়ু সহ ভারতের পশ্চিম এবং দক্ষিণের রাজ্যগুলোতে, জুঁই নিজস্ব ঘরে চাষ করা হয়।এই ফুলগুলো তাদের জীবিকা এবং সজ্জার জন্য চাষ করা হয়। সুগন্ধি ইন্ডাস্ট্রির ইন্ডাস্ট্রিয়াল এবং বাণিজ্যিক ব্যবহারের উদ্দেশ্যেও জুঁই চাষ করা হয়। এটি বিয়ে এবং ধর্মীয় উত্সবে বেশি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। জগন্নাথ এর চন্দনযাত্রায়, জুঁইফুল এবং চন্দনকাঠে সুবাসিত পানি দ্বারা দেবীকে স্নান করানো হয়।
|
84 |
+
|
85 |
+
মিনাক্ষী সুন্দরেশ্বর, মাদুরাই, তামিলনাড়ু এর জন্য জুঁই ব্যবহৃত হয়
|
86 |
+
হায়দ্রাবাদ, ভারতে জুঁই ফুটছে
|
87 |
+
তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্সিতে পরিবর্তন এবং ২০১১ এর তিউনিশীয় বিদ্রোহ উভয়কেই ফুলের প্রেক্ষীতে "জুঁই বিদ্রোহ" বলা হয়।
|
88 |
+
সিরিয়ায়, জুঁই হল দামেস্ক এর প্রতীকীয় ফুল, যাকে বলা হয় জুঁইয়ের শহর. থাইল্যান্ড এ, জুঁই[কোনটি?] ফুল মাতৃত্বের প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়।.
|
89 |
+
|
90 |
+
গন্ধরাজ
|
91 |
+
গন্ধরাজ (বৈজ্ঞানিক নাম: Gardenia jasminoides) বাংলাদেশে ও ভারতে খুবই পরিচিত একটি ফুল। এই ফুলটির ইংরেজি নাম gardenia[২]এবং অন্য নাম কেপ জ্যাসমিন উল্লেখযোগ্য।গন্ধরাজ গাছ দৈর্ঘ্যে তিন থেকে পাঁচ ফুট পর্যন্ত হয়। সাদা রঙের এ ফুল সুগন্ধযুক্ত, বহুদলবিশিষ্ট। ফুল ফোটার মৌসুম বসন্ত থেকে বর্ষাকাল পর্যন্ত । ফোটার সময় দুধসাদা রং থাকলেও সময়ের সঙ্গে হালকা হলুদ বর্ণ ধারণ করে। এর পরাগধানিও হলুদ রঙের। ফুলের ব্যাস তিন-চার ইঞ্চি। পাতা দৈর্ঘ্যে তিন থেকে ছয় ইঞ্চি যা বিপরীত জোড়ে গজায়। পাতার রং গাঢ় সবুজ ও উপরিতল তৈলাক্ত। উচ্চ আর্দ্রতা ও উজ্জ্বল আলোয় ভালো জন্মে। এ ফুলের একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, ফুল শুকিয়ে যাওয়ার পরও সুগন্ধ থেকে যায় অনেক দিন। চিরসবুজ এ গাছের আদি নিবাস চীন।তীব্র সুগন্ধের জন্য যে কোনো বাড়ির আঙিনা বা ছাদ বাগান এবং পার্কে লাগানোর জন্য গন্ধরাজ একটি জনপ্রিয় ফুল। তবে ফুলদানিতে স্বল্প স্থায়িত্বের জন্য ফুলের বাজারে এর চাহিদা নেই বলল��ই চলে। গন্ধরাজের অনেক গুলি প্রজাতি রয়েছে। কিছু প্রজাতি বুনো, যা উপযুক্ত পরিবেশে অযত্নেই জন্মাতে এবং ফুল ফোটাতে দেখা যায়। বাগানে বা পার্কে সাধারণত ডাবল পাপড়ির ফুলগুলি দেখা যায়। গন্ধরাজ চাষে তেমন কোনো যত্নের প্রয়োজন হয়না। উচ্চ আর্দ্রতা সমৃদ্ধ আবহাওয়াতে এবং অম্লীয় মাটিতে এর ফুল ভালো হয়। গ্রীষ্ম থেকে শরৎ পর্যন্ত ফুল ফোটে। ফুল শেষে ছোট, ডিম্বাকৃতি ফল হয়।
|
92 |
+
|
93 |
+
প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জে পলিনেসিয়ান মানুষরা ফুলের নেকলেস বানাতে এই সুগন্ধি ফুলগুলি ব্যবহার করেন। গন্ধরাজের ফলে রয়েছে ক্রোসিন যা কাপড় ও খাদ্যের জন্য হলুদ রঞ্জক হিসেবে ব্যবহার করা হয় । চীনে কমপক্ষে এক হাজার বছর ধরে এর চাষ হয়েছে। ঐতিহ্যবাহি চীনা ঔষধের মধ্যে গন্ধরাজের ফল ব্যবহার করা হয়।
|
94 |
+
|
95 |
+
কামিনী
|
96 |
+
কামিনী ছোট আকৃতির ঝোপভাবাপন্ন চিরসবুজ বৃক্ষ। ৮/১০ ফুট পর্যন্ত উঁচু হয়। গাছটি ছেঁটে রাখলে অতি সুন্দর দেখা যায়। পাতা ছোট, লম্বা ও প্রায় ডিম্বাকৃতির, গাঢ় সবুজ। ফুল চমৎকার সুগন্ধযুক্ত, বহির্বাস ৫টি, পরস্পর বিভক্ত, অগ্রভাগ সরু, পাপড়ী মাথার দিকে বিস্তৃত। ফল গোলাকার ও রক্তিম। কামিনীর আদি নিবাস মালয়েশিয়া ও চীন। সাদা বর্ণের ফুল গ্রীষ্ম ও বর্ষায় ফুটতে দেখা যায়।
|
97 |
+
|
98 |
+
প্রাপ্তিস্তানঃ বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্র পাওয়া যায়।
|
99 |
+
চাষাবাদঃ বীজ, শাখা ও দাবা কলম থেকে চারা পাওয়া যেতে পারে। কামিনী দ্রুত বাড়ে।
|
100 |
+
উপযোগী মাটিঃ সব ধরনের মাটিতে কামিনী জন্মে।
|
101 |
+
লাগানোর দূরত্বঃ ৫ থেকে ৭ ফুট।
|
102 |
+
বীজ সংগ্রহের সময়ঃ বর্ষার শেষে বীজ সংগ্রহ করতে হয়।
|
103 |
+
প্রতি কেজিতে বীজের পরিমাণঃ প্রায় ১০০০ টি।
|
104 |
+
প্রক্রিয়াজাতকরণ/সংরক্ষণঃ বীজ সংগ্রহ করে ভাল করে রোদে শুকিয়ে বেশ কিছুদিন সংরক্ষণ করে রাখা যায়। পাতা, মূল ও ছাল মৃদু রোদে শুকিয়ে এক বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়।
|
105 |
+
ব্যবহার্য অংশঃ পাতা, মূল, ছাল।
|
106 |
+
উপকারিতা/লোকজ ব্যবহারঃ কামিনীর পাতার রস আমাশয়ে, কাটা-ছেড়ায়, সর্দিতে ও ব্যথায় বিশেষ উপকারি। পাতা উত্তেজক এবং ফুলা বা শরীরে পানি জমে যাওয়া রোগে উপকারি।
|
107 |
+
কোন অংশ কিভাবে ব্যবহৃত হয়ঃ
|
108 |
+
আমাশয় রোগে- কামিনী গাছের মূলের ছাল ৪/৫ গ্রাম অথবা ডাল ৭ গ্রাম ২ কাপ পানিতে সিদ্ধ করে আধ কাপ থাকতে নামিয়ে ছেঁকে সেই পানি ৩/৪ বার খেতে হবে। দুই-একদিনের মধ্যেই আমাশয় কমে যাবে।
|
109 |
+
কাটা-ছেঁড়ায়- কামিনী পাতার গুড়ো টিপে দিয়ে বেধে রাখতে হয়। এতে ব্যথা হয় না আবার রক্ত পড়াও বন্ধ হয়।
|
110 |
+
সর্দিতে- কামিনী পাতার মিহি গুঁড়োর নস্যি নিলে হাচি হয়ে সর্দি বেরিয়ে যাবে।
|
111 |
+
পরিশ্রমজনিত ব্যথায়- কামিনী গাছের পাতা বাঁটা দিয়ে মিনারেল তেল জ্বাল করে সেই তেল ব্যথার জায়গায় মালিশ করলে ব্যথা সেরে যাবে।
|
112 |
+
পরিপক্ক হওয়ার সময়কালঃ সাধারণতঃ ২ থেকে ৩ বছরে কামিনী গাছে ফুল আসে।
|
113 |
+
অন্যান্য ব্যবহারঃ ফুলের তোড়া সাজাতে কামিনীর ঢাল ব্যবহার করা হয়। ইকেবনা পদ্ধতির ফুল সাজানোতেও কামিনীর ডালের ব্যাপক ব্যবহার দেখা যায়।
|
text datasets/fruit.txt
ADDED
The diff for this file is too large to render.
See raw diff
|
|
text datasets/tree.txt
ADDED
The diff for this file is too large to render.
See raw diff
|
|