বিড়াল আমি শয়নগৃহে, চারপায়ীর উপর বসিয়া, হুঁকা হাতে ঝিমাইতেছিলাম। একটু মিট্ মিট্ করিয়া ক্ষুদ্র আলো জ্বলিতেছে-দেয়ালের উপর চঞ্চল ছায়া, প্রেতবৎ নাচিতেছে। আহার প্রস্তুত হয় নাই-এজন্য হুঁকা হাতে, নিমীলিতলোচনে আমি ভাবিতেছিলাম যে, আমি যদি নেপোলিয়ন্ হইতাম, তবে ওয়াটার্লু জিতিতে পারিতাম কি না। এমত সময়ে একটি ক্ষুদ্র শব্দ হইল, মেও! চাহিয়া দেখিলাম-হঠাৎ কিছু বুঝিতে পারিলাম না। প্রথমে মনে হইল, ওয়েলিংটন হঠাৎ বিড়ালত্ব প্রাপ্ত হইয়া, আমার নিকট আফিঙ্গ ভিক্ষা করিতে আসিয়াছে। প্রথম উদ্যমে, পাষাণবৎ কঠিন হইয়া, বলিব মনে করিলাম যে, ডিউক মহাশয়কে ইতিপূর্ব্বে যথোচিত পুরস্কার দেওয়া গিয়াছে, এক্ষণে আর অতিরিক্ত পুরস্কার দেওয়া যাইতে পারে না। বিশেষ অপরিমিত লোভ ভাল নহে। ডিউক বলিল, মেও! তখন চক্ষু চাহিয়া ভাল করিয়া দেখিলাম যে, ওয়েলিংটন নহে। একটি ক্ষুদ্র মার্জ্জার; প্রসন্ন আমার জন্য যে দুগ্ধ রাখিয়া গিয়াছিল, তাহা নিঃশেষ করিয়া উদরসাৎ করিয়াছে, আমি তখন ওয়াটার্লুর মাঠে ব্যুহ-রচনায় ব্যস্ত, অত দেখি নাই। এক্ষণে মার্জ্জারসুন্দরী, নির্জ্জাল দুগ্ধপানে পরিতৃপ্ত হইয়া আপন মনের সুখ এ জগতে প্রকটিত করিবার অভিপ্রায়ে, অতি মধুর স্বরে বলিতেছেন, মেও! বলিতে পারি না, বুঝি, তাহার ভিতর একটু ব্যঙ্গ ছিল; বুঝি, মার্জ্জার মনে মনে হাসিয়া আমার পানে চাহিয়া ভাবিতেছিল, “কেহ মরে বিল ছেঁচে, কেহ খায় কই।” বুঝি সে মেও! শব্দে একটু মন বুঝিবার অভিপ্রায় ছিল। বুঝি বিড়ালের মনের ভাব, তোমার দুধ ত খাইয়া বসিয়া আছি-এখন বল কি? বলি কি? আমি ত ঠিক করিতে পারিলাম না। দুধ আমার বাপেরও নয়। দুধ মঙ্গলার, দুহিয়াছে প্রসন্ন। অতএব সে দুগ্ধে আমারও যে অধিকার, বিড়ালেরও তাই; সুতরাং রাগ করিতে পারি না। তবে চিরাগত একটি প্রথা আছে যে, বিড়ালে দুধ খাইয়া গেলে, তাহাকে তাড়াইয়া মারিতে যাইতে হয়। আমি যে সেই চিরাগত প্রথার অবমাননা করিয়া মনুষ্যকুলে কুলাঙ্গার স্বরূপ পরিচিত হইব, ইহাও বাঞ্ছনীয় নহে। কি জানি, এই মার্জ্জারী যদি স্বজাতি-মণ্ডলে কমলাকান্তকে কাপুরুষ বলিয়া উপহাস করে? অতএব পুরুষের ন্যায় আচরণ করাই বিধেয়। ইহা স্থির করিয়া, সকাতরচিত্তে, হস্ত হইতে হুঁকা নামাইয়া, অনেক অনুসন্ধানে এক ভগ্ন যষ্টি আবিষ্কৃত করিয়া সগর্ব্বে মার্জ্জারী প্রতি ধাবমান হইলাম। মার্জ্জারী কমলাকান্তকে চিনিত; সে যষ্টি দেখিয়া বিশেষ ভীত হওয়ার কোন লক্ষণ প্রকাশ করিল না। কেবল আমার মুখপানে চাহিয়া হাই তুলিয়া, একটু সরিয়া বসিল। বলিল, মেও! প্রশ্ন বুঝিতে পারিয়া যষ্টি ত্যাগ করিয়া পুনরপি শয্যায় আসিয়া হুঁকা লইলাম। তখন দিব্যকর্ণ প্রাপ্ত হইয়া, মার্জ্জারের বক্তব্যসকল বুঝিতে পারিলাম। বুঝিলাম যে, বিড়াল বলিতেছে, “মারপিট কেন? স্থির হইয়া হুঁকা হাতে করিয়া, একটু বিচার করিয়া দেখ দেখি? এ সংসারে ক্ষীর, সর, দুগ্ধ, দধি, মৎস্য, মাংস, সকলই তোমরা খাইবে, আমরা কিছু পাইব না কেন? তোমরা মনুষ্য, আমরা বিড়াল, প্রভেদ কি? তোমাদের ক্ষুৎপিপাসা আছে-আমাদের কি নাই? তোমরা খাও, আমাদের আপত্তি নাই; কিন্তু আমরা খাইলেই তোমরা কোন্ শাস্ত্রানুসারে ঠেঙ্গা লাঠি লইয়া মারিতে আইস, তাহা আমি বহু অনুসন্ধানে পাইলাম না। তোমরা আমার কাছে কিছু উপদেশ গ্রহণ কর। বিজ্ঞ চতুষ্পদের কাছে শিক্ষালাভ ব্যতীত তোমাদের জ্ঞানোন্নতির উপায়ান্তর দেখি না। তোমাদের বিদ্যালয়সকল দেখিয়া আমার বোধ হয়, তোমরা এত দিনে এ কথাটি বুঝিতে পারিয়াছ। “দেখ, শয্যাশায়ী মনুষ্য! ধর্ম্ম কি? পরোপকারই পরম ধর্ম্ম। এই দুগ্ধটুকু পান করিয়া আমার পরম উপকার হইয়াছে। তোমার আহরিত দুগ্ধে এই পরোপকার সিদ্ধ হইল-অতএব তুমি সেই পরম ধর্ম্মের ফলভাগী-আমি চুরিই করি, আর যাই করি, আমি তোমার ধর্ম্মসঞ্চয়ের মূলীভূত কারণ। অতএব আমাকে প্রহার না করিয়া, আমার প্রশংসা কর। আমি তোমার ধর্ম্মের সহায়। “দেখ, আমি চোর বটে, কিন্তু আমি কি সাধ করিয়া চোর হইয়াছি? খাইতে পাইলে কে চোর হয়? দেখ, যাঁহারা বড় বড় সাধু, চোরের নামে শিহরিয়া উঠেন, তাঁহারা অনেক চোর অপেক্ষাও অধার্ম্মিক। তাঁহাদের চুরি করিবার প্রয়োজন নাই বলিয়াই চুরি করেন না। কিন্তু তাঁহাদের প্রয়োজনাতীত ধন থাকিতেও চোরের প্রতি যে মুখ তুলিয়া চাহেন না, ইহাতেই চোরে চুরি করে। অধর্ম্ম চোরের নহে-চোরে যে চুরি করে, সে অধর্ম্ম কৃপণ ধনীর। চোর দোষী বটে, কিন্তু কৃপণ ধনী তদপেক্ষা শত গুণে দোষী। চোরের দণ্ড হয়; চুরির মূল যে কৃপণ, তাহার দণ্ড হয় না কেন? “দেখ, আমি প্রাচীরে প্রাচীরে মেও মেও করিয়া বেড়াই, কেহ আমাকে মাছের কাঁটাখানাও ফেলিয়া দেয় না। মাছের কাঁটা, পাতের ভাত, নর্দমায় ফেলিয়া দেয়, জলে ফেলিয়া দেয়, তথাপি আমাকে ডাকিয়া দেয় না। তোমাদের পেট ভরা, আমার পেটের ক্ষুধা কি প্রকারে জানিবে! হায়! দরিদ্রের জন্য ব্যথিত হইলে তোমাদের কি কিছু অগৌরব আছে? আমার মত দরিদ্রের ব্যথায় ব্যথিত হওয়া, লজ্জার কথা সন্দেহ নাই। যে কখন অন্ধকে মুষ্টি-ভিক্ষা দেয় না, সেও একটা বড় রাজা, ফাঁপরে পড়িলে রাত্রে ঘুমায় না-সকলেই পরের ব্যথায় ব্যথিত হইতে রাজি। তবে ছোটলোকের দুঃখে কাতর! ছি! কে হইবে? “দেখ, যদি অমুক শিরোমণি, কি অমুক ন্যায়ালঙ্কার আসিয়া তোমার দুধটুকু খাইয়া যাইতেন, তবে তুমি কি তাঁহাকে ঠেঙ্গা লইয়া মারিতে আসিতে? বরং যোড়হাত করিয়া বলিতে, আর একটু কি আনিয়া দিব? তবে আমার বেলা লাঠি কেন? তুমি বলিবে, তাঁহারা অতি পণ্ডিত, বড় মান্য লোক। পণ্ডিত বা মান্য বলিয়া কি আমার অপেক্ষা তাঁহাদের ক্ষুধা বেশী? তা ত নয়-তেলা মাথায় তেল দেওয়া মনুষ্যজাতির রোগ-দরিদ্রের ক্ষুধা কেহ বুঝে না। যে খাইতে বলিলে বিরক্ত হয়, তাহার জন্য ভোজের আয়োজন কর-আর যে ক্ষুধার জ্বালায় বিনা আহ্বানেই তোমার অন্ন খাইয়া ফেলে, চোর বলিয়া তাহার দণ্ড কর-ছি! ছি! “দেখ, আমাদিগের দশা দেখ, দেখ প্রাচীরে প্রাচীরে, প্রাঙ্গণে প্রাঙ্গণে, প্রাসাদে, প্রাসাদে, মেও মেও করিয়া আমরা চারি দিক্ দৃষ্টি করিতেছি-কেহ আমাদিগকে মাছের কাঁটাখানা ফেলিয়া দেয় না। যদি কেহ তোমাদের সোহাগের বিড়াল হইতে পারিল-গৃহমার্জ্জার হইয়া বৃদ্ধের নিকট যুবতী ভার্য্যার সহোদর, বা মূর্খ ধনীর কাছে সতরঞ্চ খেলওয়ারের স্থানীয় হইয়া থাকিতে পারিল-তবেই তাহার পুষ্টি। তাহার লেজ ফুলে, গায়ে লোম হয়, এবং তাহাদের রূপের ছটা দেখিয়া, অনেক মার্জ্জার কবি হইয়া পড়ে। “আর, আমাদিগের দশা দেখ-আহারাভাবে উদর কৃশ, অস্থি পরিদৃশ্যমান, লাঙ্গুল বিনত, দাঁত বাহির হইয়াছে-জিহ্বা ঝুলিয়া পড়িয়াছে-অবিরত আহারাভাবে ডাকিতেছি, ‘মেও! মেও! খাইতে পাই না!’- আমাদের কালো চামড়া দেখিয়া ঘৃণা করিও না! এ পৃথিবীর মৎস্য মাংসে আমাদের কিছু অধিকার আছে। খাইতে দাও-নহিলে চুরি করিব। আমাদের কৃষ্ণ চর্ম্ম, শুষ্ক মুখ, ক্ষীণ সকরুণ মেও মেও শুনিয়া তোমাদিগের কি দুঃখ হয় না? চোরের দণ্ড আছে, নির্দ্দয়তার কি দণ্ড নাই? দরিদ্রের আহার সংগ্রহের দণ্ড আছে, ধনীর কার্পণ্যের দণ্ড নাই কেন? তুমি কমলাকান্ত, দূরদর্শী, কেন না আফিংখোর, তুমিও কি দেখিতে পাও না যে, ধনীর দোষেই দরিদ্র চোর হয়? পাঁচ শত দরিদ্রকে বঞ্চিত করিয়া একজনে পাঁচ শত লোকের আহার্য্য সংগ্রহ করিবে কেন? যদি করিল, তবে সে তাহার খাইয়া যাহা বাহিয়া পড়ে, তাহা দরিদ্রকে দিবে না কেন? যদি না দেয়, তবে দরিদ্র অবশ্য তাহার নিকট হইতে চুরি করিবে’; কেন না, অনাহারে মরিয়া যাইবার জন্য এ পৃথিবীতে কেহ আইসে নাই।” আমি আর সহ্য করিতে না পারিয়া বলিলাম, “থাম! থাম মার্জ্জারপণ্ডিত! তোমার কথাগুলি ভারি সোশিয়ালিষ্টিক্! সমাজবিশৃঙ্খলার মূল! যদি যাহার যত ক্ষমতা, সে তত ধনসঞ্চয় করিতে না পায়, অথবা সঞ্চয় করিয়া চোরের জ্বালায় নির্ব্বিঘ্নে ভোগ করিতে না পায়, তবে কেহ আর ধনসঞ্চয়ে যত্ন করিবে না। তাহাতে সমাজের ধনবৃদ্ধি হইবে না।” মার্জ্জার বলিল, “না হইলে ত আমার কি? সমাজের ধনবৃদ্ধির অর্থ ধনীর ধনবৃদ্ধি। ধনীর ধনবৃদ্ধি না হইলে দরিদ্রের কি ক্ষতি?” আমি বুঝাইয়া বলিলাম যে, “সামাজিক ধনবৃদ্ধি ব্যতীত সমাজের উন্নতি নাই।” বিড়াল রাগ করিয়া বলিল যে, “আমি যদি খাইতে না পাইলাম, তবে সমাজের উন্নতি লইয়া কি করিব?” বিড়ালকে বুঝান দায় হইল। যে বিচারক বা নৈয়ায়িক, কস্মিন্, কালে কেহ তাহাকে কিছু বুঝাইতে পারে না। এ মার্জ্জার সুবিচারক, এবং সুতার্কিকও বটে, সুতরাং না বুঝিবার পক্ষে ইহার অধিকার আছে। অতএব ইহার উপর রাগ না করিয়া বলিলাম, “সমাজের উন্নতিতে দরিদ্রের প্রয়োজন না থাকিলে না থাকিতে পারে, কিন্তু ধনীদিগের বিশেষ প্রয়োজন, অতএব চোরের দণ্ডবিধান কর্ত্তব্য।” মার্জ্জারী মহাশয়া বলিলেন, “চোরকে ফাঁসি দাও, তাহাতেও আমার আপত্তি নাই, কিন্তু তাহার সঙ্গে আর একটি নিয়ম কর। যে বিচারক চোরকে সাজা দিবেন, তিনি আগে তিন দিবস উপবাস করিবেন। তাহাতে যদি তাঁহার চুরি করিয়া খাইতে ইচ্ছা না করে, তবে তিনি স্বচ্ছন্দে চোরকে ফাঁসি দিবেন। তুমি আমাকে মারিতে লাঠি তুলিয়াছিলে, তুমি অদ্য হইতে তিন দিবস উপবাস করিয়া দেখ। তুমি যদি ইতিমধ্যে নসীরাম বাবুর ভাণ্ডারঘরে ধরা না পড়, তবে আমাকে ঠেঙ্গাইয়া মারিও, আমি আপত্তি করবি না।” বিজ্ঞ লোকের মত এই যে, যখন বিচারে পরাস্ত হইবে, তখন গম্ভীরভাবে উপদেশ প্রদান করিবে। আমি সেই প্রথানুসারে মার্জ্জারকে বলিলাম যে, “এ সকল অতি নীতিবিরুদ্ধ কথা, ইহার আন্দোলনেও পাপ আছে। তুমি এ সকল দুশ্চিন্তা পরিত্যাগ করিয়া ধর্ম্মাচরণে মন দাও। তুমি যদি চাহ, তবে পাঠার্থে তোমাকে আমি নিউমান ও পার্করের গ্রন্থ দিতে পারি। আর কমলাকান্তের দপ্তর পড়িলেও কিছু উপকার হইতে পারে-আর কিছু হউক বা না হউক, আফিঙ্গের অসীম মহিমা বুঝিতে পারিবে। এক্ষণে স্বস্থানে গমন কর, প্রসন্ন কাল কিছু ছানা দিবে বলিয়াছে, জলযোগের সময় আসিও, উভয় ভাগ করিয়া খাইব। অদ্য আর কাহারও হাঁড়ি খাইও না; বরং ক্ষুধায় যদি নিতান্ত অধীরা হও, তবে পুনর্ব্বার আসিও, এক সরিষাভোর আফিঙ্গ দিব।” মার্জ্জার বলিল, “আফিঙ্গের বিশেষ প্রয়োজন নাই, তবে হাঁড়ি খাওয়ার কথা, ক্ষুধানুসারে বিবেচনা করা যাইবে।” মার্জ্জার বিদায় হইল। একটি পতিত আত্মাকে অন্ধকার হইতে আলোকে আনিয়াছি, ভাবিয়া কমলাকান্তের বড় আনন্দ হইল! আপনার বিড়ালের সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্যের তালিকা বিড়াল মূলত মাংসাশী প্রাণী। তাই বিড়ালের খাবারে প্রাণী প্রোটিন অর্থাৎ গরুর মাংস, মুরগির মাংস, মাছ ইত্যাদি থাকা জরুরি এবং অবশ্যই খাবারটি সেদ্ধ হতে হবে কারন কাঁচা মাছ, মাংসে ব্যাকটেরিয়া থাকে যা বিড়ালের অনেক রোগের কারন হতে পারে। আজকাল প্রক্রিয়াজাত করা মাছ ও মাংস প্যাকেটে সংরক্ষিত অবস্থায় পাওয়া যায় যা Wet Food এবং Canned Food নামে পরিচিত।এই খাবারে কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার যেমনঃ ভাত ১০ভাগের বেশি মেশানো উচিৎ নয়। Dry Food অর্থাৎ শুকনো খাবার যা কিনতে পাওয়া যায় তাতে মূলত প্রচুর পরিমানে প্রাণী প্রোটিন ও অল্প পরিমানে উদ্ভিদ প্রোটিন থাকে। Dry food বিড়ালের জন্য ক্ষতিকারক নয় যদি খাবারটি উচ্চ মানের হয় এবং সাথে প্রচুর পরিমানে পানি খাওয়ানো যায়। এই খাবারে শতকরা ৩৫-৪০ ভাগ কার্বোহাইড্রেট মেশানো থাকে।একটি বিড়ালের খাবার এবং পরিমান নির্ভর করে তার বয়স এবং ওজনের উপর। এছাড়া Indoor অথবা Outdoor বিড়াল কিনা, Spayed অথবা Neutered কিনা , কি পরিমান খেতে পারে এসব বিষয়ের ওপরও খাবারের পরিমান নির্ভর করে। New York এর Animal Medical Center অনুযায়ী, একটি সুস্থ ও প্রাপ্তবয়স্ক ৩-৪ কেজি ওজনের বিড়ালের প্রতিদিন ২৪০ ক্যালোরি সমৃদ্ধ খাদ্য প্রয়োজন হয়। অর্থাৎ প্রতি কেজিতে ৬০-৬৫ ক্যালোরি প্রয়োজন। Dry Food এ প্রতি এক কাপ খাবারে ৩০০ ক্যালোরি (ব্র্যান্ড অনুযায়ী ক্যালোরি কম বেশি হতে পারে, কতটুকু ক্যালোরি থাকে তা প্যাকেটের গায়ে সঠিক ভাবে লেখা থাকে) থাকে এবং ৮৫ গ্রামের Canned Food এ ২৫০ ক্যালোরি পাওয়া যায়। Dry Food হলে ২ কাপ এবং Canned Food হলে ৮৫ গ্রামের প্যাকেট দিতে হবে। তবে প্রয়োজন অনুযায়ী পরিমান কম বেশি করা যাবে.বিড়ালকে প্রতিদিন একই সময়ে খাবার খাওয়ানো ভালো। একটি প্রাপ্তবয়স্ক (১বছরের বড় হলে) বিড়ালকে দিনে দুই বেলা খাবার দেয়া উচিৎ। বেশিরভাগ মানুষ সকালে এবং রাতে বিড়ালকে খেতে দেয় অর্থাৎ ১০-১২ ঘণ্টা অন্তর অন্তর। তবে যদি কম করে খায় তাহলে ৩ বার দেওয়া যেতে পারে। Dry Food পরিমানে বেশি হলে বিড়াল পরে খেতে পারে কিন্তু Wet Food এবং Canned Food হলে পরিমান অনুযায়ী দিতে হবে, অবশিষ্ট খাবার সরিয়ে ফেলতে হবে কারন দীর্ঘক্ষণ রেখে দেওয়া খাবার নষ্ট হয়ে যেতে পারে এবং তা খেলে ডাইরিয়া হওয়ার আশঙ্কা থাকে। বিঃদ্রঃ অতিরিক্ত ওজনের বিড়ালকে Dry Food না খাওয়ানো ভাল কারন এতে ওজন আরও বেড়ে যেতে পারে। Dry Food এর সাথে পর্যাপ্ত পরিমানে পানি খাওয়ানো জরুরী। বিড়াল ( ফেলিস ক্যাটাস) একটি গার্হস্থ্য প্রজাতি বা ছোট মাংসাশী স্তন্যপায়ী প্রাণী।এটি ফেলিডা পরিবারের একমাত্র গৃহপালিত প্রজাতি এবং প্রায়শই এটি পরিবারের বন্য সদস্যদের থেকে পৃথক করার জন্য গার্হস্থ্য বিড়াল হিসেবে পরিচিত।একটি বিড়াল, হয় ঘরের বিড়াল, খামারের বিড়াল বা ফেরাল বিড়াল হতে পারে; বনবিড়াল অবাধে মানুষের যোগাযোগ পরিসীমা এড়িয়ে চলে। গার্হস্থ্য বিড়ালদের সাহচর্য এবং তীক্ষ্ণদন্তী প্রাণী শিকারের দক্ষতার জন্য মানুষ এদেরকে মূল্যবান বলে মনে করে। বিভিন্ন বিড়াল নিবন্ধনকারীর মাধ্যমে এযাবৎ বিড়ালের স্বীকৃত ষাটের অধিক স্বীকৃত বিড়ালের প্রজাতির সন্ধান পাওয়া যায়। বিড়াল শারীরবিদ্যায় অন্যান্য ফেলিড প্রজাতির মতোই: এদের শক্তিশালী নমনীয় শরীর, দ্রুত প্রতিফলন, তীক্ষ্ণ দাঁত এবং প্রত্যাহারযোগ্য নখর রয়েছে যা ছোট শিকারকে হত্যা করার জন্য অভিযোজিত। রাত্রীকালে এদের দৃষ্টি এবং ঘ্রাণশক্তি বোধ ভালভাবে বিকশিত হয়। বিড়ালের যোগাযোগের মধ্যে বিভিন্ন কণ্ঠস্বর যেমন মেয়াও, গরগর আওয়াজ করা, ট্রিলিং, হিসিং, গর্জন এবং গ্রন্টিং এর পাশাপাশি বিড়াল-নির্দিষ্ট শারীরিক ভাষা রয়েছে। যদিও বিড়াল একটি সামাজিক প্রজাতি, এরা নির্জন শিকারী। শিকারী হিসাবে, এটি ক্রেপাসকুলার, অর্থাৎ ভোরে এবং সন্ধ্যায় সর্বাধিক সক্রিয়। এটি মানুষের কানের জন্য খুব ক্ষীণ বা খুব উচ্চ কম্পাঙ্ক শুনতে পারে, যেমন ইঁদুর এবং অন্যান্য ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণীদের সৃষ্ট শব্দ। এরা ফেরোমন নিঃসৃত ও উপলব্ধি করেতে পারে। স্ত্রী গৃহপালিত বিড়ালদের বসন্ত থেকে শরতের শেষ পর্যন্ত বিড়ালছানা থাকতে পারে, লিটারের আকার প্রায়শই দুই থেকে পাঁচটি বিড়ালছানা হতে পারে।গৃহপালিত বিড়ালদের প্রজনন করা হয় এবং বিভিন্ন দেশে এই ঘটনায় রেজিস্টার্ড বংশোদ্ভূত বিড়াল হিসাবে দেখানো হয়, বিড়াল প্রেমী অভিনব যা একটি শখ হিসাবে পরিচিত। বিড়ালদের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ স্পে এবং নিউটারিং দ্বারা কৃত্রীম্ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে, তবে তাদের বিস্তার এবং পোষা প্রাণী পরিত্যাগের ফলে বিশ্বব্যাপী প্রচুর সংখ্যক বন্য বিড়াল দেখা দিয়েছে, যা সম্পূর্ণ পাখি, স্তন্যপায়ী এবং সরীসৃপ প্রজাতির বিলুপ্তিতে অবদান রাখছে। দীর্ঘকাল ধরে এটি মনে করা হয়েছিল যে প্রাচীন মিশরে বিড়াল পালন শুরু হয়েছিল, যেখানে খ্রিস্টপূর্ব ৩১০০ সাল থেকে বিড়ালদের পূজা করা হত, কিন্তু প্রত্নতত্ত্ব এবং জেনেটিক্সের সাম্প্রতিক অগ্রগতিগুলি দেখিয়েছে যে ৭৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে পশ্চিম এশিয়ায় বিড়াল গৃহপালিত হয়েছিল। ২০২১-এর হিসাব অনুযায়ী বিশ্বে আনুমানিক ২২০ মিলিয়ন মালিকানাধীন এবং ৪৮০ মিলিয়ন বিপথগামী বিড়াল ছিল। ২০১৭-এর হিসাব অনুযায়ী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিতীয় সর্বাধিক জনপ্রিয় পোষা প্রাণীর মধ্যে গৃহপালিত বিড়াল ছিল, যেখানে ৯৫.৬ মিলিয়ন বিড়ালের মালিকানা ছিল, এবং প্রায় ৪২ মিলিয়ন পরিবারে অন্তত একটি করে পোষা বিড়াল ছিল। যুক্তরাজ্যে, ২৬% প্রাপ্তবয়স্কদের একটি করে বিড়াল রয়েছে, যার আনুমানিক জনসংখ্যা ২০২০-এর হিসাব অনুযায়ী ১০.৯ মিলিয়ন পোষা বিড়াল রয়েছে। আদরের বিড়াল ছানা বিড়াল ছানার নরম গায়ে বুলিয়ে দিলাম হাত। আদর পেয়ে নুয়ে পড়ে মাথা করে কাত গলায় তার হাত দিলে মুখ করে হা পা গুলো উপর তুলে করে ধিনতা সাদা চোখে নীল আভায় দেখি তার গোঁফ আলত করে টানতে গেলে দিয়ে ওঠে ঝোঁক পা ধরে তার টানি যখন বস্তার মত যায়। এনা জোরে হোঁচট দিলে ছুটে সে পালায় খানিক দূরে গিয়ে সে করে মিউ মিউ কাছে ডাকলে ফিরে আসে জুড়ায় তখন জিউ বিড়াল সারাদিন একটা বিড়ালের সঙ্গে ঘুরে-ফিরে কেবলই আমার দেখা হয় গাছের ছায়ায়, রোদের ভিতরে, বাদামী পাতার ভিড়ে; কোথাও কয়েক টুকরো মাছের কাঁটার সফলতার পর তারপর শাদা মাটির কঙ্কালের ভিতর নিজের হৃদয়কে নিয়ে মৌমাছির মতে নিমগ্ন হ’য়ে আছে দেখি; কিন্তু তবুও তারপর কৃষ্ণচূড়ার গায়ে নখ আঁচড়াচ্ছে, সারাদিন সূর্যের পিছনে-পিছনে চলছে সে। একবার তাকে দেখা যায়, একবার হারিয়ে যায় কোথায়। হেমন্তের সন্ধ্যায় জাফরান-রং-এর সূর্যের নরম শরীরে শাদা থাবা বুলিয়ে-বুলিয়ে খেলা করতে দেখলাম তাকে; তারপর অন্ধকারকে ছোটো-ছোটো বলের মতে থাবা দিয়ে লুফে আনলো সে, সমস্ত পৃথিবীর ভিতর ছড়িয়ে দিলো। আমি যদি বিড়াল হতাম মানুষ হয়ে জন্ম নিয়ে লাভ হয়েছে কচু কী যে ভালো হতো আমি হলে বিড়ালছানা! নামটা আমার শচিন হলেও মায়ের কাছে শচু শচিন কেন শচু হবে, আমার তা নেই জানা! রোজ সকালে মা আমাকে ঘুমের থেকে তুলে ঠেসে ধরে দাঁত মেজে দেয় টুথপেস্ট আর ব্রাশে! আর আমি খুব কাঁদতে থাকি ঘুমে ঢুলে ঢুলে তখন ছোট্ট বিড়ালছানা মিঁয়াও মিঁয়াও হাসে! কত্ত মজা বিড়ালছানার মাজতে হয় না দাঁত দাঁত মাজে না বলে কি তার দাঁত খেয়ে নেয় পোকা? ক্যাভিটি হয়? দাঁতের ব্যথায় কাঁদে সে দিনরাত? তুমি আমায় কী ভেবেছ? আমি এতই বোকা! ব্রাশ-পেস্টের ধার ধারে না নেই বিড়ালের ব্রাশ মজার ঘুমটা না ঘুমিয়ে যায় না সে ইশকুল। টিচার পড়া ধরে না তাই করে না হাঁসফাঁস বিড়ালগুলোর ফুর্তি কেবল, লম্ফ হুলুস্থুল! সারাটা দিন মিঁয়াও মিঁয়াও গায় সে কত গান! বাড়ির কোনাকাঞ্চিতে তার কেবল আনাগোনা, টিভি দেখতে নেইকো বারণ, আনলিমিটেড টাইম হোম টাস্ক নেই, নেই টেনশন, নেইকো পড়াশোনা! বইয়ের বোঝা নেই বিড়ালের কাঁধে কিংবা ঘাড়ে সুযোগ পেলেই ঝিমোয় বসে টিভি দেখার ছলে, (ইশ!), আমি যদি জন্ম নিতাম বিড়াল পরিবারে! একদিন ঠিক পালিয়ে যাব বিড়ালছানার দলে বিড়ালের মায়ের কান্না বিড়াল তো আর মানুষ নয় রে জন্তু জানোয়ার তার পরেতেও মায়ের স্নেহ কম আছে কি তার? সকাল বেলা বাচ্চাগুলো নিয়ে গিয়েছে চোরে সেই জন্যে সে খুঁজছে সদাই সারা দিনমান ধরে । মিঁঞ মিঁঞ চিৎকার করে করছে আহাজারি তার কান্নাতে আকাশ বাতাস হচ্ছে যেন ভারি। ধমক ধামক দিচ্ছে সবাই কিংবা দিচ্ছে পেটন তারপরেতেও বাচ্চার শোকে কাঁদছে সারাক্ষণ। রাত্রী বেলা তার কান্নাতে ঘুম হলো না মোর বিড়াল মায়ের কান্না শুনে রাত্রী হলো ভোর। সকাল বেলা তাকিয়ে দেখি শিশু হারানো শোকে তাকিয়ে আছে আমার পানে কি যে কাতর চোখে! লাগল মায়া দিলাম খেতে হালকা হলো বুক খাবার দেখেও খেল না সে ফিরিয়ে নিল মুখ। বুঝতে পেলাম বিড়াল হলেও বুকটা স্নেহে ভরা সব মায়েদের মতই তাহার মনটা মায়ায় গড়া। তাই তো সদাই করছে কান্না নিদ্রা বিহিন চোখে খাবার দিলেও খাচ্ছে না আর বাচ্চাগুলোর শোকে। বিড়ালের গল্প হাঁ করে তাকিয়ে আছে রাস্তা কিছু সুড়সুড়ি ফলেছে তেঁতুল জিভে লকলকে আগুনকে বোলো স্পর্শসুখ আর নয়; বেগুন এইমাত্র পুড়বে বুকে ছবিগুলো বৃষ্টিতে নুইয়ে গেলে হাত-পা সেঁকা রোদ ভেতরে উলুদিয়ে জাগছে মৃত কোষ আর তখনও আমি দর্শকাসনে কে কার ঘুড়ি কাটছে! কোন রঙে মিশে যাচ্ছে জল শিকে ছিঁড়লেই বিড়ালটি… বলার মত একগ্লাস স্বচ্ছ তরল নিভে যাচ্ছে বাঘের গলায়… পেরেকের দাঁতে ঝুলছে সময় চিৎপাত দুপুর ম ম ঘুমের থেকে ছাড়িয়ে নিয়েছে চোখ তারা মৌমাছি বলেই জানা যায়নি বৈষম্য একটা দিলখোলা জানালা মন পেতেছে তোমার দিকে ভিজে জামায় বিড়ালটিও কাতর গা-ঝাড়া দিয়ে শুকিয়ে নিচ্ছে জল চুপচাপ জানালায় টাঙিয়ে দিয়েছে ম্যাঁও রাস্তা কেটেছে ঘনঘন যাতায়াত কেউ কেউ দুদণ্ড জিড়িয়ে নিয়েছে রোদ আবার কালো রঙে ঘুমিয়ে পড়লে স্বপ্নে বিড়ালটি চুপচাপ তখনও… অথচ গল্পের গরুটি গাছের নিচেই দাঁড়িয়ে বিড়ালটিকে মাছ বাছার কাজে লাগানো হয়েছে এবং সে এর আগে পিঠেও ভাগ করেছিল এখন দুধের বাটি আগলে রেখেছে শিশুর… বাঘের মাসিকে আমিও মাসিই বললাম মোমবাতির দাঁত ও নখে রিরংসা জেগেছিল লেজটি গুটিয়ে নিলে মেঘমুক্ত আকাশ ঝোলায় কয়েক টুকরো খিদে ফুটোফাটা দিয়ে উঁকি মারছে হিমেল হাওয়া, টুকছে বেড়ালের সহবৎ… গুড়ের স্বাদে প্রাণপন ভ্রমর উড়ছে দুটি ডানায় কাঁপছে থরথর চার পায়ে বিপদ এগিয়েছে মন্থর ঠিক তখনই খরগোশ গোলপোস্টের দিকে এগিয়ে যেতেই বলটি শিখলো উড়ান দানাগুলো জমাট বেঁধে সাঁতরে চলেছে করোটির ভেতর; সুয়োপোকার গুটি মাটিতে উলঙ্গ শামুকের মন একটি উপোস দেশালাই এগিয়ে আসছে জলের ভেতর… বিড়ালটি শুনতে শিখছে অ আ ক খ প্রভুর কাছে একভাড় কৃতজ্ঞতা! মধুর বোয়াম থেকে চমকে উঠছে মৃতসঞ্জীবনী এভাবেই বিড়ালটি প্রভুর কানেই বাজিয়ে দিল ম্যাঁও কৃতজ্ঞতা কৃতজ্ঞতা এবং কৃতজ্ঞতা ও… হালুম করলেই- লে হালুয়া! যেন তেন প্রকারেন প্রাণ বাঁচাই ভিক্ষের বাটি থেকে উপচে পড়ে আলো অনবরত বাঘ বৃষ্টি হয়ে ঝরছে… এখন রতি কাল। সময়-অসময় ঝরে পড়া মন তরল না বায়বীয় এটা জানতে চাষাবাদ আলু-পটল-বেগুন-মূলো আরও নানান প্রতিটি অনুষঙ্গের সাথে মোহাব্বত সুনীল আরাম দুলছেন পিকাসো আর নাগরের কাছে নাগরিক চাওয়া তরল না বায়বীয় আজও জানা হলো না… বাঁশটি কেটে তেল চকচকে করে পিছনে রাখা পরম্পরাগত বাঁশের বাহার আর খ্যাপাকে নৌকো না-দোলানোর কথা তৎসহ সব সত্য বচন পাখি আওড়ালেন এখন করোটি ফুঁড়ে উড়ছে প্রজাপতি আকাশে রামধনু ভাঙা পণ সেজেগুজে। সদলবলে। বিড়ালটি এসব কথা কানে তুলবে না এখন! বিড়াল গল্প বিড়াল বলে মাছ খাইনা একথা হয় বিশ্বাস! যদি বলে মাছের গন্ধে নিতে পারিনা নিঃশ্বাস। এমন কথা পায়না শোভা বিড়ালের মুখে, তবুও যদি জোড়ে বলে দীর্ঘশ্বাসে বুকে। এসব কথা কুকুর শোনে চেচিয়ে উঠে ঘেউ, আজব কথায় বিশ্বাস নাই তোমরা শোননা কেউ। পুকুর পাড়ে গল্প বলে কুকুর বসে শোনে, জলের নিচে মাছগুলো মৃতুর প্রহর গুনে। বিড়াল নাকি সাধু সেজে নিরামিষ খায়, বুর্জোয়া আজ জন দরদী চলে এখন বায়। বিড়াল গল্প বিদেশ ভুমে কোথাও না শুনি, এখানে শুধাই ছিলো যত আমার পরিচিত মুনি। বিড়াল মিনি আমার একটা বিড়াল আছে, নাম তার মিনি, পছন্দ তার মাছ এবং দুধের সাথে চিনি। ডাকটা যে তার খুব ভালো ম্যাঁও ম্যাঁও সে ডাকে, এমনতরো মধুর আওয়াজ নিজের করে রাখে। মেইন কুন গৃহপালিত বিড়ালদের মধ্যে সবছেয়ে বড় জাতটি খুজতে গেলে সর্বপ্রথম যে নামটি আসবে তা হচ্ছে মেইন কুন । এটি উত্তর আমেরিকার সবছেয়ে প্রাচীনতম গৃহপালিত বিড়াল যা যুক্ত রাষ্ট্রের মেইন রাজ্য কর্তৃক স্বীকৃত রাষ্ট্রীয় বিড়াল। অনিন্দ্য সুন্দর চেহারা, লম্বা ও মাজারি আকারের পশমের এই বিড়াল সবার দৃষ্টি আর্কষন করে এর বিশাল আকার, সামাজিকতা, শিকার ধরার কৌশল ও বড় বড় পশম যুক্ত লম্বা লেজের কারনে। এই বিড়ালের জাতটির বিকাশ কিভাবে হয়েছে তা নিয়ে অনেক মুখরোচক গল্প থাকলেও এর সঠিক ইতিহাস কারোই জানা নেই। তবে ধারনা করা হয় প্রাচীনকালে নাবিকেরা তাদের জাহাজে রক্ষিত খাদ্যশস্যকে ইঁদুরের হাত থেকে রক্ষা করতে বিড়াল রাখতো। এই বিড়ালদের কোন কোনটা তীরে এসে স্থানীয় জনপদের সাথে থেকে গেছে। এই বিড়ালগুলো সম্ভবত নরওয়েয়ান বন্য বিড়াল কিংবা সাইবেরিয়ান বন্য বিড়ালের হতে পারে। উপকূলে আসার পরে সম্পূর্ন বিপরীত ও বৈরী আবহাওয়ার কবলে পড়ে এরা। এই বৈরী আবহাওয়ার সাথে মানিয়ে নিতে এদের অনকে সমস্যার সম্মুখিন হতে হয়। সম্পূর্ন বৈরী ও অনুকূল আবহাওয়ার পরেও যারা টিকে গেছে তাদের বংশধরেরা নতুন পরিবেশের সাথে সহজেই মানিয়ে নিয়েছে এবং এদের শাররীক বৈশিষ্টে অনেক পরিবর্তন এসেছে। এই বিড়ালগুলোই পরবর্তীতে বিকশিত হয়ে মেইন কুন (Maine Coon) জাত হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। যদিও এইটা একটা সম্ভাব্য ধারনা তবে সত্যিকারের কোন ধারনা কারো জানা নেই। ইতিহাস যাইহোক বর্তমানে এই বিড়ালগুলো অনেক জনপ্রিয় একটি জাত। এরা পোষা প্রানী হিসেবে খুবই ভদ্র প্রকৃতির তাই এদেরকে অনেকে "the gentle giant" বলে। এই জাতটিকে সবছেয়ে বড় জাত বলা হয় কেনো তা এদের শাররীক গঠন দেখলেই বুজতে পারবেন। আকার আকৃতিঃ প্রাপ্ত বয়স্কে এদের উচ্চতা হয় ১-১.৫ ফুটের মতো আর লেজ সহ লম্বায় তিনফুট থেকে সোয়া তিনফুটের মতো হয়ে থাকে। প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ মেইন কুনের ওজন হয় ৫.৯ থেকে ৮.২ কেজি এবং প্রাপ্ত বয়স্ক মহিলা মেইন কুনের ওজন হয় ৩.৬ থেকে ৫.৪ কেজি। ২০১৮ সালে ব্যারিভেল নামক মেইন কুন গিনেস বুকে নাম উঠায়। এটি লম্বায় ছিলো ৩ ফুট ১১.২ ইঞ্চি। যা এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত সবছেয়ে বড় মেইন কুন বিড়াল। সাভান্নাহ বিড়াল নিয়ে মানুষের আগ্রহ সেই প্রাচীনকাল থেকেই। সেই আগ্রহ থেকেই ১৯৮৬ সালে জুডী ফ্রাংক নামক এক ব্যাক্তি গৃহপালিত সিয়ামেসি বিড়ালের সাথে বন্য র্সাভাল বিড়ালের ক্রস ঘটান। যেখানে বন্য সার্ভাল বিড়াল আকারে অনেক বড়। এই দুইটি বিড়ালের ক্রসে যে হাইব্রিড জাতের বিড়ালের জন্ম হয় তার নাম দেওয়া হয় (সাভান্নাহ)। Savannah মূলত একটি হাইব্রিড জাতের বিড়াল। এই বিড়ালগুলো দেখতে অনেকটা সিলিন্ডার আকৃতির। অর্থ্যাৎ বিড়ালগুলোর দেহ লম্বা, সরু এবং উঁচু। বন্য বিড়ালের সাথে ক্রস ব্রিডিং এর মাধ্যমে প্রথম যে প্রজন্ম পাওয়া যায় তাদের মাঝে বন্য স্বভাবটা বেশী পরিলক্ষিত হয়। তবে এই প্রজন্মের বিড়ালগুলো আকারে সবছেয়ে বড় হয় এবং বন্য সার্ভাল বিড়ালের মতো এদের শরীরের কালো কালো ছোপ থাকে যার ফলে এদের দেখতে অনেক আকর্ষনীয় লাগে। প্রথম প্রজন্মের একটি প্রাপ্ত বয়স্ক সাভান্নাহ লম্বায় প্রায় ১৭ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়ে থাকে এবং ওজন হয় প্রায় ১১ কেজির মতো। আবার প্রথম প্রজন্মের সাভান্নাহ বিড়ালগুলোকে যখন নিজেদের মাঝে প্রজনন করা হয় তখন যে নতুন প্রজন্ম বা বাচ্ছার জন্ম হয় তারা আকারে কিছুটা ছোট হয় এবং তাদের মাঝে বন্য স্বভাবটা অনেটাই হ্রাস পায়। বন্য স্বভার হ্রাস পেলেও এদের দেহের রঙ্গ বর্ণের পরিবর্তন খুব কমই হয়। দ্বিতীয় প্রজন্মের বিড়ালগুলো পোষা প্রানী হিসেব সবছেয়ে ভালো হয়। এই প্রজন্মের বিড়ালগুলো আকারে প্রথম প্রজন্ম থেকে কিছুটা ছোট হয়ে থাকে। দ্বিতীয় প্রজন্মের বিড়ালগুলোর ওজন ৭.৫ (সাড়ে সাত কেজির মতো হয়ে থাকে। এই ভাবে এক জেনারেশন থেকে আরেক জেনারেশনে এদের বন্য স্বভাব হ্রাস পায় এবং একই সাথে এদের আকার ও ওজন কমতে থাকে। গিনেস বুকে সবছেয়ে লম্বা বিড়ালের রেকর্ডটা সাভান্নাহ জাতের দখলে। আমেরিকার কয়েকটা অঙ্গরাজ্যে সাভান্নাহ বিড়ালগুলো পালন করা নিষিদ্ধ কারন এদের বন্য স্বভাবের জন্য। এই বিড়ালগুলো এক লাফে প্রায় ছয় থেকে আট ফুট পর্যন্ত যেতে পারে এবং গাছে ছড়ার জন্য এদের খ্যাতি আছে। নরওয়েজিয়ান বন বিড়াল অনিন্দ সুন্দর নরওয়জিয়ান বন্য বিড়ালগুলো আদিকাল থেকেই কবি সাহিত্যিকদের কবিতায়, উপকথা, রূপকথায় স্থান পেয়ে এসেছে। বিশাল আকারের এই বিড়ালগুলো নিয়ে অনেক মিথ ছড়িয়ে আছে নরওয়ের মানুষের মুখে মুখে। কিন্তু েএই নরওয়েজিয়ান বিড়ালগুলো কোন যায়গা থেকে এসেছে? এই প্রশ্নটার উত্তর খুজতে গেলে হাজার হাজার গল্প পাওয়া যাবে কিন্তু সঠিক কোনটা তা কেউই বলতে পারবে না। হাজার হাজার গল্পের মাঝে যে তথ্যটা সবছেয়ে বেশী গ্রহণযোগ্য তা হচ্ছে- ১০০ শতাব্দির কিছু সময় পরে রোমাদের দ্বারা সাদা কালো ব্রিটিশ শর্ট হেয়ার বিড়ালগুলো নরওয়েতে এসেছে। আবার ১৪ শতাব্দিতে ক্রসেডারদের দ্বারা লম্বা চুলের বিড়ালগুলো নরওয়েতে এসেছে। শিকার ধরায় এরা অনেক পারদর্শী ছিলো বলে খামারে এদের রাখা হতো। এই বিড়ালগুলো নিজেদের মাঝে প্রজননের মাধ্যমে বংশধর বৃদ্ধি করেছে। উত্তর নরওয়ের আবহাওয়া অনেক শীতল এবং এইখানে মে থেকে আগস্ট পর্যন্ত সূর্য অস্ত যায় না। আবার এই অঞ্চলে শীতের সময় রাত্রীর দৈর্ঘ্য অনেক লম্বা যার ফলে টিকে থাকার জন্য এই বিড়ালগুলোর শরীর বিশেষ ভাবে অভিযোজিত হয়েছে। ফলে এদের লম্বা পশম, সুঠোম ও শক্তিশালী দেহ গঠিত হয়েছে যাতে তারা সেই অঞ্চলে টিকে থাকতে পারে। এদের লম্বা পশমগুলো অনেক ঘন ও পানিরোধী। প্রথম নজরে এদের যেকেউই মেইন কুন বলে ধারনা করবে কারন এরা দেখতে প্রায় মেইনকুনের মতোই। নরওয়ের বিশাল জঙ্গলে টিকে থাকতে শাররীক গঠনের সাথে সাথে এদের বুদ্ধিবৃত্তির বিকাশ ঘটেছে অন্য বিড়ালেদের তুলনায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই বিড়ালগুলো প্রায় বিলুপ্তির পথে ছিলো। পরবর্তীতে নরওয়ের বিড়ালপ্রেমীদের মাধ্যমে এই বিড়ালটি টিকে গেছে। ১৯৯৩ সালে এই বিড়ালটি একটি স্বতন্ত্র জাত হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। বন্যবিড়ালগুলো আকারে বড় হয়ে থাকে। সেই সূত্রে নরওয়েজিয়ান বন বিড়াল গুলোর আকারও অন্য গৃহপালিত বিড়ালদের তুলনায় বড়। পুরুষ নরওয়েজিয়ান বিড়ালগুলো আকারে স্ত্রী বিড়ালের তুলনায় একটু বেশী ওজনের হয়ে থাকে। প্রাপ্ত বয়স্ক নরওয়েজিয়ান পুরুষ বিড়ালের ওজন হয় ৪.৫ কেজি থেকে ০৯ কেজি পর্যন্ত এবং স্ত্রী নরওয়েজিয়ান বিড়ালগুলোর ওজন হয় ৪ কেজি থেকে ৮ কেজি পর্যন্ত। বিশাল আকারের শক্তিশালী এই বিড়ালগুলোর দামও অনেক চড়া। এদের দাম স্থান কাল ভেদে ৮০০-১৫০০ ডলার পর্যন্ত হয়ে থাকে। নরওয়েজিয়ান বন বিড়ালগুলো গড়ে ১৬-১৮ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে। রাগডল একটি বিড়াল কতো বড় হলে তাকে "কুকুর মতো বিড়াল" নাম দেওয়া যেতে পারে? রাগডল এমনি একটি বিড়াল যাকে আমেরিকার স্থানীয়রা আদর করে নাম দিয়েছে "কুকুরের মতো বিড়াল"। এই নাম দেওয়ার পিছনের কারন হচ্ছে রাগডলের বিশাল আকার। গৃহপালিত বিড়ালগুলোর মাঝে বড় জাতের তালিকা করলে রাগডল উপরের সারিতেই থাকবে। আকারে বড় এবং শক্তিশালী হলেও এই বিড়ালগুলো অনেক বেশী সামাজিক, বিনয়ী, শান্ত স্বভাবের এবং শিশু ও অন্যান্য পোষা প্রানীর সাথে সহজেই মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। যার জন্য এরা বিড়ালপ্রেমীদের নিকট অনেক জনপ্রিয় বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। শুধুমাত্র সামাজিকতা কিংবা শান্ত এর জন্য না, এই বিড়ালগুলো দেখতেও অনেক বেশী আকর্ষনীয়। এদের মাজারি আকারের সিল্কি পশম যখন বাতাসের সাথে দোল খেয়ে যায় তখন তা দেখে যে কারোই মন ভালো লাগবে। এর সাথে এদের নীল চোখের গভীর প্রেমময় চাহনি অবজ্ঞা করার সাহস কারো হবে না। তুলতুলে স্নেহময়ী নীল চোখের এই বিড়ালগুলো যখন কারো কোলে থাকে তখন দেখতে অনেকটা পুতুলের মতো মনে হয়। তাই এদের নামটা রাগডল করা হয়। রাগডল বিড়ালগুলোর ইতিহাস খুব বেশী দিনের না। আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ার বিড়ালের ব্রিডার আ্যন বেকার ১৯৬০ সালে প্রথম রাগডল বিড়ালের জাত উদ্ভাবন করেন। রাগডল বিড়ালের জন্ম হয়েছে জোসেফাইন নামক একটি গৃহপালিত লম্বাচুলের সাদা বিড়ালেরর গর্ভথেকে। Josephine সম্ভবত Persian/Angora জাতের বিড়াল ছিলো। বিড়ালের প্রজনন কালীন আচরনের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী স্ত্রী বিড়াল হিট সাইকেলে থাকা অবস্থায় একাধিক পুরুষ বিড়ালের সাথে মিলিত হয়ে। তেমনি জোসেফাইনও অজানা পুরুষ বিড়ালের সাথে মিলিত হয়েছে। ধারনা করা হয় এই পুরুষগুলো হয়তো বার্মিজ কোন বিড়ালের জাত হবে যেখানে একটি পুরুষ বিড়াল সিয়ামেজি পয়েন্ট কালারের ছিলো। জোসেফাইনের বাচ্চা গুলোর মাঝে একটি শান্ত স্বাভাবের স্নেহশীল বিড়াল ছানা ছিলো। যা দেখে মিস্টার আ্যান বেকার এদের ডেভলপ করার চিন্তা করেন। এইভাবে কয়েক জেনারেশন পরে মিস্টার আ্যান বেকার প্রথম বিড়ালের একটি স্বতন্ত্র জাত তৈরী করেছেন এবং এদের নাম করন করেন রাগডল। এই অসাধারণ পরিবার-বান্ধব জাতটি ১৯৯০-এর দশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে। ১৯৯৩ সালে The Cat Fanciers Association (CFA) রাগডল বিড়ালগুলোকে স্বতন্ত্র জাত হিসেবে স্বিকৃতি দেয়। বর্তমানে রাগডল বিড়ালগুলো পাঁচ নাম্বার জনপ্রিয় বিড়ালের স্থান দখল করে আছে। ওজন: পুরষ রাগডল বিড়ালগুলোর স্ত্রী রাগডল থেকে একটু বেশী হয়। পুরুষ রাগডলের গড় ওজন 20 পাউন্ড বা ০৯ (নয়) কেজি এবং মহিলাদের ওজন ১০ থেকে ১৫ পাউন্ডের মধ্যে বা ৫-৭ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। উচ্চতা: রাগডল বিড়ালগুলো উচ্চতা কাঁধ থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত ১১-১৩ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়ে থাকে। পশম: এদের পশম বেশী লম্বা না আবার খাটোও না। মানে মাঝারি দৈর্ঘ্যের। তবে এদের পশমগুলো সিল্কি টাইপের যার ফলে এদের স্পর্শ করলে অন্যরকম একটা অনুভূতি হয়। গায়ের রং: এদের গায়ের রং দুইটি বা তিনটি রঙ্গের মিশ্রনে হয়ে থাকে। চোখের রঙ: নীল চোখ গড় আয়ু: ১৩ থেকে ১৫ বছর। তবে সঠিক যত্ন করলে এরা আরো বেশী দিন বেঁচে থাকাতে পারে। সাইবেরিয়ান তুলতুলে সাইবেরিয়ান বিড়ালগুলো তাদের উচ্চতা এবং বন্ধুত্বপূর্ণ আচরনের জন্য সকলের কাছেই প্রিয়। বিশালাকার এই বিড়ালগুলোর আনুষ্ঠানিক নাম সাইবেরিয়ান ফরেস্ট ক্যাট। যদিও সংক্ষিপ্তভাবে সবাই এদের সাইবেরিয়ান বিড়াল বলেই ডাকে। সাইবেরিয়ান বিড়ালগুলোর সাথে নরওয়েজিয়ান ফরেস্ট ক্যাট এর অনেক বেশী মিল থাকায় অনেকে এদের দুইজনকে এক করে ফেলে। প্রকৃতপক্ষে এটি সাইবেরিয়ার একটি স্বতন্ত্র বিড়াল যা রাশিয়ার জাতীয় বিড়াল হিসেবে স্বীকৃত। Cats,বিড়াল,বিড়ালের জাত সাইবেরিয়ান বিড়ালগুলোর আদি নিবাস রাশিয়ায়। অর্থাৎ এই জাতটার বিকাশ ঘটেছে রাশিয়া থেকে। তবে ঠিক কবে রাশিয়ায় এই বিড়ালগুলোর বিকাশ ঘটেছে তা সঠিক ভাবে বলা বলা মুশকিল, তবে বিভিন্ন রাশিয়ান রূপকথার গল্প এবং শিশুদের বইয়ের উপর ভিত্তি করে ধারনা করা হয় সাইবেরিয়ান বিড়ালগুলো শত শত বছর ধরেই রাশিয়ায় রয়েছে। এইটা হতে পারে ১০০০ বছর এর কাছাকাছি বা তারো বেশী। সাইবেরিয়ান বিড়ালগুলোকে রাশিয়ায় জাতীয় সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সাইবেরিয়ান বিড়ালের কথা সর্বপ্রথম হ্যারিসন ওয়েয়ার নামক একজন লেখকের "Our Cats and All About Them" বইয়ে উল্ল্যেখ করা হয়েছে। এই বইটি ১৯৮৯ সালে প্রকাশিত হয়েছিলো। ১৯৯০ সালে শীতল যুদ্ধের বাষ্প গলে গেলে যুক্তরাষ্ট্র সাইবেরিয়ান বিড়াল সর্ম্পকে জানতে পারে। লম্বা লম্বা পশমের তুলতুলে বিশাল আকারের এই সাইবেরিয়ান বিড়ালগুলো দেখে মার্কিনরা আমেরিকায় নিয়ে আসে। পরে ক্যাট ফ্যানসিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন (CFA) এবং দ্য ইন্টারন্যাশনাল ক্যাট অ্যাসোসিয়েশন (ICA) এদের স্বতন্ত্র জাত হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। মোটামুটি ১৯৯০ সাল থেকে সারা পৃথিবীতে এই সাইবেরিয়ান বিড়ালগুলোর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেতে থাকে। ওজনঃ পুরুষ সাইবেরিয়ান বিড়ালের ওজন স্ত্রী সাইবেরিয়ান বিড়ালের ছেয়ে একটু বেশী হয়ে থাকে। প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ সাইবেরিয়ান বিড়ালের ওজন হয় ৫-৮ কেজি এর মতো এবং প্রাপ্ত বয়স্ক স্ত্রী সাইবেরিয়ান বিড়ালের ওজন হয় ৪-৬ কেজি পর্যন্ত। উচ্চতাঃ সাইবেরিয়ান বিড়ালগুলো উচ্চতার দিক থেকে দেড় থেকে দুই ফুট পর্যন্ত হয়ে থাকে। পশমঃ এদের পশম লম্বা কিংবা মাঝারি আকৃতির হয় এবং বিভিন্ন রঙ্গের হয়ে থাকে। সাইবেরিয়ান বিড়ালগুলোর চোখের বর্ণও সব ধরনের রঙ্গের হয়ে থাকে। গড় আয়ুঃ সাইবেরিয়ান বিড়ালগুলো লম্বাজীবনধারী। এদের গড় আয়ুষ্কাল ১২-১৮ বছর। সাইবেরিয়ান বিড়ালদের সামনের পায়ের চেয়ে পিছনের পা আকারে একটু বেশী লম্বা হয়ে থাকে। যার ফলে এরা খুব দ্রুত দৌড়াতে পারে। সাইবেরিয়ান বিড়ালগুলো তুলনামূলক ভাবে অন্যান্য বিড়ালের আগেই প্রজনন পরিপক্কতা অর্জন করে। চার পাঁচ মাস বয়সেই এই বিড়ালগুলো প্রজনন করার জন্য প্রস্তুত হয়ে যায় এবং একসাথে ৫-৬টি বাচ্চার জন্ম দিয়ে থাকে। রাগামুফিন শান্ত ভদ্র জাতের বিড়াল খুজতে গেলে প্রথম সারিতে যে বিড়ালগুলোর নাম আসবে সেইখানে রাগামুফিন জাতের বিড়ালদের নাম প্রথম দিকে থাকবে।রাগামুফিন বিড়ালগুলো দেখতে অনেক সুন্দর, বিশেষ করে এদের শাররীক উচ্চতা, লম্বা ও মোটা মোটা পশম সবার দৃষ্টি আর্কষন করে।যদিও এই বিড়ালগুলো অনেকটা অলস তারপরেও গৃহপালিত বিড়াল হিসেবে অনেক জনপ্রিয়। জনপ্রিয়তার হিসেব বর্তমানে রাগামুফিন ৩৩ নাম্বার অবস্থানে আছে। রাগামুফিন গৃহপালিত বিড়ালের একটি স্বতন্ত্র জাত। গৃহপালিত আরেকটি বিড়ালের জাত রাগডল এর সাথে রাগামুফিন নাম দুইটার মাজে যেমন মিল আছে তেমনি এদের ‍চেহারার, আকার আকৃতিরও মিল আছে। দেখতে দুইটা প্রায় একই রকম বলে, একসময় রাগামুফিন বিড়ালগুলোকে রাগডল বিড়ালের একটি রূপ হিসেবে মনে করা হতো। ১৯৯৪ সালে এটিকে স্বতন্ত্র জাত হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। দুইটি ভিন্ন জাতের মাঝে এতো বেশী মিল থাকার মূল কারন হচ্ছে দুইটা জাতের উৎপত্তি একই মায়ের গর্ভ থেকে হয়েছে। রাগামাফিন বিড়ালগুলো জন্ম হয়েছে রাগডল বিড়ালের সাথেই। ১৯৬০ দশকে জোসেফাইন নামক একটি লম্বা পশমের বিড়াল সম্ভবত পার্সিয়ানা কিংবা বার্মিজ জাতের বিড়াল অনেকগুলো বাচ্চার জন্ম দিয়েছে। সেই বাচ্চাগুলো থেকেই কয়েক প্রজন্ম বাদে রাগডল বিড়ালের জন্ম হয়েছে। সেই একই প্রজন্মের বিড়াল বাচ্চাগুলো হতে একটা আলাদা করে তার সাথে তুর্কিশ এনগোরা, হিমালয়ান, পার্সিয়ানা এবং লম্বা পশমের গৃহপালিত বিড়ালের সাথে ক্রস ঘটানো হয়। এর ফলে আকারে বড় এবং লম্বাপশমের একটি স্বতন্ত্র জাতের বিড়ালের জাত তৈরী হয়। ব্রিডার মিস্টার আ্যান বেকার প্রথমে এদের নাম রেখেছেন চেরুবীম । পরবর্তীতে এর নাম করা হয় রাগামাফিন। ২০০৩ সালে ক্যাট ফ্যানসিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন (CFA) রাগামুফিনকে স্বতন্ত্র জাত হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। রাগডলের সাথে রাগামুফিন এর মূল ব্যবধান হচ্ছে রাগডলের পয়েন্ট কালার। কালার পয়েন্ট হচ্ছে শরীরের মাথা, পায়ের পাতা, লেজ কিংবা কানে কালো বর্ণের একধরনের চাপ। রাগডল বিড়ালে এই কালার পয়েন্ট দেখা যায় এবং এই কালার পয়েন্ট রাগডলের জন্য স্বীকৃত। যেখানে রাগামুফিন যেকোন রং বা প্যাটার্নের হতে পারে। রাগামুফিন বিড়ালের বাচ্চাগুলোর জন্মের সময় সাদা বর্ণের হয়ে থাকে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে এদের দেহে রঙ্গের প্যার্টান দেখা যায়। রাগামুফিন বিড়ালগুলো শাররীক ভাবে পরিপূর্ণ হতে সময় লাগে প্রায় চার বছর। ওজনঃ ০৭ থেকে ০৯ কেজি। উচ্চতাঃ ১০ থেকে ১৫ ইঞ্চি। গড় আয়ুঃ ১২ থেকে ১৬ বছর। পশমঃ লম্বা। দামঃ রাগামুফিন বিড়ালগুলো তুলনামূলক ভাবে অনেক দামী। খাটি জাত এবং ভৌগলিক অবস্থান ভেদে এদের দাম ৬০০-১৩০০ ডলার পর্যন্ত হয়ে থাকে। বিড়াল প্রজাতির সংজ্ঞা বিড়াল প্রজাতি হল বিড়ালদের একটি দল যারা শারিরীক এবং আচরণগত বৈশিষ্ট্যগুলির একটি বিভাজন তৈরি করে যা সমস্ত সেই বিড়ালের সমস্ত জাত জুড়ে সামঞ্জস্যপূর্ণ। বিড়াল প্রজননের ইতিহাস বিড়ালগুলি 10,000 বছরেরও বেশি আগে প্রথম গৃহপালিত হয়েছিল এবং সময়ের সাথে সাথে, তারা বেছে বেছে নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের জন্য প্রজনন করেছিল, যেমন কোটের রঙ, শরীরের আকৃতি এবং আচরণ। ক্যাট ফ্যান্সিয়ারস অ্যাসোসিয়েশন (সিএফএ) 1906 সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং তারপর থেকে, এটি 40 টিরও বেশি বিভিন্ন বিড়ালের প্রজাতির জন্য প্রজনন মান প্রতিষ্ঠা করেছে। বিভিন্ন বিড়াল প্রজাতির ওভারভিউ সিএফএ, দ্য ইন্টারন্যাশনাল ক্যাট অ্যাসোসিয়েশন (টিআইসিএ) এবং আমেরিকান ক্যাট ফ্যান্সিয়ার অ্যাসোসিয়েশন (এসিএফএ) এর মতো বিভিন্ন সংস্থার দ্বারা স্বীকৃত 100 টিরও বেশি বিড়ালের জাত রয়েছে। এই বিভাগে, আমরা তাদের শারীরিক এবং আচরণগত বৈশিষ্ট্য সহ সবচেয়ে জনপ্রিয় কিছু বিড়াল প্রজাতির একটি ওভারভিউ প্রদান করব। বিড়াল-প্রজাতির গুরুত্বের ব্যাখ্যা। ব্রিড স্ট্যান্ডার্ড হল বিড়াল সংস্থাগুলির দ্বারা প্রতিষ্ঠিত নির্দেশিকা যা একটি নির্দিষ্ট প্রজাতির আদর্শ শারীরিক এবং আচরণগত বৈশিষ্ট্যগুলি বর্ণনা করে। তারা ব্রিডার এবং বিড়াল মালিকদের জন্য একটি রেফারেন্স পয়েন্ট হিসাবে কাজ করে এবং একটি প্রজাতির বিশুদ্ধতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। বিড়ালের জাত সম্পর্কে প্রচলিত ভুল ধারণা বিড়ালের জাত সম্পর্কে বেশ কয়েকটি সাধারণ ভুল ধারণা রয়েছে, যেমন বিশ্বাস যে নির্দিষ্ট জাতগুলি সর্বদা হাইপোঅ্যালার্জেনিক বা নির্দিষ্ট জাতগুলি সর্বদা বন্ধুত্বপূর্ণ। এই বিভাগে, আমরা এই ভুল ধারণাগুলি সমাধান করব এবং বিড়ালের জাত সম্পর্কে সঠিক তথ্য প্রদান করব। বিড়াল প্রজাতির শারীরিক বৈশিষ্ট্য বিভিন্ন বিড়াল প্রজাতির শারীরিক বৈশিষ্ট্যের সংক্ষিপ্ত বিবরণ: প্রতিটি বিড়াল প্রজাতির তার অনন্য শারীরিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যেমন কোটের দৈর্ঘ্য, রঙ এবং টেক্সচার, সেইসাথে শরীরের আকৃতি এবং আকার। একটি বিড়ালের প্রজাতির কিভাবে তার শারীরিক বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে সনাক্ত করা যায় তার ব্যাখ্যা এই বিভাগে, আমরা তাদের শারীরিক বৈশিষ্ট্য যেমন কোটের রঙ এবং শরীরের আকৃতির উপর ভিত্তি করে একটি বিড়ালের প্রজাতির সনাক্ত করার জন্য টিপস প্রদান করব। মিশ্র জাতের বিড়ালের সাধারণ শারীরিক বৈশিষ্ট্য যদিও মিশ্র-প্রজাতির বিড়ালদের একটি নির্দিষ্ট প্রজাতির পদবি নাও থাকতে পারে, তারা এখনও শারীরিক বৈশিষ্ট্যগুলি প্রদর্শন করে যা তাদের জেনেটিক মেকআপের সূত্র দিতে পারে। বিড়াল প্রজাতির শারীরিক বৈশিষ্ট্য একটি বিড়ালের শারীরিক চেহারা তার বংশ সম্পর্কে কিছু সূত্র প্রদান করতে পারে। প্রতিটি বিড়াল প্রজাতির তার অনন্য শারীরিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যেমন কোট, চোখ এবং শরীরের আকৃতি, যা আপনাকে জাত শনাক্ত করতে সাহায্য করতে পারে। শারীরিক বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে আপনার বিড়ালের জাত শনাক্ত করতে আপনাকে সাহায্য করার জন্য এখানে কিছু টিপস রয়েছে: কোট: একটি বিড়ালের সবচেয়ে স্বীকৃত বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে একটি হল এর কোট। বিভিন্ন বিড়াল প্রজাতির বিভিন্ন ধরনের কোট, রঙ এবং নিদর্শন রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, সিয়ামিজ বিড়ালের একটি সংক্ষিপ্ত, সূক্ষ্ম আবরণ রয়েছে, যখন পারস্যের লম্বা, পুরু এবং বিলাসবহুল পশম রয়েছে। একটি বিড়ালের কোট আপনাকে তার বংশ সম্পর্কে কিছু সূত্র দিতে পারে। আপনার বিড়ালের পশমের রঙ, টেক্সচার এবং দৈর্ঘ্য, সেইসাথে কোনও অনন্য নিদর্শন বা চিহ্নগুলিতে মনোযোগ দিন। চোখ: একটি বিড়ালের চোখের আকৃতি এবং রঙ তার বংশ সম্পর্কে কিছু সূত্র প্রদান করতে পারে। কিছু বিড়াল প্রজাতি, যেমন সিয়ামিজ, স্বতন্ত্র বাদাম-আকৃতির চোখ থাকে, অন্যদের, যেমন স্কটিশ ফোল্ডের চোখ থাকে গোলাকার। একটি বিড়ালের চোখের রঙও তার বংশের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, বেঙ্গল বিড়ালের উজ্জ্বল সবুজ বা সোনালি চোখ রয়েছে, অন্যদিকে সিয়ামের চোখ চকচকে নীল। শরীরের আকৃতি: বিড়ালের জাতগুলিও তাদের দেহের আকার এবং আকারে আলাদা। কিছু বিড়ালের জাত, যেমন মেইন কুন এবং নরওয়েজিয়ান ফরেস্ট বিড়াল বড় এবং পেশীবহুল, অন্যরা, যেমন সিয়ামিজ এবং কর্নিশ রেক্স, স্লিম এবং লাবণ্যময়। আপনার বিড়ালের শরীরের আকৃতি, আকার এবং অনুপাতের পাশাপাশি কানের আকৃতি বা লেজের দৈর্ঘ্যের মতো অনন্য শারীরিক বৈশিষ্ট্যগুলিতে মনোযোগ দিন। বিড়াল প্রজাতির আচরণগত বৈশিষ্ট্য তাদের শারীরিক চেহারা ছাড়াও, বিড়াল প্রজাতিদের বিভিন্ন আচরণগত বৈশিষ্ট্যও রয়েছে। কিছু বিড়ালের জাত আরও কণ্ঠস্বর, অন্যরা আরও স্বাধীন। এখানে কিছু টিপস রয়েছে যা আপনাকে তার আচরণের উপর ভিত্তি করে আপনার বিড়ালের জাত সনাক্ত করতে সহায়তা করবে: ব্যক্তিত্ব: একটি বিড়ালের ব্যক্তিত্ব তার বংশ সম্পর্কে কিছু সূত্র প্রদান করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, সিয়ামিজ বিড়াল কথাবার্তা এবং দাবিদার হওয়ার জন্য পরিচিত, যখন ফার্সি আরও শান্ত এবং স্নেহপূর্ণ। আপনার বিড়ালের মেজাজ, আচরণ এবং পছন্দগুলির পাশাপাশি কোনও অনন্য ব্যক্তিত্বের বৈশিষ্ট্যগুলিতে মনোযোগ দিন। খেলার ধরন: বিভিন্ন বিড়ালের প্রজাতির খেলার ধরনও আলাদা। কিছু বিড়াল আরও উদ্যমী এবং কৌতুকপূর্ণ, অন্যরা আরও শান্ত এবং আশেপাশে থাকা উপভোগ করে। আপনার বিড়ালের খেলার শৈলী এবং পছন্দগুলির পাশাপাশি কোনও অনন্য আচরণের নিদর্শন বা অদ্ভুততার দিকে মনোযোগ দিন। কণ্ঠস্বর: একটি বিড়ালের ময়ূর শব্দও এর বংশ সম্পর্কে কিছু সূত্র প্রদান করতে পারে। কিছু বিড়াল প্রজাতি অন্যদের চেয়ে বেশি কণ্ঠস্বর বলে পরিচিত, অন্যদের অনন্য কণ্ঠস্বর রয়েছে। আপনার বিড়ালের মিউয়ের শব্দ এবং ফ্রিকোয়েন্সি, সেইসাথে যে কোনও অনন্য কণ্ঠস্বর, যেমন চিপস বা ট্রিলসের দিকে মনোযোগ দিন। বিড়াল প্রজাতির জন্য জেনেটিক্স এবং ডিএনএ পরীক্ষা জেনেটিক্স বিড়াল প্রজননে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, এবং ডিএনএ পরীক্ষা একটি বিড়ালের জাত সনাক্ত করার একটি ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয় উপায় হয়ে উঠছে। ডিএনএ পরীক্ষা আপনাকে মিশ্র-প্রজাতির বিড়ালের জাত শনাক্ত করতে বা বিশুদ্ধ জাত বিড়ালের জাত নিশ্চিত করতে সাহায্য করতে পারে। একটি বিড়ালের জাত শনাক্ত করার জন্য ডিএনএ পরীক্ষা ব্যবহার করার সময় এখানে কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে: ডিএনএ টেস্টের ধরন: বিড়ালের জাত শনাক্ত করার জন্য বিভিন্ন ধরনের ডিএনএ পরীক্ষা পাওয়া যায়, যার মধ্যে রয়েছে ব্রিড-নির্দিষ্ট পরীক্ষা এবং মিশ্র-প্রজাতির পরীক্ষা। ব্রিড-নির্দিষ্ট পরীক্ষাগুলি একটি বিশুদ্ধ জাত বিড়ালের জাত শনাক্ত করতে পারে, যখন মিশ্র-প্রজাতির পরীক্ষাগুলি আপনাকে মিশ্র-প্রজাতির বিড়ালের জাত সনাক্ত করতে সাহায্য করতে পারে। সুবিধা এবং সীমাবদ্ধতা: ডিএনএ পরীক্ষা একটি বিড়ালের জাত সনাক্ত করার জন্য একটি দরকারী টুল হতে পারে, তবে এর কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। বিড়াল কি রসুন খেতে পারে? মানুষের জন্য রসুন খুবই উপকারী। এটি খাবারে আলাদা স্বাদ এবং সুগন্ধ যুক্ত করে থাকে। বাজারে কাঁচা রসুন, রসুনের আচার, রসুনের গুড়া সহ বিভিন্ন ভাবে পাওয়া যায়। বিড়াল মানুষের জন্য খাবারে আলাদা স্বাদ যুক্ত করলেও বিড়ালের জন্য এটা বিপজ্জনক হতে পারে। বিড়ালের জন্য কি রসুন বিপজ্জনক? রান্না করা হোক কিংবা কাঁচা রসুন, উভয়ই বিড়ালের জন্য বিষাক্ত। আপনার বিড়ালকে কোন ভাবেই কোন কারণে রসুন খাওয়ানো উচিত হবেনা। যেমন- রসুনের আচার রসুনের সালাদ রসুনের পাউডার রসুন দিয়ে রান্না করা তরকারি কিংবা তার ঝোল এমনকি রসুন দিয়ে বাচ্চাদের জন্য তৈরিকৃত খাবারও বিড়ালকে খেতে দেওয়া উচিত না। রসুন এলিয়াম (Allium) গোত্রের একটি বাল্ব জাতীয় সবজি। পিঁয়াজ, পিঁয়াজজাতীয় গাছ এসকল কিছুই এই গোত্রের অন্তর্ভুক্ত। এ ধরনের কোন সবজিই বিড়ালকে খাওয়ানো উচিত না। রসুনে সোডিয়াম এন-প্রোপাইল থায়োসালফেট নামে একটি বিষাক্ত যৌগ রয়েছে। এই টক্সিন লোহিত রক্ত ​​কণিকার ক্ষতি করে, লোহিত রক্ত কণিকাকে ভঙ্গুর করে তোলে। একটা সময় এই যৌগ লোহিত রক্ত কণিকাকে ভেঙ্গে ফেলে। এটাকে হেমোলাইসিস বলা হয়ে থাকে। হেমোলাইসিসের ফলে প্রস্রাব বিবর্ণ হয়ে লাল বা বাদামী রঙ এর হয়ে যায়। এছাড়া রক্তের স্বল্পতাও দেখা যায়। এছাড়া এনিমিয়া হতে পারে। এনিমিয়া অর্থ হলো শরীর অর্গ্যানগুলো পর্যাপ্ত অক্সিজেন পায় না ফলে সঠিক ভাবে কাজ করা বন্ধ করে দিতে পারে এবং মৃত্যু হতে পারে। আপনার বিড়ালের জন্য রসুন খুবই বিপজ্জনক হতে পারে। যদি আপনার বিড়াল আপনার অসবাধানতা বশতঃ রসুন খেয়ে ফেলে তাহলে দেরি না করে দ্রুত কোন পশু চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান।তার অসুস্থতার লক্ষণের জন্য অপেক্ষা করবেন না। রসুনের বিষাক্ততার কারণে আপনার বিড়াল মৃত্যু ঝুঁকিতে পড়তে পারে। রসুন বিড়ালের জন্য কতটা বিষাক্ত? রসুন বিড়ালের জন্য পিঁয়াজের চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি ক্ষতিকর। বিড়ালের আকার ছোট হওয়ার কারণে এবং রসুনের ক্ষমতা অনেক বেশি হওয়ার কারণে অল্প পরিমানে খেলেও মারাত্মক বিষক্রিয়া হতে পারে। গড় হিসেব করলে একটি ১০-১২ পাউন্ড ওজনের বিড়ালের জন্য রসুনের একটি ৫-৭ গ্রাম ওজনের ছোট টুকরো বিড়ালের দেহে বিষক্রিয়া করার জন্য যথেষ্ট। অর্থাৎ দেড় চা চামচ পরিমাণ ব্লেন্ড করা রসুন কিংবা ১/৮ চা চামচ পরিমাণ রসুনের পাউডার একটি বিড়ালের দেহে বিষক্রিয়া করতে পারে। রান্না করা বা রসুনজাত কোন খাবারে রসুনের পরিমাণ নির্ধারণ করা সম্ভব না। তাই আপনার বিড়ালকে এ জাতীয় খাবার খেতে দিবেন না। যদি অসবাধানতা বশতঃ আপনার বিড়াল কখনো রসুন জাত খাবার খেয়ে ফেলে তাহলে তাকে কোন পশু চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া উত্তম। বিড়ালের দেহে রসুনের বিষক্রিয়ার লক্ষন যদি আপনার বিড়াল রসুন খেয়ে ফেলে তাহলে একদিনের মধ্যে কিছু লক্ষণ দেখা যাবে। কখনো কখনো কয়েকদিন পর এই লক্ষনগুলো দেখা যেতে পারে। চলুন জেনে নিই কি কি লক্ষণ দেখা দিতে পারে- বমি করা ডায়রিয়া হওয়া ক্ষুদামন্দা দাঁতের মাড়ি ফ্যাকাশে গোলাপি বা হলুদ অথবা সাদা হয়ে যাওয়া প্রস্রাবের রঙ লাল বা বাদামী হয়ে যাওয়া ঘন ঘন নিঃশ্বাস নেওয়া হার্টবিট বেড়ে যাওয়া বিড়াল রসুন খেলে কি করবেন? বিড়াল অল্প পরিমাণে রসুন খেলেও তার বিষক্রিয়া হতে পারে। আপনার বিড়াল যদি ভুল ক্রমে রসুন খেয়ে ফেলে তাহলে তাকে অবিলমে পশু চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। কি পরিমাণ রসুন খেয়েছে তা নির্ণয় করার চেষ্টা করুন। সম্ভব হলে বিড়াল যে রসুন জাত খাবার খেয়েছে তার নমুনা সাথে নিয়ে নেন। বিড়াল রসুন খেয়ে ফেললে তাকে বাড়িতেই চিকিৎসা দেওয়ার চেষ্টা করবেন না। তাকে জোর করে বমি করানোর চেষ্টা করবেন না। তাকে পশু চিকিৎসকের কাছে নিয়া যাওয়া শ্রেয়। সম্ভব হলে পশু চিকিৎসককে বিস্তারিত বলুন। এতে পশু চিকিৎসক পরিস্থিতি বুঝে সঠিক চিকিৎসা দিতে পারবেন। বিড়াল রসুন খেয়ে ফেললে চিকিৎসা বিড়াল রসুন খেয়ে ফেললে বিড়ালের দেহে বিষক্রিয়া হতে পারে। বিষক্রিয়া হয়েছে কিনা তা নির্ণয় করার জন্য পশু চিকিৎসকরা সাধারনত অসুস্থতার লক্ষণ এবং রক্তের নমুনার মাইক্রোস্কোপিক পরীক্ষার মাধ্যমে করে থাকেন। রসুনের বিষাক্ত যৌগ (সোডিয়াম এন-প্রোপাইল থায়োসালফেট) লোহিত রক্ত কণিকাকে ভেঙ্গে ফেলে। এটা মাইক্রোস্কোপিক পরীক্ষার মাধ্যমে বোঝা যায়। যদি আপনার বিড়াল রসুন খাওয়ার দুই ঘন্টার মধ্যে পশু চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে পারেন তাহলে খুবই ভালো হয়। পশু চিকিৎসক বিড়ালকে বমি করানোর চেষ্টা করতে পারে। তবে বিড়ালদেরকে জোর করে বমি করানো কঠিন এবং এটা ক্ষতিকরও বটে। বমি করানোর বিকল্প বিড়াল রসুন খেয়ে ফেললে আর তাকে জোর করে বমি করানোর চেষ্টা করা বিড়ালের জন্য ক্ষতিকর। তাই পশু চিকিৎসক বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতি গুলোর মাধ্যমে চেষ্টা করতে পারেন। আপনার বিড়ালের পেটের টক্সিন গুলোকে নিষ্ক্রিয় করার জন্য এক্টিভেটেট চারকোল পদ্ধতি এপ্লাই করতে পারে। বিড়ালের অবস্থা গুরুতর হলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হতে পারে। অল্প পরিমাণে রসুন খেলে আর বিষক্রিয়া হলে বেশিরভাগ বিড়ালই পুনরায় সুস্থ হয়ে যায়। তবে কখনো কখনো রসুনের বিষক্রিয়া বিড়ালের জন্য মারাত্মক হতে পারে। তাই বিড়ালকে রসুন বা রসুন জাত খাবার থেকে দূরে রাখুন। ভুলবশতঃ বিড়াল এগুলো খেয়ে ফেললে তাকে পশুচিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান এবং তার পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করুন। বিড়াল ছানাকে কি কি খাওয়াবেন? বিড়াল ছানাদের হাড় শক্তিশালী, পেশী বৃদ্ধি এবং মস্তিষ্কের সঠিক বিকাশের জন্য এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন সঠিক পুষ্টি। বাজারে বিভিন্ন রকমের ক্যাট ফুড পাওয়া যায়। এই ক্যাট গুলোর মধ্যে কিছু ক্যাট ফুড রয়েছে নির্দিষ্ট বয়সের বিড়ালের জন্য এবং কোন বয়সের জন্য এই ক্যাট ফুড তৈরি করা হয়ছে তা ক্যাট ফুড এর প্যাকেটে উল্লেখ করা থাকে। আবার অনেক ক্যাট ফুড রয়েছে যা সকল বয়সের বিড়ালই খেতে পারে। বাচ্চা বয়সের পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার এর উপর নির্ভর করে বিড়ালের পরবর্তী জীবনের স্বাস্থ্য অবস্থা। অর্থাৎ বিড়াল ছানাকে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি আপনার বিড়ালকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ খাবার খাওয়াবেন নাকি পরবর্তীতে তাকে বিভিন্ন অসুস্থতার জন্য কয়দিন পর পর ভেটের কাছে নিয়ে যাবেন, মেডিসিন দিবেন এটা নির্ভর করে আপনার উপর। আপনার বিড়াল ছানার ভালোর জন্যই বিড়াল ছানার দৈহিক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে কি কি পুষ্টি উপাদান প্রয়োজন তা জেনে রাখা উচিত। প্রয়োজনীয় এই পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার গুলো বিড়াল ছানার সঠিক দৈহিক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সহায়ক। কার্বোহাইড্রেট এবং প্রোটিন আপনি, নিশ্চই জানেন যে, বিড়াল একটি মাংসাশী প্রাণি। তারা কার্বোহাইড্রেট বা শাকসবজির উপর নির্ভর করেনা তাই প্রাণিজ আমিষ আপনার বিড়াল ছানার প্রধান খাদ্য উপদান হওয়া উচিত। যদি আপনার বিড়াল সঠিক পরিমাণে প্রাণিজ আমিষ না পায় তাহলে তার দেহে ঘাটতি হবে আর সেই ঘাটতি পূরণ করার প্রয়াসে তার নিজের পেশী ভেঙে যাবে। প্রাণিজ আমিষ দেহের মাংসপেশী এবং টিস্যু বৃদ্ধিতে সহয়তা করে এবং টিস্যু ব্লক তৈরি করতে প্রয়োজনীয় অ্যামিনো এসিড সরবরাহ করে। শরীরে বিভিন্ন ধরনের অ্যামিনো এসিড রয়েছে। কিছু অ্য্যামিনো এসিড অন্যান্য অ্যামিনো এসিডের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যেমন- বিড়াল ছানা এবং বিড়ালের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অ্যামিনো এসিড হলো টরিন (Taurine)। হৃদপিণ্ড, দৃষ্টিশক্তি এবং প্রজনন ক্ষমতায় গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে টরিন নামক এই অ্যামিনো এসিড। এর অভাবে বিড়ালের দৃষ্টিশক্তি কমে যায় এবং বিভিন্ন ধরনের কার্ডিয়াক সমস্যায় ভুগে থাকে। এই অ্যামিনো এসিড শুধু মাত্র মাংসে পাওয়া যায়। তাই বলা যায় মাংস জাতীয় খাবার বিড়ালের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কার্বোহাইড্রেট এবং শস্য দিয়ে প্রচুর ক্যাটফুড তৈরি করা হয়। যদিও এগুলোকে এড়িয়ে যাওয়া কঠিন তবে কার্বোহাইড্রেট এর পরিমাণ কম দিয়ে এধরনের ক্যাট ফুড তৈরি করা উচিত। অত্যাধিক মাত্রায় কার্বোহাইড্রেটের কারণে বিড়ালের দেহের অন্ত্রের নানা রকম সমস্যা হতে পারে এবং বিড়ালের ওজন অত্যাধিক বেড়ে যেতে পারে। ফ্যাট ফ্যাট কমবয়সী বিড়ালদের জন্য খুবই গুরত্বপূর্ণ খাদ্য উপাদান। ফ্যাট, ভিটামিন এ, ডি, ই এবং কে এর মত গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিনগুলোকে শুষে নিতে সাহায্য করে এবং খাবারে বাড়তি স্বাদ যোগ করে। ফ্যাট জাতীয় খাবার বিড়ালের দেহের শক্তির যোগান দেয় , ফ্যাট জাতীয় খাবার বিড়ালের ত্বক ও পশম চকচকে রাখতে প্রয়োজনীয় তেল এর যোগান দেয়। ডায়েটে ফ্যাট জাতীয় খাবারের পরিমান কমিয়ে দিলে বিড়ালের ত্বক শুষ্ক এবং আঁশযুক্ত হয়ে যতে পারে এবং বিড়ালের ত্বকে সংক্রমণের সম্ভাবনা বেড়ে যেতে পারে। বিড়াল ছানার সুস্বাস্থ্য এবং সঠিক দৈহিক বৃদ্ধির জন্য ফ্যাটি এসিড এবং ফ্যাট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে যেসকল খাবারে প্রচুর পরিমানে অ্যারাকিডোনিক ফ্যাটি এসিড (Arachidonic fatty acids) রয়েছে সেসকল খাবার বিড়াল ছানাকে খাওয়ানো উচিত। এই খাদ্য উপাদান রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে এবং ত্বকের বৃদ্ধি ঘটায়। বিড়ালছানার দেহের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত লিনোলিক এসিড ( Linoleic acid) প্রয়োজন ইনফ্লেমাটরি রেসপন্সের জন্য। ভিটামিন এবং মিনারেল বিড়ালের হাড় ও দাঁতের সঠিক বিকাশের জন্য ভিটামিন এবং মিনারেল যেমন- ক্যালসিয়াম, ফসফরাস এবং ভিটামিন ডি প্রয়োজন। এই পুষ্টি উপাদান গুলো কঙ্কালের সঠিক বিকাশ এবং গঠনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কমবয়সে পর্যাপ্ত পরিমানে ভিটামিন এবং মিনারেল পাওয়া যায় এমন খাবার না খাওয়ালে বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে বিড়াল বিভভিন ধরনের জয়েন্ট এবং হাড়ের সমস্যায় ভুগতে পারে। বিড়ালছানা এবং বিড়ালদের জন্য থিয়ামিন এবং নিয়াসিন সহ ভিটামিন এ এবং বি এর বিশেষ প্রয়োজন রয়েছে। কি কি এড়িয়ে চলবেন? বিড়াল ছানার খাবারের ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম মেনে চলা জরুরী। বেশ কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো বিড়াল ছানাকে দেওয়া উচিত না। টুনা মাছ বা এ জাতীয় অন্যান্য মাছ বিড়ালকে খেতে দিবেন না। এটা টিনজাত হোক অথবা তাজা। এগুলো একদমই দিবেন না, এতে বিড়াল থায়ামিন ডিফিসিয়েন্সিতে (Thiamine deficiency) ভুগতে পারে। বিড়ালকে দুধ খেতে দিলে এর কারণে ডায়রিয়া হত্যে পারে। কাঁচা মাংস, সালমোনেলা (Salmonella) এবং ইকলির (E.coli) একটি সাধারণ উৎস। কাঁচা ডিম, যা বায়োটিনের ঘাটতি সৃষ্টি করতে পারে এবং এটা সালমোনেলার ​​উৎসও বটে।