title
stringlengths 4
148
| text
stringlengths 14
41.8k
| summary
stringlengths 1
8.73k
|
---|---|---|
দুদকের মামলার আসামিরা আছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে | গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) কর্মসূচির ২ কোটি ৩০ লাখ ৬৯ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ছয় মাস আগে বগুড়ার গাবতলী উপজেলার সাবেক প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। কিন্তু এখন পর্যন্ত আসামি গ্রেপ্তারের অনুমতি চেয়ে কোনো আবেদন করা হয়নি আদালতে।
বগুড়ায় দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের কার্যক্রম মামলা দায়ের ও অভিযোগপত্র দাখিল পর্যন্তই রয়েছে সীমাবদ্ধ। মামলার আসামিরা আছেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। এ তালিকায় রয়েছে সরকারি কর্মকর্তা থেকে শুরু করে রাজনৈতিক দলের নেতারাও। বগুড়ায় সরকারি যেসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকে মামলা হয়েছে, কাউকে গ্রেপ্তারের অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়নি।
দুদক বগুড়া সমন্বিত জেলা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালে দুর্নীতির অভিযোগে ৯টি মামলা করেছে দুদক। অভিযোগপত্র দাখিল করেছে ১০টি মামলার। ২০২০ সালে মামলা ছিল ১৮টি। অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে সাতটির। অন্যদিকে ২০২১ সালে দুদকের দায়ের করা মামলার সংখ্যা ৫ এবং অভিযোগপত্র দাখিল করা হয় ১২টি মামলার। এসব মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন হাতে গোনা কয়েকজন।
জেলা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গাবতলী উপজেলায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৪৮০টি প্রকল্পে ৩ কোটি ৭৫ লাখ ৩৭ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়। তৎকালীন পিআইও আবদুল আলীমের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসক ওই বছর ৪৭৪ প্রকল্পের বিপরীতে ৩ কোটি ৭০ লাখ ৬৮ হাজার বরাদ্দ দেন।
■ ২০২২ সালে ৯টি মামলা করা হয়। অভিযোগপত্র দাখিল হয়েছে ১০ মামলার।
■ দুদক আইনে মামলা হওয়ার পরপরই আসামি গ্রেপ্তারের বিধান আছে।
অর্থবছর শেষে টাকা উত্তোলনও করা হয়। ওই সময় প্রথম আলোর পক্ষ থেকে দৈবচয়ন পদ্ধতিতে ৪৭৪টি প্রকল্পের মধ্যে ১৩০টি প্রকল্পের বিষয়ে অনুসন্ধান চালানো হয়। অনুসন্ধানে একটি প্রকল্পেরও অস্তিত্ব মেলেনি। এ নিয়ে ২০১৯ সালের ১৬ জানুয়ারি ‘বগুড়ায় ভুয়া প্রকল্পে টিআর বরাদ্দ লুটপাট’ শিরোনামে প্রথম আলোতে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। প্রতিবেদনের সূত্র ধরে দুদক প্রাথমিক তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল জেলা প্রশাসনকে। প্রশাসনের তদন্ত কমিটিও লুটপাটের সত্যতা পেয়েছিল। তদন্ত প্রতিবেদনে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়।
এরপর দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. মনিরুজ্জামান বাদী হয়ে গত ৯ জুন পিআইও আবদুল আলীমের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় ২৯৫টি ভুয়া প্রকল্পের মাধ্যমে ২ কোটি ৩০ লাখ ৬৯ হাজার ৭৯৯ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়। কিন্তু তাঁকে এখনো গ্রেপ্তার করা হয়নি।
আবদুল আলীম বর্তমানে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলায় কাজ করছেন। তাঁর মুঠোফোনে গতকাল বৃহস্পতিবার একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও সেটা বন্ধ পাওয়া যায়। তবে ২০১৯ সালে তিনি বলেছিলেন, ওই প্রকল্পগুলোতে বরাদ্দ এসেছিল অর্থ-বছরের শেষ মুহূর্তে। তিনি প্রথমে প্রকল্পের বরাদ্দ উত্তোলনের কাগজপত্রে স্বাক্ষর করতে না চাইলেও পরিস্থিতির কারণে স্বাক্ষর করতে বাধ্য হন।
দুদকের আইনজীবী এস এম আবুল কালাম আজাদ বলেন, দুদক আইনে মামলা হওয়ার পরপরই আসামি গ্রেপ্তারের বিধান আছে। তবে সরকারি কর্মকর্তার ক্ষেত্রে আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে আসামি গ্রেপ্তার করা যাবে। পিআইও আবদুল আলীমসহ বগুড়ায় সরকারি যেসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকে মামলা হয়েছে, কাউকে গ্রেপ্তারের অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়নি।
এদিকে, দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে বগুড়ার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) একজন প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে চলতি বছর একটি মামলা হয়। এ মামলার বিষয়ে বিস্তারিত জানায়নি কর্মকর্তারা।
দুদক বগুড়া সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, তৎকালীন পিআইও আবদুল আলীমে এবং পাউবোর ওই প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে হওয়া মামলার তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে আইনি সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে। | গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) কর্মসূচির ২ কোটি ৩০ লাখ ৬৯ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ছয় মাস আগে বগুড়ার গাবতলী উপজেলার সাবেক প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) বিরুদ্ধে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। কিন্তু এখন পর্যন্ত আসামি গ্রেপ্তারের অনুমতি চেয়ে কোনো আবেদন করা হয়নি আদালতে। |
ময়মনসিংহে গভীর রাতে গুলি ও বোমা ফাটিয়ে আ.লীগ কার্যালয় ভাঙচুরের অভিযোগে মামলা | গভীর রাতে গুলি করে এবং বোমা ফাটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ভাঙচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে এ ঘটনার পর বিএনপির ৩৫ নেতা–কর্মীর নাম উল্লেখ করে মামলা হয়েছে।
বিএনপি-জামায়াতের লোকেরা ভাঙচুর করে থাকতে পারে বলে অভিযোগ করেছেন ধোবাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়তোষ বিশ্বাস। এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ শুক্রবার দুপুরে প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দিয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগ।
প্রিয়তোষ বিশ্বাস বলেন, বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে আওয়ামী লীগের কার্যালয় বন্ধ করে তিনি বাড়িতে যান। পরে দিবাগত রাত আনুমানিক সোয়া ১২টার দিকে আওয়ামী লীগের একজন কর্মী ফোন করে ভাঙচুরের বিষয়টি জানান। খবর পেয়ে রাতেই তিনি কার্যালয়ে যান। কার্যালয়ে গিয়ে জানতে পারেন, গুলি করে এবং বোমা ফাটিয়ে এ হামলা করা হয়েছে।
তবে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুরের দায় অস্বীকার করেছে বিএনপি। উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও ধোবাউড়া সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান বলেন, আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে বিএনপির হামলা, এটা সম্পূর্ণ কাল্পনিক অভিযোগ। ঢাকায় বিএনপির সমাবেশ উপলক্ষে কয়েক দিন ধরেই পুলিশের ভয়ে বিএনপির কর্মীরা এলাকাছাড়া। হামলার প্রশ্নই ওঠে না।
ধোবাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) টিপু সুলতান প্রথম আলোকে বলেন, আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ভাঙচুরের ঘটনায় রাতেই মামলা হয়েছে। বিএনপির নেতা-কর্মীসহ ৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আসামিদের নামে এ মামলা হয়েছে। আসামিদের নাম না জানালেও উপজেলা বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদেরও আসামি করা হয়েছে বলে ইঙ্গিত দেন ওসি। তবে আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত কাউকে আটক করেনি পুলিশ। | গভীর রাতে গুলি করে এবং বোমা ফাটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ভাঙচুরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে এ ঘটনার পর বিএনপির ৩৫ নেতা–কর্মীর নাম উল্লেখ করে মামলা হয়েছে। |
গভীর রাতে ফখরুল-আব্বাসকে আটক রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বহিঃপ্রকাশ: খন্দকার মোশাররফ | মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মির্জা আব্বাসকে গভীর রাতে আটকের নিন্দা জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির জ্যেষ্ঠ সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, এটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার নগ্ন বহিঃপ্রকাশ।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে সাদাপোশাকের পুলিশ আটক করেছে বলে দল ও পরিবার জানিয়েছে। এ নিয়ে খন্দকার মোশাররফ আজ শুক্রবার সকালে প্রথম আলোর কাছে প্রতিক্রিয়া জানান। একই সঙ্গে তিনি বলেন, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘দেশের বৃহত্তম একটি রাজনৈতিক দলের মহাসচিবকে, স্থায়ী কমিটির এক সদস্যকে এভাবে রাতে বাসা থেকে আটকের তীব্র নিন্দা জানাই। এটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার নগ্ন বহিঃপ্রকাশ।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই জ্যেষ্ঠ সদস্য বলেন, যেখানে সামনে নির্বাচন, প্রধানমন্ত্রী নিজেও বিভিন্ন সভা-সমাবেশে ভোট চাইছেন, সেখানে বিরোধী দলের একটি গণসমাবেশ কেন্দ্র করে পরিস্থিতিকে সরকার এমন অবস্থায় নিয়ে যাবে, তা কল্পনাতীত।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘দেশে অর্থনৈতিক সংকট চলছে। এই সংকটের মধ্যে সরকার এত বড় একটি রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি করবে, তা আমরা চিন্তাই করতে পারি না।’
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘আমরা এই সরকারের বিদায়ের জন্য, নির্দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচনের জন্য সংগ্রাম করছি। ঢাকায় ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশটি আমাদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি। এটা এমন আর কি!’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই জ্যেষ্ঠ সদস্য বলেন, ‘সরকার বলছে, আমার সন্ত্রাস-বিশৃঙ্খলা করব। আমরা ৯টি সমাবেশ করেছি। সন্ত্রাস করিনি, শান্তিপূর্ণভাবেই সমাবেশ করেছি। ঢাকায়ও করব। গণতান্ত্রিকভাবে আমরা অগ্রসর হচ্ছি। সরকার কেন ন্যূনতম সহনশীলতা দেখাচ্ছে না? এর পেছনে নিশ্চয়ই গভীর দুরভিসন্ধি আছে।’
প্রায় তিন মাস আগে বিএনপি ১০ বিভাগীয় শহরে গণসমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা করে। ঢাকায় গণসমাবেশ করতে বিএনপি নয়াপল্টনের জন্য অনুমতি চেয়ে গত ১৩ নভেম্বর ও ২০ নভেম্বর ডিএমপি কমিশনারের কাছে লিখিত আবেদন করে। আগামীকাল শনিবার ঢাকার বিএনপির সমাবেশের দিন। কিন্তু এখনো সমাবেশের স্থান বুঝে পায়নি বিএনপি।
সমাবেশস্থল নির্ধারণ নিয়ে আলোচনার মধ্যে গত বুধবার বিকেলে নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে একজন নিহত হন। সংঘর্ষের ঘটনায় চারটি মামলা হয়েছে। পল্টন, মতিঝিল, রমনা ও শাহজাহানপুর থানায় পুলিশের করা এসব মামলায় বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের ২ হাজার ৯৭৫ জন নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। চার মামলায় এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৪৮৫ জনকে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে বিএনপির কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা রয়েছেন। | মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মির্জা আব্বাসকে গভীর রাতে আটকের নিন্দা জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির জ্যেষ্ঠ সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, এটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার নগ্ন বহিঃপ্রকাশ। |
নয়াপল্টন এলাকা পুলিশের নিয়ন্ত্রণে, বিএনপি কার্যালয়ের ফটকে তালা | রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ফটকে আজ শুক্রবারও তালা ঝুলছে। কাকরাইলের নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে ফকিরাপুল পর্যন্ত সড়কে দেওয়া হয়েছে ব্যারিকেড। এই সড়কে যান চলাচল ও সাধারণ মানুষ চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না। পুরো এলাকায় পুলিশের বিপুল সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনেও মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশের বিপুল সদস্য। আজ সকালে নয়াপল্টন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়। সকাল থেকে বিএনপির কার্যালয়ে কোনো নেতা-কর্মীকে আসতে দেখা যায়নি।
নয়াপল্টন এলাকার মূল সড়ক থেকে শুরু করে প্রতিটি অলিগলির মুখে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নাইটিঙ্গেল মোড়ে পুলিশের কয়েকটি সাঁজোয়া যান দেখা গেছে।
পুলিশের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নয়াপল্টন এলাকায় বিএনপির নেতা–কর্মীরা যেন অবস্থান নিতে না পারেন, সে জন্য পুরো এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন তাঁরা। পরিস্থিতি বিবেচনায় এই এলাকায় সাধারণ মানুষকে আসতে দেওয়া হচ্ছে না। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার জন্যই এটি করা হচ্ছে বলেও জানান তাঁরা। | রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ফটকে আজ শুক্রবারও তালা ঝুলছে। কাকরাইলের নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে ফকিরাপুল পর্যন্ত সড়কে দেওয়া হয়েছে ব্যারিকেড। এই সড়কে যান চলাচল ও সাধারণ মানুষ চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না। পুরো এলাকায় পুলিশের বিপুল সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। |
জামাই সোহাগী, রূপকথা সাদাকানি রক্ষার লড়াই | ধানের নাম জামাই সোহাগী। পায়েস, পিঠা ও পোলাওয়ের জন্য প্রসিদ্ধ ছিল। আরেক জাতের নাম নীলকণ্ঠ। এর চিকন চাল পান্তাভাতের জন্য খুবই ভালো। আবার সুঘ্রাণের জন্য একটি জাতের নামই পড়েছে রাঁধুনিপাগল।
আরেক জাতের নাম রূপকথা। তারও আছে সুগন্ধ। একসময়ের ঐতিহ্যবাহী এসব ধান কৃষকের হাত থেকে হারাতে বসেছে। এমন ৭০ জাতের ধান এবার নিজের এক প্লটে চাষ করেছেন রাজশাহীর তানোর উপজেলার দুবইল গ্রামের কৃষক জাহিদুর রহমান। তিনি বিলুপ্তির হাত থেকে এদের রক্ষা করতে চান।
জাহিদুর রহমানের ভাই ইউসুফ মোল্লা ছিলেন বিলুপ্তপ্রায় এই ধানের সংগ্রাহক। তাঁর সংগ্রহে ছিল ৩১০ জাতের ধানের বীজ। গত ১৪ জানুয়ারি তিনি মারা গেছেন। ছোট ভাই জাহিদুর রহমান তাঁর স্মৃতি রক্ষায় ধানবীজগুলোকে সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছেন। তিনি ভাইয়ের সংগ্রহশালা থেকে ৭০ জাতের ধানবীজ নিয়ে চাষ করেছেন। গত ২৪ নভেম্বর তিনি সেই ধান মাড়াই করেছেন।
ইউসুফ মোল্লা ২০১৩ সালে বিলুপ্তপ্রায় ধান সংরক্ষণের জন্য পেয়েছিলেন পরিবেশ পদক। তিনি তাঁর বীজের সংগ্রহশালার নাম দিয়েছিলেন ‘বরেন্দ্র কৃষিবীজ ব্যাংক’। তিনি সারা দেশের আগ্রহী কৃষকদের দুবইল গ্রামে নিয়ে এসে বীজ বিনিময় উৎসব করতেন। একই দিনে করতেন নবান্ন উৎসবের আয়োজন। তাঁর সংগৃহীত ৩১০ জাতের ধানের বীজের মধ্যে জীবিত বীজ রয়েছে ২০৫টি।
চাষ না করলে একসময় বীজ অঙ্কুরিত হওয়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। এ জন্য ছোট ভাই জাহিদুর রহমান ভাইয়ের ভান্ডারের বীজগুলো জীবিত রাখার জন্য এবার দুবইল মাঠে ৩৮ শতক জমিতে ৭০ জাতের ধান রোপণ করেছিলেন। তাঁর এই কাজে সহযোগিতা করছে বেসরকারি সংস্থা ‘বারসিক’।
এবারের রোপণ করা ৭০ জাতের ধানগুলো হচ্ছে রাঁধুনিপাগল, বাসমতি, নারীপারিজাত, কাটারিভোগ, কালিকুজি, সাদা আশকল, বাগুনশাইল, চিনিসংকর, কালিকুঠি, রূপকথা, লতিফশাইল, সিন্দুরকাঠি, রানীস্যালট, মহেশ্বর, সাদাকানি, লাল বাজাল, ভজন, বাইনাচিকন, রাইতল, ছোট কালোজিরা, কালোজিরা (নড়াইল অঞ্চল), সুলি, মহিপাল, মুগাইবেতি, চেংগুর, সাদা টেপা, দেশি আতপ, গাঞ্জিয়া, হলুদবাটা, ডিবি, মালতি, নিরিকা, নীলকণ্ঠ, জটা বাঁশফুল, ঘুরন, মালা, গোছা, বালাম, মধুমাধব, আমন, গোবিন্দভোগ, জামাইসোহাগী, সুবাই, যুবরাজ, কাজললতা, রানারশাইল, বাদশাভোগ, বাতরাজ, খিরকন, আসকল, মহিপাল, নাজিরশাইল, সাদা টেপা, সাদা কথা, কৃষ্ণকলি, উরিশাইল, রতি, মহিষ বাথান, কালিটেপি, নয়ন কলমা, কালোবিন্নি, হলুদ ডেপা, মুগাশাইল, জোসনা, লাইটা বোর, গচি, মাটিয়া গরল, খাইনল ও ময়রোম।
ধান রোপণের পর জাত চিহ্নিতকরণের জন্য সাইনবোর্ড দেওয়া হয়েছিল। জাহিদুর রহমান জানান, গত ১৬ জুলাই তিনি বীজতলায় ধান ফেলেছিলেন। ৭০ জাতের ধানেরই চারা গজায়। ১০ আগস্ট তিনি চারা রোপণ করেন।
রাজশাহী শহর থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরের নিভৃত গ্রাম দুবইল। গত ২১ নভেম্বর বিকেলে এই গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, রূপকথা বাদ দিয়ে সব ধান কেটে জমিতেই শুকাতে দেওয়া হয়েছে। জানা গেছে, দুই-তিন দিনের মধ্যেই ধান মাড়াই করেন। জাহিদুর রহমান জানান, বীজ জমিতে ফেলা থেকে শুরু করে মাড়াই করে আবার বীজে পরিণত করা পর্যন্ত প্রায় ১৪০ দিন সময় লাগে।
২৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় জাহিদুর প্রথম আলোকে মুঠোফোনে জানান, রূপকথা আর কৃষ্ণকলি ধানমাড়াইয়ের পর ওজন করা হয়েছে। বিঘায় রূপকথার ফলন হয়েছে ১২ মণ। আতপ চালের মতো এর ঘ্রাণ আছে, চাল চিকন। এই চাল দিয়ে পোলাও করা যায়, আবার ভাতও করা যায়।
কৃষ্ণকলির ফলন পেয়েছেন বিঘাপ্রতি ১০ মণ। এই ধানেরও চাল মোটামুটি চিকন। চালে হালকা ঘ্রাণ আছে। ভাত-পোলাও দুটোই এই চাল দিয়ে করা যায়। জামাইসোহাগী ধানও সুগন্ধি। পোলাও, পায়েস, পিঠা খাওয়ার জন্য এই ধানের চাল খুবই ভালো। বাগুনশাইলও সুগন্ধি। এর চাল ছোট ও চিকন। পিঠা-পুলি–পায়েস খাওয়ার জন্য ভালো। নীলকণ্ঠও একটি চিকন ধান। পান্তাভাত করার জন্য এই ধান বেশ ভালো।
জাহিদুর বলেন, যে ধানগুলো চাষ করেছেন, এগুলো সবই বাংলাদেশের একেকটি ঐতিহ্যবাহী ধান। এই ধান কৃষকদের কাছ থেকে হারিয়ে যাচ্ছিল। তাঁর ভাই সারা দেশে ঘুরে ঘুরে কৃষকের বাড়ি থেকে এই ধানের জাত উদ্ধার করেছিলেন। তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী এই ধান যাতে হারিয়ে না যায়, সেই জন্য তিনি চাষের মাধ্যমে এই ধানের বীজ বাঁচিয়ে রাখবেন। এর মাধ্যমে ভাইয়ের স্মৃতিও রক্ষা পাবে। তিনি বলেন, ভাইয়ের স্লোগান ছিল ‘স্থানীয় বীজ রক্ষা করি, কৃষির ভিত মজবুত করি’। ভাইয়ের পদাঙ্ক অনুসরণ করে তিনিও প্রতিবছর নবান্ন উৎসবের আয়োজন করবেন।
হেরিটেজ রাজশাহীর প্রতিষ্ঠাতা গবেষক মাহাবুব সিদ্দিকী বলেন, ১৫ বছর ধরে তিনি বিলুপ্ত ধানের সংগ্রাহক ইউসুফ মোল্লার উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেছেন। কয়েক বছর তিনি তাঁর নবান্ন উৎসবে সভাপতিত্ব করেছেন। তিনি বলেন, আগে বনেদি পরিবারে বিশেষ ধানের চাল রান্না হতো।
তাঁরা ওই বিশেষ ধান ছাড়া অন্য ধানের ভাত খেতেন না। তিনি দেখেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের ছাইরা বেগম নামের একজন নারী সারা জীবন শুধুই রাঁধুনিপাগল আর জটাবাঁশ ফুল ধানের ভাত খেয়েছেন। শেষ জীবনে যখন এই ধান বাজারে পেতেন না, তখন নিজের খাওয়ার জন্যই এই ধান চাষ করেছেন। ২০০৬ সালে তিনি মারা গেছেন।
মৃত্যুর আগপর্যন্ত অন্য কোনো ধানের ভাত খাননি। ইউসুফ মোল্লার ছোট ভাই জাহিদুর রহমান এই ধানের বীজের প্রাণ বাঁচিয়ে রাখার জন্য চাষ করছেন। রাজশাহীর তানোর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহম্মদ বলেন, ইউসুফ মোল্লা যেভাবে ধানবীজ সংরক্ষণ করেন, এটা খুবই ব্যয়বহুল।
বারবার চাষ করে ধানবীজকে বাঁচিয়ে রাখতে হয়, যে কাজ বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট প্রযুক্তির মাধ্যমে করে। ইউসুফ মোল্লার ভাইয়ের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। এটা কৃষক পর্যায়ে ছড়িয়ে দেওয়ার ব্যাপারে পরামর্শ ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দেওয়ার ব্যাপারে তিনি চেষ্টা করবেন। | ধানের নাম জামাই সোহাগী। পায়েস, পিঠা ও পোলাওয়ের জন্য প্রসিদ্ধ ছিল। আরেক জাতের নাম নীলকণ্ঠ। এর চিকন চাল পান্তাভাতের জন্য খুবই ভালো। আবার সুঘ্রাণের জন্য একটি জাতের নামই পড়েছে রাঁধুনিপাগল। |
ফখরুল–আব্বাসকে আটকের পর জরুরি বৈঠকে বসছে বিএনপির স্থায়ী কমিটি | বিএনপির স্থায়ী কমিটির জরুরি বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে। আজ শুক্রবার বেলা ১১টায় ভার্চ্যুয়ালি এই বৈঠক হবে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির দুই সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও ইকবাল হাসান মাহমুদ আজ সকালে প্রথম আলোকে এই তথ্য জানান।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে সাদাপোশাকের পুলিশ আটক করেছে বলে দল ও পরিবার জানিয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির জরুরি বৈঠক আহ্বান করা হলো।
খন্দকার মোশাররফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ঢাকায় বিএনপির ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশসহ পরবর্তী করণীয় নিয়ে আমরা স্থায়ী কমিটির জরুরি বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেব।’
ইকবাল হাসান মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘অনাকাঙ্ক্ষিত যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির জরুরি বৈঠক ডাকা হয়েছে। বৈঠকে দলের পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা হবে।’
প্রায় তিন মাস আগে বিএনপি ১০ বিভাগীয় শহরে গণসমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা করে। ঢাকায় গণসমাবেশ করতে বিএনপি নয়াপল্টনের জন্য অনুমতি চেয়ে গত ১৩ নভেম্বর ও ২০ নভেম্বর ডিএমপি কমিশনারের কাছে লিখিত আবেদন করে। আগামীকাল শনিবার ঢাকার বিএনপির সমাবেশের দিন। কিন্তু এখনো সমাবেশের স্থান বুঝে পায়নি বিএনপি।
রাজধানীর নয়াপল্টন ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বাইরে বিএনপির গণসমাবেশের জন্য সবশেষ আলোচনায় এসেছে কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহি মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়াম ও মিরপুর বাঙলা কলেজ মাঠ। গতকাল রাতে ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধিদলের দীর্ঘ আলোচনার পর দুই পক্ষ এই জায়গায় পৌঁছায় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
সমাবেশস্থল নির্ধারণ নিয়ে আলোচনার মধ্যে গত বুধবার বিকেলে নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে একজন নিহত হন।
সংঘর্ষের ঘটনায় চারটি মামলা হয়েছে। পল্টন, মতিঝিল, রমনা ও শাহজাহানপুর থানায় পুলিশের করা এসব মামলায় বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের ২ হাজার ৯৭৫ জন নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। চার মামলায় এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৪৮৫ জনকে। | বিএনপির স্থায়ী কমিটির জরুরি বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে। আজ শুক্রবার বেলা ১১টায় ভার্চ্যুয়ালি এই বৈঠক হবে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির দুই সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও ইকবাল হাসান মাহমুদ আজ সকালে প্রথম আলোকে এই তথ্য জানান। |
মাদকবাহী পিকআপ ধাওয়া দিতে গিয়ে দুর্ঘটনা, দুই র্যাব সদস্যসহ তিনজন নিহত | মাগুরায় সন্দেহভাজন মাদক বহনকারী একটি পিকআপকে ধাওয়া করতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় র্যাবের দুই সদস্যসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। দুর্ঘটনায় আহত এক র্যাব সদস্যকে হেলিকপ্টারে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে মাগুরা সদর উপজেলার সাইত্রিশ বাজার এলাকায় মাগুরা-ঝিনাইদহ মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত দুই র্যাবের সদস্য হলেন—করপোরাল আনিসুর রহমান (৩৫) ও কনস্টেবল ওমর ফারুক (৩৮)। নিহত অন্যজন পিকআপের চালক। তাঁর পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে জরুরি বিভাগের ভর্তি খাতায় তাঁর নাম মফিদুল লেখা হয়েছে।
এই ঘটনায় গুরুতর আহত র্যাবের সৈনিক নাজমুলকে (৩৫) হেলিকপ্টারে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে র্যাবের সদস্য ওমর ফারুক ঘটনাস্থলে মারা যান। আর অন্য দুজনকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করার পর মৃত্য হয়। আনিসুর রহমান র্যাবের গাড়ি চালাচ্ছিলেন।
মাগুরা রামনগর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. লিয়াকত আলী প্রথম আলোকে বলেন, র্যাব-৬ ঝিনাইদহে একটি তল্লাশিচৌকি বসিয়েছিল। তাঁদের কাছে সংবাদ আসে একটা পিকআপে মাদক বহন করা হচ্ছে। ওই পিকআপ তল্লাশিচৌকিতে পৌঁছার পর থামার সংকেত দেন র্যাবের সদস্যরা। কিন্তু সংকেত না মেনে পিকআপটি দ্রুতগতিতে মাগুরার দিকে আসে। র্যাবের গাড়িও ধাওয়া দেয়। এমন পরিস্থিতিতে দ্রুতগতির কারণে সাইত্রিশ বাজার নামক স্থানে এসে গাড়ি দুটি সড়কের দুই পাশে ছিটকে পড়ে।
ওসি মো. লিয়াকত আলী জানান, খবর পেয়ে হাইওয়ে পুলিশ নিহত ও আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে। দুর্ঘটনাকবলিত পিকআপ থেকে ৩৯১ বোতল ফেনসিডিল জব্দ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।
সকালে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, নিহত তিনজনের সুরতহাল প্রস্তুত করছেন পুলিশের সদস্যরা। সেখানে র্যাবের একাধিক সদস্য উপস্থিত থাকলেও তাৎক্ষণিক আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য তাঁরা দেননি। সব তথ্য যাচাই–বাছাই করে পরে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে বলে র্যাবের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের জানান হয়েছে। | মাগুরায় সন্দেহভাজন মাদক বহনকারী একটি পিকআপকে ধাওয়া করতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় র্যাবের দুই সদস্যসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। দুর্ঘটনায় আহত এক র্যাব সদস্যকে হেলিকপ্টারে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। |
গাছের টমেটো মাঠে এনে পাকানো হয় যেভাবে | পাশাপাশি বড় দুটি মাঠ একসঙ্গে করা হয়েছে। এক পাশে সবুজ রঙের টমেটো, আরেক পাশেরটা লাল রঙের। একদল শ্রমিক রং ধরা টমেটো বাছাই করছেন। আরেক দল সেগুলো এক জায়গায় করে প্লাস্টিকের ঝুড়িতে (ক্যারেট) তুলছেন। এরপর বোঝাই করা হচ্ছে মাঠেই ভেড়ানো ট্রাকে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার শ্রীপুর এলাকায় গিয়ে দেখা গেল এই চিত্র। ঢাকা, কুমিল্লা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় গোদাগাড়ীর এই টমেটো বিক্রি হয়। এ জন্য দেশের বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা এই মৌসুমে গোদাগাড়ীতে এসে অবস্থান করেন।
তবে গাছে টমেটো পাকার আগেই নামানো হয়। এরপর মাঠে বিশেষ প্রক্রিয়ায় জাগ দিয়ে পাকানো হয়। এভাবে টমেটো পাকানোর কাজে হরমোনও ব্যবহার করা হয়। অবশ্য কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, পরীক্ষা করে তাঁরা সহনীয় মাত্রার চেয়ে অনেক কম মাত্রার হরমোন টেমেটোতে পেয়েছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর গোদাগাড়ীতে ৩ হাজার ১৫ হেক্টর জমিতে টমেটোর চাষ হয়েছে, যা গত বছরের চেয়ে বেশি। উপজেলায় সবজির মধ্যে টমেটো সবচেয়ে বেশি চাষ হয়ে থাকে। গোদাগাড়ীর টমেটো সারা দেশেই যায়।
শীতের শুরু থেকে টমেটো উঠতে শুরু করে। তবে আগাম বাজার ধরার জন্য চাষিরা সাধারণত কাঁচা টমেটো তুলে মাঠে জাগ দিয়ে পাকিয়ে থাকেন।
নাম প্রকাশ না করে একজন চাষি প্রথম আলোকে বলেন, গাছ থেকে কাঁচা টমেটো ওঠানোর পরে মাঠে বিছিয়ে ওষুধ ছিটিয়ে রোদে শুকিয়ে নিতে হয়। তারপরে খড় ও পলিথিন দিয়ে তিন দিন ঢেকে রাখা হয়। যাতে কুয়াশা ও আলো–বাতাস না লাগে। টমেটোর রং আসতে এক সপ্তাহ সময় লাগে। মোট দুবার ওষুধ ছিটাতে হয়। প্রথবার করার পর তিন দিন পরে আরও একবার করতে হয়। এসব করতে ১০ থেকে ১২ দিন সময় লেগে যায়। কখনো ১৫ দিনও অপেক্ষা করতে হয়।
এই মৌসুমে গোদাগাড়ী মাঠে মাঠে টমেটো জাগ দেওয়ার দৃশ্য চোখে পড়ে। যেদিকে তাকানো যায়, দেখা যায় মাঠজুড়ে এক জায়গায় সবুজ রঙের টমেটো মেলে দেওয়া রয়েছে। পাশেই দেখা যায় লাল রঙের টমেটো। প্রতিদিন শ্রমিক দিয়ে লাল রং হওয়া টমেটো বাছাই করে দেশের বিভিন্ন এলাকার মোকামে পাঠানো হয়।
একটি মাঠের টমেটো পাকানোর কাজ তদারকি করতে দেখা যায় শ্রীপুর গ্রামের চাষি মাসুদ রানাকে। তিনি এক ব্যবসায়ীর টমেটো পাকানোর কাজ করছেন। নিজেও দুই বিঘা জমিতে টমেটোর আবাদ করেছেন। মাসুদ রানা বলেন, প্রতিবছর এক বিঘা জমিতে ৭০ থেকে ৮০ মণ টমেটো পেয়ে থাকেন। এবার ফলন কম হচ্ছে। বিঘায় সর্বোচ্চ ৬০ মণ টমেটো উঠতে পারে। সারসংকটের কারণে এবার তাঁরা জমিতে পরিমাণমতো সার দিতে পারেননি। এ জন্য ফলন কম হচ্ছে।
এক বিঘা জমিতে টমেটো চাষ থেকে বাজারজাত পর্যন্ত গত বছর ১৬ থেকে ১৭ হাজার টাকা খরচ হয়েছে মাসুদ রানার। এবার প্রায় ২২ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। তিনি বলেন, কাঁচা টমেটো তুলে ১০ থেকে ১২ দিন জাগে রাখতে হয়। অনেক শ্রমিক লাগে। এক দিনে একজন শ্রমিককে দিতে হয় ৪৫০ টাকা। এবার মৌসুমে শুরুতে ১ হাজার ৬০০ টাকা মণ দরে টমেটো বিক্রি করেছেন। বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) বাজার হচ্ছে ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা মণ। বাইরের টমেটো দেশে ঢোকায় দাম পড়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
মাসুদ রানার মাঠে হরমোন ছিটানোর জন্য একজন শ্রমিককে দেখা যায়। ছবি তোলার প্রস্তুতি নিতে দেখেই তিনি মাঠ থেকে বের হয়ে একটি বাড়ির আড়ালে চলে যান। মাসুদ রানার দাবি, রাস্তাঘাটে ঝামেলার কারণে তাঁরা টমেটোতে আর হরমোন দেন না। রোদে জাগ দিয়ে রাখেন। এতেই রং বদলে যায়।
পাশের একটি মাঠে বসে শ্রমিকদের সঙ্গে টমেটো বাছাই করছিলেন ঢাকার ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম। তিনি বললেন, এখান থেকে টমেটো কিনে নিয়ে গিয়ে চট্টগ্রামে বিক্রি করবেন। যে টমেটোগুলো ঝুড়িতে ভরে ট্রাকে তোলা হচ্ছে, এগুলো তিনি ১ হাজার ২০০ টাকা মণ দরে কিনেছিলেন। আজকের বাজার ৭০০ টাকা মণ। তিনি বলেন, কৃষক কাঁচা টমেটোই বিক্রি করেন। ১০-১২ দিন ধরে মাঠে জাগ দিয়ে পাকানোর দায়িত্ব ব্যবসায়ীর।
কুমিল্লার ব্যবসায়ী মিন্টু মিয়া একই মাঠে টমেটো জাগ দিয়েছেন। তিনি বসে টমেটো বাছাই করছেন। তিনি বলেন, গত ১০-১২ বছর থেকে গোদাগাড়ীর টমেটো কিনে কুমিল্লায় নিয়ে যান। তিনিও হরমোন ছিটানোর কথা অস্বীকার করলেন। তবে মাঠে ১০ থেকে ১২ দিন জাগ দিয়ে রাখার কথা বললেন।
তবে গোদাগাড়ীর আরও কয়েকটি গ্রামে মাঠ ঘুরে প্রকাশ্যে ব্যবসায়ীদের কাঁচা টমেটোতে হরমোন ছিটাতে দেখা গেছে।
আগাম বাজার ধরার জন্য দীর্ঘদিন ধরেই চাষি ও ব্যবসায়ীরা কাঁচা টমেটো তুলে জাগ দিয়ে পাকান বলে জানালেন গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মরিয়ম আহম্মেদ। তিনি বলেন, তাঁরা হরমোন ছিটানো টমেটো পরীক্ষা করে দেখেছেন। তাতে শূন্য দশমিক ৯ পিপিএম মাত্রা হরমোন রয়েছে। আর এই হরমোনের সহনীয় মাত্রা হচ্ছে ২ পিপিএম। ফলে এটা তারা ব্যবহার করতে পারেন। তবে আগাম আহরণ করার ফলে টমেটোটা কম পুষ্ট হয়। রোদে জাগ দেওয়ার কারণে কিছুটা পুষ্টি হারায়।
মরিয়ম আহম্মেদ বলেন, এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর একটা প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এবার এই প্রকল্পের অধীনে ১০০ জন চাষি সবজি চাষ করেছে। তার মধ্যে টমেটোচাষিও রয়েছেন। তাঁদের টমেটো গাছেই পাকবে। হরমোন বা অন্য কোনো কীটনাশক ব্যবহার করবেন না। | পাশাপাশি বড় দুটি মাঠ একসঙ্গে করা হয়েছে। এক পাশে সবুজ রঙের টমেটো, আরেক পাশেরটা লাল রঙের। একদল শ্রমিক রং ধরা টমেটো বাছাই করছেন। আরেক দল সেগুলো এক জায়গায় করে প্লাস্টিকের ঝুড়িতে (ক্যারেট) তুলছেন। এরপর বোঝাই করা হচ্ছে মাঠেই ভেড়ানো ট্রাকে। |
আ.লীগ ও পুলিশের পাহারায় রাজধানী | ১০ ডিসেম্বর বিএনপির সমাবেশ সামনে রেখে গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীতে পুলিশের পাহারা আরও জোরদার করা হয়েছে। একই সঙ্গে মাঠে নেমেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ–সহযোগী সংগঠন। তারা গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন থানা ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় মিছিল করেছে। আজ শুক্রবারও তারা ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ও পাড়া-মহল্লায় সতর্ক পাহারায় থাকবে বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে।
ঢাকার প্রবেশমুখগুলোতে দুই দিন আগেই বসানো হয় পুলিশের তল্লাশিচৌকি। এসব চৌকিতে তল্লাশি ও পাহারা আরও কড়াকড়ি করা হয়।
আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, বিএনপির নেতা–কর্মীরা যাতে মিছিল নিয়ে বের হতে না পারেন, সে জন্য আজ শুক্রবার ও কাল শনিবার রাজধানীর পাড়া-মহল্লায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা পাহারায় থাকবেন।
পুলিশের পাশাপাশি র্যাবও সক্রিয় রয়েছে। গতকাল র্যাবের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিএনপির সমাবেশ কেন্দ্র করে নিরাপত্তা জোরদার করতে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে র্যাব। গোয়েন্দা নজরদারি ও নিয়মিত টহল জোরদার করা হয়েছে। হামলা ও নাশকতা রোধে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, স্থান ও প্রবেশপথসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে র্যাব তল্লাশিচৌকি কার্যক্রম চালাচ্ছে।
আ.লীগের পরিকল্পনা–প্রস্তুতি
আজ শুক্রবার বিকেলে গুলিস্তানের মহানগর নাট্যমঞ্চে সমাবেশ করবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। সকাল থেকেই পাড়ায়-পাড়ায় জমায়েত হয়ে নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে আসবেন। সমাবেশ শেষে কিছু নেতা-কর্মী বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে ফুটবল বিশ্বকাপের খেলা দেখবেন। বাকিরা যার যার এলাকায় অবস্থান নেবেন।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ ৭৫টি স্থানে পাহারা বসানোর প্রস্তুতি নিয়েছে বলে জানা গেছে।
ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ কমিটির সূত্র জানায়, সতর্ক পাহারার জন্য আওয়ামী লীগের মহানগর দক্ষিণের নেতারা বেতের মজবুত কিছু লাঠি সংগ্রহ করেছেন। প্রয়োজন হলে সেগুলো প্রতিপক্ষের ওপর ব্যবহার করা হবে। মহানগর উত্তরের কর্মীরা ক্রিকেট স্টাম্প রাখবেন। সাম্প্রতিক সময় ঢাকায় লাঠির মাথায় জাতীয় পতাকা বেঁধে বিএনপির নেতা-কর্মীদের মিছিল করতে দেখা গেছে। এটা নিয়ে সমালোচনাও করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকসহ কেন্দ্রীয় নেতারা। এর পাল্টা হিসেবে এই ব্যবস্থা বলে মনে করছেন মহানগর নেতারা।
আওয়ামী লীগের ঢাকা মহানগর উত্তরের একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের নির্দেশনা হচ্ছে মারবে কম, ভয় দেখাবে বেশি।’ মহানগর দক্ষিণ কমিটির একজন নেতা বলেন, ‘আমাদের পাহারা গলিয়ে বিএনপির কোনো মিছিল যেতে পারবে না, এটাই শেষ কথা। কেউ যেতে চাইলে লাঠি ব্যবহার করা হবে।’
আওয়ামী লীগের নেতাদের ধারণা, শুক্র ও শনিবার ঢাকার বাইরেও বিএনপি বিক্ষোভ বা জমায়েত হওয়ার চেষ্টা করতে পারে। এ জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সারা দেশে মাঠে থাকতে বলা হয়েছে।
গতকাল আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর নেতাদের এক বৈঠকে ভার্চু৵য়ালি যুক্ত হয়ে সারা দেশের প্রতিটি এলাকায় দলের নেতা-কর্মীদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। একই বৈঠকে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সুনির্দিষ্টভাবে প্রতিটি মহানগর, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে সতর্ক পাহারা বসানোর নির্দেশনা দেন।
ঢাকায় প্রবেশ নিয়ন্ত্রিত
রাজধানীমুখী প্রবেশমুখগুলোতে মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ও আশপাশের জেলার পুলিশ তল্লাশিচৌকি বসিয়েছে। নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী ও মানিকগঞ্জেও বিভিন্ন সড়কে এবং ঢাকা–মাওয়া মহাসড়কে যানবাহনে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। দূরপাল্লার বাস ও মোটরসাইকেলে বেশি তল্লাশি করতে দেখা গেছে।
গতকাল রাজধানীর গাবতলী ও উত্তরার আবদুল্লাহপুর এলাকায় দিনভর যানবাহনে তল্লাশি চালাতে দেখা যায়। মানিকগঞ্জ-হেমায়েতপুর ও ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে, নারায়ণগঞ্জে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে এবং নরসিংদীতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কেও তৎপর ছিল পুলিশ।
গতকাল গাবতলীতে দেখা যায়, পর্বত সিনেমা হলের সামনে গাবতলী-আমিনবাজার সেতুর মুখে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। রংপুর, রাজশাহী, বগুড়া, রাজবাড়ী ও টাঙ্গাইলসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আসা বাসে উঠে যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ করছেন পুলিশ সদস্যরা।
সাভার থেকে আসা মোটরসাইকেলের দুই আরোহীকে অনেকক্ষণ ধরে তল্লাশি করেন পুলিশ সদস্যরা। মোটরসাইকেলের চালক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহীন বাশার প্রথম আলোকে বলেন, ‘হাজারীবাগে বোনের বাসায় যাচ্ছিলাম। ব্যাগে বোনের জন্য কেনা চা-পাতা ছিল। সেটি নিয়েও পুলিশ সদস্যরা জানতে চাচ্ছিলেন।’
গাবতলীতে তল্লাশি কার্যক্রম চালাচ্ছে দারুস সালাম থানার পুলিশ। ওই থানার ওসি আসাদুজ্জামান প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, ‘এই তল্লাশি নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ। বিজয় দিবস ও রাজনৈতিক কর্মসূচিকে ঘিরে কোনো নাশকতা যেন না হয়। জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিতে তল্লাশি করা হচ্ছে।’
ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-আশুলিয়া সড়ক এসে যুক্ত হয়েছে আবদুল্লাহপুর মোড়ে। এর মধ্যে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ধরে গাজীপুর, নরসিংদী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, বৃহত্তর ময়মনসিংহের বিভিন্ন জেলাসহ আশপাশের এলাকা থেকে ঢাকায় প্রবেশ করেন মানুষ। ঢাকা-আশুলিয়া সড়ক হয়ে টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, সিরাজগঞ্জসহ রাজশাহী বিভাগের একাধিক জেলার লোকজন রাজধানীতে প্রবেশ করেন। এখানে দুটি সড়ক ঘিরেই বসেছে তল্লাশিচৌকি।
আশপাশের জেলায় তল্লাশি
নরসিংদীতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ইটাখোলা, পাঁচদোনা, বারৈচা, মাধবদী ও ঘোড়াশালে গতকাল সকালে নতুন করে তল্লাশিচৌকি বসায় পুলিশ। নরসিংদী শহরের রেলস্টেশন, লঞ্চঘাট ও বাসস্ট্যান্ড-সংলগ্ন এলাকায় আরও তিনটি তল্লাশিচৌকি রয়েছে। পাশাপাশি মহাসড়কের সঙ্গে জেলার বিভিন্ন সংযোগ সড়ক ও আঞ্চলিক সড়কেও পাহারা বসায় পুলিশ।
নারায়ণগঞ্জে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে এবং রূপগঞ্জের ভুলতা, সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাক ও সোনারগাঁয়ের কাঁচপুর এলাকায় গতকাল পুলিশকে যানবাহনে তল্লাশি চালাতে দেখা যায়। সোনারগাঁর কাঁচপুর থেকে আড়াইহাজারের চনপাড়া পর্যন্ত ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে দুটি তল্লাশিচৌকি দেখা গেছে।
মানিকগঞ্জ-হেমায়েতপুর ও ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে চলাচলকারী যানবাহন ও যাত্রীদের তল্লাশি করে পুলিশ ও র্যাব। মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে ধল্লা সেতু এলাকায়ও পুলিশের তল্লাশিচৌকি রয়েছে। এর পাশে গতকাল সকাল ১১টায় আওয়ামী লীগের অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মীকে লাঠিসোঁটা হাতে নিয়ে মিছিল করতে দেখা যায়। মিছিলের নেতৃত্বে থাকা ধল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশনা অনুযায়ী তাঁরা সতর্ক অবস্থানে আছেন। ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত তাঁদের এই অবস্থান চলবে।
পুলিশের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের এই অবস্থানের বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিএনপি দেশে অরাজকতা করবে, আমরা তো বসে বসে তামাশা দেখতে পারি না। দেশ রক্ষার দায়িত্ব আছে আমাদের। এ জন্যই আওয়ামী লীগ সতর্ক অবস্থান নিয়েছে।’
(প্রতিবেদনে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন সংশ্লিষ্ট জেলার প্রথম আলোর প্রতিনিধি ও সংবাদদাতারা) | ১০ ডিসেম্বর বিএনপির সমাবেশ সামনে রেখে গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীতে পুলিশের পাহারা আরও জোরদার করা হয়েছে। একই সঙ্গে মাঠে নেমেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ–সহযোগী সংগঠন। তারা গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন থানা ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় মিছিল করেছে। আজ শুক্রবারও তারা ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ও পাড়া-মহল্লায় সতর্ক পাহারায় থাকবে বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে। |
প্রকাশিত হলো ‘অগ্রসরমাণ একটি অর্থনীতি, ৫০ বছরে বাংলাদেশ’ | বাংলাদেশের ৫০ বছরে অর্থনীতির অর্জন নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে ‘অগ্রসরমাণ একটি অর্থনীতি, ৫০ বছরে বাংলাদেশ’। রাজধানীর একটি হোটেলে গত বুধবার বইটির মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
বইটিতে বিভিন্ন বিষয়ে দেশের প্রথিতযশা ১২ জন অর্থনীতিবিদের প্রবন্ধ স্থান পেয়েছে। বইটি প্রকাশ করেছে নিমফিয়া পাবলিকেশনস। সম্পাদনা করেছেন সাদিক আহমেদ, ফখরুল আলম ও জিয়াউল করিম।
বইটির লেখকদের মধ্যে রয়েছেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম, মোস্তফা কে মুজেরী, নিয়াজ মুজেরী, সেলিম রায়হান, জায়েদী সাত্তার, আব্দুর রাজ্জাক, বজলুল এইচ খন্দকার, আহসান এইচ মনসুর, এম রোকনুজ্জামান, সারোয়ার জাহান, শিবলী রুবাইয়াৎ-উল-ইসলাম ও সাদিক আহমেদ।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথযাত্রায় বাংলাদেশ অসাধ্যসাধন করেছে। গণতন্ত্র বজায় রেখে অর্থনীতির উন্নয়ন একটি উত্তম ধারণা। আর এই ধারণা নিয়ে এগিয়ে যাওয়া দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, ‘বইটির অনেকগুলো লেখায় আমরা দেখতে পাব বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়নের পেছনে কীভাবে বিভিন্ন বিষয় অবদান রেখেছে। বিশেষ করে ম্যাক্রো ইকোনমিকস ব্যবস্থাপনায় সংস্কার, ট্রেড পলিসি, বিনিয়োগ এবং আর্থিক ট্রেড সেক্টর, অবকাঠামো ও মানবসম্পদ উন্নয়ন।’
করোনা মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ অর্থনীতির জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে হাবিবুর রহমান বলেন, এর মধ্যেও বাংলাদেশের ঘুরে দাঁড়ানো এবং আগের অবস্থায় ফিরে যাওয়া বিশেষভাবে প্রশংসনীয়। | বাংলাদেশের ৫০ বছরে অর্থনীতির অর্জন নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে ‘অগ্রসরমাণ একটি অর্থনীতি, ৫০ বছরে বাংলাদেশ’। রাজধানীর একটি হোটেলে গত বুধবার বইটির মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। |
বিএনপি নেতা আমান জামিনে মুক্ত | ঢাকা মহানগর বিএনপির উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবদুল কাদের ভূঁইয়া জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের হাজতখানা থেকে বৃহস্পতিবার রাতে মুক্ত হন তাঁরা। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন তাঁদের আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার ও বোরহান উদ্দিন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের অ্যাডিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট তোফাজ্জল হোসেন বিএনপির এই দুই নেতার জামিন মঞ্জুর করেন।
এর আগে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় পল্টন ও মতিঝিল থানার পৃথক দুটি মামলায় বিএনপির ২৩ নেতা-কর্মীর বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির, বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, বিএনপির চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসসহ ৪৪৫ জনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
রাজধানীর নয়াপল্টন থেকে বুধবার গ্রেপ্তার হওয়া বিএনপির নেতা-কর্মীদের বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রিজন ভ্যানে করে ঢাকার সিএমএম আদালতের হাজতখানায় আনা হয়। তখন আদালতের প্রধান ফটকের সামনে বিএনপি ও আওয়ামীপন্থী আইনজীবীদের স্লোগান দিতে দেখা যায়। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্যকে অবস্থান নিতে দেখা যায়। | ঢাকা মহানগর বিএনপির উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবদুল কাদের ভূঁইয়া জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের হাজতখানা থেকে বৃহস্পতিবার রাতে মুক্ত হন তাঁরা। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন তাঁদের আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার ও বোরহান উদ্দিন। |
এবার আলোচনায় নতুন দুই স্থান | রাজধানীর নয়াপল্টন ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বাইরে এবার বিএনপির গণসমাবেশের জন্য আলোচনায় এল কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহি মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়াম ও মিরপুর বাঙলা কলেজ মাঠ। বৃহস্পতিবার রাতে ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধিদলের দীর্ঘ আলোচনার পর দুই পক্ষ এই জায়গায় পৌঁছায় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
বিএনপির সূত্র জানায়, ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারের সঙ্গে এই দফায় আলোচনায়ও বিএনপিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে বলা হয়। বিকল্প হিসেবে টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা মাঠ, মিরপুরের কালশীর কথাও আসে। বিএনপির নেতারা প্রথমে নয়াপল্টন, এরপর আরামবাগ, সেন্ট্রাল গভর্নমেন্ট স্কুল মাঠ, জাতীয় ঈদগাহ মাঠ ও কমলাপুর স্টেডিয়ামে সমাবেশের অনুমতি চায়। দুই পক্ষের আলোচনার একপর্যায়ে মিরপুর বাঙলা কলেজ মাঠের কথাও আসে। এ পর্যায়ে উভয় পক্ষ কমলাপুর স্টেডিয়াম ও মিরপুর বাঙলা কলেজ মাঠে সমাবেশের বিষয়ে একমত হয়।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা (বুলু) প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রায় আড়াই ঘণ্টার আলোচনার পর আমরা কমলাপুর স্টেডিয়াম ও মিরপুর বাঙলা কলেজ মাঠ—এ দুটি জায়গা নিয়ে সিদ্ধান্তে এসেছি। এখন যেটা পছন্দ হয়, আমরা সেটার কথা তাদের জানিয়ে দেব। এ ক্ষেত্রে কমলাপুর স্টেডিয়াম আমাদের প্রথম পছন্দ।’
সমাবেশের জন্য ওই দুটি স্থান নিয়ে কথা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদও। বৈঠক থেকে বের হয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘দুটি স্থানই আমরা দেখব, তাঁরাও দেখবেন। দুটির মধ্যে একটি ঠিক হবে।’ তিনি মনে করেন, সমাবেশস্থল নিয়ে যে দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছিল, তা কেটে যাবে।
প্রায় তিন মাস আগে বিএনপি ১০ বিভাগীয় শহরে গণসমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা করে। ঢাকায় গণসমাবেশ করতে বিএনপি নয়াপল্টনের জন্য অনুমতি চেয়ে গত ১৩ নভেম্বর ও ২০ নভেম্বর ডিএমপি কমিশনারের কাছে লিখিত আবেদন করে। আগামী শনিবার সমাবেশের দিন। কিন্তু এখনো সমাবেশের স্থান বুঝে পায়নি বিএনপি।
এই সমাবেশস্থল নির্ধারণ নিয়ে আলোচনার মধ্যে গত বুধবার বিকেলে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এরপর থেকে রাজধানীর নয়াপল্টন এলাকা পুলিশের নিয়ন্ত্রণে। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনেও পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। ডিএমপি কমিশনার বলেছেন, কোনোভাবেই নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে দেওয়া হবে না।
এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট, আমরা আামাদের সমাবেশ অনুষ্ঠান করব। এর জন্য চেয়েছিলাম নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। এখন সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে এই সমাবেশটাকে শান্তিপূর্ণভাবে করার ব্যবস্থা করা।’
এই সংবাদ সম্মেলনের দুই ঘণ্টা পর এ বিষয়ে কথা বলার জন্য বিএনপির পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের কার্যালয়ে যান। রাত সাড়ে নয়টায় বৈঠক শেষ হয়।
বিএনপির দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে সমঝোতা হোক বা না হোক—ঝুঁকি নিয়ে হলেও বিএনপি গণসমাবেশ করার সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছে।
বিএনপির নেতারা বলছেন, গত বুধবার নয়াপল্টনে পুলিশের গুলিতে এক নেতা নিহত হওয়াসহ অনেককে আহত করা এবং দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে শত শত নেতা–কর্মীকে গ্রেপ্তারের ঘটনার পর এ ব্যাপারে অনমনীয় অবস্থান নিয়েছেন বিএনপির নীতিনির্ধারকেরা। তাঁরা মনে করছেন, ঢাকার গণসমাবেশের স্থান নিয়ে সরকার যতই কঠোর অবস্থান নিক না কেন, বিএনপির পেছনে সরার জায়গা নেই।
নয়াপল্টনে অবরোধ, বুধবারের ঘটনায় আতঙ্কজনক পরিস্থিতিতে কীভাবে বিএনপি সমাবেশ করবে? এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘যে গণতন্ত্রের জন্য আমরা যুদ্ধ করেছি, সেই গণতন্ত্রকে তারা পুরোপুরিভাবে লুট করে নিয়ে গেছে। সেটাকে ফিরে পাওয়ার জন্য জনগণ ফিরে দাঁড়াচ্ছে। নদী সাঁতরে পার হয়ে, ১০০ মাইল সাইকেলে, হেঁটে, চিড়ামুড়ি, গুড় নিয়ে তারা সমাবেশগুলোতে উপস্থিত হয়েছে। অপেক্ষা করুন, ঢাকায় যা দেখবেন, তা আপনারা স্বচক্ষে দেখবেন।’
পুলিশ বলছে, বিএনপির কার্যালয়ে ১৬০ বস্তা চাল, দুই লাখ পানির বোতল ছিল। এটা একটা যুদ্ধংদেহী ব্যাপার কি না, সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘(যুদ্ধংদেহী) কেন, যদি চাল পেয়ে থাকে, চাল তো বিস্ফোরক নয়। চাল কি যুদ্ধংদেহী কোনো ব্যাপার? এমনও তো হতে পারে যে সমাবেশে যাঁরা আসবেন, তাঁদের জন্য খিচুড়ি রান্না করার জন্য সেটা হতে পারে। তবে ওখানে ১৬০ বস্তা চাল, দুই লাখ পানির বোতল রাখার কোনো জায়গাই নেই। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যাচার।’
বিএনপির কার্যালয় থেকে ককটেল উদ্ধারের ঘটনার কথা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, পুলিশ নিজেদের রেখে আসা বোমা উদ্ধার ও বিস্ফোরণের নামে নাটক সাজিয়েছে। শুধু পুলিশ নয়, পুলিশের সঙ্গে ডিবি, সোয়াট বাহিনী এবং আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরাও এই রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসে নিয়োজিত ছিল।
দলীয় কার্যালয়ে পুলিশের অভিযানের বিষয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, আইন হচ্ছে কোনো বাড়িতে তল্লাশি চালাতে হলে সেই বাড়ির মালিককে সঙ্গে রাখতে হবে এবং নিরপেক্ষ সাক্ষী থাকতে হবে। এ ধরনের তল্লাশি চালাতে হলে সার্চ ওয়ারেন্ট ইস্যু করতে হয়। এ ক্ষেত্রে কিছুই করা হয়নি। | রাজধানীর নয়াপল্টন ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বাইরে এবার বিএনপির গণসমাবেশের জন্য আলোচনায় এল কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহি মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়াম ও মিরপুর বাঙলা কলেজ মাঠ। বৃহস্পতিবার রাতে ডিএমপি কমিশনারের সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধিদলের দীর্ঘ আলোচনার পর দুই পক্ষ এই জায়গায় পৌঁছায় বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। |
বাংলাদেশে বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের নিপীড়নে অ্যামনেস্টির উদ্বেগ | বাংলাদেশে বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের ওপর নিপীড়ন বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। গত বুধবার বিএনপির নেতা–কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে একজন নিহত ও অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। বিভিন্ন গণমাধ্যমে আসা এমন প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় বৃহস্পতিবার অ্যামনেস্টির দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, এ ঘটনা দেখায় যে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ মানুষের জীবনের প্রতি খুব কমই গুরুত্ব দেয় এবং এই বার্তা দেয় যে যারা মানবাধিকার চর্চা করতে সাহস দেখাবে, তাদের ভয়াবহ পরিণতির মুখোমুখি হতে হবে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক আঞ্চলিক পরিচালক ইয়ামিনি মিশ্র বলেন, বড় ধরনের বিক্ষোভ মোকাবিলার সময় বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষকে অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ বন্ধ করতে হবে এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে হবে।
অ্যামনেস্টির বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে আমরা উদ্বেগজনকভাবে কর্তৃপক্ষের দমন-পীড়নের বাড়তে দেখছি। কর্তৃপক্ষ রাজনৈতিক কর্মীদের গণগ্রেপ্তার চালাচ্ছে, আগামী বছরের সংসদ নির্বাচনের আগে সহিংসতা, ভীতি প্রদর্শন ও হয়রানি করছে। এতে আমরা গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। প্রত্যেকের মানবাধিকার সমুন্নত রাখার জন্য সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রদর্শন করা অপরিহার্য। দেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, সভা, শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকারসহ জনগণ তাদের অধিকার সম্পূর্ণরূপে প্রয়োগ করতে পারে, এমন নিশ্চয়তা থাকতে হবে।’
শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে দমনমূলক পদক্ষেপের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের দায়মুক্তি অবসান ঘটানোর আহ্বান জানিয়েছেন ইয়ামিনি মিশ্র। পুলিশের অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগের ক্ষেত্রে অবিলম্বে পুঙ্খানুপুঙ্খ ও কার্যকর তদন্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে বাংলাদেশে বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের খবরে উদ্বেগ জানিয়েছেন সভা-সমাবেশের অধিকারবিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার ক্লেমেন্ট ভউল। বৃহস্পতিবার এক টুইটে তিনি বলেন, বাংলাদেশের ঘটনাগুলোর ওপর বিশেষ নজর রাখছেন। বিশেষ করে এ বছরের জুলাই মাস থেকে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে হামলা এবং মৃত্যু ঘটানোর মতো প্রাণঘাতী শক্তি প্রয়োগের উদ্বেগজনক খবর আসার পর থেকে তিনি বাংলাদেশের ঘটনাবলি অনুসরণ করছেন।
ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশ কোথায় হবে, তা নিয়ে বুধবার নয়াপল্টনে দলটির নেতা–কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এতে মকবুল আহমেদ নামে বিএনপির এক কর্মী নিহত হন। আহত হন দলটির অর্ধশত নেতা-কর্মী।
ওই সংঘর্ষের ঘণ্টাখানেক পর ঢাকায় নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি উইন লুইস একটি বিবৃতি দেন। তাতে জাতিসংঘের একটি সদস্যরাষ্ট্র হিসেবে মতপ্রকাশ, গণমাধ্যম ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের স্বাধীনতাসহ মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্রে অঙ্গীকারের কথা বাংলাদেশকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়।
জন্মগতভাবে সব মানুষ স্বাধীন এবং মর্যাদা ও অধিকারের ক্ষেত্রে সমান-সর্বজনীন ঘোষণাপত্রের এ বক্তব্য স্মরণ করিয়ে দিয়ে ওই বিবৃতিতে উইন লুইস বলেন, জাতিসংঘ বাংলাদেশের সব মানুষের সঙ্গে এ ব্যাপারে একাত্মতা প্রকাশ করছে এবং সবার সমান অধিকার, মর্যাদা ও স্বাধীনতার মূল্যবোধ সমুন্নত রাখতে অতীতের মতোই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ আছে।
বাংলাদেশে বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের হয়রানি ও গ্রেপ্তারের ঘটনায় জাতিসংঘের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রও উদ্বেগ জানিয়েছে। দেশটির রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বলেন, ‘ঢাকায় রাজনৈতিক সহিংসতা ও ভয়ভীতি দেখানোর খবরে আমরা উদ্বিগ্ন। আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধা এবং সহিংসতা, হয়রানি ও ভয়ভীতি দেখানো থেকে বিরত থাকার জন্য আমরা সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
এর আগের দিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র নেড প্রাইস ওয়াশিংটনে ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, বাংলাদেশে বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশের ওপর কড়াকড়ি আরোপের ঘটনা নিয়ে তাঁর দেশ উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, ‘কোনো দল কিংবা প্রার্থীকে হুমকি, উসকানি অথবা এক দল আরেক দল বা প্রার্থীর ওপর যাতে সহিংসতা ঘটাতে না পারে, বিষয়টি নিশ্চিত করতে আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই।’ | বাংলাদেশে বিরোধী রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের ওপর নিপীড়ন বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। গত বুধবার বিএনপির নেতা–কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে একজন নিহত ও অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। বিভিন্ন গণমাধ্যমে আসা এমন প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় বৃহস্পতিবার অ্যামনেস্টির দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, এ ঘটনা দেখায় যে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ মানুষের জীবনের প্রতি খুব কমই গুরুত্ব দেয় এবং এই বার্তা দেয় যে যারা মানবাধিকার চর্চা করতে সাহস দেখাবে, তাদের ভয়াবহ পরিণতির মুখোমুখি হতে হবে। |
প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব পদে পরিবর্তন | প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত সচিব-১ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন এত দিন ধরে একান্ত সচিব-২–এর দায়িত্ব পালন করে আসা মনিরা বেগম। আর প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-২ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়েরই মহাপরিচালক আল মামুন মুর্শেদ। তাঁরা দুজনই যুগ্ম সচিব।
বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে পৃথক দুটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এর আগে বুধবার প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব পদে পরিবর্তন আনা হয়। নতুন মুখ্য সচিব হয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া। আর সচিব পদে পদোন্নতি পেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন। এত দিন ধরে মুখ্য সচিবের দায়িত্ব পালন করা আহমদ কায়কাউস বিশ্বব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক হিসেবে নিউইয়র্কে যাচ্ছেন। | প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত সচিব-১ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন এত দিন ধরে একান্ত সচিব-২–এর দায়িত্ব পালন করে আসা মনিরা বেগম। আর প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-২ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়েরই মহাপরিচালক আল মামুন মুর্শেদ। তাঁরা দুজনই যুগ্ম সচিব। |
বিস্ফোরক মামলায় শ্রীপুরে বিএনপির দুই নেতা গ্রেপ্তার | গাজীপুরের শ্রীপুরে বিএনপির আরও দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় গতকাল বুধবার রাত ও আজ বৃহস্পতিবার ভোররাতে নিজ নিজ বাড়ি থেকে দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। শ্রীপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আজিজুর রহমান বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন—শ্রীপুর পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এস এম জসিম উদ্দিন (৪০) ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম (৪৫)।
পুলিশ জানিয়েছে, গত ২৯ নভেম্বর শ্রীপুর উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মাহবুব হাসান বাদী হয়ে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে একটি মামলা করেন। ওই মামলার অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে জসিম ও রফিকুলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলায় বিএনপির ২৩ নেতা–কর্মীর নাম উল্লেখ করে এবং আরও ২০ থেকে ২৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছিল।
শ্রীপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আখতারুল আলম বলেন, গায়েবি মামলায় বিএনপির আরও দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ নিয়ে গায়েবি মামলায় শ্রীপুরের মোট ১৩ জন নেতা–কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির সমাবেশ পণ্ড করতেই বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাদের বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।
জানতে চাইলে পুলিশ পরিদর্শক আজিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার দুই ব্যক্তিকে আজ সকালে আদালতে পাঠানো হয়েছে। | গাজীপুরের শ্রীপুরে বিএনপির আরও দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় গতকাল বুধবার রাত ও আজ বৃহস্পতিবার ভোররাতে নিজ নিজ বাড়ি থেকে দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। শ্রীপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আজিজুর রহমান বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন। |
কুমিল্লায় বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল ছত্রভঙ্গ, দুই নেতাকে ভ্যানে তুলে নিল পুলিশ | বিএনপির নয়াপল্টনের কার্যালয়ে গতকাল বুধবার পুলিশি হামলা ও নেতা-কর্মীদের আটকের প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার কুমিল্লায় বের করা বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে পুলিশ। এ সময় পুলিশ দুই নেতাকে ভ্যানে করে তুলে নিয়ে যায়।
দলীয় নেতা-কর্মীরা বলছেন, গতকাল বিকেলে ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ে পুলিশি হামলা ও নেতা-কর্মীদের আটকের প্রতিবাদে কুমিল্লায় আজ বিক্ষোভ মিছিল করে বিএনপি। নগরের বাদুরতলা এলাকায় মিছিলের সামনে থেকে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এ কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা যুবদলের সভাপতি আশিকুর রহমান মাহমুদ ওরফে ওয়াসিমকে আটক করে পুলিশ। একই সঙ্গে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা যুবদলের সহসভাপতি জহিরুল হককেও আটক করে পুলিশ ভ্যানে করে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় পুলিশ মিছিল ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
এর আগে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়াকে গতকাল নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয় থেকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
কুমিল্লা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক উদবাতুল বারী বলেন, ‘জনবিচ্ছিন্ন সরকার কোনো ধরনের অভিযোগ ছাড়াই ওয়াসিম ভাইকে আটক করে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।’
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহমদ সঞ্জু মোর্শেদ বলেন, দুজনকে আটক করা হয়েছে। | বিএনপির নয়াপল্টনের কার্যালয়ে গতকাল বুধবার পুলিশি হামলা ও নেতা-কর্মীদের আটকের প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার কুমিল্লায় বের করা বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে পুলিশ। এ সময় পুলিশ দুই নেতাকে ভ্যানে করে তুলে নিয়ে যায়। |
গলাচিপায় বোমা ও ককটেলসদৃশ বস্তু উদ্ধার, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আটক | পটুয়াখালীর গলাচিপায় সাতটি বোমা ও ককটেলসদৃশ বস্তু উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার রাত ১১টার দিকে উপজেলা শহরের ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয় এলাকা থেকে বস্তুগুলো উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার আগে রাত সাড়ে ১০টার দিকে ওই এলাকার আশপাশে পরপর তিনবার বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।
এদিকে বোমা ও ককটেলসদৃশ বস্তু উদ্ধার ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মাসুদ রানাকে (৩২) আটক করেছে পুলিশ। আটক মাসুদ রানা উপজেলার চিকনিকান্দি ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও চিকনিকান্দি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ইদ্রিস হাওলাদারের ছেলে। উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. ছিদ্দিকুর রহমান বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। তবে মাসুদ রানা এখন রাজনীতিতে সক্রিয় নন বলে দাবি করেন তিনি।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে আকস্মিকভাবে পরপর তিনবার বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। এ ঘটনার পরপরই ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সামনে কয়েকজন পথচারী একটি প্লাস্টিকের ব্যাগ পড়ে থাকতে দেখেন। ব্যাগটি দেখে সন্দেহজনক মনে হওয়ায় স্থানীয় লোকজন তৎক্ষণাৎ বিষয়টি ভূমি কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের অবহিত করেন। তবে কোথায় এ বিস্ফোরণ ঘটেছে, তা স্থানীয় লোকজন কিংবা পুলিশ নির্দিষ্ট করে বলতে পারেনি।
ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয়ের উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম বলেন, পথচারীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে দ্রুত এসে ওই জায়গা ঘিরে ফেলে।
গলাচিপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শোষিত কুমার গায়েন বলেন, ‘ওই ব্যাগের মধ্যে থেকে টেপ দিয়ে মোড়ানো তিনটি ককটেলসদৃশ কৌটা ও চারটি পেট্রল বোমাসদৃশ কাচের বোতল উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার বস্তুগুলো প্রকৃত বোমা বা ককটেল কি না, সেটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে একজনকে গতকাল রাতেই গলাচিপা শহরের কলেজ রোড এলাকা থেকে আটক করা হয়েছে। গলাচিপার মতো শান্ত-নিরিবিলি এই জনপদকে অশান্ত করতে কোনো মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তৎপরতা চালাচ্ছে কি না, সেটা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’ | পটুয়াখালীর গলাচিপায় সাতটি বোমা ও ককটেলসদৃশ বস্তু উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার রাত ১১টার দিকে উপজেলা শহরের ইউনিয়ন ভূমি কার্যালয় এলাকা থেকে বস্তুগুলো উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনার আগে রাত সাড়ে ১০টার দিকে ওই এলাকার আশপাশে পরপর তিনবার বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। |
নয়াপল্টনের অলিগলিতেও পুলিশ, ফটকে তালা | রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ফটকে গতকাল শুক্রবারও ছিল তালা। কাকরাইলের নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে ফকিরাপুল পর্যন্ত সড়কে ছিল ব্যারিকেড। এই সড়কের বিভিন্ন অলিগলিতেও পুলিশ সদস্যরা অবস্থান নিয়েছিলেন। কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনেও মোতায়েন ছিল পুলিশ।
এসব কর্মকাণ্ডসহ গতকাল সকাল থেকেই নয়াপল্টন এলাকায় পুলিশের বিভিন্ন তৎপরতা লক্ষ করা গেছে। ভোর থেকেই নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে ফকিরাপুল পর্যন্ত সড়কে যান চলাচল ও সাধারণ মানুষকে চলাচল করতে দেওয়া হয়নি। এই এলাকায় চলতে গিয়ে পুলিশের জেরা ও তল্লাশির মুখে পড়তে হয়েছে অনেককে। সেখান থেকে অন্তত চারজনকে আটকও করেছে পুলিশ। দিনভর এলাকাজুড়ে ছিল সাঁজোয়া যান নিয়ে পুলিশের টহল।
এর আগে গত বুধবার পুলিশ–বিএনপি সংঘর্ষের জেরে বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত নয়াপল্টন এলাকা পুলিশের নিয়ন্ত্রণে ছিল। তবে বৃহস্পতিবার বিকেল চারটার দিকে নাইটিঙ্গেল মোড়–ফকিরাপুল সড়কের ব্যারিকেড পুলিশ তুলে নিলেও গতকাল চারটার পরও সে ব্যারিকেড ছিল। এদিকে বৃহস্পতিবার বিএনপি কার্যালয়ে নেতা-কর্মীরা যাওয়ার চেষ্টা করলেও গতকাল দলটির কেউ সেখানে আসেনি।
সরেজমিনে দেখা যায়, গতকাল বেলা ১১টার দিকে পুরানা পল্টন থেকে নাইটিঙ্গেল মোড়ের দিকে বিএনপি সমর্থকদের ২০ থেকে ৩০ জনের একটি দল ঝটিকা মিছিল নিয়ে এগোতে দেখে পুলিশ তাঁদের ধাওয়া দেয়। খালেদা জিয়ার মুক্তি ও ১০ ডিসেম্বরের গণসমাবেশ সফল করতে মিছিল থেকে স্লোগান দেওয়া হয়েছিল। সেই মিছিল থেকে পুলিশ একজনকে আটকও করে। এই মিছিল ছাড়া বিএনপি সমর্থকদের আর কোনো মিছিল নয়াপল্টন এলাকায় দেখা যায়নি। তবে নাইটিঙ্গেল মোড়ে দুপুরের পর ১০ থেকে ১৫ জন করে তিন থেকে চারটি দল আওয়ামী লীগের সমর্থনে স্লোগান দিয়ে পুরানা পল্টনের দিকে যেতে দেখা গেছে।
গতকাল দুপুর ১২টার পর থেকে নয়াপল্টন এলাকায় অবস্থান আরও জোরদার করে পুলিশ। পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জুমার নামাজের পর নয়াপল্টন এলাকায় বিএনপির নেতা-কর্মীরা জড়ো হতে পারেন, এমন আশঙ্কা থেকেই তখন পুলিশ নাইটিঙ্গেল মোড়, বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এবং ফকিরাপুল এলাকায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে সশস্ত্র অবস্থান নেয়।
পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপির নেতা-কর্মীরা যেন নয়াপল্টন এলাকায় অবস্থান নিতে না পারেন, সে জন্য পুরো এলাকার নিয়ন্ত্রণ তাঁরা নিয়েছেন। পরিস্থিতি বিবেচনায় এই এলাকায় সাধারণ মানুষকে আসতে দেওয়া হয়নি।
গতকাল দুপুরে নয়াপল্টন এলাকা পরিদর্শনে যান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) বিপ্লব কুমার সরকার। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই নয়াপল্টন এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) আবুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, সকাল থেকেই তিনি নয়াপল্টন এলাকায় দায়িত্ব পালন করছেন। এই এলাকায় কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে
তাঁরা তৎপর রয়েছেন। নিরাপত্তার কারণে এই এলাকায় সন্দেহজনকভাবে কাউকে ঘোরাঘুরি করতে দেখলে তাঁরা তল্লাশি করছেন। নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে চারজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নেওয়া হয়েছে। | রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ফটকে গতকাল শুক্রবারও ছিল তালা। কাকরাইলের নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে ফকিরাপুল পর্যন্ত সড়কে ছিল ব্যারিকেড। এই সড়কের বিভিন্ন অলিগলিতেও পুলিশ সদস্যরা অবস্থান নিয়েছিলেন। কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনেও মোতায়েন ছিল পুলিশ। |
সভা-সমাবেশ অপরাধ নয়, সাংবিধানিক অধিকার | আজ ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস। দিবসটি উপলক্ষে দেশের মানবাধিকার সংগঠনগুলো শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশের অধিকার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে। তারা বলেছে, সভা-সমাবেশে যোগ দেওয়া অপরাধ নয়, এটা সাংবিধানিক অধিকার।
১৯৪৮ সালের এই দিনে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্র গৃহীত হয়। ১৯৫০ সালে দিনটিকে বিশ্ব মানবাধিকার দিবস ঘোষণা করে জাতিসংঘ। এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘সবার জন্য মর্যাদা, স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচার’।
মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করে বলেন, মানবাধিকার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় ভুক্তভোগীদের প্রতিকার পাওয়ার পথ সুগম করতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর আন্তরিক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। প্রধানমন্ত্রী তাঁর বাণীতে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দেশের জনগণের মানবাধিকার সুরক্ষায় বদ্ধপরিকর।
দেশে মানবাধিকার নিশ্চিত করতে সরকারের কাছে ১৩ দফা দাবি জানিয়েছে বেসরকারি সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। গতকাল শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব দাবি জানায় আসক। এর মধ্যে দেশে সুস্থ রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক চর্চা নিশ্চিত করার মাধ্যমে নাগরিকদের অধিকার ভোগের পরিবেশ তৈরি, নাগরিকের সমবেত হওয়ার অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা এবং শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশের অধিকার যথাযথভাবে চর্চা করার পরিবেশ তৈরি অন্যতম। এ ছাড়া সব বিচারবহির্ভূত হত্যার অভিযোগ তদন্তে নিরপেক্ষ কমিশন গঠন এবং গণমাধ্যম ও নাগরিকদের মতপ্রকাশের অধিকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োজনীয় সংশোধনের দাবি জানানো হয়।
মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) বলছে, সাম্প্রতিক সময়ে বিরুদ্ধ মত দমনে গায়েবি মামলা দায়ের, বাড়িঘরে তল্লাশি, গ্রেপ্তার, সভা-সমাবেশে যেতে বাধা দেওয়া, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের যথেচ্ছ অপব্যবহার এবং বিচারবহির্ভূত হত্যার মতো ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। সরকারকে এ ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে এমএসএফ। | আজ ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবস। দিবসটি উপলক্ষে দেশের মানবাধিকার সংগঠনগুলো শান্তিপূর্ণ সভা-সমাবেশের অধিকার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে। তারা বলেছে, সভা-সমাবেশে যোগ দেওয়া অপরাধ নয়, এটা সাংবিধানিক অধিকার। |
ফাঁকা ঢাকা, মোড়ে মোড়ে সতর্ক অবস্থানে পুলিশ | বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ আজ। কয়েক দিন ধরে এ সমাবেশকে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত। সাধারণ মানুষের মনেও রয়েছে শঙ্কা। আজ শনিবার সকাল থেকেই রাজধানীর রাস্তাঘাট ফাঁকা। সড়কে যানবাহনের সংখ্যা কম। পথচারী ও যাত্রীর উপস্থিতিও হাতে গোনা। প্রতিটি সড়কের মোড়ে মোড়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ।
আজ সকাল সাড়ে সাতটা থেকে সোয়া আটটা পর্যন্ত রাজধানীর মোহাম্মদপুর, শিয়া মসজিদ, কলেজগেট, আসাদ অ্যাভিনিউ, খামারবাড়ি, ফার্মগেট ও কারওয়ান বাজার এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সড়কে ব্যক্তিগত গাড়ি ও মোটরসাইকেল নেই বললেই চলে।
বাসের সংখ্যাও একেবারে হাতে গোনা। কিছু সিএনজিচালিত অটোরিকশার দেখা মিলছে। অন্যান্য দিনের তুলনায় সড়কে পথচারী ও যাত্রী উপস্থিতিও কম।
গণভবনের উল্টো পাশে আওরঙ্গজেব রোডের প্রবেশমুখে, রেসিডেনশিয়াল মডেল কলেজের পেছনের ফটকে, শিয়া মসজিদ মোড়ে, আসাদ অ্যাভিনিউর প্রবেশমুখে, ফার্মগেট বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সড়কে পুলিশ সদস্যদের সতর্ক অবস্থানে থাকতে দেখা যায়। ফার্মগেট এলাকায় পুলিশের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সড়কের পাশে চেয়ার পেতে অবস্থান নিতে দেখা গেছে।
সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালকেরা যাত্রীরা অপেক্ষায় ছিলেন। পঞ্চাশোর্ধ্ব অটোরিকশার চালক আবদুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘মামা, রাস্তাঘাট গতকাল (বৃহস্পতিবার) থেকেই ফাঁকা। ১ হাজার ২০০ টাকা মালিকের দৈনিক জমা, ৩০০ টাকার গ্যাস লাগে। নিজের খাওয়ার খরচ আছে৷ এই টাকা তোলার পরে আয়ের হিসাব। গতকাল কোনোমতে ২০০ টাকা হইছিল। আজকে জমাও হবে না মনে হচ্ছে।’
ফার্মগেটের খামারবাড়ি মোড়ে কয়েকজন যাত্রীকে বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। প্রধান সড়কে কিছু রিকশা চলাচল করছে। জরুরি কাজ ছাড়া অনেকেই বাইরে বের হননি। ফলে সড়কে পথচারী মানুষের সংখ্যাও কম।
শিয়া মসজিদ এলাকায় কথা হয় পোশাক কারখানার শ্রমিক জামিল হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আটটা থেকে ডিউটি। কারখানা তো ছুটি নাই। সবাই বলতেছে, আজকে ঝামেলা হতে পারে। রাস্তায় শুধু পুলিশ। কিন্তু আমাদের তো কাজে না যেয়ে উপায় নাই।’
আজ রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় মহাসমাবেশ হবে। এরই মধ্য একজনের প্রাণহানি, মহাসচিবসহ চার শতাধিক নেতা-কর্মীর গ্রেপ্তার, দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় তছনছ, গত তিন দিনে এমন উত্তাপ ছড়ানো অনেক ঘটনার পর গতকাল শুক্রবার ঢাকায় সমাবেশের জায়গা পেয়েছে বিএনপি। এর আগে অন্তত ১২টি মাঠ নিয়ে প্রস্তাব, পাল্টা প্রস্তাব দিয়েছিল পুলিশ ও বিএনপি। আগের দিন এসে গোলাপবাগ মাঠের অনুমতি পায় এবং সেখানেই আজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে দলটির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ। | বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ আজ। কয়েক দিন ধরে এ সমাবেশকে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত। সাধারণ মানুষের মনেও রয়েছে শঙ্কা। আজ শনিবার সকাল থেকেই রাজধানীর রাস্তাঘাট ফাঁকা। সড়কে যানবাহনের সংখ্যা কম। পথচারী ও যাত্রীর উপস্থিতিও হাতে গোনা। প্রতিটি সড়কের মোড়ে মোড়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ। |
কয়রায় বেড়িবাঁধ ছিদ্র করে চলছে ঘের ব্যবসা | সুন্দরবনসংলগ্ন খুলনার কয়রা উপজেলায় বেড়িবাঁধ ছিদ্র করে ও পাইপ ঢুকিয়ে লবণ পানি উঠিয়ে চলছে ঘের ব্যবসা। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে উপকূলের বেড়িবাঁধ। প্রতিবছর প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় বিস্তীর্ণ এলাকা। নোনা পানির বিরূপ প্রভাবে উজাড় হচ্ছে বনজ ও ফলদ সম্পদ। নষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, কয়রা উপজেলার ১৩/১৪-১ ও ১৩/১৪-২ এই দুই পোল্ডারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বেড়িবাঁধে চার শতাধিক স্থানে বাঁধের নিচে পাইপ ঢুকিয়ে বা ছিদ্র করা হয়েছে। বিশেষ করে উপজেলার লোকা, মঠবাড়ি, দশালিয়া, শিকারিবাড়ি ক্লোজার, নয়ানি স্লুইসগেটসংলগ্ন এলাকা, কাটকাটা, গাজীপাড়া, ৬ নম্বর কয়রা, গোবরা, ঘাটাখালি, হরিণখোলা, মদিনবাদ লঞ্চঘাট, জোড়শিং, আংটিহারা, গোলখালি এলাকার ঘেরমালিকেরা বাঁধ কেটে অথবা ছিদ্র করে পাইপ বসিয়ে নদীর পানি ঘেরে তুলে চলেছেন। এতে এসব এলাকার প্রায় ২১ কিলোমিটার বাঁধ ঝুঁকিতে রয়েছে।
বিষয়টি স্বীকার করে কয়রা উপজেলার জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মো. আমিনুল হক বলেন, ‘উপজেলায় এখন ৬ হাজার ২৭০ হেক্টর জমিতে নোনা পানির চিংড়ি চাষ হচ্ছে। এর অধিকাংশ ঘেরেই লবণ পানি তুলে সনাতন পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষ করা হয়। আমরা চাষিদের উৎসাহিত করছি সেমিইনটেনসিভ বা আধুনিক পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষে।’
স্থানীয় লোকজন জানান, এসব স্থান দিয়ে সারা বছরই অবাধে নদী থেকে নোনা পানি তুলে চিংড়ি চাষ করছেন স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। এলাকার জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা চিংড়ি চাষের সঙ্গে জড়িত বলে কেউ তাঁদের বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহস পায় না। তাঁরা আরও বলেন, ২০২২ সালের প্রথম দিকে ঢাকঢোল পিটিয়ে বাঁধে বসানো অবৈধ পাইপ অপসারণের কাজে নেমেছিল পাউবো। এ জন্য সময়ও বেঁধে দেওয়া হয়েছিল চিংড়িচাষিদের। কাজের কাজ কিছু হয়নি। ঘেরমালিকেরা নির্বিঘ্নে তাঁদের কাজ চালিয়ে আসছেন। পাউবো কর্তৃপক্ষ প্রতিবছর ‘ব্যবস্থা’ নেওয়ার কথা বললেও তেমন কোনো উদ্যোগ দৃশ্যমান নয়।
উপজেলার নদীভাঙনকবলিত গোবরা এলাকার কৃষক তৈয়েবুর রহমান ও মেসবাহউদ্দিন বলেন, নোনা পানির চিংড়ি চাষের প্রভাবে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ। বাঁধ ভাঙনের শিকার হচ্ছে। এ ছাড়া পুকুরে মাছ নেই। হাজার হাজার ফলদ ও বনজ বৃক্ষ মরে যাচ্ছে। গ্রামে হাঁস-মুরগি প্রায় বিলুপ্ত হচ্ছে। আর সবজির খেত তো চোখেই পড়ে না। হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগল ও মিষ্টি পানির মৎস্যসম্পদ এখন প্রায় শূন্যের কোঠায়। পরিবেশও হুমকির মুখে পড়েছে।
কয়রার পাথরখালী গ্রামের অঞ্জলি মুন্ডা ও ৬ নম্বর কয়রা এলাকার আশিকুজ্জামাম বলেন, নোনা পানির চিংড়ি চাষের প্রভাবে প্রতিবছর নদীর বাঁধ ভাঙছে। এ ছাড়া এলাকার বিলে-খালে দরিদ্র মানুষগুলোর মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ বন্ধ হয়ে গেছে। একই সঙ্গে নোনা পানির চিংড়িচাষিরা ছোট নদী-খালগুলো অবৈধভাবে দখল করে নিয়েছেন। ফলে দরিদ্র মানুষ উন্মুক্ত জলাশয়ে মাছ ধরা থেকে বঞ্চিত হয়ে কর্মসংস্থান হারাচ্ছেন।
কয়রা সদর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান এস এম বাহারুল ইসলাম বলেন, কয়রার বিভিন্ন পোল্ডারে বেড়িবাঁধ কাটার ফলে তা এখন দুর্বল ও হুমকির মুখে পড়ছে। দরিদ্র মানুষের কর্মসংস্থান থাকছে না। পরিবেশ রক্ষায় অপরিকল্পিত বেড়িবাঁধ কেটে নোনা পানির চিংড়ি চাষ বন্ধ হওয়া দরকার। এ ছাড়া ওই সব চিংড়িচাষির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।
কয়রা উপজেলাটি পড়েছে পাউবোর সাতক্ষীরা অঞ্চলের বিভাগ-২-এর আওতায়। ওই বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহনেওয়াজ তালুকদার বলেন, যাঁরা অবৈধভাবে বেড়িবাঁধ কেটে বা ছিদ্র করে নোনা পানির চিংড়ি চাষ করছেন, তাঁদের তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দাপ্তরিক প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। দ্রুত বেড়িবাঁধের অবৈধ পাইপ অপসারণ করা হবে। | সুন্দরবনসংলগ্ন খুলনার কয়রা উপজেলায় বেড়িবাঁধ ছিদ্র করে ও পাইপ ঢুকিয়ে লবণ পানি উঠিয়ে চলছে ঘের ব্যবসা। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে উপকূলের বেড়িবাঁধ। প্রতিবছর প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় বিস্তীর্ণ এলাকা। নোনা পানির বিরূপ প্রভাবে উজাড় হচ্ছে বনজ ও ফলদ সম্পদ। নষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য। |
খাদ্যঘাটতির ৪৫ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ | খাদ্যঘাটতিতে থাকা বিশ্বের ৪৫টি দেশের তালিকায় আবারও এসেছে বাংলাদেশের নাম। ওই তালিকায় আফ্রিকার ৩৩টি, এশিয়ার ৯টি, লাতিন ও ক্যারিবীয় অঞ্চলের ২টি এবং ইউরোপের একমাত্র দেশ হিসেবে ইউক্রেনের নাম রয়েছে। উৎপাদন ও আমদানি হ্রাস এবং খাদ্যশস্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে এসব দেশকে খাদ্যঘাটতির তালিকায় রেখেছে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)।
জাতিসংঘের এই সংস্থা চলতি মাসে ‘শস্য উৎপাদনের সম্ভাবনা এবং খাদ্য পরিস্থিতি’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনটি ৪ ডিসেম্বর প্রকাশ করেছে। তিন মাস পর পর এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
এফএওর প্রতিবেদনে বাংলাদেশের নাম তালিকায় যুক্ত হওয়ার কারণ হিসেবে অর্থনৈতিক সংকট, রোহিঙ্গাদের খাদ্যের জোগান, বন্যার কারণে ফসল উৎপাদন হ্রাস এবং খাদ্যের আমদানি খরচ ও মূল্যবৃদ্ধির কথা উল্লেখ করা হয়। এই তালিকায় ২০২১ সাল থেকে বাংলাদেশের নাম রয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোভিডের প্রভাবে বাংলাদেশের মানুষের আয় কমে গেছে, দারিদ্র্য বেড়েছে। এর মধ্যে আবার মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ১০ লাখ রোহিঙ্গার খাদ্যের জোগান দিতে হচ্ছে। মে ও জুনের বন্যার কারণে ফসল, সম্পদ, বাড়িঘর, গবাদিপশুর ক্ষতি হয়েছে। এতে বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষের জীবনযাত্রার মান কমিয়ে দিয়েছে।
বাংলাদেশে খাদ্যনিরাপত্তার ক্ষেত্রে অন্যতম চাপ হিসেবে বৈশ্বিক খাদ্যশস্যের মূল্যবৃদ্ধিকে দায়ী করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আটা ও ভোজ্যতেলের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। অন্যান্য আমদানিনির্ভর খাদ্যের দামও বাড়তির দিকে। বন্যা ও অনাবৃষ্টির কারণে ২০২১ সালের তুলনায় ২০২২ সালে খাদ্যের উৎপাদন দশমিক ৪ শতাংশ কম হয়েছে। ২০২১ সালে ধান, গম, ভুট্টাসহ দানাদার খাদ্য উৎপাদিত হয়েছে ৬ কোটি ৬৬ লাখ টন। চলতি বছর তা কমে ৬ কোটি ২৩ লাখ টন হয়েছে।
জানতে চাইলে খাদ্যসচিব ইসমাইল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিশ্ববাজারে মূল্যবৃদ্ধির কারণে গমের আমদানি কমেছে। আমরা চেষ্টা করছি গমের আমদানি বাড়ানোর। এ জন্য বেসরকারি খাতকে আরও বেশি সহযোগিতা ও উৎসাহ দিচ্ছি। আশা করি, ভবিষ্যতে গমের আমদানি বাড়বে, দাম কমে আসবে। সরকারি–বেসরকারি পর্যায়ে চাল আমদানিও বাড়ানো হচ্ছে।’
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দেশে চাল ও গমের মূল্যবৃদ্ধির কারণে খোলাবাজারে বিক্রি (ওএমএস) কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা হয়েছে। রাজধানীসহ দেশের প্রধান প্রধান শহরে সাধারণত ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি ওএমএসে চাল বিক্রি কার্যক্রম বন্ধ থাকে। কিন্তু এবার এ সময়ও এই কার্যক্রম অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এই তিন মাসের জন্য বাড়তি ৩ লাখ ৬০ হাজার টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
সরকার বেসরকারি খাতে ব্যবসায়ীদের ১৫ লাখ টন চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছে। ইতিমধ্যে সাড়ে তিন লাখ টন চাল দেশে এসে পৌঁছেছে। তবে সরকার দেশ–বিদেশ থেকে মোট ৩২ লাখ টন চাল ও গম কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চাল আসছে ভারত, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড ও মিয়ানমার থেকে। আর গম আসছে রাশিয়া, ইউক্রেন, বুলগেরিয়া ও কানাডা থেকে।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক গবেষণা পরিচালক এম আসাদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, বিশ্ববাজারে খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশের দরিদ্র পরিবারগুলো বিপদে আছে। ওএমএস কার্যক্রম রাজধানী ও শহরকেন্দ্রিক। গ্রামের মানুষ এখন সবচেয়ে বেশি খাদ্যসংকটে আছেন। তাঁদের কাছে সহজে কম খরচে খাদ্যপণ্য পৌঁছাতে হবে।
বাংলাদেশ ছাড়াও এফএওর ওই তালিকায় দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের মধ্যে রয়েছে আফগানিস্তান, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমার। আফ্রিকার দেশগুলোর মধ্যে বুরকিনাফাসো, বুরুন্ডি, ক্যামেরুনসহ ৩৩টি দেশ। রয়েছে লাতিন আমেরিকার দেশ ভেনেজুয়েলা ও মধ্য আমেরিকার দেশের মধ্যে রয়েছে হাইতি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের তুলনায় চলতি বছর বিশ্বে দানাদার খাদ্যের উৎপাদন ২ শতাংশ কমেছে। এ বছর ১৭২ কোটি ২০ লাখ টন দানাদার খাদ্য উৎপাদিত হবে, যা গত বছরের তুলনায় ৭২ লাখ টন কম। | খাদ্যঘাটতিতে থাকা বিশ্বের ৪৫টি দেশের তালিকায় আবারও এসেছে বাংলাদেশের নাম। ওই তালিকায় আফ্রিকার ৩৩টি, এশিয়ার ৯টি, লাতিন ও ক্যারিবীয় অঞ্চলের ২টি এবং ইউরোপের একমাত্র দেশ হিসেবে ইউক্রেনের নাম রয়েছে। উৎপাদন ও আমদানি হ্রাস এবং খাদ্যশস্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে এসব দেশকে খাদ্যঘাটতির তালিকায় রেখেছে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)। |
গোলাপবাগ মাঠে আসা নেতা কর্মীদের মাইকে জানানো হচ্ছে অভিনন্দন | ঢাকার সায়েদাবাদের গোলাপবাগ মাঠে বিভিন্ন এলাকা থেকে বিএনপির গণসমাবেশে আসছেন নেতা–কর্মীরা। সমাবেশ আয়োজক কমিটির নেতারা মাইকে কিছুক্ষণ পরপর ঘোষণা দিচ্ছেন, ‘যাঁরা আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে এই মাঠে এসেছেন, তাঁদের অভিনন্দন।’
আজ শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার পর দেখা গেছে গোলাপবাগ মাঠজুড়ে লোকজন ছড়িয়েছিটিয়ে আছেন। বেলা ১১টায় সমাবেশে শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
ভোলার চরফ্যাশন থেকে দুই দিন আগে ঢাকায় এসেছেন মোসলেহ উদ্দিন। পরে তিনি আত্মীয়ের বাসায় ওঠেন। আজ শনিবার সকাল ৭টায় মোসলেহ উদ্দিন গোলাপবাগ মাঠে আসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখানে এসে আমার অনেক ভালো লাগছে। আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মী আর পুলিশের বাধা পেরিয়ে আমার মতো অনেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই মাঠে হাজির হয়েছে।’
মাঠে আসা অনেকেই বলেন, আসার পথে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাঁদের তল্লাশি করেছে।
গোলাপবাগ মাঠের চারপাশের সড়কগুলোয় বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীরা অবস্থান করছেন। সায়েদাবাদের জনপদ মোড় ও যাত্রাবাড়ী মোড়ে বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন।সকাল সাড়ে ৮টার দিকে দেখা গেছে, গোলাপবাগ মাঠে আবদুল্লাহ আল নোমান, হাবীব উন নবী খান সোহেল, মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ বিএনপির অনেক নেতা হাজির হয়েছেন।
পল্টনসহ পৃথক চারটি থানার মামলায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ প্রায় পাঁচ শ নেতা কর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন। স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশ ও বিএনপির সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন।
গত তিন দিনে এমন উত্তাপ ছড়ানো অনেক ঘটনার পর গতকাল শুক্রবার ঢাকায় সমাবেশের জায়গা পেয়েছে বিএনপি। এর আগে অন্তত ১২টি মাঠ নিয়ে প্রস্তাব, পাল্টা প্রস্তাব দিয়েছিল পুলিশ ও বিএনপি। আগের দিন এসে গোলাপবাগ মাঠের অনুমতি পায় এবং সেখানেই আজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে দলটির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ। | ঢাকার সায়েদাবাদের গোলাপবাগ মাঠে বিভিন্ন এলাকা থেকে বিএনপির গণসমাবেশে আসছেন নেতা–কর্মীরা। সমাবেশ আয়োজক কমিটির নেতারা মাইকে কিছুক্ষণ পরপর ঘোষণা দিচ্ছেন, ‘যাঁরা আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে এই মাঠে এসেছেন, তাঁদের অভিনন্দন।’ |
‘দিন আনি দিন খাই, ঘরে বাজার নাই, আমি তো কাজ পেলাম না’ | নিজের আবাদি জমি নেই, তাই কাজের সন্ধানে সাতক্ষীরা থেকে রাজধানীতে এসেছেন আবুল মিয়া। পরিবার নিয়ে থাকেন গাবতলী বেড়িবাঁধ এলাকার সিটি কলোনিতে। দিনমজুরের কাজ করে পাঁচজনের সংসার চালান। আবুল প্রতিদিন সকালে মোহাম্মদপুর শিয়া মসজিদ মোড়ের শ্রমিকের হাটে আসেন কাজের খোঁজে।
আজ শনিবার সকালেও কাজের খোঁজে শিয়া মসজিদ মোড়ে এসে দাঁড়িয়েছেন আবুল। তাঁর মতো অর্ধশতাধিক দিনমজুর শ্রমিক জড়ো হয়েছিলেন। অন্যান্য দিন সকাল ৭টার মধ্যেই অনেকে দৈনিক মজুরির হিসেবে কাজ পেয়ে যান। কিন্তু আজ ৮টার পরেও কেউ কাজ পাননি। বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই রাজধানীর সড়কে লোকজনের উপস্থিতিই কম।
দিনমজুরদের এই হাটে পুরুষ শ্রমিকের পাশাপাশি কাজের আশায় এসেছেন নারী শ্রমিকেরাও। কাজের সন্ধানের এসেছিলেন আলপনা আকতার। পরিবার নিয়ে তিনি থাকেন ঢাকা উদ্যান এলাকায়। আলপনা বলেন, ‘সমাবেশ না কি জানি হবে। তার সঙ্গে আমাদের তো কোনো লেনাদেনা নাই। দিন আনি দিন খাই, ঘরে বাজার নাই। কিন্তু আমি তো কাজ পেলাম না।’
আবুল মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘দিনে ৫০০-৬০০ টাকা হিসেবে দিনমজুরের কাজ করি। তিন ছেলেমেয়ে, স্ত্রীকে নিয়ে পাঁচজনের সংসার। আমার আয়েই চলে। আজ মনে হচ্ছে কাজ পাওয়া যাবে না। পুলিশও দাঁড়াতে দিতে চাচ্ছে না। একটু পরেই চলে যাব।’
উপস্থিত শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিদিন সকালে শিয়া মসজিদ মোড়ে বসে এই শ্রমিকের হাট। গাবতলী, মোহাম্মদপুর, বেড়িবাঁধ ও আশপাশের এলাকার শ্রমিকেরা দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজের আশায় এখানে ভিড় করেন। এখানে আসার আগেও শ্রমিকেরা জানেন না কাজ মিলবে কিনা। ইট ভাঙা, নির্মাণকাজ, জোগালি, রাজমিস্ত্রি, রাজমিস্ত্রির সহকারী, কাঠমিস্ত্রি, বস্তা টানা, মাটি কাটা, ড্রেন পরিষ্কার থেকে শুরু করে এমন কোনো কাজ নেই, যা তাঁরা করেন না।
শিয়া মসজিদ মোড়ে নুরানী টাওয়ারের সিঁড়ি, ফুটপাত ও সামনের সড়ক বিভাজকের ওপর বসে কাজ পাওয়ার অপেক্ষা করছিলেন শ্রমিকেরা। তাঁদের একজন আনোয়ার হোসেন। তিনি থাকেন কৃষি মার্কেট এলাকায়। আনোয়ার বলেন, ‘রাজনীতি আমরা বুঝি না। কাজ করি, টাকা পাই, সংসার চালাই। এক দিন কাজ না পেলেই কষ্ট হয়ে যায়। সকাল থেকে একজন লোকও শ্রমিক নিতে আসেন নাই।’
অভিজ্ঞতা আর কাজের ওপর ভিত্তি করে দৈনিক ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত মজুরি পেয়ে থাকেন শ্রমিকেরা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অপেক্ষাকৃত কম মজুরিতে কাজে যেতে রাজি হন শ্রমিকেরা। যাঁরা কাজ পাবেন না, তাঁদের ভাবনা বাড়িতে গিয়ে কীভাবে কাটবে বেকার একটি দিন।
কাজের অপেক্ষায় থাকা শ্রমিকেরা নিজেদের মধ্যে গল্প করেই সময় কাটাচ্ছিলেন। তাঁদের একেকজনের জীবনকাহিনি একেক রকম। মোহাম্মদপুরে নবীনগর হাউজিং এলাকায় থাকেন রিজভী বেগম। তাঁর স্বামী নেই। দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে তার সংসার। তিনি বলেন, ‘জোগালির কাজ করি। দিনে ৫০০-৬০০ টাকা পাই। আজকে কাজ পাব না, ঘরে চলে যাব।’
দিনমজুর শ্রমিকদের সমাগমের জায়গাটিকে শ্রমিকেরা নিজেরা ডাকেন ‘মার্কেট’ বলে। শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শিয়া মসজিদ ছাড়াও মোহাম্মদপুর টাউন হল, মিরপুর ১ নম্বর মুক্তবাংলা শপিং কমপ্লেক্স, মিরপুর ১২ নম্বরের কালশী সড়কেও এমন শ্রমিকের হাট রয়েছে।
আজ রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ। সমাবেশকে কেন্দ্র করে একজনের প্রাণহানি, দলের মহাসচিবসহ চার শতাধিক নেতা-কর্মীর গ্রেপ্তার, দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় তছনছ, গত তিন দিনে এমন অনেক উত্তাপ ছড়িয়েছে। এই সমাবেশকে ঘিরে সাধারণ মানুষের মনেও রয়েছে শঙ্কা। আজ সকাল থেকেই রাজধানীর রাস্তাঘাট ফাঁকা। সড়কে যানবাহনের সংখ্যা কম। পথচারী ও যাত্রীর উপস্থিতিও হাতে গোনা। প্রতিটি সড়কের মোড়ে মোড়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ।
শিয়া মসজিদ মোড়ে শ্রমিকদের হাটের পাশেই অবস্থান নিয়েছেন আদাবর থানার পুলিশ সদস্যরা। তাঁদের দুজন শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক পুলিশ সদস্য বলেন, ‘আজকের সমাবেশকে ঘিরে পুলিশ সতর্ক। তার মধ্যে এমন ৭০-৮০ জন এক জায়গায় জড়ো হওয়ায়, তাদের সরে যেতে বলা হয়েছে। বুঝতে পারছি তাঁরা দিনমজুর শ্রমিক, কিন্তু আমাদের কিছু করার নেই।’ | নিজের আবাদি জমি নেই, তাই কাজের সন্ধানে সাতক্ষীরা থেকে রাজধানীতে এসেছেন আবুল মিয়া। পরিবার নিয়ে থাকেন গাবতলী বেড়িবাঁধ এলাকার সিটি কলোনিতে। দিনমজুরের কাজ করে পাঁচজনের সংসার চালান। আবুল প্রতিদিন সকালে মোহাম্মদপুর শিয়া মসজিদ মোড়ের শ্রমিকের হাটে আসেন কাজের খোঁজে। |
বাগেরহাটে খেলা চলাকালে ছুরিকাঘাতে কিশোরের মৃত্যু | বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে গতকাল শুক্রবার রাতে বিশ্বকাপ ফুটবলে ব্রাজিল বনাম ক্রোয়েশিয়ার খেলা চলাকালে ছুরিকাঘাতে টুটুল হাওলাদার (১৬) নামের এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। উপজেলার গুলিশাখালী সোমাদ্দারবাজারে ওই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় লোকজন বলছেন, প্রতিবন্ধী রুবেল সমাদ্দার (২৯) ওই কিশোরকে ছুরি মেরে পালিয়ে যান।
নিহত টুটুল হাওলাদার পশ্চিম গুলিশাখালী গ্রামের দিনমজুর আবদুল বারেক হাওলাদারের ছেলে।
স্থানীয় লোকজনের বরাতে পুলিশ বলছে, গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে ব্রাজিল বনাম ক্রোয়েশিয়ার খেলা চলাকালে টুটুল খেলা দেখার জন্য বাজারে যায়। এ সময় স্থানীয় রুবেল তাকে ছুরিকাঘাত করেন। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় টুটুলকে উদ্ধার করে মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মোরেলগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শাহজাহান আহমেদ বলেন, খেলা চলাকালে হত্যার ঘটনাটি ঘটে। তবে এটি খেলা কেন্দ্র করে নয়, পূর্বশত্রুতার কারণে এই হত্যাকাণ্ড। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। অভিযুক্ত বাবুলকে আটকের চেষ্টা চলছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ বাগেরহাট জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হচ্ছে। | বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে গতকাল শুক্রবার রাতে বিশ্বকাপ ফুটবলে ব্রাজিল বনাম ক্রোয়েশিয়ার খেলা চলাকালে ছুরিকাঘাতে টুটুল হাওলাদার (১৬) নামের এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। উপজেলার গুলিশাখালী সোমাদ্দারবাজারে ওই ঘটনা ঘটে। |
এবার বাড়ছে বাড়িভাড়াও | দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, পরিবহন খরচ বৃদ্ধি, গ্যাস-পানির দাম বাড়ায় জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এর মধ্যেই অধিকাংশ এলাকায় বাড়িভাড়া বাড়ার নোটিশ পাচ্ছেন ভাড়াটেরা। বছরের শুরুতেই গুনতে হবে ৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত বাড়তি বাড়িভাড়া। এই বাড়তি ব্যয় নিয়ে রীতিমতো আতঙ্কে আছেন অনেক ভাড়াটে।
যাঁরা ভাড়া বাড়িতে থাকেন, তাঁদের আয়ের একটা বড় অংশ চলে যায় বাড়িভাড়ায়। করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর অনেক বাড়িওয়ালাই বাসাভাড়া বাড়াননি। এবার ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকেই বাড়িওয়ালারা নানা যুক্তিতে বাড়িভাড়া বাড়ানোর নোটিশ দিতে শুরু করেছেন।
রাজধানীর মিরপুর, মোহাম্মদপুর, কল্যাণপুর, ধানমন্ডি, রামপুরা, উত্তরা, শ্যামলী, মগবাজার, খিলগাঁওসহ বিভিন্ন এলাকার ২০ জন ভাড়াটের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নতুন বছরের শুরু থেকেই বাড়িভাড়া বাড়বে বলে বাড়িওয়ালারা জানিয়ে দিয়েছেন। শুধু ঢাকা নয়, অন্যান্য বিভাগীয় ও জেলা শহরগুলোতেও বাড়িভাড়া বাড়ানো হচ্ছে।গত ১৫ বছরে রাজধানীতে বাড়িভাড়া বেড়েছে ৬ গুণের বেশি। ভাড়াটেদের স্বার্থ রক্ষায় দেশে তিন দশক আগে বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন হয়। কিন্তু বাস্তবে তার প্রয়োগ নেই। এলাকাভিত্তিক বাড়িভাড়া নির্ধারণে একটি কমিশন গঠনে সাড়ে সাত বছর আগে উচ্চ আদালত রায় ঘোষণা করেন। রায়ের লিখিত কপি বের না হওয়ায় কমিশন গঠনের কাজও এগোয়নি।
রাজধানীর পশ্চিম ধানমন্ডি এলাকায় দুই কক্ষের একটি বাসায় ভাড়া থাকেন মাহমুদা হক। এত দিন ভাড়া ছিল ৯ হাজার টাকা। গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ বিল আলাদা। সার্ভিস চার্জ ছিল এক হাজার টাকা। বাড়িওয়ালা জানুয়ারি থেকে ভাড়া এক হাজার টাকা বাড়াবেন বলে জানিয়েছেন। বেসরকারি হাসপাতালের চাকুরে মাহমুদা প্রথম আলোকে বলেন, বাসা ভাড়া নেওয়ার সময় বাড়িওয়ালাকে ভাড়া বাড়ানোর বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল। তিনি বলেছিলেন, দুই বছরে বাড়বে না। এখন খরচ বেড়ে যাওয়ার যুক্তিতে বছর না ঘুরতেই ভাড়া বাড়াচ্ছেন। খরচ তো ভাড়াটেদেরও বেড়েছে, সেটা যেন দেখার কেউ নেই।
# ১৫ বছরে বাড়িভাড়া বেড়েছে ৬ গুণের বেশি# তিন দশক পুরোনো বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন কার্যকর নেই# সিটি করপোরেশনের গৃহকর তালিকার কয়েক গুণ বেশি ভাড়া আদায়# ঢাকার বাইরেও বাড়ছে ভাড়া
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, গত আগস্টে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৯ দশমিক ৫২ শতাংশ, যা গত ১১ বছর ৩ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। সেপ্টেম্বরে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ১০ শতাংশ।
গত আগস্টের প্রথম সপ্তাহে পেট্রল, অকটেন, ডিজেলসহ জ্বালানি তেলের দাম সাড়ে ৪২ থেকে ৫১ শতাংশ বাড়ানো হয়। এর আগে কখনোই জ্বালানি তেলের দাম এক লাফে এতটা বাড়ানো হয়নি। তাই আগস্টের শুরু থেকেই নিত্যপণ্যের দাম বাড়তে শুরু করে। এ ছাড়া যাতায়াত, পোশাক, শিক্ষাসামগ্রীর মতো খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের দামও বেড়েছে। এর মধ্যে বাড়িভাড়া বৃদ্ধির নোটিশে অসহায়ত্ব প্রকাশ করছেন অনেক ভাড়াটে।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণবিষয়ক সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) তথ্য অনুযায়ী, ২০০৭ সালে রাজধানীতে দুই কক্ষের একটি বাসার ভাড়া ছিল ৪ হাজার ৫৩৩ টাকা। ২০২১ সালে এই ভাড়া বেড়ে দাঁড়িয়েছে সাড়ে ২৮ হাজার টাকা। অর্থাৎ ১৫ বছরে ভাড়া বেড়েছে ৬ গুণের বেশি। শতাংশের হিসাবে এই সময়ে বাড়িভাড়া বেড়েছে ৬২৮ শতাংশ।
ভাড়াটেরা বলছেন, বাড়ির মালিকেরা ইচ্ছেমতোই বাড়িভাড়া বাড়ান। বৃদ্ধির পরিমাণ অনেক ক্ষেত্রে নির্ভর করে বাড়ির মালিকের সঙ্গে ভাড়াটের সম্পর্কের ওপরেও। বাড়িভাড়া বাড়লে এর সঙ্গে অন্যান্য খরচও বাড়ে। কিন্তু চাকরিজীবীদের আয় সেভাবে বাড়ে না। তারপর সন্তানদের পড়ালেখার খরচ ও বাজার খরচ তো আছেই।
রাজধানীর ওয়ারী এলাকায় ১ হাজার ৪৫০ বর্গফুটের বাসায় থাকেন সজল মিত্র। এত দিন ভাড়া ছিল ৩০ হাজার টাকা। জানুয়ারি থেকে ৩ হাজার টাকা বাড়তি দিতে হবে। সজল প্রথম আলোকে বলেন, কোন এলাকায় কত ভাড়া বাড়ানো যাবে, সেটার তো কোনো বিধি-নীতি নেই। এ কারণেই বাড়িওয়ালারা সুযোগ পান।
বাসাভাড়া বাড়ানোর বিষয়ে বাড়িওয়ালারা নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, গৃহঋণের সুদ, রক্ষণাবেক্ষণ খরচ বৃদ্ধিসহ নানা যুক্তি দেখান। মোহাম্মদপুর শেখেরটেক এলাকার বাড়িমালিক ইশতিয়াক আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, করোনার কারণে কয়েক মাস একাধিক ফ্ল্যাট ফাঁকা ছিল। তখন ভাড়া বাড়ানো হয়নি। এবার ভাড়াটেদের আলোচনা করে যতটা না বাড়ালেই নয়, ততটাই বাড়ানো হয়েছে। তিনি তাঁর বাড়ির ফ্ল্যাটভেদে ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা ভাড়া বাড়িয়েছেন বলে জানান।
সাভারের জাহাঙ্গীরনগর সোসাইটিতে ভাড়া থাকেন ফাতেমা বিনতে শরীফ। এখন ভাড়া দেন ১১ হাজার টাকা। ফাতেমা প্রথম আলোকে বলেন, ‘১১ মাস হলো এই বাসায় উঠেছি। বাড়িওয়ালা জানিয়েছেন, জানুয়ারি থেকে ১ হাজার টাকা বাড়তি দিতে হবে।’সিলেটের উপশহর এলাকার যতপুরে দুই কক্ষের একটি বাসায় থাকেন গাজী মাহবুব। বাসার ভাড়া ১০ হাজার ২০০ টাকা। তিনি বলেন, জানুয়ারি থেকে দেড় হাজার টাকা বাড়িভাড়া বাড়বে। বাড়িওয়ালা বলছেন, সবকিছুর দাম বেড়েছে তাই ভাড়া বাড়াচ্ছেন।নারায়ণগঞ্জ শহরে দুই কক্ষের বাসায় ভাড়া থাকেন মোয়াজ্জেম হোসেন। তিনি বলেন, এখন ভাড়া পাঁচ হাজার টাকা। আগামী মাস থেকে সাড়ে ছয় হাজার টাকা দিতে হবে। এমন বাড়তি ভাড়া কর্মজীবীদের জন্য অতিরিক্ত চাপ।
বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইনটি ১৯৯১ সালের। ভাড়াটেদের স্বার্থ রক্ষায় অনেক কথাই উল্লেখ আছে এই আইনে। কিন্তু বাস্তবে তার প্রয়োগ নেই। সরকার এখনো এই আইনের বিধি করেনি। বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন-১৯৯১-এ বলা আছে, কোনো বাড়ির ভাড়া মানসম্মত ভাড়ার অধিক বৃদ্ধি করা হলে ওই অধিক ভাড়া, কোনো চুক্তিতে ভিন্নরূপ কিছু থাকা সত্ত্বেও আদায়যোগ্য হবে না।
বাড়িভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন, ১৯৯১ কার্যকর করতে ২০১০ সালে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) নামের একটি সংগঠন জনস্বার্থে হাইকোর্টে রিট আবেদন করে। রিট আবেদনটির পরিপ্রেক্ষিতে রুল ও চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১ জুলাই আদালত রায় দেন।
ঘোষিত রায়ে বলা হয়, বিদ্যমান আইনটি কার্যকর না হওয়ায় ভাড়াটেদের সুরক্ষা দেওয়া যাচ্ছে না। আইনটি কার্যকরে রাষ্ট্রকে যথাযথ উদ্যোগ নিতে হবে, অন্যথায় সাধারণ মানুষ এ থেকে পরিত্রাণ পাবেন না। রায়ে সারা দেশে এলাকাভেদে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন বাড়িভাড়া নির্ধারণের জন্য সরকারকে একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন কমিশন গঠনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। রায় ঘোষণার ছয় মাসের মধ্যে কমিশন গঠন করতে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
রিট আবেদনকারী আইনজীবী মনজিল মোরসেদ প্রথম আলোকে বলেন, রায় দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু রায় লেখার আগেই রায় প্রদানকারী বিচারপতি মারা যান। ফলে নতুন করে শুনানির সিদ্ধান্ত হয়। আগের রিটের সঙ্গে আইনের বিষয়ে সম্পূরক রুল চাওয়া হয়েছে। বিষয়টি এখনো শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।
এলাকাভিত্তিক গৃহকর আদায়ের জন্য ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ১০টি অঞ্চলের সম্ভাব্য বাড়িভাড়া নির্ধারণ করেছে। মূল সড়কের পাশে, সড়কের ৩০০ ফুটের মধ্যে এবং সড়কের ৩০০ ফুটের বাইরে এই তিন শ্রেণিতে ভবনের বাড়িভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু সিটি করপোরেশন যে হারে গৃহকর আদায় করে, বাড়ির মালিকেরা তার কয়েক গুণ বেশি বাড়িভাড়া নিচ্ছেন।
সিটি করপোরেশনের তালিকা অনুযায়ী, মিরপুর ২ নম্বর এলাকায় মূল সড়কের পাশে বাড়ির ভাড়া বর্গফুটপ্রতি সর্বোচ্চ সাড়ে ছয় টাকা। সে হিসাবে এক হাজার বর্গফুটের একটি বাড়ির ভাড়া হওয়ার কথা সাড়ে ছয় হাজার টাকা। মিরপুর এলাকায় মূল সড়কের পাশে এই আয়তনের একটি বাসার ভাড়া ১৮ থেকে ২২ হাজার টাকা।
সিটি করপোরেশনের তালিকা অনুযায়ী, উত্তরা এলাকায় মূল সড়কের পাশের ভবনে প্রতি বর্গফুটের সর্বোচ্চ ভাড়া ৯ টাকা এবং সড়কের ৩০০ ফুটের ভেতরে পর্যন্ত সর্বনিম্ন ভাড়া সাড়ে ৬ টাকা। গৃহকরের তালিকা অনুযায়ী, ফার্মগেটসংলগ্ন মনিপুরি পাড়ায় সড়কের পাশে প্রতি বর্গফুটের সর্বোচ্চ ভাড়া সাড়ে সাত টাকা আর সর্বনিম্ন ভাড়া ছয় টাকা। বাস্তবে এই হারে উত্তরা ও মনিপুরি এলাকায় বাসা ভাড়া পাওয়া অসম্ভব।ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনেরও গৃহকরের এলাকাভিত্তিক বাড়িভাড়ার চার্ট রয়েছে।
সেখানেও বাড়িভাড়া গৃহকরের তালিকার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি। বাড়িভাড়া বিষয়টির ওপর সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই বলে মনে করেন নগর গবেষণা ও নীতি বিশ্লেষণী প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, আবাসন মৌলিক অধিকার। বিপুলসংখ্যক ভাড়াটের চাহিদার বিষয়টি সরকার উপেক্ষা করেছে। বাড়িওয়ালারা একচেটিয়াভাবে ভাড়া বাড়িয়েছেন। একটি কমিশন বা বোর্ড করে বাড়িভাড়ার কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। | দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, পরিবহন খরচ বৃদ্ধি, গ্যাস-পানির দাম বাড়ায় জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এর মধ্যেই অধিকাংশ এলাকায় বাড়িভাড়া বাড়ার নোটিশ পাচ্ছেন ভাড়াটেরা। বছরের শুরুতেই গুনতে হবে ৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত বাড়তি বাড়িভাড়া। এই বাড়তি ব্যয় নিয়ে রীতিমতো আতঙ্কে আছেন অনেক ভাড়াটে। |
বিশ্বকাপের উন্মাদনা নেই কয়রার নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে | খুলনার সর্বদক্ষিণের কয়রা উপজেলার গোবরা গ্রাম। গ্রামের পাশ দিয়ে এঁকেবেঁকে বয়ে গেছে কপোতাক্ষ নদ। কপোতাক্ষের বেড়িবাঁধ ধরে সামনে এগোতেই দেখা হয় লেয়াকত ঢালীর সঙ্গে। বাঁধের পাশেই তাঁর বাস। বিশ্বকাপে কোন দল পছন্দ?—এমন প্রশ্ন শুনে স্থানীয় ভাষায় তিনি বলছিলেন, ‘বিশ্বকাপ দিয়ে কি পেট ভরবে? একদিন গাঙে মাছ না ধরলি প্যাটে ভাত যায় না। তাই বিশ্বকাপ খেলা নিয়ে মাতামাতি করার সময় নেই আমার।’
লেয়াকত ঢালীর এমন জবাবে সহজেই বোঝা যায়, দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মতো সুন্দরবনসংলগ্ন উপকূলীয় উপজেলা কয়রার জনপদে নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে আনন্দের আতিশয্য নিয়ে আসতে পারেনি কাতার বিশ্বকাপ।
বেড়িবাঁধের ওপর দিয়ে হেঁটে যেতে যেতে এ নিয়ে কথা হয় উপকূলীয় কয়রার কয়েকজনের সঙ্গে। তাঁদের একজন খুটিঘাটা গ্রামের শ্রমিক মো. আবদুল্লাহ বলেন, ‘বিশ্বকাপ নিয়ে মাতামাতি শহরের দিকে আছে। আমাদের গ্রামগুলোতে নেই। সারা দিন পরিশ্রম করে মজুরি নিয়ে বাড়ি ফিরতে রাত হয়ে যায়। এরপর খাওয়াদাওয়া শেষ করে ঘুমানোর সময় চিন্তা করতে হয় পরের দিনের খাবারের জন্য। সে জায়গায় বিশ্বকাপ নিয়ে ভাববার সময় কই?’
কাতার বিশ্বকাপ নিয়ে যখন সর্বত্র আলোচনা, তখন উপকূলের দিন এনে দিন খাওয়া মানুষদের ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে দুই বেলা খাবার জোগাড়ে। কাকডাকা ভোর থেকে সন্ধ্যা নামা পর্যন্ত, প্রায় বিরামহীন খেটে যান তাঁরা। বিশ্বকাপ তাই তাদের কাছে গুরুত্বহীন।
উত্তর বেদকাশী এলাকার ভ্যানচালক আক্তারুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্বকাপ খেলার কথা শুনে ছেলে জার্সি কিনতে চাইছিল। একটা জার্সির দাম দুই থেকে আড়াই শ টাকা। সারা দিনে আয় হয় ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। তরকারি তো দূরের কথা, এক বেলার জন্য যে দেড়-দুই কেজি চাল প্রয়োজন, সেটাও ঘরে নেই। দিনের রোজগার দিনেই শেষ হয়ে যায়। জার্সি কেনার সামর্থ্য কই আমার?’
কপোতাক্ষের বুকে খেয়া পারাপারের মাঝি জালাল উদ্দীন যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করছিলেন। কপোতাক্ষের এক পাড়ে কয়রা সদর ইউনিয়ন, অন্য পাড়ে শ্যামনগরের পদ্মপুকুর ইউনিয়ন। এক-দুইজন যাত্রী হলেই ছোট্ট নৌকাটি এক পাড় থেকে অন্য পাড়ে নিয়ে যান জালাল। দিনভর নৌকা চালিয়ে ২০০ কিংবা ২৫০ টাকা মেলে। এ দিয়েই কোনোমতে চালিয়ে নিতে হয় সংসার। জালাল বলেন, নিম্ন আয়ের মানুষের দিন কাটছে কষ্টে। রাত জেগে বিশ্বকাপ খেলা দেখার সময় নেই তাদের।
উপকূলের মানুষের অবস্থা নিয়ে জানতে চাইলে কয়রা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘নদীভাঙনকবলিত কয়রায় বিশ্বকাপ নিয়ে উল্লাস করার তেমন সময় পায় না এখানকার মানুষ। তারপরও খেটে খাওয়া এসব মানুষের একটু বিনোদনের জন্য বেশ কিছু মফস্বল এলাকায় প্রজেক্টরের ব্যবস্থা রয়েছে খেলা দেখার জন্য।’ | খুলনার সর্বদক্ষিণের কয়রা উপজেলার গোবরা গ্রাম। গ্রামের পাশ দিয়ে এঁকেবেঁকে বয়ে গেছে কপোতাক্ষ নদ। কপোতাক্ষের বেড়িবাঁধ ধরে সামনে এগোতেই দেখা হয় লেয়াকত ঢালীর সঙ্গে। বাঁধের পাশেই তাঁর বাস। বিশ্বকাপে কোন দল পছন্দ?—এমন প্রশ্ন শুনে স্থানীয় ভাষায় তিনি বলছিলেন, ‘বিশ্বকাপ দিয়ে কি পেট ভরবে? একদিন গাঙে মাছ না ধরলি প্যাটে ভাত যায় না। তাই বিশ্বকাপ খেলা নিয়ে মাতামাতি করার সময় নেই আমার।’ |
‘তল্লাশির সময় পুলিশকে মোবাইল দেখাইতে হইছে, এটা কেমন আচরণ?’ | ঘড়ির কাঁটায় সময় শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টা। রাজধানী উত্তরার কামারপাড়া মোড়ে পুলিশের তল্লাশিচৌকি। সড়কের মধ্যে এবং পাশে দাঁড়িয়ে আছেন ২৫ থেকে ৩০ জন পুলিশ সদস্য। সবাই অস্ত্রসজ্জিত। যাত্রীবাহী বাস বা মোটরসাইকেল আসতে দেখলেই দূর থেকে ‘লেজার রশ্মি’ফেলে গতি রোধ করছেন তাঁরা। এরপর গাড়ি থামাতেই চারদিক ঘিরে ধরে শুরু করছেন তল্লাশি।
এর মধ্যেই ফাতেমা পরিবহন নামের একটি বাস এসে থামল তল্লাশিচৌকির সামনে। গাইবান্ধা থেকে ছেড়ে আসা বাসটি যাবে ঢাকার মহাখালীতে। পুরো বাসে ৩০ থেকে ৪০ জন যাত্রী। কেউ ঘুমাচ্ছেন, কেউবা হেডফোন কানে লাগিয়ে গান শুনছেন, কথা বলছেন। এর মধ্যে বাসে উঠে পড়েন ৩ থেকে ৪ জন পুলিশ। ‘নাম কী, যাবেন কোথায়, ব্যাগে কী, পরিচয়পত্র আছে কি না’ ইত্যাদি নানা প্রশ্নে জেরা করতে থাকেন তাঁরা। একপর্যায়ে শুরু করেন মুঠোফোন তল্লাশি। ঢাকার প্রবেশমুখে পুলিশের এমন আচরণে হতবাক সবাই। বিরক্তি বা হতাশা থাকলেও তল্লাশির সময়টুকু বসে রইলেন চুপ করে।
তল্লাশি শেষে পুলিশ বাস থেকে নেমে যাওয়ার পর মো. সেলিম নামের এক যাত্রী বলছিলেন, ‘আমাদের কোনো ব্যক্তিস্বাধীনতা নাই। সাধারণ মোবাইল ফোনটা পর্যন্ত পুলিশের হাত থেকে নিরাপদ না। গাইবান্ধা থেকে আসতে পথে আরও দুইবার তল্লাশি হইছে। প্রতিবারই তাদের (পুলিশ) মোবাইল দেখাইতে হইছে। এটা পুলিশের কেমন আচরণ?’ সেলিমের ভাষ্য, ‘মুঠোফোন মানুষের একান্তই ব্যক্তিগত জিনিস। রাজনীতির বাইরেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা, ছবি বা গোপনীয় জিনিস থাকতে পারে। কিন্তু তল্লাশির নামে পুলিশের মোবাইল দেখাটা খুবই বিব্রতকর এবং একই সঙ্গে অপমানজনক।’
কামারপাড়া মোড়টি রাজধানী ঢাকার আরেকটি প্রবেশদ্বার। গাজীপুরের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের একটি শাখা সড়ক এসে যুক্ত হয়েছে এখানে। যে কেউ চাইলে এই সড়ক হয়ে গাজীপুর থেকে ঢাকায় বা ঢাকা থেকে গাজীপুরে যাতায়াত করতে পারবেন। একইভাবে আরেকটি সড়ক গেছে সাভারের আশুলিয়ার দিকে। এই সড়ক ধরেও মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জসহ রাজশাহী বিভাগের মানুষেরা ঢাকায় প্রবেশ করেন।
এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
সমাবেশে বক্তব্য দিচ্ছেন নেতারা ফখরুল-আব্বাসসহ গ্রেপ্তার নেতা কর্মীদের মুক্তি দাবি
বিএনপির গণসমাবেশ শুরু, মাঠ পেরিয়ে সড়কেও নেতা-কর্মীরা
বিএনপির সমাবেশে ঢুকতে বাধা দিচ্ছে না পুলিশ
মোড়টিতে প্রায় আধঘণ্টা অবস্থান করে পুলিশের এমন তল্লাশি কার্যক্রম দেখা যায়। দুই দিক থেকে কোনো মোটরসাইকেল বা যাত্রীবাহী বাস আসতে দেখলেই তারা গতি রোধ করে তল্লাশি করছিলেন। এর মধ্যে কোনো পথচারীর হাতে বড় ব্যাগ দেখলে তাঁকেও তল্লাশি করা হচ্ছিল। যাত্রী-পথচারী সবার ব্যাগই খুলে খুলে তল্লাশি করতে দেখা যায় পুলিশকে।
তল্লাশিচৌকির দায়িত্বে ছিলেন উত্তরা পশ্চিম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইয়াসিন গাজী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘কেউ যেন নাশকতার উদ্দেশ্যে কোনো কিছু বহন করতে না পারে সেই উদ্দেশ্যেই চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। আমরা সবাইকেই তল্লাশি করছি।’ যাত্রীদের হয়রানির অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এখানে হয়রানির কিছু নেই। জনগণের নিরাপত্তার জন্যই এ কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।’ | ঘড়ির কাঁটায় সময় শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টা। রাজধানী উত্তরার কামারপাড়া মোড়ে পুলিশের তল্লাশিচৌকি। সড়কের মধ্যে এবং পাশে দাঁড়িয়ে আছেন ২৫ থেকে ৩০ জন পুলিশ সদস্য। সবাই অস্ত্রসজ্জিত। যাত্রীবাহী বাস বা মোটরসাইকেল আসতে দেখলেই দূর থেকে ‘লেজার রশ্মি’ফেলে গতি রোধ করছেন তাঁরা। এরপর গাড়ি থামাতেই চারদিক ঘিরে ধরে শুরু করছেন তল্লাশি। |
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ফটকে ছাত্রলীগের অবস্থান | বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ সামনে রেখে আজ শনিবার সকাল থেকে ক্যাম্পাসে আছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। গতকাল শুক্রবারও সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রধান ফটকের সামনে ছাত্রলীগ কর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। এরপর জুমার নামাজের পর ক্যাম্পাসে ও পুরান ঢাকার সদরঘাট এলাকায় শোডাউন করেন নেতা–কর্মীরা।
আজ ক্যাম্পাসের ফটকগুলোর সামনে ছাত্রলীগ নেতা–কর্মীদের দেখা যায়। একই অবস্থানে রয়েছে কবি নজরুল সরকারি কলেজ ও শহীদ সোহরাওয়ার্দী সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা।
নেতা–কর্মীরা জানান, বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও পুরান ঢাকার সদরঘাট এলাকার আশপাশ বিএনপি কিংবা ছাত্রদলের তৎপরতা রুখতেই ছাত্রলীগ এই সতর্ক অবস্থান নিয়েছে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইন বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বের পথ মসৃণ রাখতে ছাত্রলীগ রাজপথে থাকবে। বিজয়ের মাসে ১০ ডিসেম্বরকে কেন্দ্র করে বিএনপি, জামায়াত, ছাত্রদলসহ মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তিরা বিশ্ববিদ্যালয় এবং পুরান ঢাকায় কোনো প্রকার অস্থিতিশীল পরিবেশ, সহিংসতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টি যাতে করতে না পারে, সে জন্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সতর্ক অবস্থানে আছে।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজি বলেন, গত রোববার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এবং পুরান ঢাকাকে অস্থিতিশীল করার জন্য বিএনপি নেতা ইশরাকের নেতৃত্বে বিএনপি ও ছাত্রদলের সন্ত্রাসীরা অপচেষ্টা করলে, তা রুখে দিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। বিজয়ের মাসে বিএনপি, জামায়াত, ছাত্রদলসহ সব প্রকার অপশক্তি রুখতে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত আছেন নেতা–কর্মীরা। | বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ সামনে রেখে আজ শনিবার সকাল থেকে ক্যাম্পাসে আছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ। গতকাল শুক্রবারও সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রধান ফটকের সামনে ছাত্রলীগ কর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। এরপর জুমার নামাজের পর ক্যাম্পাসে ও পুরান ঢাকার সদরঘাট এলাকায় শোডাউন করেন নেতা–কর্মীরা। |
বিএনপির গণসমাবেশ শুরু, মাঠ পেরিয়ে সড়কেও নেতা-কর্মীরা | বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ হচ্ছে রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে। মাঠটি কানায় কানায় পূর্ণ হয়েছে। এখনো খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে প্রবেশ করতে দেখা যাচ্ছে দলটির নেতা-কর্মীদের। মাঠের আশপাশের এলাকায়ও নেতা–কর্মীদের ভিড় আছে। মাঠে জায়গা না হওয়ায় অনেক নেতা–কর্মীই রাস্তায় অবস্থান নিয়েছেন। নেতা–কর্মীরা মাঠে উপস্থিত হয়ে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিচ্ছেন।
আজ শনিবার সকাল পৌনে আটটার পর থেকে গোলাপবাগ মাঠজুড়ে নেতা-কর্মীদের ছড়িয়ে–ছিটিয়ে থাকতে দেখা গেছে। বেলা ১১টায় সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও নেতা-কর্মীরা আগেই মাঠে আসেন। সকাল থেকে বিএনপির জেলা, মহানগর ও কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা সভার মঞ্চে উপস্থিত হন। সমাবেশকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে গোলাপবাগ-ধলপুর-সায়েদাবাদ সড়ক বন্ধ হয়ে গেছে।
ইতিমধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবেদীন ফারুক, রাজশাহীর সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু, নেতা আবদুল্লাহ আল নোমান, হাবীব উন নবী খান সোহেল, মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ বিএনপির অনেক নেতা সমাবেশের মঞ্চে উপস্থিত হয়েছেন।
এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
সমাবেশে বক্তব্য দিচ্ছেন নেতারা ফখরুল-আব্বাসসহ গ্রেপ্তার নেতা কর্মীদের মুক্তি দাবি
বিএনপির গণসমাবেশ শুরু, মাঠ পেরিয়ে সড়কেও নেতা-কর্মীরা
বিএনপির সমাবেশে ঢুকতে বাধা দিচ্ছে না পুলিশ
আজকের সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। আজ সমাবেশ থেকে পরবর্তী কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হতে পারে। দলটির নেতারা গতকাল শুক্রবার এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন।
রাজধানীর পল্টনসহ পৃথক চারটি থানার মামলায় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ প্রায় পাঁচ শ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন। স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশ ও বিএনপির সংঘর্ষে দলটির কর্মী মকবুল হোসেন নিহত হয়েছেন।
কয়েক দিন ধরে নানা ঘটনার পর গতকাল ঢাকায় সমাবেশের জায়গা পায় বিএনপি। এর আগে অন্তত ১২টি মাঠ নিয়ে প্রস্তাব, পাল্টা প্রস্তাব দিয়েছিল পুলিশ ও বিএনপি।
আগের দিন এসে গোলাপবাগ মাঠের অনুমতি পায় আর সেখানেই আজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে দলটির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ।
নিত্যপণ্য ও জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, পুলিশের গুলিতে নেতা-কর্মী নিহত এবং চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে দেশের সব বিভাগে বিএনপির গণসমাবেশের অংশ হিসেবে আজ ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ করছে বিএনপি। | বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ হচ্ছে রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে। মাঠটি কানায় কানায় পূর্ণ হয়েছে। এখনো খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে প্রবেশ করতে দেখা যাচ্ছে দলটির নেতা-কর্মীদের। মাঠের আশপাশের এলাকায়ও নেতা–কর্মীদের ভিড় আছে। মাঠে জায়গা না হওয়ায় অনেক নেতা–কর্মীই রাস্তায় অবস্থান নিয়েছেন। নেতা–কর্মীরা মাঠে উপস্থিত হয়ে বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিচ্ছেন। |
ফখরুল-আব্বাসসহ গ্রেপ্তার নেতা কর্মীদের মুক্তি দাবি | ঢাকার সায়েদাবাদের গোলাপবাগ মাঠে শুরু হয়েছে বিএনপির গণসমাবেশ। বক্তব্য দিচ্ছেন নেতারা। তাঁরা দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ গ্রেপ্তার সব নেতা-কর্মীর মুক্তি চেয়েছেন।
আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে সমাবেশ শুরু হয়। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে বিএনপির গণসমাবেশে এসেছেন নেতা-কর্মীরা।
সমাবেশে বক্তব্য দিয়েছেন, সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন। বক্তব্য দিয়েছেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল। তাঁরা ফখরুল ও আব্বাসসহ দলের গ্রেপ্তার নেতা-কর্মীদের মুক্তি দাবি করেন। তাঁরা বলেছেন, নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সমাবেশে যাঁরা এসেছেন তাঁদেরও নানাভাবে হয়রানি করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। দলের অধিকার ক্ষুণ্ন করা হচ্ছে বলেন তাঁরা। এসব হয়রানির অবসান চান বিএনপির নেতারা।
বেলা ১১টায় সমাবেশ শুরু হওয়ার পর গণসমাবেশস্থল পেরিয়ে রাস্তাতেও মানুষ অবস্থান নিয়েছে।
গোলাপবাগ মাঠের চারপাশের সড়কগুলোয় বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা অবস্থান করছেন। সায়েদাবাদের জনপদ মোড় ও যাত্রাবাড়ী মোড়ে বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন। | ঢাকার সায়েদাবাদের গোলাপবাগ মাঠে শুরু হয়েছে বিএনপির গণসমাবেশ। বক্তব্য দিচ্ছেন নেতারা। তাঁরা দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ গ্রেপ্তার সব নেতা-কর্মীর মুক্তি চেয়েছেন। |
উখিয়ায় আশ্রয়শিবিরে পুলিশের সঙ্গে গোলাগুলিতে দুই রোহিঙ্গা নিহত | কক্সবাজারের উখিয়ায় আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদস্যদের সঙ্গে গোলাগুলির ঘটনায় দুই রোহিঙ্গা ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার রাত পৌনে ১০টার দিকে উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের বালুখালী আশ্রয়শিবিরের (ক্যাম্প-৮ পশ্চিম) বি-৬২ ব্লক ও বি-৪৯ ব্লকের মাঝামাঝি এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। এ সময় আশ্রয়শিবিরের এক নারী ও এক পুরুষ গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
পুলিশের দাবি, নিহত দুই ব্যক্তি রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী। এর মধ্যে একজনের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। নিহত একজনের নাম সলিম উল্লাহ (৩৩)। তিনি ওই আশ্রয়শিবিরের বি-২৮ ব্লকের মোহাম্মদ নুর ওরফে ইউনুছের ছেলে। তবে নিহত আরেক ব্যক্তির পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। গোলাগুলির ঘটনায় সেতারা বেগম নামে একজন রোহিঙ্গা নারী গুলিবিদ্ধি হয়েছেন। তাঁকে উখিয়ার কুতুপালং এমএসএফ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়ে। তিনি ক্যাম্প-৮–এর এ ব্লকের ৪৯ নং শেডের বাসিন্দা। গোলাগুলিতে আরও একজন রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তবে তাঁকে আটক করা সম্ভব হয়নি। ঘটনার পর তিনি গা ঢাকা দিয়েছেন।
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী এসব তথ্য প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। তবে এ ঘটনার বিষয়ে আশ্রয়শিবিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ৮ এপিবিএনের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল রাতে ৪০ থেকে ৫০ জনের রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের একটি দল আশ্রয়শিবিরের ব্যবস্থাপনা কমিটির মাঝি (রোহিঙ্গা নেতা) মোহাম্মদ রফিককে হত্যার উদ্দেশ্যে অস্ত্র নিয়ে মহড়া শুরু করে। পরে আশ্রয়শিবিরের বাসিন্দাদের মাধ্যমে খবর পেয়ে এপিবিএন সদস্যরা ঘটনাস্থলে যায়।
উখিয়া থানার ওসি মোহাম্মদ আলী বলেন, ঘটনাস্থলে এপিবিএন সদস্যরা অভিযান শুরু করলে সন্ত্রাসীরা ‘পুলিশ, পুলিশ’ বলে চিৎকার করে। একপর্যায়ে সন্ত্রাসীরা এপিবিএন সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে। আত্মরক্ষার্থে এপিবিএন সদস্যরাও পাল্টা গুলি ছোড়ে। এ সময় দুই পক্ষের গোলাগুলিতে দুই রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী ঘটনাস্থলে মারা যান। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে একজনের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আরেক ব্যক্তিও রোহিঙ্গা নাগরিক, এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া গেছে। পরে ঘটনাস্থল তল্লাশি চালিয়ে পাওয়া যায় দেশীয় তৈরি একটি বন্দুক, একটি ম্যাগাজিন ও ৭০টি গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, সন্ত্রাসীদের ধরতে আশ্রয়শিবিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান চলছে। এদিকে নিহত দুই রোহিঙ্গার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য আজ শনিবার সকালে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে গত ২৯ নভেম্বর ভোর সাড়ে ৪টার দিকে একই আশ্রয়শিবিরের (ক্যাম্প-১২) এইচ ব্লকে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা গুলি ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রোহিঙ্গা মাঝি শাহাব উদ্দিন নিহত হন। শাহাব উদ্দিন আশ্রয়শিবিরের এইচ ব্লকের ১৪ নং শেডের বাসিন্দা মনির আহমদের ছেলে। | কক্সবাজারের উখিয়ায় আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদস্যদের সঙ্গে গোলাগুলির ঘটনায় দুই রোহিঙ্গা ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার রাত পৌনে ১০টার দিকে উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের বালুখালী আশ্রয়শিবিরের (ক্যাম্প-৮ পশ্চিম) বি-৬২ ব্লক ও বি-৪৯ ব্লকের মাঝামাঝি এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। এ সময় আশ্রয়শিবিরের এক নারী ও এক পুরুষ গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। |
বিএনপির সমাবেশে ঢুকতে বাধা দিচ্ছে না পুলিশ | ঢাকার সায়েদাবাদের গোলাপবাগ মাঠে বিভিন্ন এলাকা থেকে বিএনপির গণসমাবেশে আসছেন নেতা-কর্মীরা। সমাবেশস্থল ঘিরে সাঁজোয়া যান, জলকামানসহ বহু পুলিশ সদস্য অবস্থান নিয়েছেন। তবে সমাবেশে প্রবেশ করতে নেতা-কর্মীদের বাধা দিচ্ছেন না পুলিশ সদস্যরা।
সমাবেশস্থলের আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সমাবেশস্থলের চারপাশে প্রচুর পুলিশ সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন। কমলাপুর, যাত্রাবাড়ী এলাকায় সড়কের একপাশ ব্যারিকেড দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। সাঁজোয়া যান, জলকামান নিয়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন পুলিশ সদস্যরা। তবে সমাবেশস্থলে ঢুকতে কাউকে বাধা দেওয়া হচ্ছে না।
এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
‘তল্লাশির সময় পুলিশকে মোবাইল দেখাইতে হইছে, এটা কেমন আচরণ?’
সমাবেশে বক্তব্য দিচ্ছেন নেতারা ফখরুল-আব্বাসসহ গ্রেপ্তার নেতা কর্মীদের মুক্তি দাবি
বিএনপির গণসমাবেশ শুরু, মাঠ পেরিয়ে সড়কেও নেতা-কর্মীরা
রাজধানীর সড়কে বাস উধাও
জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক কাদের সিদ্দিকী প্রথম আলোকে বলেন, ‘সমাবেশে প্রবেশ করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে না। তবে ঢাকার বাইরে থেকে যাঁরা এসেছেন, তাঁদের আসার পথে হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। হোটেল না পাওয়ায় অনেকেই পথে পথে ছিলেন।’
ঢাকা মহানগর পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে প্রায় ৩৪ হাজার পুলিশ সদস্য মাঠে রয়েছেন। এর পাশাপাশি র্যাব, আনসার, এপিবিএন সদস্যরাও রয়েছেন।
বিএনপির সমাবেশস্থলের আকাশে র্যাবের একটি হেলিকপ্টারকে টহল দিতে দেখা যাচ্ছে। র্যাবের গণমাধ্যম শাখার সহকারী পরিচালক আ ন ম ইমরান খান হেলিকপ্টার টহলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। | ঢাকার সায়েদাবাদের গোলাপবাগ মাঠে বিভিন্ন এলাকা থেকে বিএনপির গণসমাবেশে আসছেন নেতা-কর্মীরা। সমাবেশস্থল ঘিরে সাঁজোয়া যান, জলকামানসহ বহু পুলিশ সদস্য অবস্থান নিয়েছেন। তবে সমাবেশে প্রবেশ করতে নেতা-কর্মীদের বাধা দিচ্ছেন না পুলিশ সদস্যরা। |
রাজধানীর সড়কে বাস উধাও | ঢাকার পরিবহনমালিকদের সংগঠন জানিয়েছিল, ১০ ডিসেম্বর বিএনপির সমাবেশের দিন বাস চলবে। তবে বাস্তব পরিস্থিতি ভিন্ন। আজ শনিবার সকাল থেকে রাজধানীর সড়কে বাস চলছে না বললেই চলে। কিছু রিকশা এবং সিএনজিচালিত অটোরিকশার দেখা মিলছে সড়কে।
মোহাম্মদপুরের বছিলা তিন রাস্তার মোড়। ব্যস্ত এই সড়কে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গিয়ে দেখা যায়, স্বাধীন পরিবহনের একটি বাস যাত্রী তুলছে। আর কোনো বাস নেই। সকাল ১০টার দিকে বছিলা থেকে টাউনহল পর্যন্ত রাস্তায় একটি বাসও চলতে দেখা যায়নি৷ এ সময় ওই সড়কে লেগুনা চলতে দেখা গেছে।
সাধারণত মোহাম্মদপুরের জাপান গার্ডেন সিটির সামনে বিভিন্ন পরিবহনের ৮ থেকে ১০টি বাস দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। যাত্রীর জন্য ডাকাডাকিও চলে। বাস দাঁড়িয়ে থাকায় রাস্তায় যানজট লাগে। কিন্তু আজ পরিস্থিতি ভিন্ন। বাস নেই, শুধু আবদুল্লাহপুরগামী ভূঁইয়া পরিবহনের চারটি বাস দাঁড়িয়ে আছে। তবে একটির ভেতরও চালক কিংবা কোনো সহকারী নেই। বাস ছাড়ার কোনো প্রস্তুতিও নিতে দেখা যায়নি। একটি বাসের ভেতর কিছু পরিবহনকর্মীকে বসে খোশগল্প করতে দেখা গেল।
ভূঁইয়া পরিবহনের মোহাম্মদ সোহেল নামের এক বাসচালক জানান, সকালে কিছু বাস ছেড়েছিল। কিন্তু বাস থেকে রাস্তায় যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। চালক ও হেলপারকে মারধর করা হচ্ছে। মহাখালী এলাকায় এ ধরনের কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। তাই বাস ছাড়া বন্ধ রয়েছে।
এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
সমাবেশে বক্তব্য দিচ্ছেন নেতারা ফখরুল-আব্বাসসহ গ্রেপ্তার নেতা কর্মীদের মুক্তি দাবি
বিএনপির গণসমাবেশ শুরু, মাঠ পেরিয়ে সড়কেও নেতা-কর্মীরা
বিএনপির সমাবেশে ঢুকতে বাধা দিচ্ছে না পুলিশ
সেখানে বেশ কিছু যাত্রীকে ফিরে যেতে দেখা গেছে। এদের একজন কলেজশিক্ষার্থী উম্মে হাবিবা। মিরপুরে একটি কোচিং সেন্টারে পড়েন তিনি। কোচিংয়ে যেতে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন। উম্মে হাবিবা বলেন, সকালে আমার এক আত্মীয় বাসা থেকে বের হয়ে দেখেছেন যে বাস চলে। কিন্তু এখন এসে দেখি, কোনো গাড়ি চলছে না। বাসচালকেরা বলছেন, রাস্তায় ঝামেলা হচ্ছে। বাস ছাড়া যাবে না।
মোহাম্মদপুর শিয়া মসজিদ বাসস্ট্যান্ড থেকে শ্যামলী সিনেমা হল বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত রিং রোড সড়কে একটি বাসও চলতে দেখা যায়নি। শুধু রিকশা আর সিএনজি ছিল। কোনো কোনো জায়গায় ভাড়ায় মোটরসাইকেলচালকেরা দাঁড়িয়ে ছিলেন। একইভাবে শ্যামলী, কল্যাণপুর, দারুস সালাম, টেকনিক্যাল মোড় ও গাবতলী রোড এলাকায়ও বাস চলতে দেখা যায়নি। দারুস সালাম এলাকা থেকে দূরপাল্লার বাস দেশ ট্রাভেলসকে যাত্রীদের নিয়ে সায়দাবাদের দিকে যেতে দেখা গেছে।
দারুস সালাম এলাকায় বাসের অপেক্ষায় ঘণ্টাখানেক দাঁড়িয়ে ছিলেন সুমন কবির। তিনি কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে যেতে বাসের অপেক্ষা করছিলেন। তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে আমার এক আত্মীয় ভর্তি আছেন। তাঁর ডেঙ্গু হয়েছে। তাঁকে দেখতে যাচ্ছি।’ কিন্তু কোনো বাস না পেয়ে তিনি পরে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় যান। দারুস সালাম থেকে কুর্মিটোলা পর্যন্ত ভাড়া চাওয়া হয় ৪০০ টাকা। পড়ে ৩৫০ টাকায় রওনা হন তিনি।
গাবতলী গিয়েও সাভারের দিক থেকে কোনো বাস ঢাকার দিকে ঢুকতে দেখা যায়নি। দূরপাল্লার বাসও কম আসছিল। গাবতলীতে ট্রাফিক পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, সকাল থেকেই বাস চলাচলের সংখ্যা অনেক কম ছিল। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা আরও কমতে থাকে। সকাল ১০টার পর অনেকটা বন্ধ হয়ে গেছে। যাত্রী না থাকাতেই বাসমালিকেরা বাসা চালাচ্ছেন না বলে জানান তিনি।
মিরপুর ১২ নম্বর থেকেও বাস চলতে দেখা যায়নি। মিরপুর ১১ নম্বরের বিভিন্ন সড়কে বাস পার্কিং করে রাখতে দেখা যায়। যদিও গত ৮ ডিসেম্বর ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছিল, আজ শনিবার বাস চলবে। এর আগে ঢাকার বাইরে বিএনপির ৯টি বিভাগীয় সমাবেশ হয়। এর মধ্যে কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম বাদ দিয়ে সবখানে স্থানীয় গণপরিবহনের মালিকেরা যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেন।
গত বৃহস্পতিবার রাজধানীতে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির এক সভায় সিদ্ধান্ত হয়, আজ (১০ ডিসেম্বর) ঢাকা শহর, শহরতলি ও আন্তজেলা রুটে বাস চলাচল স্বাভাবিক থাকবে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্যাহ। বাস চলার ঘোষণা দেওয়ার পরও তা না চলার কারণ কী—জবাবে খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, ‘আজ যাত্রী প্রায় নেই বললেই চলে। রাস্তায় তো মানুষই নেই। সে জন্য মালিকেরা বাস বের করছেন না। আর সঙ্গে ভয় তো আছেই। তবে দূরপাল্লার বাস চলবে। শহরের বাসও চলবে, দুপুরের পর।’ | ঢাকার পরিবহনমালিকদের সংগঠন জানিয়েছিল, ১০ ডিসেম্বর বিএনপির সমাবেশের দিন বাস চলবে। তবে বাস্তব পরিস্থিতি ভিন্ন। আজ শনিবার সকাল থেকে রাজধানীর সড়কে বাস চলছে না বললেই চলে। কিছু রিকশা এবং সিএনজিচালিত অটোরিকশার দেখা মিলছে সড়কে। |
ভালো ফলনে চাষি খুশি | নেত্রকোনায় এবার শর্ষের ফলন ভালো হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষকেরা বেশি করে শর্ষে চাষ করছে। শর্ষে গাছে রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণও কম হচ্ছে। কৃষকেরা আশায় আছেন এবার চাহিদা থাকায় বাজারে দাম ভালো পাওয়া যাবে।
নেত্রকোনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলার ১০টি উপেজেলায় ৫ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে শর্ষে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।
উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ হাজার ৪১০ মেট্রিক টন। এর বিপরীতে এ পর্যন্ত চাষ হয়েছে ৭ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আবাদ বেশি হওয়ায় উৎপাদন হবে ৯ হাজার ৬৮৫ মেট্রিক টন। গত বছর রবি মৌসুমে জেলায় শর্ষের আবাদ হয়েছিল ৫ হাজার ৬৩০ হেক্টর জমিতে। এর আগের বছর শর্ষের আবাদ হয়েছিল ৫ হাজার ১১৫ হেক্টর জমিতে। জেলায় প্রায় ৮০ শতাংশ জমিতে বারি সরিষা-১৪ ও বিনা-৯ জাতের শর্ষের চাষ বেশি হয়েছে। ১০টি উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি শর্ষে চাষ হয়েছে কলমাকান্দা ও পূর্বধলায়। কলমাকান্দায় ৯৭২ হেক্টর ও পূর্বধলায় ৯৫৫ হেক্টর জমিতে আবাদ করা হয়। এরপর সদর উপজেলায় ৭৮০ হেক্টর, মদন উপজেলায় ৬৯৫ হেক্টর জমিতে আবাদ করা হয়। সবচেয়ে কম আটপাড়ায়, ওই উপজেলায় মাত্র ২০০ হেক্টর জমিতে শর্ষে আবাদ হয়। তবে হাওরাঞ্চল খালিয়াজুরিতে এবার ৪০০ হেক্টর জমিতে শর্ষের আবাদ করা হয়েছে। গত বছর ওই উপজেলায় ৩৯০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়।
জানা গেছে, আগে স্থানীয় জাতের শর্ষে চাষ করায় ফলন কম হতো এবং উৎপাদনে সময় বেশি লাগত। এখন কম সময় ও কম খরচের মধ্যে শর্ষে চাষ করা যায়। এতে জেলায় শর্ষের চাষ দিন দিন বাড়ছে। কম জীবনকালের বারি সরিষা-১৪ জাতের শর্ষে ৭৫-৮০ দিনে ঘরে তোলা যায়। প্রতি হেক্টরে ফলন হয় প্রায় দেড় হাজার কেজি। শর্ষে কেটে ওই জমিতে আবার বোরো ধান আবাদ করা যায়।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নেত্রকোনা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. নুরুজ্জামান বলেন, নেত্রকোনায় শর্ষের আবাদ ক্রমশ বাড়ছে। কৃষকদের শর্ষে চাষে এগিয়ে আসতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। বিগত বছরের তুলনায় এবারের ফলন ভালো হওয়ায় চাষিরা খুশি। ভবিষ্যতে জেলায় শর্ষের উৎপাদন বাড়াতে নানামুখী উদ্যোগ নেওয়া হবে। | নেত্রকোনায় এবার শর্ষের ফলন ভালো হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষকেরা বেশি করে শর্ষে চাষ করছে। শর্ষে গাছে রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণও কম হচ্ছে। কৃষকেরা আশায় আছেন এবার চাহিদা থাকায় বাজারে দাম ভালো পাওয়া যাবে। |
বাজারে গেলেই দাম দ্বিগুণ | পাবনার ঈশ্বরদীতে চলতি মৌসুমে শীতকালীন সবজির ভালো ফলন হয়েছে। তবে মাঠপর্যায়ে সবজির দাম কম থাকলেও গ্রামের হাটে পৌঁছে দ্বিগুন এবং শেষে শহরের বাজারে গিয়ে তা চার গুণ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। এতে কৃষক যেমন সবজির সঠিক দাম থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, তেমনি বেশি দাম দিয়ে ক্রেতারা ঠকছেন। অথচ কোনো পরিশ্রম না করেই মধ্যস্বত্বভোগী ও আড়ত ব্যবসায়ীরা সবজি বিক্রির বেশির ভাগ লাভ তুলে নিচ্ছেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রে জানা গেছে, জেলার ৯ উপজেলায় ৩৫ হাজার ৪৫ হেক্টর জমিতে শীত ও গ্রীষ্মকালীন সবজির আবাদ হয়। উৎপাদন হয় ৮ লাখ ২৪ হাজার মেট্রিক টন সবজি, যার বাজার মুল্য দুই থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকা। শীতকালীন সবজি আবাদ হয়েছে ২২ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৫ লাখ ৬৭ হাজার ৫৯৮ মেট্রিক টন সবজি।
গত মঙ্গলবার ঈশ্বরদী উপজেলায় ছলিমপুর কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, পাবনা-পাকশী সড়কের জেলা সদর অংশ পার হলে সবজির জমি শুরু। রাস্তা থেকে যেদিকে তাকানো যায় শুধু সবজির জমি। গাজর, ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুন, মুলা, শসা, শালগম কী নেই এসব মাঠে। কৃষকেরা ব্যাস্ত সময় কাটাচ্ছেন মাঠ থেকে সবজি তুলতে। রাস্তার মোড়ে মোড়ে বসেছে পাইকারি সবজির হাট। এসব হাট থেকে পাইকারেরা সবজি কিনে পৌঁছে দিচ্ছেন ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায়।
মাঠ এবং পাইকারি হাট থেকে জানা গেছে, মাঠ এবং পাইকারি হাটে প্রতি কেজি গাজর ৩৬ থেকে ৩৮ টাকা, ফুলকপি ১০ টাকা, বাঁধাকপি ১২ টাকা, মুলা ৭ থেকে ৮ টাকা, বেগুন ১৫ থেকে ১৮ টাকা, শালগম ১৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মাঠ থেকে ঘুরে দুই কিলোমিটার দূরের উপজেলার নাজিরপুর হাটে গিয়ে দেখা যায়, এখানে প্রতি কেজি গাজর ৪৬ টাকা, ফুলকপি ১৬ টাকা, বাঁধাকপি ১৭ টাকা, মুলা ১৫ টাকা, বেগুম ২২ টাকা ও শালগম ২২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মাত্র ছয় কিলোমিটার এগিয়ে জেলা শহরের আবদুল হামিদ সড়ক ঘুরে দেখা যায় এই দাম দ্বিগুণের বেশি হয়ে গেছে। জেলা শহরে প্রতি কেজি গাজর ৮০ টাকা, ফুলকপি ৩০ টাকা, বাঁধাকপি ৩০ টাকা, মুলা ২০ টাকা, বেগুন ৪০ টাকা ও শালগম ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
জেলা শহরের কয়েকন সবজি বিক্রেতা জানান, মাঠপর্যায় থেকে সবজি কেনেন পাইকারেরা। এরপর তাঁদের কাছ থেকে হাট ও শহরের বিক্রেতাদের সবজি কিনতে হয়। কয়েক হাত ঘুরে শহরে সবজি আসে। ফলে পাইকারদের লাভ, পরিবহন, শ্রমিকসহ বিভিন্ন কারণে এই দাম বেড়ে যাচ্ছে।
তবে কয়েকজন ক্রেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পরিবহনসহ নানা অজুহাতে সবজির দাম বৃদ্ধি করা হচ্ছে। এতে ঠকছেন সাধারণ ক্রেতারা। দেশে ভোক্তা অধিকার রক্ষায় বিভিন্ন সংগঠন ও সরকারি কার্যালয় থাকলেও বাজারে তাঁদের কোন নজরদারি দেখা যাচ্ছে না।
ঈশ্বরদীর জাতীয় স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত কৃষক শাহজাহান আলী বলেন, জেলায় সবজির ব্যাপক উৎপাদন হলেও কৃষকেরা ন্যায্যমূল্য পান না। মাঠ থেকে কৃষকেরা যে দামে সবজি বিক্রি করছেন, কয়েক হাত ঘোরার পর এই দাম বেড়ে যাচ্ছে। ফলে ভোক্তারা বেশি দামে সবজি কিনলেও চাষিরা সে টাকা পাচ্ছেন না।
এ প্রসঙ্গে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) পাবনা শাখার সভাপতি ও পাবনা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক এ বি এম ফজলুর রহমান বলেন, ‘ভোক্তাদের কিছু অভিযোগ আমরা সব সময় পাচ্ছি। শিগরিই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা ও প্রয়োজনে অভিযানের ব্যবস্থা করা হবে।’ | পাবনার ঈশ্বরদীতে চলতি মৌসুমে শীতকালীন সবজির ভালো ফলন হয়েছে। তবে মাঠপর্যায়ে সবজির দাম কম থাকলেও গ্রামের হাটে পৌঁছে দ্বিগুন এবং শেষে শহরের বাজারে গিয়ে তা চার গুণ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। এতে কৃষক যেমন সবজির সঠিক দাম থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, তেমনি বেশি দাম দিয়ে ক্রেতারা ঠকছেন। অথচ কোনো পরিশ্রম না করেই মধ্যস্বত্বভোগী ও আড়ত ব্যবসায়ীরা সবজি বিক্রির বেশির ভাগ লাভ তুলে নিচ্ছেন। |
নরসিংদীতে মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই ট্রাকের চালক নিহত | নরসিংদীর রায়পুরায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে পাথর ও টাইলসবোঝাই দুই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই চালক নিহত হয়েছেন। এ দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন ট্রাক দুটির চালকের দুই সহকারী। আজ শনিবার ভোর ছয়টার দিকে উপজেলার মাহমুদাবাদ গ্রামের নামাপাড়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত দুই ট্রাকচালক হলেন বগুড়ার শিবগঞ্জের বালিকান্দা গ্রামের আবু হাশেম (২১) ও ভোলার চরফ্যাশনের উত্তর চরমণ্ডল গ্রামের মো. মফিজুল পাটোয়ারী (২৮)। আবু হাশেম টাইলসবোঝাই ট্রাকের এবং মো. মফিজুল পাটোয়ারী পাথরবোঝাই ট্রাকের চালক ছিলেন।
হাইওয়ে পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ধরে পাথরবোঝাই ট্রাকটি ঢাকার দিকে ও টাইলসবোঝাই ট্রাকটি কিশোরগঞ্জের ভৈরবের দিকে যাচ্ছিল। ভোর ছয়টার দিকে নামাপাড়া এলাকা অতিক্রমের সময় ট্রাক দুটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ সময় ট্রাক দুটির সামনের অংশ দুমড়ে–মুচড়ে গিয়ে ঘটনাস্থলেই দুই চালক নিহত হন। গুরুতর আহত হন ট্রাক দুটির চালকের দুই সহকারী।
স্থানীয় লোকজন দুই সহকারীকে ট্রাকের ভেতর থেকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠান। খবর পেয়ে ভৈরব হাইওয়ে থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই চালকের লাশ উদ্ধার করে। উদ্ধারকাজে যুক্ত হন রায়পুরা থানা ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।
এ বিষয়ে ভৈরব হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হক বলেন, ট্রাক দুটির ড্রাইভিং সিটে বসে থাকা অবস্থায় দুই চালকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, দুই চালক তন্দ্রাচ্ছন্ন ছিলেন, তাই এই মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। মহাসড়কে পাথরের নিচে কেউ চাপা পড়ে আছেন কি না, তা উদ্ধার অভিযান শেষ হলে বলা যাবে। | নরসিংদীর রায়পুরায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে পাথর ও টাইলসবোঝাই দুই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই চালক নিহত হয়েছেন। এ দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন ট্রাক দুটির চালকের দুই সহকারী। আজ শনিবার ভোর ছয়টার দিকে উপজেলার মাহমুদাবাদ গ্রামের নামাপাড়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। |
বুড়িগঙ্গা নদীতে খেয়া চলাচল বন্ধ, দুর্ভোগে মানুষ | ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশের দিন হঠাৎ করে বুড়িগঙ্গা নদীতে খেয়া চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। কোনো ঘোষণা ছাড়াই আজ শনিবার সকাল থেকে নৌকা চলাচল বন্ধ থাকায় ঢাকার আশপাশের বাসিন্দারা দুর্ভোগে পড়েছেন। এদিকে চীন মৈত্রী বুড়িগঙ্গা প্রথম সেতু, দ্বিতীয় সেতু ও তৃতীয় সেতুতে (বছিলা সেতু) যান চলাচল করছে না। এতে রাজধানীগামী সাধারণ মানুষকে পায়ে হেঁটে সেতু পাড়ি দিয়ে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে।
নৌকার মাঝি ও তাঁদের সমবায় সমিতির নেতাদের দাবি, নৌ পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের নির্দেশে তাঁরা আজ শনিবার সারাদিন নৌকা চালানো বন্ধ রেখেছেন। তবে পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের নেতারা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
আজ শনিবার সকাল ৮টা থেকে কেরানীগঞ্জের বরিশুর, খোলামোড়া, মান্দাইল মসজিদ ঘাট, জিনজিরা ফেরিঘাট, আগানগর ব্রিজ ঘাট ও পূর্ব আগানগর গুদারঘাট এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, খেয়া নৌকার মাঝিরা নৌকা বেঁধে রেখে নদীর ঘাটে বসে আছেন। সেখানে রাজধানীগামী কর্মজীবী অনেক মানুষকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। বেশির ভাগ মানুষই ঘাটে এসে জানতে পেরেছেন নৌকা চলাচল করছে না। এদিকে তিনটি সেতুর প্রবেশপথে কেরানীগঞ্জের ঘাটারচর, কদমতলী, ও হাসনাবাদ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। রাজধানীতে ঢোকার সময় মানুষকে পুলিশি তল্লাশির মুখে পড়ে হচ্ছে।
পাঁচজন খেয়ার নৌকার মাঝির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নৌ পুলিশের কয়েকজন সদস্য তাঁদের খেয়া নৌকা বন্ধ রাখার ব্যাপারে গতকাল রাতে নির্দেশনা দিয়ে গেছেন। আগানগর ব্রিজঘাটের খেয়া নৌকার মাঝি সোবহান মিয়া বলেন, ‘গতকাল রাতে নৌ পুলিশ এসে বলেছে, আজ শনিবার সকাল থেকে নৌকা চালানো বন্ধ রাখতে হবে। তাই আমরা নৌকা চলাচল বন্ধ রেখেছি।’
জিনজিরা ফেরিঘাট এলাকার মাঝি ইমরান হোসেন বলেন, সকাল ছয়টার দিকে তিনি ঘাটে এসেছেন। এ সময় এক যাত্রীকে সোয়ারীঘাটে পৌঁছে দিতে গেলে নৌ পুলিশের ট্রলারে থাকা কয়েকজন পুলিশ সদস্য তাঁকে বকাঝকা করেন। এরপর থেকেই তিনি নৌকা বেঁধে রেখে ঘাটে বসে আছেন।
হঠাৎ করে নৌকা চলাচল বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। কেরানীগঞ্জের জিনজিরা ফেরিঘাট এলাকায় এক নবজাতক ও এক শিশুকে নিয়ে বসেছিলেন তিন নারী। তাঁরা রাজধানীর চকবাজারের আমানবাগ এলাকায় যাওয়ার জন্যে ঘাটে বসে নৌকার জন্য অপেক্ষা করছেন। গৃহবধূ মনোয়ারা বেগম (৫৫) বলেন, ‘তিন দিন আগে কেরানীগঞ্জের আল বারাকা হাসপাতালে আমার মেয়ের বাচ্চা হয়েছে। আজ সকালে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। এখন বাড়ি যাব। কিন্তু ঘাটে এসে দেখি নৌকা নাই। দুই–একটা নৌকা ছিল, সেটাও পুলিশ ধাওয়া দিয়ে তাড়ায় দিছে। প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে বসে আছি। কিন্তু কোনো নৌকা পাচ্ছি না। ভাবছি, বুড়িগঙ্গা সেতু দিয়ে হেঁটে বাড়ি যাব।’
নৌকা বন্ধের বিষয়ে জানতে চাইলে পূর্ব আগানগর খেয়ার মাঝি সমবায় সমিতির এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘গত দুই দিন আগে পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের নেতারা আমাদের বলেছে, আজ সারাদিন নৌকা চালানো বন্ধ রাখতে হবে। এ কারণে নৌকার মাঝিরা নৌকা চালানো বন্ধ রেখেছে।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে নৌ পুলিশ বরিশুর ফাঁড়ির সহকারী উপপরিদর্শক আবদুস সালাম বলেন, নৌ পুলিশ নৌকা চলাচল বন্ধ করেনি। তবে বুড়িগঙ্গা নদীতে যেন কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সে জন্য টহল দেওয়া হচ্ছে।
ঢাকার পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজ রাজধানীর গোলাপবাগে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ ও সাভারে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সমাবেশ রয়েছে। বৃহৎ দুটি দলের সমাবেশের সুযোগ নিয়ে কেউ যেন নাশকতাসহ দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি না ঘটাতে পারে, সে জন্য সার্বিক নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তবে খেয়া চলাচল বন্ধের বিষয়ে কোনো মেসেজ পাইনি। এই ধরনের কোনো সমস্যা হচ্ছেনা। সবাই চলাচল করতে পারছে।’
এদিকে সকাল ১০টার দিকে কেরানীগঞ্জের কদমতলী এলাকায় ‘এসো বিজয় উল্লাসে মাতি’ ব্যানারে একটি শামিয়ানার নিচে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা যুবলীগের সভাপতি মাহমুদ আলমকে বসে থাকতে দেখা যায়। তাঁর সঙ্গে দলের নেতা-কর্মীরাও বসে ছিলেন। দুই দিন ধরে ওই স্থানে যুবলীগের নেতা–কর্মীরা বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করছেন। জানতে চাইলে মাহমুদ আলম বলেন, ‘এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার্থে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করছি। রাজধানীতে বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও জামায়াতের দোসররা যেন এলাকায় কোনো ধরনের অঘটন ও আগুন সন্ত্রাস করতে না পারে, সে জন্য আমরা এখানে অবস্থান নিয়েছি।’
সদরঘাটে পুলিশি তৎপরতা
বিএনপির গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে আজ সকাল থেকে ঢাকা নদীবন্দর সদরঘাট টার্মিনাল এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ছাড়া নৌ পুলিশের একাধিক দলকে বুড়িগঙ্গা নদীতে টহল দিতে দেখা গেছে। আজ শনিবার ভোর পাঁচটায় দক্ষিণাঞ্চল থেকে সাতটি যাত্রীবাহী লঞ্চ এসেছে। তবে লঞ্চে তেমন যাত্রী ছিল না।
বিআইডব্লিউটিএর ঢাকা নদীবন্দরের নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম পরিচালক মো. শহিদউল্যাহ বলেন, দক্ষিণাঞ্চল থেকে আজ সকাল পর্যন্ত সাতটি লঞ্চ এসেছে। সদরঘাট এলাকায় যেন কোনোরকমের বিশৃঙ্খলা না ঘটে, সে জন্য অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। | ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশের দিন হঠাৎ করে বুড়িগঙ্গা নদীতে খেয়া চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। কোনো ঘোষণা ছাড়াই আজ শনিবার সকাল থেকে নৌকা চলাচল বন্ধ থাকায় ঢাকার আশপাশের বাসিন্দারা দুর্ভোগে পড়েছেন। এদিকে চীন মৈত্রী বুড়িগঙ্গা প্রথম সেতু, দ্বিতীয় সেতু ও তৃতীয় সেতুতে (বছিলা সেতু) যান চলাচল করছে না। এতে রাজধানীগামী সাধারণ মানুষকে পায়ে হেঁটে সেতু পাড়ি দিয়ে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে। |
‘মনে হইতাছে দেশে হরতাল চলতাছে’ | গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর এলাকায় বাসিন্দা আফজাল হোসেন ঢাকার বনানীতে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। প্রতিদিন বাড়ি থেকে এসে অফিস করেন তিনি। আজ সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে দেখেন সড়কে কোনো গণপরিবহন চলছে না। নিরুপায় হয়ে হাঁটা শুরু করেন। আফজাল হোসেন বলেন, ‘রাস্তায় বের হইয়া মনে হইতাছে দেশে হরতাল চলতাছে। দেখি রিকশা বা অটো দিয়ে কত দূর পর্যন্ত যাওয়া যায়, তা না হলে হয়ত হেঁটেই যেতে হবে।’
শুধু আফজাল হোসেন নন, আজ শনিবার ভোর থেকে শত শত মানুষ হেঁটে তাঁদের গন্তব্যে যাওয়ার জন্য রওনা হয়েছেন। এর মধ্যে বিভিন্ন মোড়ে ও চেকপোস্টে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের মুখেও পড়তে হয়েছে তাঁদের।
ঢাকায় বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে আজ ভোর থেকেই গাজীপুরে সড়ক-মহাসড়কে যানবাহন কমে গেছে। কিছু পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল করলেও দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাস একেবারেই দেখা যায়নি। মোটরসাইকেল, ব্যক্তিগত গাড়ি, অটোরিকশা চলাচলেও বেশ কড়াকড়ি চলছে। মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে পুলিশের চেকপোস্টে এসব গাড়িতে চলছে তল্লাশি। গাড়ি সংকটে পড়ে পোশাক শ্রমিক ও সাধারণ যাত্রীরা পড়েছে ভোগান্তিতে।
গাজীপুরের ভোগড়া এলাকায় থেমে থাকা একটি বাসের চালক আসাদুল ইসলাম বলেন, গতকাল রাতে যাত্রীসহ শেরপুর থেকে বাস নিয়ে আসেন তিনি। পুরো সড়কে কোথাও কোনো ঝামেলা হয়নি। কিন্তু ভোরে গাজীপুরের ভোগড়া এলাকায় পৌঁছালে পুলিশ গাড়ি থামিয়ে যাত্রীদের নামিয়ে দেয়।
গাজীপুর সদর উপজেলার মণিপুর এলাকার বাসিন্দা হাজেরা খাতুন তাঁর ডায়রিয়া আক্রান্ত আট মাস বয়সী সন্তানকে কোলে নিয়ে মহাখালী ডায়রিয়া হাসপাতালে যাচ্ছিলেন। অতি কষ্টে জয়দেবপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত পৌঁছালেও বাস বা অন্য কোনো গাড়ি না পাওয়ায় তিনি হাসপাতালে যেতে পারছিলেন না। অনেকক্ষণ চেষ্টার পর পুলিশকে বুঝিয়ে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ওঠেন তিনি।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের (ট্রাফিক বিভাগ) সহকারী কমিশনার অশোক কুমার বলেন, সড়ক মহাসড়কে যানবাহন কম চলছে। পুলিশ চেকপোস্টে তল্লাশি করলেও যানবাহন চলাচলে কোনো বাধা দিচ্ছে না।
গাজীপুর জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি সুলতান আহমেদ সরকার বলেন, ঢাকায় বিএনপির সমাবেশকে সামনে রেখে গাড়ি বন্ধ রাখার বিষয়ে তাঁরা কোনো সিদ্ধান্ত নেননি। তবে রাস্তায় যাত্রীর সংখ্যা কমে যাওয়ায় হয়তো বাস কম চলছে। | গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর এলাকায় বাসিন্দা আফজাল হোসেন ঢাকার বনানীতে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। প্রতিদিন বাড়ি থেকে এসে অফিস করেন তিনি। আজ সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে দেখেন সড়কে কোনো গণপরিবহন চলছে না। নিরুপায় হয়ে হাঁটা শুরু করেন। আফজাল হোসেন বলেন, ‘রাস্তায় বের হইয়া মনে হইতাছে দেশে হরতাল চলতাছে। দেখি রিকশা বা অটো দিয়ে কত দূর পর্যন্ত যাওয়া যায়, তা না হলে হয়ত হেঁটেই যেতে হবে।’ |
বাংলাদেশে সহিংসতার ঘটনার পূর্ণাঙ্গ, নিরপেক্ষ তদন্ত চায় যুক্তরাষ্ট্র: হোয়াইট হাউস | বাংলাদেশে বড় একটি রাজনৈতিক বিক্ষোভের আগে সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীদের ওপর সহিংসতার ঘটনার পূর্ণ তদন্তে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। একই সঙ্গে সব পক্ষকে সহিংসতা থেকে বিরত থাকারও আহ্বান জানানো হয়েছে। গতকাল শুক্রবার এই আহ্বান জানায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দপ্তর। খবর রয়টার্সের।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বিরোধী দল বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের ওপর গত বুধবার পুলিশ গুলি চালালে একজন নিহত হন, আহত হন ৬০ জনের বেশি।
ভয়েস অব আমেরিকার বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকায় আজ শনিবার বিএনপির পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ সমাবেশকে সামনে রেখে গত মাসে বিএনপির কয়েক হাজার নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই বিক্ষোভে ১০ লাখ লোক অংশ নিতে পারে বলে দলটির নেতা-কর্মীরা বলে আসছেন।
হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, এসব ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন এবং বাংলাদেশের পরিস্থিতি ‘খুব, খুবই নিবিড়ভাবে’ পর্যবেক্ষণ করছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের নাগরিকদের ভয়ভীতি, হুমকি, হয়রানি ও সহিংসতামুক্ত শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার অধিকারের দাবি যুক্তরাষ্ট্র অব্যাহতভাবে জানিয়ে আসছে।
জন কিরবি আরও বলেন, ‘আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতে এবং সহিংসতা থেকে বিরত থাকতে বাংলাদেশের সব পক্ষের প্রতি আমরা আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা চাই, তারা হয়রানি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন থেকে বিরত থাকবে। কোনো দল কিংবা প্রার্থীকে হুমকি, অন্য কোনো দলের বিরুদ্ধে উসকানি বা সহিংস আচরণ করা যাতে না হয়, তা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আমরা আহ্বান জানাচ্ছি।’
জন কিরবি বলেন, ‘সহিংসতার ঘটনা পূর্ণাঙ্গ, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষভাবে তদন্তের’ জন্যও বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানায় ওয়াশিংটন।
বাংলাদেশে আগামী বছর জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এর আগে এসব বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। | বাংলাদেশে বড় একটি রাজনৈতিক বিক্ষোভের আগে সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীদের ওপর সহিংসতার ঘটনার পূর্ণ তদন্তে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। একই সঙ্গে সব পক্ষকে সহিংসতা থেকে বিরত থাকারও আহ্বান জানানো হয়েছে। গতকাল শুক্রবার এই আহ্বান জানায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দপ্তর। খবর রয়টার্সের। |
সভাপতি ও সম্পাদক পদে যাঁরা আলোচনায় | চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন ১২ ডিসেম্বর। সাত বছর পর অনুষ্ঠেয় এ সম্মেলন ঘিরে দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। পদপ্রত্যাশী এবং নেতা-কর্মীদের বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন ও তোরণে তোরণে ছেয়ে গেছে জেলা শহর ও আশপাশের এলাকায়। সম্মেলনের স্থান টাউন ফুটবল মাঠে প্যান্ডেলসহ দক্ষিণ কোণে চলছে নৌকার আদলে বিশালাকার মঞ্চ তৈরির কাজ। এবার সভাপতি পদে দুজন ও সাধারণ সম্পাদক পদে তিনজন নেতার নাম আলোচনায় আছে।
জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার বলেন, অতিথি চূড়ান্ত করার পাশাপাশি চারটি উপজেলা ও একটি সাংগঠনিক ইউনিটের (দর্শনা থানা) ২১৮ জন কাউন্সিলর এবং ১৫ হাজার ডেলিগেট, গণমাধ্যমের বন্ধুদের আমন্ত্রণসহ সম্মেলনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
নেতা-কর্মীদের ভাষ্য, সম্মেলনে কাউন্সিলরদের মতামত ও আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতারা জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে যোগ্য নেতাকেই চূড়ান্ত করবেন।
সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ। সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ভাচ্যুয়ালি প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম প্রধান বক্তা এবং খুলনা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আমিরুল আলম, পারভীন জামান, গ্লোরিয়া সরকার সমাবেশে বক্তৃতা করার কথা আছে।
দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে বর্তমান সভাপতি চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার এবং জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদুল হক বিশ্বাসের নাম আলোচনায় আছে। অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আজাদুল ইসলামের পাশাপাশি বর্তমান সহসভাপতি চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলি আজগার ও সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর হান্নানের নাম জোরেশোরে শোনা যাচ্ছে।
আসাদুল হক বিশ্বাস বলেন,দলের ভেতরে যারা আমার নৌকা প্রতীকের পক্ষে কাজ করেছেন, তাঁদের চাওয়া আমি সভাপতি হই।’
সাধারণ সম্পাদক প্রার্থিতা প্রসঙ্গে আলি আজগার বলেন, সামনে আন্দোলন-সংগ্রাম মোকাবিলা করে জাতির পিতার সোনার বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে শেখ হাসিনাকে আবারও ক্ষমতায় আনতে হবে।
২০১৫ সালের ২ ডিসেম্বর টাউন ফুটবল মাঠে জেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন ও কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কাউন্সিলে সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দারকে সভাপতি ও আজাদুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়। | চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন ১২ ডিসেম্বর। সাত বছর পর অনুষ্ঠেয় এ সম্মেলন ঘিরে দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। পদপ্রত্যাশী এবং নেতা-কর্মীদের বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন ও তোরণে তোরণে ছেয়ে গেছে জেলা শহর ও আশপাশের এলাকায়। সম্মেলনের স্থান টাউন ফুটবল মাঠে প্যান্ডেলসহ দক্ষিণ কোণে চলছে নৌকার আদলে বিশালাকার মঞ্চ তৈরির কাজ। এবার সভাপতি পদে দুজন ও সাধারণ সম্পাদক পদে তিনজন নেতার নাম আলোচনায় আছে। |
বিএনপির সমাবেশ সুন্দরভাবে শেষ করতে কাজ চলছে: পুলিশ | বিএনপি যাতে সুন্দরভাবে সমাবেশ করতে পারে, সেটি নিশ্চিতে কাজ করা হচ্ছে বলেছেন গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
আজ শনিবার বেলা ১১টা থেকে রাজধানীর সায়দাবাদের গোলাপবাগ মাঠে বিএনপির গণসমাবেশ শুরু হয়েছে। সমাবেশের আগের রাতে গতকাল শুক্রবার বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে পুলিশের ওপর হামলার পরিকল্পনা ও উসকানির অভিযোগে করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়েছে ডিবি। এ পর্যন্ত বিএনপির প্রায় পাঁচ শ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
নয়াপল্টনের নাইটিঙ্গেল মোড়ে আজ সকালে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘বিএনপির সমাবেশ করা মৌলিক অধিকার। আমরা অনুমতি দিয়েছি, সেখানে তো কোনো অবৈধ জমায়েত হচ্ছে না। আমাদের ২০ হাজার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য সেখানে কাজ করছেন।’
রাজধানীতে গণপরিবহন কম চলাচলের কারণ জানতে চাইলে হারুন অর রশীদ বলেন, আজ এমনিতেই ছুটির দিন। যাঁদের কাজ নেই, তাঁরা বের হচ্ছেন না। এ জন্যও চাপ কম। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক। দুই দিন আগে যেহেতু একটি ঘটনা ঘটেছে, মানুষজন খুব একটা বের হচ্ছেন না।
নয়াপল্টন এলাকা পুলিশের নিয়ন্ত্রণে থাকা ও চলাচল বন্ধ কি না জানতে চাইলে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘এখন আপনারা চাইলে ওদিকে যেতে পারবেন।’
নিত্যপণ্য ও জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, পুলিশের গুলিতে নেতা-কর্মী নিহত এবং চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে দেশের সব বিভাগে বিএনপির গণসমাবেশের অংশ হিসেবে আজ ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ করছে বিএনপি। | বিএনপি যাতে সুন্দরভাবে সমাবেশ করতে পারে, সেটি নিশ্চিতে কাজ করা হচ্ছে বলেছেন গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। |
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বাসে তল্লাশি চালিয়ে ৬ জনকে আটক | নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যাত্রীবাহী একটি বাসে তল্লাশি চালিয়ে ছয়জনকে আটক করেছে পুলিশ। আজ শনিবার সকালে উপজেলার মৌচাক এলাকায় মহাসড়কে একটি অস্থায়ী তল্লাশিচৌকি বসিয়ে তাঁদের আটক করা হয়।
এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
মুগদায় বিএনপি-আ.লীগ পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ
বিএনপির সমাবেশ সুন্দরভাবে শেষ করতে কাজ চলছে: পুলিশ
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান আজ দুপুর ১২টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁদের আটক করা হয়েছে। আটক ব্যক্তিরা বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাঁদের পদ-পদবি যাচাই করা হচ্ছে। | নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যাত্রীবাহী একটি বাসে তল্লাশি চালিয়ে ছয়জনকে আটক করেছে পুলিশ। আজ শনিবার সকালে উপজেলার মৌচাক এলাকায় মহাসড়কে একটি অস্থায়ী তল্লাশিচৌকি বসিয়ে তাঁদের আটক করা হয়। |
মুঠোফোন ঘেঁটে ‘বিএনপি সমর্থক’ ১০-১২ জনকে পুলিশে দিল ছাত্রলীগ | বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সতর্ক অবস্থান নিয়েছে ছাত্রলীগ৷ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম এই সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ক্যাম্পাসের প্রবেশমুখসহ গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোয় অবস্থান করছেন।
ক্যাম্পাসের অন্যতম প্রবেশমুখ নীলক্ষেতের মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণের সামনে থেকে মুঠোফোন ঘেঁটে বিএনপি-সমর্থক ১০-১২ জনকে মারধর করে পুলিশে দিয়েছে বলে জানিয়েছে ছাত্রলীগ।
আজ শনিবার সকালে ও দুপুরে দুই দফায় বিএনপি সমর্থক সন্দেহে ১০-১২ জনকে নীলক্ষেতের তোরণের সামনে আটক করেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। মারধর ও মুঠোফোন ঘাঁটার পর তাঁদের পুলিশের হাতে তুলে দেন তাঁরা।
নীলক্ষেতে অবস্থান নেওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুই দফায় ১০-১২ জনকে আমরা পুলিশে দিয়েছি। তাঁদের মুঠোফোন চেক করে বিএনপি সমর্থক বলে নিশ্চিত হয়েই শাহবাগ থানা-পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘বিএনপি ও ছাত্রদলের সন্ত্রাসীরা নাশকতার পরিকল্পনা নিয়ে ঢাকায় এসেছে। এসব সন্ত্রাসীকে রুখতে ছাত্রসমাজ ঐক্যবদ্ধ আছে। আমরা বিএনপি-জামায়াতের অশুভ রাজনীতির কবর রচনা করবই।’
মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণসংলগ্ন নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. জাফর প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়টি তাঁর জানা নেই। এ বিষয়ে জানতে থানায় যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন তিনি৷ পরে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর মোহাম্মদের মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। | বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সতর্ক অবস্থান নিয়েছে ছাত্রলীগ৷ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম এই সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ক্যাম্পাসের প্রবেশমুখসহ গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোয় অবস্থান করছেন। |
দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ মানুষ, কর্তৃপক্ষ নির্বিকার | ‘গন্ধে ঘরে টেকা যায় না। দরজা–জানালা বন্ধ করে রাখতে হয়। তা–ও ঘরে থাকা যায় না। কোথায় যাব, খুবই অসহায় লাগে। মনে হয় ঘরবাড়ি বিক্রি করে অন্য কোথাও চলে যাই।’ ময়লার গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে এভাবেই দুর্ভোগ আর কষ্টের কথা বলছিলেন শেলী বেগম।
শেলী বেগমের বাড়ি বাগেরহাট সদর উপজেলার কাড়াপাড়া ইউনিয়নের মাঝিডাঙ্গা এলাকায়। বাগেরহাট পৌরসভার ময়লাও ফেলা হয় ওই এলাকাতেই। স্থানটিতে অপরিকল্পিতভাবে ও উন্মুক্তভাবে ময়লা ফেলায় এ এলাকার রাস্তা দিয়ে চলাচল ও বসবাস করা দুরূহ হয়ে পড়ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. আবদুল জলিল বলেন, ‘ময়লার গন্ধে আমরা রোগাক্রান্ত হয়ে যাচ্ছি। শান্তিতে খাবার খাওয়ারও উপায় নেই। পুরো এলাকাই বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠেছে।’
মুনিগঞ্জ থেকে পোলঘাট সড়কের পশ্চিম পাশে মাঝিডাঙ্গা এলাকায় বড় একটা জায়গাজুড়েই ময়লার স্তূপ। পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা থেকে ভ্যান ভর্তি করে ময়লা এনে ফেলা হয় এখানে। সম্প্রতি ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন ধরনের পলিথিন, কাগজ, খাবারের উচ্ছিষ্টসহ নানা ধরনের ময়লার উটকো গন্ধ এলাকাজুড়ে। নিচু জায়গাটি ময়লা ফেলেই ভরাট করে উঁচু করা হয়েছে। ময়লার স্তূপের ওপর কুকুর, কাক ও বিভিন্ন ধরনের পাখি খাবার খাচ্ছে। দুর্গন্ধে নাক চেপে চলাচল করছেন পথচারীরা। হালকা বাতাসেই দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে আরও দূর পর্যন্ত।
মো. রফিকুল ইসলাম নামের এক পথচারী বলেন, ‘প্রতিদিন সকাল-বিকেল কাজের জন্য এই পথ দিয়ে যাওয়া-আসা করতে হয়। এত পরিমাণ দুর্গন্ধ যে নাক চেপে দম বন্ধ করে যেতে হয়। খুবই কষ্ট হয় আমাদের।’
জানা গেছে, ২০১৯ সালের ২৩ জুন ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে বাগেরহাট পৌরসভার আবর্জনা অপসারণ ও ব্যবস্থাপনার জন্য বর্জ্য ফেলার জায়গা তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল। বাগেরহাটের সে সময়কার জেলা প্রশাসক তপন কুমার বিশ্বাস এর ফলক উন্মোচন করেছিলেন। তবে সাড়ে তিন বছরে ভূমি অধিগ্রহণ ছাড়া দৃশ্যমান আর কোনো কাজই হয়নি। উপরন্তু খোলা স্থানে ময়লা-আবর্জনা ফেলায় পরিবেশ দূষিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
পৌরসভার মেয়র খান হাবিবুর রহমান বলেন, পৌরসভার ময়লা ও আবর্জনা অপসারণ এবং উন্নত ব্যবস্থাপনার জন্য ইতিমধ্যে ৫ একর জমি কেনা হয়েছে। ওই জমির চারদিকে উঁচু দেয়াল দিয়ে পৌর বর্জ্যকে আধুনিকভাবে ব্যবস্থাপনা করা হবে। এখানে বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট, কমপোস্ট সার প্ল্যান্ট, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ও বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে।
স্থানীয় একটি অটোরাইস মিলের শ্রমিক নাহার বেগম বলেন, ময়লা ফেলার স্থানের চারদিকে অন্তত আধা কিলোমিটার এলাকাজুড়ে গন্ধে টেকা যায় না। বৃষ্টির সময় ময়লা ও ময়লাযুক্ত পানি রাস্তায় চলে আসার পাশাপাশি স্থানীয় লোকজনের বাড়িতেও প্রবেশ করে। | ‘গন্ধে ঘরে টেকা যায় না। দরজা–জানালা বন্ধ করে রাখতে হয়। তা–ও ঘরে থাকা যায় না। কোথায় যাব, খুবই অসহায় লাগে। মনে হয় ঘরবাড়ি বিক্রি করে অন্য কোথাও চলে যাই।’ ময়লার গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে এভাবেই দুর্ভোগ আর কষ্টের কথা বলছিলেন শেলী বেগম। |
ঢাকার সঙ্গে নারায়ণগঞ্জের বাস যোগাযোগ বন্ধ, বিকল্প যানে বাড়তি ভাড়া | সদা ব্যস্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক হঠাৎই যেন প্রাণ হারিয়েছে। আজ শনিবার সকাল থেকে মহাসড়ক একেবারে ফাঁকা। যাত্রীবাহী কোনো বাসও চলতে দেখা যাচ্ছে না। এতে ঢাকার সঙ্গে নারায়ণগঞ্জের বাস যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশের দিন গণপরিবহনের পাশাপাশি ব্যক্তিগত যানবাহনের সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে কমে গেছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। গণপরিবহন না পেয়ে রাজধানীগামী মানুষ বিকল্প হিসেবে বাড়তি ভাড়া দিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক, লেগুনা ও মোটরসাইকেলে গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।
তবে বাস বন্ধ রাখার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতি। তাঁদের দাবি, সাপ্তাহিক ছুটির দিনে যাত্রী নেই বলে মালিকেরা বাস বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
আজ সকাল সাড়ে নয়টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের মৌচাক, সাইনবোর্ড, কাঁচপুর এবং ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পুরাতন সড়কের পাগলা এলাকা ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে। নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার মদনপুরের হালিমা বেগম মাতুয়াইল সাদ্দাম মার্কেটে কাজ করেন। বাস না পেয়ে অটোরিকশায় জনপ্রতি ৪০ টাকা ভাড়া দিয়ে তিনি মদনপুর থেকে শিমরাইল আসেন। শিমরাইল থেকে তিনি হেঁটে মাতুয়াইল যাচ্ছেন। পথে সাইনবোর্ড এলাকায় হালিমার সঙ্গে এই প্রতিবেদকের কথা হয়। হালিমা বলেন, তাঁর স্বামী তিন বছর ধরে অসুস্থ। মার্কেট দেখাশোনার কাজ করে তিনি যা আয় করেন, সেটা দিয়েই সংসার চালাতে হয়। এ জন্য বাস চলাচল বন্ধ থাকলেও পেটের দায়ে তিনি বেরিয়েছেন।
রূপগঞ্জের ভুলতা এলাকার কাপড় ব্যবসায়ী ডালিম উদ্দিন যাত্রাবাড়ী যাচ্ছিলেন। ভুলতা থেকে তিনি নিয়মিত মেঘলা পরিবহনের বাসে যাত্রাবাড়ী যাতায়াত করেন। তবে আজ বাস বন্ধ থাকায় তিনি অটোরিকশায় ভেঙে ভেঙে সাইনবোর্ড পর্যন্ত এসেছেন। ভুলতা থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত আসতে তাঁর টাকা খরচ হয়েছে ১৫০ টাকা। অথচ অন্যদিন তিনি ৫০ থেকে ৬০ টাকায় যাত্রাবাড়ী যেতে পারেন।এদিকে বাস চলাচল বন্ধ থাকলেও বিএনপির কর্মী ও সমর্থকদের দুই-তিনজনের দলে বিভক্ত হয়ে ঢাকায় যেতে দেখা গেছে।
শহরের আমলপাড়া এলাকার বিএনপির কর্মী সোহেল আলী বলেন, দলের সবাই মিলে সমাবেশে যাবেন বলে তাঁরা পরিকল্পনা করেছিলেন। তবে পুলিশি গ্রেপ্তার ও হয়রানির কারণে বিএনপির নেতা-কর্মীরা একসঙ্গে ঢাকায় যেতে পারছেন না। তাই দল থেকে জানানো হয়েছে, বিকল্প উপায়ে সমাবেশস্থলে যোগ দিতে।
ফতুল্লার লালপুর এলাকার বাসিন্দা যুবদল কর্মী আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘যত বাধা আসুক না কেন, বিএনপির কর্মীরা সমাবেশে অংশ নিবেই। অটোরিকশায় সাইনবোর্ড পর্যন্ত এসেছি। বাকি পথও চলে যাব।’
ঢাকায় বিএনপির সমাবেশের কারণে বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মামুন মাহমুদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপির সমাবেশে যেন লোকজন যেতে না পারে, সে জন্যই গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে যত বাধা দেওয়া হোক না কেন, বিএনপির নেতা-কর্মীসহ সাধারণ মানুষ নানা উপায়ে সমাবেশে অংশ নিচ্ছে।’
তবে বাস বন্ধ রাখার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি দিদার খন্দকার। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সমিতির পক্ষ থেকে বাস বন্ধের কোনো নির্দেশনা নেই। তবে শুক্রবার যাত্রী না থাকায় বাস মালিকদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। এ কারণে অনেক বাসমালিক তাঁদের গাড়ি বন্ধ রেখেছেন। তবে তাঁরা বিএনপির কর্মসূচির কারণে গাড়ি বন্ধ রাখেননি বলে দাবি করেন।
মহাসড়কে পুলিশি তল্লাশি অব্যাহত
আজ সকাল থেকে মহাসড়কের সাইনবোর্ড, মৌচাক, মদনপুর, চাষাঢ়া, বালু সেতু, সুলতানা কামাল সেতু, পূর্বাচল ৩০০ ফুট, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পুরাতন সড়কের পাগলা এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশের উপস্থিতি দেখা গেছে। এসব স্থানে পুলিশ তল্লাশিচৌকি বসিয়ে ঢাকাগামী যানবাহনে তল্লাশি করছে এবং যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এর মধ্যে মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় শতাধিক পুলিশ ও র্যাব সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। একই সঙ্গে ওয়াটার ক্যানন কার ও এপিসি কার নিয়ে অবস্থান নিয়েছে জেলা পুলিশ।
জানতে চাইলে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আমীর খসরু প্রথম আলোকে বলেন, জেলার নিরাপত্তার স্বার্থে সাড়ে আট শতাধিক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। বিএনপির কর্মসূচি ঘিরে কেউ যেন নাশকতার উদ্দেশ্যে বোমা বা বিস্ফোরক কিছু নিয়ে যেতে না পারেন, সে জন্য পুলিশি তল্লাশি চালানো হচ্ছে। | সদা ব্যস্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক হঠাৎই যেন প্রাণ হারিয়েছে। আজ শনিবার সকাল থেকে মহাসড়ক একেবারে ফাঁকা। যাত্রীবাহী কোনো বাসও চলতে দেখা যাচ্ছে না। এতে ঢাকার সঙ্গে নারায়ণগঞ্জের বাস যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশের দিন গণপরিবহনের পাশাপাশি ব্যক্তিগত যানবাহনের সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে কমে গেছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। গণপরিবহন না পেয়ে রাজধানীগামী মানুষ বিকল্প হিসেবে বাড়তি ভাড়া দিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক, লেগুনা ও মোটরসাইকেলে গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। |
টিলা কেটে নালা নির্মাণ, পরিবেশবাদীদের ক্ষোভ | সিলেট সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ নগরের সড়কগুলো প্রশস্তকরণের পাশাপাশি নতুন করে নালাও নির্মাণ করছে। এ কাজের অংশ হিসেবে নগরের শাহী ঈদগাহ সড়কের টিবিগেট অনামিকা এলাকার প্রধান সড়কেও নালা নির্মাণ করা হচ্ছে। তবে এটি নির্মাণ করতে গিয়ে একটি অংশে টিলা কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এতে পরিবেশবাদীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
গত বৃহস্পতিবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরের টিবিগেট এলাকার দক্ষিণ অংশে একটি ছোট টিলার একপাশ কেটে সমতল করা হয়েছে। এরপর সেই সমতল অংশে নালার প্রশস্তকরণকাজ শেষ করা হয়েছে। কিন্তু টিলাটি এমনভাবে কাটা হয়েছে যে বৃষ্টি হলে টিলার কিছু অংশ ধসে পড়ার আশঙ্কা আছে।
মুক্তার হোসেন নামের এক পথচারী বলেন, যেহেতু সিটি করপোরেশনের অর্থায়নে ঠিকাদার নালা নির্মাণ করছেন, তাই টিলা কাটার দায় সিটি কর্তৃপক্ষ কোনোভাবেই এড়াতে পারে না। পরিবেশবিধ্বংসী কাজ যদি সিটি কর্তৃপক্ষই করে, তাহলে অন্যরাও এতে উৎসাহিত হবে। এটা একটা বাজে উদাহরণ হয়ে থাকবে।
স্থানীয় একাধিক বাসিন্দার অভিযোগ, টিলাটির উচ্চতা অন্তত ১৫ ফুট। মাসখানেক আগে টিলাটি কেটে পাকা নালা নির্মাণ করা হয়েছে। নালা নির্মাণের জন্য টিলার অন্তত ১৮ থেকে ২০ গজ অংশের মাটি কেটে ফেলা হয়। এমনিতেই সিলেট শহর ক্রমে টিলাশূন্য হয়ে পড়ছে, এর মধ্যে সিটি করপোরেশনের উন্নয়নকাজে টিলা এভাবে কেটে ফেলার বিষয়টি দুঃখজনক। খননযন্ত্রের পাশাপাশি কোদাল দিয়ে টিলাটি কাটা হয়েছে বলে আশপাশের কয়েকজন বাসিন্দা জানিয়েছেন।
পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক মোহাম্মদ এমরান হোসেন জানান, টিলা কাটার বিষয়ে সিটি করপোরেশন তাঁদের কাছ থেকে কোনো অনুমতি নেয়নি। বিষয়টি তাঁরা খোঁজ নিয়ে দেখবেন।
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, টিলা কাটার বিষয়টি আমার জানা নেই। | সিলেট সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ নগরের সড়কগুলো প্রশস্তকরণের পাশাপাশি নতুন করে নালাও নির্মাণ করছে। এ কাজের অংশ হিসেবে নগরের শাহী ঈদগাহ সড়কের টিবিগেট অনামিকা এলাকার প্রধান সড়কেও নালা নির্মাণ করা হচ্ছে। তবে এটি নির্মাণ করতে গিয়ে একটি অংশে টিলা কেটে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এতে পরিবেশবাদীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। |
ঢাবি ক্যাম্পাসে সতর্ক ছাত্রলীগ, চলছে মিছিল-সাংস্কৃতিক আয়োজন-ক্রিকেট | বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সতর্ক অবস্থান নিয়েছে ছাত্রলীগ। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম এই সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ক্যাম্পাসের প্রবেশমুখসহ গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোয় অবস্থান করছেন। চলছে মিছিল, সেখানে দেওয়া হচ্ছে বিএনপি-জামায়াত ও ছাত্রদল-শিবিরবিরোধী নানা স্লোগান। মোটরসাইকেলের মহড়াও দিচ্ছেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। অবস্থান ও মহড়ার পাশাপাশি ‘সচেতন শিক্ষার্থী’দের ব্যানারে আজ শনিবার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ক্যাম্পাসের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) রাজু ভাস্কর্যে থাকছে সাংস্কৃতিক আয়োজন। টিএসসির সামনে ক্রিকেট খেলায়ও ব্যস্ত কেউ কেউ।
বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এলাকায় বিএনপি কিংবা ছাত্রদলের যেকোনো ধরনের তৎপরতা রুখতেই ছাত্রলীগ এ সতর্ক অবস্থান নিয়েছে। ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে একে বলা হচ্ছে ‘শান্তির স্বপক্ষে লড়াই’। বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ক্যাম্পাসে সতর্ক অবস্থান শুরু করেছে ছাত্রলীগ। আজ রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে চলছে বিএনপির গণসমাবেশ।
বিএনপির গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে আজ সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের টিএসসি, মধুর ক্যানটিন, নীলক্ষেত, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, কার্জন হল, হাইকোর্ট মোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান নিয়েছেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। তাঁরা ছাত্রদল ও বিএনপির বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দিচ্ছেন। কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতার নেতৃত্বে মিছিলও হচ্ছে ক্যাম্পাসে। বিভিন্ন হল শাখার নেতা-কর্মীরা ক্যাম্পাসজুড়ে মোটরসাইকেলের শোডাউনও দিচ্ছেন। নেতা-কর্মীদের একটি অংশ টিএসসির সামনে ক্রিকেট খেলছে।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বিদায়ী কমিটির সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস ও সাদ্দাম হোসেনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ক্যাম্পাসে অবস্থান করছেন। তবে ক্যাম্পাসের অন্য এলাকাগুলো আজ ফাঁকা। এর কারণ হিসেবে শিক্ষার্থীরা গতকাল শুক্রবার গভীর রাত পর্যন্ত আর্জেন্টিনার খেলা দেখা ও আতঙ্কের কথা বলছেন।
এদিকে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন শিক্ষার্থীবৃন্দের’ ব্যানারে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে চলছে ‘বিজয় মঞ্চ: সন্ত্রাস রুখতে সাংস্কৃতিক প্রতিরোধ’ শীর্ষক সাংস্কৃতিক আয়োজনের প্রস্তুতি। এ আয়োজনে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত থাকছে প্রতিবাদী গান, নৃত্য, আবৃত্তি, মঞ্চনাটক, মূকাভিনয়, বিতর্কসহ নানা পরিবেশনা। মূলত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিভিত্তিক সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো ‘সচেতন শিক্ষার্থীবৃন্দের’ ব্যানারে আজকের সাংস্কৃতিক আয়োজনটি করছেন। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় টিএসসিভিত্তিক সংগঠনগুলোর নেতাদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের এক বৈঠকের পর এই আয়োজনের ঘোষণা আসে।
সন্ত্রাসী ছাত্রদের পলিটিক্যাল ফ্রন্ট ছাত্রদল, ঘাতকদের পলিটিক্যাল ফ্রন্টএসব তৎপরতা ও আয়োজনকে ‘শান্তির স্বপক্ষে লড়াই’ বলে আখ্যা দিয়েছেন ছাত্রলীগ নেতা সাদ্দাম হোসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘সন্ত্রাসী ছাত্রদের পলিটিক্যাল ফ্রন্ট হচ্ছে ছাত্রদল আর ঘাতকদের পলিটিক্যাল ফ্রন্ট হচ্ছে বিএনপি। ইতিমধ্যেই দেশব্যাপী তারা নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চালানোর চেষ্টা করছে। তাদের তিন বছরব্যাপী অগ্নিসন্ত্রাসের অভিজ্ঞতা আমাদের আছে। তাদের ককটেলবাজি ও বোমাবাজির শিকার হয়ে অনেক শিক্ষার্থী এখনো দুর্বিষহ যন্ত্রণা ভোগ করছেন। এবারও তাদের সেই অপচেষ্টা রয়েছে বলে আমাদের কাছে সুস্পষ্ট প্রতীয়মান হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লাশ ফেলে পরিস্থিতি ঘোলাটে করা তাদের মূল লক্ষ্য। দেশরত্ন শেখ হাসিনার দূরদর্শী রাষ্ট্র পরিচালনার কারণে ক্যাম্পাসকে সন্ত্রাসমুক্ত রেখে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক পরিবেশ সমুন্নত রাখতে পেরেছি। আজ সেটি বিঘ্নিত হওয়ার একটি আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। সে জন্য আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি। শান্তির স্বপক্ষে এ লড়াইয়ের মাধ্যমে বাংলার মাটি থেকে এসব সন্ত্রাসীর মূলোৎপাটন করতে হবে।’
তবে যাঁদের ঘিরে ছাত্রলীগের এত সব আয়োজন, সেই ছাত্রদল আজ ক্যাম্পাস এলাকায় আসছে না বলে জানা গেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের একাধিক নেতা প্রথম আলোকে বলেন, গোলাপবাগ মাঠে বিএনপির গণসমাবেশে অংশ নিচ্ছেন ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। এ ছাড়া অনেকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন। আজ ক্যাম্পাসে যাওয়ার পরিকল্পনা নেই ছাত্রদলের। | বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সতর্ক অবস্থান নিয়েছে ছাত্রলীগ। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম এই সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ক্যাম্পাসের প্রবেশমুখসহ গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোয় অবস্থান করছেন। চলছে মিছিল, সেখানে দেওয়া হচ্ছে বিএনপি-জামায়াত ও ছাত্রদল-শিবিরবিরোধী নানা স্লোগান। মোটরসাইকেলের মহড়াও দিচ্ছেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। অবস্থান ও মহড়ার পাশাপাশি ‘সচেতন শিক্ষার্থী’দের ব্যানারে আজ শনিবার বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত ক্যাম্পাসের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) রাজু ভাস্কর্যে থাকছে সাংস্কৃতিক আয়োজন। টিএসসির সামনে ক্রিকেট খেলায়ও ব্যস্ত কেউ কেউ। |
সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় ছেলের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ | চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় দুই ছেলেকে সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় বৃদ্ধ বাবাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন ও মেরে ফেলার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ করেন ওই বৃদ্ধ। গত মঙ্গলবার সকালে ওই ব্যক্তি নিজ বাড়িতে নির্যাতনের শিকার হন।
নির্যাতনের শিকার ও অভিযোগকারী ওই ব্যক্তির নাম আদম আলী (৭২)। তাঁর বাড়ি উপজেলার নওগাঁও গ্রামে। অভিযুক্ত বিল্লাল হোসেন ও মো. হেলাল হোসেন তাঁর বড় ও মেজ ছেলে।
অভিযোগপত্রে আদম আলী উল্লেখ করেন, তাঁর নিজের নামে ৭০০ শতাংশ জায়গা রয়েছে। তাঁর চার ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। তাঁর স্ত্রী সাজেদা বেগম (৬৫) দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। ছেলেরা কেউই তাঁকে ও তাঁর স্ত্রীকে ভরণপোষণ দিচ্ছেন না। প্রায় এক বছর ধরে তাঁর বড় ছেলে বিল্লাল হোসেন ও মেজ ছেলে মো. হেলাল হোসেন তাঁদের নামে সম্পত্তি লিখে দেওয়ার জন্য নানাভাবে তাঁকে চাপ দিচ্ছেন। এতে রাজি না হওয়ায় তাঁরা তাঁর ওপর শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন চালিয়ে আসছেন।
আদম আলী অভিযোগ করেন, গত মঙ্গলবার সকালে বাড়িতে ওই দুই ছেলে তাঁদের নামে সম্পত্তি লিখে দেওয়ার জন্য তাঁর ওপর চড়াও হন। এতে রাজি না হওয়ায় তাঁরা দুজনে মিলে তাঁর গলা চেপে ধরেন এবং মারধর করেন। পরে গলার কাছে ছুরি ধরে তাঁকে মেরে ফেলার হুমকি দেন। এ সময় চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন সেখানে এলে মারধর বন্ধ করে চলে যান তাঁরা। এ ঘটনার পর তিনি বিষয়টি পুলিশকে জানালেও কাজ হয়নি।
আদম আলী আরও বলেন, ঘটনাটির পর থেকে তিনি ও তাঁর স্ত্রী নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। আপাতত এর বিচার চেয়ে ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। পরে থানায় মামলা করবেন। অভিযোগের ব্যাপারে বিল্লাল হোসেন ও মো. হেলাল হোসেনের মুঠোফোন নম্বরে গতকাল দুপুরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়।
পরিবার সূত্র জানায়, ইউএনওর কাছে অভিযোগ দেওয়ার পর থেকে তাঁরা এলাকায় নেই। তাঁদের মুঠোফোন নম্বরও বন্ধ।
মতলব দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম বলেন, এ ব্যাপারে কোনো অভিযোগ পাননি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেবেন।
ইউএনও রেনু দাস বলেন, ওই বৃদ্ধের কাছ থেকে গত বৃহস্পতিবার এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। দু-তিন দিনের মধ্যে তাঁর ওই দুই ছেলেকে ডেকে আনবেন। উভয় পক্ষকে নিয়ে বসে সমস্যাটির সমাধানের চেষ্টা করবেন। এরপরও যদি ছেলেরা ওই বাবার ওপর নির্যাতন ও হুমকি অব্যাহত রাখেন, তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। | চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় দুই ছেলেকে সম্পত্তি লিখে না দেওয়ায় বৃদ্ধ বাবাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন ও মেরে ফেলার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। |
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে পড়ে থাকা বাসে আগুন | ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার কাঁচপুর এলাকায় একটি বাস আগুনে পুড়ে গেছে। আজ শনিবার ভোরে মহাসড়কের পাশে থাকা তিশা পরিবহন নামের বাসটিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কাউকে শনাক্ত বা আটক করতে পারেনি পুলিশ।
কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেম প্রথম আলোকে বলেন, বাসটি সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাঁচপুর এলাকায় মহাসড়কের পাশে ডাম্পিং করা অবস্থায় ছিল। আজ ভোরে কে বা কারা বাসটিতে আগুন দিয়েছে। তিনি বলেন, ধারণা করা হচ্ছে মাদকাসক্ত কোনো ব্যক্তি ধূমপানে পর সিগারেটের অবশিষ্টাংশ বাসের মধ্যে ফেলেছেন। এটি থেকে আগুন লাগতে পারে। এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি। | ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার কাঁচপুর এলাকায় একটি বাস আগুনে পুড়ে গেছে। আজ শনিবার ভোরে মহাসড়কের পাশে থাকা তিশা পরিবহন নামের বাসটিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কাউকে শনাক্ত বা আটক করতে পারেনি পুলিশ। |
বিশ্বকাপ নিয়ে দুই কিশোরের ঝগড়া, একজনের বাবাকে বল্লমে খুঁচিয়ে হত্যা | বিশ্বকাপ ফুটবল খেলার সমর্থন নিয়ে গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে দুই কিশোরের মধ্যে ঝগড়া হয়। এর সূত্র ধরে আজ শনিবার সকালে এক কিশোরের বাবাকে ধানখেতে বল্লম দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার আদিত্যপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তির নাম শহীদ মিয়া। তাঁর বাড়ি উপজেলার আদিত্যপুর গ্রামে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাতে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার কাছে ব্রাজিল হেরে যায়। ম্যাচ শেষে উপজেলার আদিত্যপুর গ্রামের শহীদ মিয়ার ছেলে আর্জেটিনার সমর্থক রোকন (১৩) বাড়ির সামনের উঠানে উল্লাস করে। এ নিয়ে কথা–কাটাকাটি হয় প্রতিবেশী টেনু মিয়ার ছেলে ব্রাজিল সমর্থক মোবাচ্ছিরের (১৩) সঙ্গে। এ ঘটনার সূত্র ধরে রাতে দুই পক্ষের অভিভাবকেরা ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়েন।
আজ সকাল ৯টার দিকে রোকনের বাবা শহীদ মিয়া গ্রামের মধ্যে নিজের কৃষিখেতে যান। এ সময় টেনু মিয়ার স্বজনেরা শহীদ মিয়ার ওপর হামলা করেন।
একপর্যায়ে শহীদ মিয়াকে বল্লম দিয়ে খুঁচিয়ে আহত করেন তাঁরা। উদ্ধার করে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন।
বাহুবল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাকিবুল ইসলাম খান প্রথম আলোকে বলেন, খবর পেয়ে বাহুবল থানা–পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। | বিশ্বকাপ ফুটবল খেলার সমর্থন নিয়ে গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে দুই কিশোরের মধ্যে ঝগড়া হয়। এর সূত্র ধরে আজ শনিবার সকালে এক কিশোরের বাবাকে ধানখেতে বল্লম দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। |
ইয়াবা কারবার নিয়ে বিরোধ, প্রতিপক্ষের হামলায় এক যুবক নিহত | কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় প্রতিপক্ষের হামলায় এক ব্যক্তি মারা গেছেন। এ সময় আহত হন আরও একজন। আহত ব্যক্তির বরাত দিয়ে থানা-পুলিশ জানিয়েছে, ইয়াবা কারবারের বিরোধের জেরে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
গতকাল শুক্রবার রাত নয়টার দিকে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের মরিচ্যাঘোনা বড়বিল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তির নাম মো. হুমায়ুন রশিদ ওরফে সুমন মিয়া (৩৫)। তিনি লক্ষ্মীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানা এলাকার বাসিন্দা। আহত হয়েছেন জহিরুল ইসলাম (৩৮)। তিনিও লক্ষ্মীপুরের বাসিন্দা। জহিরুলকে বর্তমানে টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
টেকনাফ মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. নাছির উদ্দিন মজুমদার বলেন, গতকাল রাতে মরিচ্যাঘোনা বড়বিল এলাকায় সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্যরা ওই দুই ব্যক্তির ওপর হামলা চালান। এতে ঘটনাস্থলে একজন নিহত ও একজন আহত হয়েছেন। চিকিৎসাধীন জহিরুল পুলিশকে জানিয়েছেন, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে হুমায়ুন ও জহিরুল লক্ষ্মীপুর থেকে কক্সবাজার বেড়াতে আসেন। গতকাল সকালে তাঁরা পূর্বপরিচয়ের সূত্রে মরিচ্যাঘোনা এলাকার মোহাম্মদ রাসেলের বাড়িতে বেড়াতে যান। কক্সবাজার কারাগারে থাকার সময় হুমায়ুনের সঙ্গে মোহাম্মদ রাসেলের মধ্যে পরিচয় হয় এবং ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
জহিরুলের বরাত দিয়ে নাছির উদ্দিন মজুমদার বলেন, হ্নীলায় পৌঁছানোর পর হুমায়ুনের সঙ্গে রাসেল ও মো. ইব্রাহিম নামের দুই ব্যক্তির আলাপ-আলোচনা হয়। আলাপ শেষে তাঁরা সুমন ও জহিরুলকে গাড়িতে তুলে দেওয়ার কথা বলে স্থানীয় এক পাহাড়ে নিয়ে যান। সেখানে রাসেল, ইব্রাহিমসহ আরও পাঁচ থেকে ছয়জন মিলে তাঁদের (সুমন ও জহিরুল) লোহার রড দিয়ে মারধর করতে থাকেন। এ সময় হুমায়ুনের কাছ থেকে পাওনা বাবদ তিন লাখ টাকা ফেরত দেওয়ার দাবি করেন। মারধরের একপর্যায়ে সুমন আহত হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যান। আর আহত জহিরুলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক মো. এনামুল হক বলেন, জহিরুলকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাঁর শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্ন দেখা গেছে।
নাছির উদ্দিন মজুমদার বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ইয়াবার টাকা লেনদেনকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চালানো হচ্ছে। আজ ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে।
নিহত হুমায়ুনের স্ত্রী শাহেনা আক্তার মুঠোফোনে বলেন, হুমায়ুন আর জহিরুল সিলেট হয়ে টেকনাফে গেছেন। যাওয়ার সময় তাঁরা তিন লাখ টাকাও নিয়ে গেছেন। তিনি তাঁর স্বামীর হত্যার বিচার চান। | কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় প্রতিপক্ষের হামলায় এক ব্যক্তি মারা গেছেন। এ সময় আহত হন আরও একজন। আহত ব্যক্তির বরাত দিয়ে থানা-পুলিশ জানিয়েছে, ইয়াবা কারবারের বিরোধের জেরে এ হামলার ঘটনা ঘটে। |
মুগদায় বিএনপি-আ.লীগ পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ | বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশস্থলের কাছে মুগদা হাসপাতালের সামনে বিএনপি কর্মীদের সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় দুটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। বিএনপির নেতা-কর্মীদের দাবি, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাঁদের ওপর হামলা চালিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, আজ শনিবার বিএনপির সমাবেশস্থল গোলাপবাগ মাঠের চারপাশের সড়কে বিএনপির নেতা-কর্মীরা অবস্থান করছেন। এলাকায় এলাকায় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও মাঠে রয়েছেন। বেলা তিনটার দিকে মুগদা হাসপাতালের সামনে হঠাৎ পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। কে বা কারা এ সময় দুটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে।
এ বিষয়ে পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার হায়াতুল ইসলাম খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘শুনেছি মুগদা হাসপাতাল এলাকায় ছাত্রলীগ ও বিএনপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় দুটি মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়া হয়েছে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। মোটরসাইকেলে কারা আগুন দিয়েছে, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।’ ঘটনাস্থলে সবুজবাগ এবং মুগদা থানার পুলিশ সদস্যরা অবস্থান করছেন।
বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ কেন্দ্র করে আজ সকাল থেকে রাজধানীর মোড়ে মোড়ে অবস্থান নেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। তাঁরা সড়কে প্যান্ডেল টানিয়ে চেয়ার পেতে বসেছেন। তাঁদের দাবি, সমাবেশ কেন্দ্র করে বিএনপি কোনো অরাজকতা করার চেষ্টা করলে তা প্রতিহত করতে তাঁরা মাঠে নেমেছেন।
এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
মুঠোফোন ঘেঁটে ‘বিএনপি সমর্থক’ ১০-১২ জনকে পুলিশে দিল ছাত্রলীগ
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বাসে তল্লাশি চালিয়ে ৬ জনকে আটক
বিএনপির সমাবেশ সুন্দরভাবে শেষ করতে কাজ চলছে: পুলিশ | বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশস্থলের কাছে মুগদা হাসপাতালের সামনে বিএনপি কর্মীদের সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় দুটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। বিএনপির নেতা-কর্মীদের দাবি, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাঁদের ওপর হামলা চালিয়েছেন। |
হঠাৎ বাস বন্ধ, দুর্ভোগে যাত্রীরা | রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন মাসুদ মিয়া। গত বৃহস্পতিবার হঠাৎ তাঁর বাবা অসুস্থ হয়ে পড়ার খবর শুনে গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের নাগরপুরে গিয়েছিলেন। শুক্রবার ছুটি থাকায় গ্রাম থেকে আর ফেরেননি। আজ শনিবার সকালে বাড়ি থেকে রওনা দিয়ে দেখেন বাস বন্ধ। অথচ গণপরিবহন বন্ধ থাকবে এমন কোনো পূর্বঘোষণা ছিল না।
মাসুদ মিয়া টাঙ্গাইলের নাগরপুর থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় নবীনগরের কালামপুর আসেন। ভাড়া লাগে ১২০ টাকা। এরপর আরও চারবার বিভিন্ন জায়গায় লেগুনা, অটোরিকশা ও রিকশায় আমিনবাজার পর্যন্ত পৌঁছান। তাতে মোট খরচ হয় ১১০ টাকা। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তিনি হেঁটে গাবতলী-আমিনবাজার সেতু পার হচ্ছিলেন। তখন কথা হয় প্রথম আলোর প্রতিবেদকের সঙ্গে। ধানমন্ডি ৭ নম্বর তাঁর কর্মস্থল বলে জানান।
মাসুদ মিয়া বলেন, এত কষ্ট করে আসতে হয়েছে, বলে বোঝানো যাবে না। পুলিশ গাড়ি চলতে দিচ্ছে না। গাড়ি বন্ধ থাকবে আগে থেকে ঘোষণাও দেওয়া হয়নি। সাধারণ মানুষের সঙ্গে এমন প্রতারণার কোনো মানে হয় না।
আজ বেলা ১১টার দিকে গাবতলী বাস টার্মিনাল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ঢাকার ভেতরে চলাচলকারী বাস চলছে না। হঠাৎ দু-একটি দূরপাল্লার বাস গাবতলী আসছে। গত তিন দিনের মতো আজও পুলিশের তল্লাশি কার্যক্রম চলমান।
বাস চলাচল বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ। দাপ্তরিক কাজে বা জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়া লোকজনকে বাস না পেয়ে রিকশা কিংবা ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে হচ্ছে। অতিরিক্ত ভাড়ার কারণে অনেকে হেঁটে গন্তব্যে যাচ্ছেন।
অনেককে গাবতলী-আমিনবাজার সেতু দিয়ে হেঁটে আসতে দেখা গেছে। রিকশাচালকেরা আমিনবাজার অংশ থেকে গাবতলী অংশের সেতু পার করাচ্ছেন ২০ টাকায়। রিকশাচালক মো. বাদল বলেন, ‘আমিনবাজারে আটকে দিচ্ছে, যাত্রী নিয়ে এপারে আসতে দিচ্ছে না। শুধু সেতু পারাপার করাচ্ছি। ২০ টাকা ভাড়া নিচ্ছি।’
হাতে ভারী দুটি বাজারের ব্যাগ নিয়ে সেতু দিয়ে হেঁটে আসছিলেন জহুরা বেগম। ব্যাগের কারণে হাঁটতে কষ্ট হচ্ছিল এই নারীর। জহুরা বেগম বলেন, মানিকনগর থেকে আসতে পাঁচবার অটোরিকশা বদলাতে হয়েছে। পাঁচবারে খরচ হয়েছে ১৫০ টাকা। অথচ কামরাঙ্গীরচর যেতে খরচ হতো মোট ৩০ টাকা। গাবতলী আসতেই ১২০ টাকা বেশি খরচ হয়েছে। কষ্টের কথা তো বাদ।
ব্যাগ, মালপত্র ও ৯ বছরের ছেলে নাফিসকে নিয়ে ১৫০ টাকা খরচ করে রিকশায় গাবতলী-আমিনবাজার সেতু পর্যন্ত আসেন সুমি বেগম। বাইপাইলে চাকরির খোঁজে বোনের বাসায় গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু চাকরি না পেয়ে আগের কাজের এলাকা নারায়ণগঞ্জে ফিরে যাচ্ছিলেন তিনি। তাঁর স্বামী সাত বছর আগে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে।
সুমি বেগম বলেন, ‘গাড়ি বন্ধ থাকবে, তা জানা ছিল না। হেমায়েতপুর পর্যন্ত একটি বাসে আসছিলাম। সেখানে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিয়েছে পুলিশ। তাই অটোরিকশায় এসেছি।’ | রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন মাসুদ মিয়া। গত বৃহস্পতিবার হঠাৎ তাঁর বাবা অসুস্থ হয়ে পড়ার খবর শুনে গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের নাগরপুরে গিয়েছিলেন। শুক্রবার ছুটি থাকায় গ্রাম থেকে আর ফেরেননি। আজ শনিবার সকালে বাড়ি থেকে রওনা দিয়ে দেখেন বাস বন্ধ। অথচ গণপরিবহন বন্ধ থাকবে এমন কোনো পূর্বঘোষণা ছিল না। |
সরাইলে ঢাকা–সিলেট মহাসড়কে ঢাকামুখী বাস চলাচল বন্ধ | ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল বিশ্বরোড মোড় হয়ে ঢাকাগামী কোনো যাত্রীবাহী বাস আজ শনিবার ছেড়ে যায়নি। গতকাল শুক্রবার সারা দিনে ঢাকা-সিলেট ও কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের এই মোড় হয়ে যাত্রীশূন্য কয়েকটি বাস ছেড়ে গেলেও আজ শনিবার ভোর থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত একটি বাসও ছেড়ে যায়নি। ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
আজ সকাল ৯টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত সময়ে বিশ্বরোড মোড়ে অবস্থান করে দেখা গেছে, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ঢাকামুখী কোনো বাস, যাত্রীবাহী মাইক্রোবাস ও ব্যক্তিগত কোনো যানবাহন ছেড়ে যাচ্ছে না। পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বাস ও যাত্রীবাহী অন্যান্য যানবাহন বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। জেলার অভ্যন্তরীণ রুটেও বাস চলাচল করছে কম। এই সুযোগে মহাসড়কে নিষিদ্ধঘোষিত সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা যাত্রী নিয়ে অবাধে চলাচল করছে। সাধারণত মহাসড়কে তিন চাকার কোনো যান চলাচল করলে হাইওয়ে পুলিশ তা আটক করে মামলা দিয়ে থাকে। তবে গতকাল থেকে হাইওয়ে পুলিশ ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অংশে চলাচলকারী কোনো তিন চাকার যানবাহন আটক করেনি। মামলাও দেয়নি।
সরাইল বিশ্বরোড মোড়ে ঢাকাগামী বাস কাউন্টার রয়েছে ১৬টি। আজ একটি কাউন্টারও খোলেনি। ঢাকাগামী বাস বা অন্য কোনো যানবাহন না পেয়ে জরুরি প্রয়োজনে যাঁরা ঢাকা বা ঢাকা হয়ে অন্যান্য জেলা যেতে চেয়েছেন, তাঁদের দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর ফিরে যেতে হয়েছে। ময়মনসিংহ বা সিলেটগামী লোকজনকেও বিপাকে পড়তে হয়েছে।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শামীমুল হক (৩৫) নামের এক যাত্রী বলেন, ‘ঘণ্টাখানেক আগে বিশ্বরোড মোড়ে এসেছি। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে যাব ঘাটাইল। কিন্তু কোনো বাস বা অন্য কোনো যানবাহনও পাচ্ছি না। এখন বিপদে পড়েছি।’
বেলা ১১টার দিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক সেনা সদস্য বলেন, ‘সকাল সাড়ে সাতটায় এখানে এসেছি। ঢাকা হয়ে আজই যশোরে যাওয়ার কথা, কিন্তু কোনো উপায় পাচ্ছি না। বিষয়টি আমার ইউনিটকে অবহিত করেছি। এখনো কোনো উত্তর পাইনি।’
সিলেট-ময়মনসিংহের বাস কাউন্টার পরিচালনা করেন রওশন আলী (৫৫)। দুপুর ১২টার দিকে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজ সিলেট থেকে একটি বাসও ছেড়ে আসেনি। কিছু যাত্রী আইছিল অনেকক্ষণ বসে চলে গেছে।’ আলম মিয়া (৩০) নামের এক পরিবহন শ্রমিক বলেন, ‘আজ হরতাল, তাই বাস নাই।’
সরাইল খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুখেন্দু বসু প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত দুই দিনে আমরা কোনো যানবাহন আটক করিনি, মামলাও দেইনি। আমরা মহাসড়কে চলাচলকারী কোনো যানবাহনে তল্লাশিও করেনি। কী কারণে বাস চলাচল করছে না আমরা বলতে পারব না।’ | ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল বিশ্বরোড মোড় হয়ে ঢাকাগামী কোনো যাত্রীবাহী বাস আজ শনিবার ছেড়ে যায়নি। গতকাল শুক্রবার সারা দিনে ঢাকা-সিলেট ও কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের এই মোড় হয়ে যাত্রীশূন্য কয়েকটি বাস ছেড়ে গেলেও আজ শনিবার ভোর থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত একটি বাসও ছেড়ে যায়নি। ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। |
বিশ্বকাপে ব্রাজিলের পরাজয়ের পর রাজশাহীতে বাড়িঘরে হামলা-ভাঙচুর | বিশ্বকাপ ফুটবলের কোয়ার্টার ফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার কাছে ব্রাজিল দলের পরাজয়ের পর রাজশাহীতে বাড়িঘরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শুক্রবার রাতে ম্যাচপরবর্তী সময়ে নগরের বন্ধগেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের দাবি, পূর্বশত্রুতার জেরে এলাকার কয়েক ব্যক্তি এ হামলা করেছেন। হামলায় দুজন আহত হয়েছেন।
আহত ব্যক্তিরা হলেন বন্ধগেট এলাকার মো. আবদুল কুদ্দুসের ছেলে মো. হোসাইন রিফাত (২২) ও মো. এহসান রায়হান (২০)। রাতেই তাঁরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
এ ঘটনায় ওই তরুণদের মা লাবণী (৪০) রাতেই নগরের রাজপাড়া থানায় বন্ধগেট নতুন বিলসিমলা এলাকার মো. মিলন (৩৫), মো. হানিফ (২৮), মো. মুন (৩২) ও মো. রাহিমের (২০) বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ২০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
অভিযোগে বাদী লাবণী উল্লেখ করেন, গতকাল দিবাগত রাত ১২টার দিকে তাঁর বাসার পাশে বিশ্বকাপ খেলা দেখার সময় তাঁর ছেলে রিফাত ও রায়হানকে অভিযুক্ত মিলন ধাক্কা দেন। এ নিয়ে কথা–কাটাকাটির একপর্যায়ে কয়েকজন মিলে তাঁদের মারধর শুরু করেন। পূর্বশত্রুতার জেরে তাঁরা ইট দিয়ে আঘাত করেন এবং উপর্যুপরি কিলঘুষি মারতে থাকেন। এ সময় বাড়ির গেট খুলে বাইরে বের হলে তাঁর দুই ছেলে দৌড়ে বাসায় ঢুকে যান। তিনি তৎক্ষণাৎ বাসার গেট বন্ধ করে দেন। এ সময় রামদা, লোহার পাইপসহ বিভিন্ন ধরনের দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাড়িতে হামলা চালান তাঁরা। ঘরের প্রধান ফটক ও জানালা ভাঙচুর করেন। তাঁদের ঘরে হামলার পাশাপাশি তাঁর ভাশুরের ঘরের জানালা–দরজা ভাঙার চেষ্টা করেন তাঁরা। পরে এলাকাবাসী ও পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে তাঁরা রক্ষা পান। যাওয়ার সময় তাঁরা দুই ছেলেকে হত্যার হুমকি দিয়ে গেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
সরেজমিন দেখা গেছে, বন্ধগেট রেলক্রসিং থেকে ২০ মিটার দূরে ডান পাশে একটি পরিত্যক্ত ফাঁকা জায়গায় ব্যাডমিন্টনের খেলার মাঠ। ওই মাঠের পাশে সাততলা ভবনের দেয়ালে টাঙানো সাদা কাপড়। রাতে ওখানেই ফুটবল খেলা দেখেন লোকজন। ওই জায়গা থেকে ২০ মিটার দূরে ভুক্তভোগী তরুণদের বাড়ি। স্থানীয় লোকজন বাড়ির ফটকের ভাঙা অংশ দেখে আলাপ করছেন। ইন্ডাস্ট্রিয়াল টিন দিয়ে তৈরি বাড়ির প্রধান ফটকের নিচের অংশ কাটা পড়ে আছে। পাশেই একটি জানালার কাচসহ ভাঙা। বাড়ির পূর্ব পাশে দুটি জানালায় দায়ের কোপ দেখা গেছে। পাশেই প্রতিবেশী আরেকজনের বাড়ির দরজায়ও কোপ দেওয়া হয়েছে।
লাবণী প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা খুবই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। হামলাকারীরা যাওয়ার সময় ছেলেদের মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে গেছে। এটা শুধু খেলার জন্য নয়। খেলাকে অজুহাত বানিয়ে তাঁর দুই ছেলেকে মারতে চেয়েছিল। ব্যর্থ হয়ে বাড়িঘরে হামলা চালায়। এ ঘটনায় তাঁরা নিরাপত্তা চান।
লাবণীর স্বামী আবদুল কুদ্দুস বিমানবাহিনীতে চাকরি করেন। তিনি বলেন, খুব শঙ্কার মধ্যে আছেন। তিনি কালই চলে যাবেন। এ বিষয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
নগরের রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এস এম সিদ্দিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ওই এলাকায় খেলাকে কেন্দ্র করে বাড়িঘরে হামলার খবর তাঁরা পান। রাতেই তাঁরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ ব্যাপারে থানায় একটি অভিযোগ পেয়েছেন তাঁরা। তদন্ত করে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এটি কোনো পূর্বঘটনার জেরে কি না, সেটিও তদন্ত করে বের করা হবে। | বিশ্বকাপ ফুটবলের কোয়ার্টার ফাইনালে ক্রোয়েশিয়ার কাছে ব্রাজিল দলের পরাজয়ের পর রাজশাহীতে বাড়িঘরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শুক্রবার রাতে ম্যাচপরবর্তী সময়ে নগরের বন্ধগেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের দাবি, পূর্বশত্রুতার জেরে এলাকার কয়েক ব্যক্তি এ হামলা করেছেন। হামলায় দুজন আহত হয়েছেন। |
বাঘাইছড়িতে একজনকে হত্যার পর গণপিটুনিতে মানসিক ভারসাম্যহীন যুবকের মৃত্যু | রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে মঞ্জু চাকমা (৩৬) মানসিক ভারসাম্যহীন এক যুবকের দা-এর কোপে সরল চাকমা (৬০) নামের এক ব্যক্তি মারা গেছেন। আজ শনিবার বেলা তিনটার দিকে উপজেলার সারোয়াতলী ইউনিয়নের চিন্তারামছড়া গ্রামে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। পরে গণপিটুনিতে মঞ্জু চাকমার মৃত্যু হয়। এর আগে গতকাল শুক্রবার রাতে ওই মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক তাঁর বাবা-মাকে কুপিয়ে জখম করেন বলে জানা গেছে।
নিহত সরল চাকমা কাঠের ব্যবসা করতেন। তিনি সারোয়াতলী ইউনিয়নের উত্তর শিজক গ্রামের জেরবো মুনি চাকমার ছেলে। পরিবারে তাঁর স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। গণপিটুনিতে মারা যাওয়া মঞ্জু চাকমার বাড়িও একই গ্রামে।
স্থানীয় লোকজন ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল রাতে মঞ্জু চাকমা তাঁর বাবা-মায়ের ওপর হামলার পর পালিয়ে যান। আজ তাঁকে বুঝিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসার জন্য উত্তর শিজক গ্রামের ২০ থেকে ৩০ জন তাঁকে খুঁজতে বের হন। তাঁকে খোঁজার একপর্যায়ে গ্রামের কালভার্ট এলাকায় পৌঁছালে ধন্য চাকমা (৩৫) ও সরল চাকমার (৬০) ওপর অতর্কিতে হামলা করেন মঞ্জু। পরে ধন্য চাকমা পালিয়ে যেতে পারলেও সরল চাকমা পালাতে পারেননি। তাঁর মাথাসহ বিভিন্ন স্থানে দা দিয়ে কোপালে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকার শত শত লোক ঘিরে ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন মঞ্জু চাকমাকে গণপিটুনি দিলে ঘটনাস্থলেই মঞ্জুর মৃত্যু হয়।
গতকাল রাতে মঞ্জু চাকমা তাঁর মা কালাচুলি চাকমা (৫৫) ও বাবা রত্ন কুমার চাকমার সঙ্গে বাড়িতে টেলিভিশন দেখছিলেন। রাত ৮টার দিকে হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে যায়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পাশে থাকা দা দিয়ে বাবা-মাকে এলোপাতাড়ি কোপান মঞ্জু। পরে তাঁদের চিৎকারে এলাকায় লোকজন ছুটে এলে মঞ্জু পালিয়ে যান। রক্তাক্ত অবস্থায় দুজনকে উদ্ধার করে প্রথমে বাঘাইছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে খাগড়াছড়ি জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে অবস্থার আরও অবনতি হলে তাঁদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মধুসূদন চাকমা বলেন, ‘মানসিক ভারসাম্যহীন মঞ্জু চাকমা আমার বড় ভাইয়ের ছেলে। আজ ও গতকাল যে ঘটনা ঘটেছে, খুবই দুঃখজনক। আমার বড় ভাই ও ভাবি শঙ্কামুক্ত। ঘটনার পর তাংগুমা গ্রামে মঞ্জু একজন স্বজনের বাড়িতে গিয়ে ভাত খেয়েছে। তার ভয়ে সবাই পালিয়ে গেছে। তবে আজ মঞ্জুর হামলায় একজন মারা গেছেন এবং গণপিটুনিতে মঞ্জুও মারা গেছে।’
বাঘাইছড়ি থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ‘দা দিয়ে কুপিয়ে একজনের মৃত্যু ও মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তির গণপিটুনিতে মারা যাওয়ার খবর শুনেছি। বিস্তারিত জানতে ঘটনাস্থলে যাচ্ছি।’ | রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে মঞ্জু চাকমা (৩৬) মানসিক ভারসাম্যহীন এক যুবকের দা-এর কোপে সরল চাকমা (৬০) নামের এক ব্যক্তি মারা গেছেন। আজ শনিবার বেলা তিনটার দিকে উপজেলার সারোয়াতলী ইউনিয়নের চিন্তারামছড়া গ্রামে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। পরে গণপিটুনিতে মঞ্জু চাকমার মৃত্যু হয়। এর আগে গতকাল শুক্রবার রাতে ওই মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক তাঁর বাবা-মাকে কুপিয়ে জখম করেন বলে জানা গেছে। |
ভালোবেসে আট শতাধিক ভক্তের শরীরে আর্জেন্টিনার পতাকা এঁকেছেন হাসমত | হাসমত আলী ওরফে টোকোন পেশায় একজন চিত্রশিল্পী। বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড, ব্যানার, বিলবোর্ড আঁকাই তাঁর কাজ। আর্জেন্টিনা ফুটবল দল ও মেসিকে দারুণ ভালোবাসেন। ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে বিশ্বকাপ শুরুর পর বিনা মূল্যে আট শতাধিক সমর্থকের শরীরে আর্জেন্টিনার পতাকা এঁকেছেন তিনি।
হাসমতের বাড়ি পাবনার বেড়া পৌর এলাকার বনগ্রাম মহল্লায়। বিশ্বকাপ ফুটবল শুরুর আগে থেকেই বেড়া পৌর এলাকায় ব্রাজিল, আর্জেন্টিনাসহ বিভিন্ন দলের ভক্তদের উন্মাদনা শুরু হয়। প্রিয় দলের পতাকা, ব্যানার টাঙানোর প্রতিযোগিতায় নামেন ভক্তরা।
নিজ দলের খেলার দিন অনেকে হাত-মুখসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় দলীয় পতাকা এঁকে খেলা দেখতে ভালোবাসে। ইতিমধ্যে পৌর এলাকাজুড়ে শিশু-কিশোরদের মধ্যে প্রিয় দলের পতাকা আঁকানোর প্রবণতা তৈরি হয়েছে। এমন আগ্রহের পেছনে মূল ব্যক্তি হাসমত।
হাসমত আলী প্রথম আলোকে বলেন, যেদিন আর্জেন্টিনা দলের খেলা থাকে, সেদিন দুপুর থেকেই তাঁর বাড়িতে ভক্তদের আনাগোনা শুরু হয়। উদ্দেশ্য মুখে, হাতে বা শরীরে আর্জেন্টিনার পতাকা আঁকানো। আর্জেন্টিনার জার্সির সঙ্গে শরীরে পতাকা এঁকে বড় পর্দায় সবার সঙ্গে খেলা দেখা বা ঘুরে বেড়ানোর মজাই আলাদা। দল জিতলে পরদিন সকালেও অনেকে পতাকা আঁকানোর জন্য তাঁর বাড়িতে হাজির হন।
সরেজমিনে হাসমত আলীর বাড়ির পাশে দেখা গেছে, হাসমত আলীকে ঘিরে শিশু-কিশোরদের ভিড়। হাসমত আলী এক মনে শিশু-কিশোরদের মুখে বা শরীরে রংতুলি দিয়ে আর্জেন্টিনার পতাকা এঁকে চলেছেন। সঙ্গে অবশ্য অনেকে বাংলাদেশের পতাকাও আঁকছেন।
পতাকা আঁকতে আসা বনগ্রাম মহল্লার তাসমিয়া, আরিফসহ ১০-১২ জন শিশু-কিশোর জানায়, গতকাল রাতে আর্জেন্টিনা সেমিফাইনালে উঠেছে। এ জন্য আজ আর্জেন্টিনার পতাকা এঁকে ঘুরে বেড়াবে তারা। তাই পতাকা আঁকার জন্য এসেছে। খেলা উপলক্ষে কালও তাদের অনেকে হাসমত আলীর মাধ্যমে পতাকা এঁকেছে।
হাসমত আলী বলেন, ‘আর্জেন্টিনাকে ভালোবাসি। তাই প্রিয় দলের পতাকা কেউ আঁকিয়ে নিতে চাইলে “না” করতে পারি না। আর্জেন্টিনা সেমিফাইনালে ওঠায় আজ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রায় ২৫০ জনের শরীরে পতাকা এঁকেছি। গতকাল কোয়ার্টার ফাইনাল উপলক্ষে ২৫০ থেকে ৩০০ জনের শরীরে এঁকেছি। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত আট শতাধিক মানুষের শরীরে পতাকা এঁকেছি। আশা করি, আর্জেন্টিনা ফাইনালে উঠবে এবং শেষ পর্যন্ত দেড় হাজারের বেশি পতাকা হয়তো আমাকে আঁকতে হবে।’
আর্জেন্টিনার সমর্থক ও বেড়া বাজারের ব্যবসায়ী এনামুল হক বলেন, ‘শুনেছি, হাসমত আলী এ পর্যন্ত ৭০০ থেকে ৮০০ জনের শরীরে আর্জেন্টিনার পতাকা এঁকেছেন। তাঁর আঁকা পতাকার কারণে গোটা এলাকায় উৎসবের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এভাবে পতাকা আঁকায় আনন্দ আরও কয়েক গুণ বেড়ে যাচ্ছে।’ | হাসমত আলী ওরফে টোকোন পেশায় একজন চিত্রশিল্পী। বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড, ব্যানার, বিলবোর্ড আঁকাই তাঁর কাজ। আর্জেন্টিনা ফুটবল দল ও মেসিকে দারুণ ভালোবাসেন। ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে বিশ্বকাপ শুরুর পর বিনা মূল্যে আট শতাধিক সমর্থকের শরীরে আর্জেন্টিনার পতাকা এঁকেছেন তিনি। |
কমলাপুরের আবাসিক হোটেল থেকে লাশ উদ্ধার | রাজধানীর কমলাপুরে একটি আবাসিক হোটেল থেকে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। তাঁর নাম সিদ্দিকুর রহমান (৫০)। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার হয়।
মতিঝিল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য সিদ্দিকুরের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) মর্গে রাখা হয়েছে।
এসআই আমিনুল বলেন, সিদ্দিকুর কমলাপুরে ফুটপাতে বিভিন্ন সরঞ্জাম বিক্রি করতেন। মাঝেমধ্যে তিনি কমলাপুরে ইনসাব নামের একটি আবাসিক হোটেলে থাকতেন। ৭ ডিসেম্বর তিনি ওই হোটেলে ওঠেন। শুক্রবার রাতে হোটেল কর্তৃপক্ষ ভাড়ার টাকা নিতে তাঁর কক্ষে যায়।
এ সময় ভেতর থেকে কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে হোটেল কর্তৃপক্ষ পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ এসে দরজা ভেঙে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে। সিদ্দিকের গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে। | রাজধানীর কমলাপুরে একটি আবাসিক হোটেল থেকে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। তাঁর নাম সিদ্দিকুর রহমান (৫০)। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার হয়। |
পুরান ঢাকায় দোকানপাট খুলছে, লোকজন বাড়ছে | রাজধানীর গোলাপবাগে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ কেন্দ্র করে পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজার, সদরঘাট ও আশপাশ এলাকার দোকানসহ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো দুপুরের পর ধীরে ধীরে খুলতে শুরু করেছে। এ ছাড়া মানুষজনের উপস্থিতি বাড়ছে। তবে দুপুর পর্যন্ত এসব দোকান বন্ধ ছিল।
আজ শনিবার সকাল থেকে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা–কর্মীরা প্রতিবাদ মিছিল করতে থাকেন এসব এলাকায়। এদিকে পুলিশ ও নিরাপত্তাকর্মীরা ছিল সতর্ক অবস্থানে। তবে কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এ সময় ঢাকা থেকে বিভিন্ন রুটে ছেড়ে গেছে কয়েকটি লঞ্চ। বাস চলাচল ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে কম।
দুপুরে লক্ষ্মীবাজারের সুভাষ বোস অ্যাভিনিউয়ে লাঠিসোঁটা নিয়ে মিছিল করতে দেখা যায় ছাত্রলীগ নেতা–কর্মীদের। এ সময় আশপাশের অধিকাংশ দোকান বন্ধ ছিল। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ নেতা–কর্মীদের সকাল থেকে অবস্থান করতে দেখা যায়। তাঁরা ক্যাম্পাস ও আশপাশ এলাকায় মিছিল ও মহড়া দেন।
দুপুর পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে বাস চলাচল প্রায় বন্ধ ছিল। জরুরি প্রয়োজনে যাঁদের সদরঘাটে আসতে হয়েছে, তাঁরা আসেন সিএনজিচালিত অটোরিকশায় বা রিকশায় করে। স্বাধীন মিয়া নামের এক ব্যক্তি যাবেন চাঁদপুরে। এ জন্য মিরপুর থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে সদরঘাটের লালকুঠি ঘাট এলাকায় আসেন। সেখান থেকে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, অন্য সময় এ পথে আসতে ৩০০ টাকা ভাড়া দিলেও চলে। কিন্তু আজ ৭০০ টাকা ভাড়া নিয়েছে।
বাংলাবাজার এলাকার মুদিদোকানদার রমেশ চন্দ্র বলেন, গোলাপবাগে বিএনপির গণসমাবেশ কেন্দ্র করে আজ সকাল থেকে আতঙ্কে লোকজন রাস্তায় কম বেরিয়েছে। লোকজন কম থাকায় অনেকে দোকানপাট খোলেননি। এখন মানুষজন বের হচ্ছে। তাই দোকান খুলতে শুরু করেছে। | রাজধানীর গোলাপবাগে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ কেন্দ্র করে পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজার, সদরঘাট ও আশপাশ এলাকার দোকানসহ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো দুপুরের পর ধীরে ধীরে খুলতে শুরু করেছে। এ ছাড়া মানুষজনের উপস্থিতি বাড়ছে। তবে দুপুর পর্যন্ত এসব দোকান বন্ধ ছিল। |
সিলেটে নতুন ১৪টি গ্যাস কূপে খনন ও পুনঃখনন চলছে | ২০২৫ সালের মধ্যে দৈনিক ১৬৪ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদনের লক্ষ্যে নতুন করে ১৪টি গ্যাস কূপ খনন ও পুনঃখননের কাজ করছে সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেড (এসজিএফএল)। ইতিমধ্যে এক বছরে তিনটি কূপ পুনঃখনন করে দৈনিক ১৬ থেকে ১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় সঞ্চালন লাইনে সরবরাহ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
এসজিএফএল সূত্র জানায়, জ্বালানিসংকট নিরসনে গ্যাসের উত্তোলন বাড়াতে ২০২৫ সালের মধ্যে দেশে মোট ৪৬টি গ্যাস কূপ অনুসন্ধান, খনন ও পুনঃখননের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার। পরিকল্পনা অনুযায়ী, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন (বাপেক্স) ২০টি, বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ড কোম্পানি ১২টি এবং সিলেট গ্যাস ফিল্ড কোম্পানি ১৪টি কূপ খনন ও পুনঃখননের জন্য চিহ্নিত করেছে।
এর অংশ হিসেবে এসজিএফএলের আওতায় সিলেটে আটটি কূপ পুনঃখনন ও ছয়টি কূপ খননের কাজ শুরু হয়েছে। চলতি বছরে সিলেট-৮, কৈলাশ টিলা-৭ ও বিয়ানীবাজার-১ নামে তিনটি পরিত্যক্ত কূপ পুনঃখনন করে দৈনিক ১৬ থেকে ১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় সঞ্চালন লাইনে সরবরাহ করা হচ্ছে। এ ছাড়া আরও পাঁচটি কূপ পুনঃখননের প্রক্রিয়ায় আছে। পুনঃখননের পাশাপাশি ছয়টি কূপ খনন করা হবে।
সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ১৪টি কূপে কাজ সম্পন্নের লক্ষ্যমাত্রা ২০২৫ সাল হলেও ২০২২ সালে তিনটি কূপের পুনঃখনন শেষ করে গ্যাস উত্তোলন চলছে। ২০২৩ সালে বেশির ভাগ কূপের কাজ সম্পন্ন করে গ্যাস উৎপাদনে যাবে। তিনি আরও বলেন, নতুন তিনটি মিলিয়ে বর্তমানে এসজিএফএলের ১৩টি কূপ গ্যাস উৎপাদনে রয়েছে। এগুলো থেকে দৈনিক ৯৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে। চলমান কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হলে ২০২৫ সালে দৈনিক ১৬৪ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন করা হবে।
মিজানুর রহমান বলেন, ১৪টি কূপ খনন ও পুনঃখননের বাইরে নতুন গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনায় সিলেটের বিয়ানীবাজার এলাকা ও আশপাশের ১ হাজার ৫৬ বর্গকিলোমিটার এলাকায় নতুন গ্যাসের সন্ধানে ত্রিমাত্রিক জরিপ চলছে। এর মধ্যে বিয়ানীবাজারের ১৯১ বর্গকিলোমিটার এলাকার একটি অংশ এবং উপজেলার বারশিয়া, ডুপিটিলা, হারারগঞ্জ ও দক্ষিণ সিলেট এলাকায় ৮৬৫ বর্গকিলোমিটারে ত্রিমাত্রিক জরিপ চালানো হচ্ছে। ৭ থেকে ৮ মাস পর এ জরিপের ফলাফল জানা যাবে।
১৯৫৫ সালে সিলেটের হরিপুরে প্রথম গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়। এরপর আবিষ্কৃত হতে থাকে একের পর এক গ্যাসক্ষেত্র। বর্তমানে এসজিএফএলের আওতায় পাঁচটি গ্যাসক্ষেত্র আছে। সেগুলো হলো হরিপুর গ্যাস ফিল্ড, রশিদপুর গ্যাস ফিল্ড, ছাতক গ্যাস ফিল্ড, কৈলাশ টিলা গ্যাস ফিল্ড ও বিয়ানীবাজার গ্যাস ফিল্ড। এর মধ্যে ছাতক গ্যাস ফিল্ড পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে। বাকিগুলোর মধ্যে ১৩টি কূপ থেকে বর্তমানে প্রতিদিন ৯৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে। | ২০২৫ সালের মধ্যে দৈনিক ১৬৪ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদনের লক্ষ্যে নতুন করে ১৪টি গ্যাস কূপ খনন ও পুনঃখননের কাজ করছে সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেড (এসজিএফএল)। ইতিমধ্যে এক বছরে তিনটি কূপ পুনঃখনন করে দৈনিক ১৬ থেকে ১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় সঞ্চালন লাইনে সরবরাহ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। |
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে: আসাদুজ্জামান নূর | সাম্প্রদায়িকতার কথা বলে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করার চেষ্টা করা হয়েছে। এভাবে মানুষকে বিভ্রান্তের চেষ্টা করা হয়েছে। এখন সময় এসেছে ওই অপশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর। সঠিক ইতিহাস মানুষের সামনে তুলে ধরার।
আজ খুলনা জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আয়োজিত বাংলাদেশ ইতিহাস সম্মিলনীর অষ্টম বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন সংসদ সদস্য ও সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। ওই অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথি ছিলেন।আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ইতিহাস এমন একটি বিষয়, যেটি ঘটনা ঘটার পরপরই লেখা হয় না, লেখা হয় ঘটনা ঘটার বহু বছর পর নানান গবেষণার মধ্য দিয়ে। একজন নৃতাত্ত্বিক যেভাবে মাটি খুঁড়ে ইতিহাসকে আবিষ্কার করেন, একজন ইতিহাসবিদও তাঁর গবেষণার মধ্য দিয়ে অতীতকে খুঁড়ে বর্তমানকে আবিষ্কার করেন এবং ভবিষ্যতের নির্দেশনা দেন।
আসাদুজ্জামান নূর ইতিহাসবিদদের উদ্দেশে বলেন, ‘আজকের এই ইতিহাস সম্মিলনীতে দাঁড়িয়ে আমি এ কথাই বলতে চাই, আপনারা যাঁরা আছেন, সবার উচিত সঠিক ইতিহাস লেখা। গ্রহণযোগ্য ইতিহাস তুলে ধরা, যাতে যারা বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে, সেই অপশক্তি, যারা একাত্তরে করেছে, যারা সাতচল্লিশে করেছে, সেই শক্তিগুলো মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে।’
সাবেক ওই মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের পরিচয় হওয়া উচিত আমরা বাঙালি। এই বাঙালির মধ্যে রয়েছে হিন্দু, মুসলমান, খ্রিষ্টান থেকে শুরু করে সব ধর্মের মানুষ। ধর্মের ভিত্তিতে বা ভাষার ভিত্তিতে কোনো দেশের পরিচিতি হতে পারে না। তা-ই যদি হতো, তাহলে সৌদি আরব থেকে শুরু করে অধিকাংশ মুসলিম দেশের ভাষা হতো আরবি, ধর্ম ইসলাম; কিন্তু ওই সব দেশের মানুষ নিজেদের সৌদি, মিসরীয়, পাকিস্তানি পরিচয় দিতে পছন্দ করেন। তাঁরা মাথা উঁচু করে নিজের দেশের পরিচয় দেন। এটা আসলে সঠিক পরিচয়। এই আত্মমর্যাদা নিয়েই আমাদের মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে। আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। এখানে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।’
বাংলাদেশ ইতিহাস সম্মিলনীর সভাপতি অধ্যাপক মো. মাহবুবর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ওই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী শহীদ কাদের। সম্মানিত অতিথি ছিলেন সংগঠনের উপদেষ্টা সভাপতি অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন।উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে শিল্পকলা একাডেমির চারটি কক্ষে একই সময়ে চারটি কর্ম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। ওই অধিবেশনগুলোতে মুক্তিযুদ্ধ, গণহত্যাসহ বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বক্তারা।
‘মুক্তিযুদ্ধ, শহীদ ও মুক্তিযুদ্ধের প্রাতিষ্ঠানিক চর্চা’ কর্ম অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান। সেখানে ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী হত্যায় নৃশংসতা ও আজকের বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক আহমেদ মাওলা, ‘মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিনির্মাণে বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশ গবেষণা ইনস্টিটিউটের ভূমিকা’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশ গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক মনিরুজ্জামান শাহীন, ‘১৯৭১ সালের গণহত্যার বিচারে দালাল আইন (বিশেষ ট্রাইব্যুনাল) আদেশ, ১৯৭২ এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আইন-১৯৭৩-এর ভূমিকা: একটি পর্যালোচনা’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সানজিদা মুস্তাফিজ।
‘মুক্তিযুদ্ধে পারবোয়ালিয়া গণহত্যা: ইতিহাস ও তাৎপর্য’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নওগাঁর মুক্তিযুদ্ধ-গবেষক মোস্তফা আল মেহমুদ। ‘একাত্তরের শহীদ সবুর: যুদ্ধ শেষে যে ছেলেটি বাড়ি ফেরেনি’ প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইতিহাসের খসড়া সমন্বয় সহকারী রশীদ এনাম।
এ ছাড়া ‘গণহত্যা, নির্যাতন ও মুক্তিযুদ্ধ’ শীর্ষক কর্ম অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক এ কে এম জসিম উদ্দিন, ‘মুক্তিযুদ্ধে সংস্কৃতি ও ইতিহাস চর্চা’ শীর্ষক কর্ম অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষাবিদ ও গবেষক অধ্যাপক মোল্লা আমীর হোসেন এবং ‘প্রতিরোধ ও গণমাধ্যম’ শীর্ষক কর্ম অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ বশির আহাম্মদ। | সাম্প্রদায়িকতার কথা বলে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করার চেষ্টা করা হয়েছে। এভাবে মানুষকে বিভ্রান্তের চেষ্টা করা হয়েছে। এখন সময় এসেছে ওই অপশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর। সঠিক ইতিহাস মানুষের সামনে তুলে ধরার। |
মানিকগঞ্জে মহাসড়কে পুলিশের তল্লাশি, আ.লীগের নেতা-কর্মীদের অবস্থান | মানিকগঞ্জে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক এবং মানিকগঞ্জ-হেমায়েতপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে তল্লাশিচৌকি বসিয়ে বিভিন্ন যানবাহন ও যাত্রীদের তল্লাশি অভিযান অব্যাহত রেখেছে পুলিশ।
একই সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা মহাসড়ক দুটির বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়েছেন। এ ছাড়া জেলা শহরে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন যুবলীগের নেতা-কর্মীরা।
গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এ দুটি সড়কে তল্লাশি অভিযান শুরু করে পুলিশ। আজ সকাল থেকেও তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। বিএনপির নেতাদের অভিযোগ, আজ শনিবার ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশে দলীয় নেতা-কর্মীদের যাওয়া বাধাগ্রস্ত করতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
তবে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান বলেন, সারা দেশে নাশকতা ও জঙ্গি তৎপরতার ঠেকাতে পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে ১ ডিসেম্বর থেকে মাসব্যাপী তল্লাশিচৌকিতে অভিযান চলছে।
আজ সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত মহাসড়ক দুটিতে ঘুরে দেখা গেছে, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় তল্লাশিচৌকিতে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রউফ সরকারের নেতৃত্বে বিভিন্ন যানবাহন ও যাত্রীদের তল্লাশি করছেন পুলিশ সদস্যরা।
সকাল থেকে সড়কে যানবাহন ও যাত্রী ছিল খুবই কম। এ সময় ওসি আবদুর রউফ সরকার প্রথম আলোকে বলেন, নাশকতা ঠেকাতে এ অভিযান চলছে। তবে কাউকে আটক করা হয়নি।
সকাল থেকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের নয়াডিঙ্গী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ও মানিকগঞ্জ-হেমায়েতপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে সিঙ্গাইর উপজেলার ধল্লা সেতুর পশ্চিম প্রান্তে তল্লাশিচৌকিতেও যানবাহনে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। এ দুই স্থানে আগে থেকেই তল্লাশিচৌকি থাকলেও তিন দিন ধরে যানবাহনে বাড়তি তল্লাশি কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
নয়াডিঙ্গী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় তল্লাশিচৌকির দুই পাশে বিভিন্ন পণ্যবোঝাই যানবাহন আটকে রাখা হয়। পরে বেলা ১১টার দিকে এসব গাড়ি ছেড়ে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে সাটুরিয়া থানার ওসি সুকুমার বিশ্বাস বলেন, বিভিন্ন কোম্পানির পণ্যবাহী গাড়িগুলো এলোপাতাড়িভাবে রাখা হয়। পরে তিনি এসব গাড়ি গন্তব্যে যেতে সহযোগিতা করেন।
সকাল থেকেই জাগীর এলাকায় তল্লাশিচৌকির পাশে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সিফাত কোরাইশি ওরফে সুমনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা অবস্থান করছেন। এ ছাড়া নয়াডিঙ্গী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় স্থানীয় ধানকোড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হকের নেতৃত্বে মহাসড়কে অবস্থান নিয়েছেন দলীয় নেতা-কর্মীরা।
এ ছাড়া আজ বেলা ১২টার দিকে জেলা শহরের দলীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন যুবলীগের নেতা-কর্মীরা। মিছিল শহীদ রফিক সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এতে জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আবদুর রাজ্জাক ওরফে রাজা এবং সদস্য সচিব মাহবুবুর রহমান ওরফে জনি নেতৃত্ব দেন।
এসব বিষয়ে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক নুরতাজ আলম প্রথম আলোকে বলেন, সমাবেশ বানচালের জন্য পথে পথে পুলিশ তল্লাশিচৌকি বসিয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা লাঠিসোঁঠা নিয়ে মিছিল করছে। এরপরও বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী ঢাকায় আজকের গণসমাবেশে অংশ নিয়েছেন। মামলা, গ্রেপ্তার, যানবাহনে তল্লাশি করে দলীয় নেতা-কর্মীদের ঠেকিয়ে রাখা যায়নি। | মানিকগঞ্জে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক এবং মানিকগঞ্জ-হেমায়েতপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে তল্লাশিচৌকি বসিয়ে বিভিন্ন যানবাহন ও যাত্রীদের তল্লাশি অভিযান অব্যাহত রেখেছে পুলিশ। |
বাগেরহাটে নাশকতার মামলায় বিএনপি-জামায়াতের ১৪ নেতা-কর্মী কারাগারে | বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলায় নাশকতা পরিকল্পনার অভিযোগে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর ১৪ নেতা-কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। মামলা হওয়ার পর গ্রেপ্তার দেখানোর পর আজ শনিবার বিকেলে তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানায়, গতকাল শুক্রবার গভীর রাতে মোরেলগঞ্জ পৌরসভার রওশনআরা মহিলা কলেজ এলাকা থেকে নাশকতার প্রস্তুতিকালে ওই ১৪ জনকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় মোরেলগঞ্জ থানায় নাশকতার অভিযোগে মামলা হয়েছে।
এতে ২৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৩০ থেকে ৪০ জনকে আসামি করা হয়। তবে আটক ব্যক্তিদের পরিবারের অভিযোগ, বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে নাশকতার মামলা দেওয়া হয়েছে।
আটক ব্যক্তিরা হলেন মোরেলগঞ্জ উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. আব্বাস উদ্দিন, শ্রমিক দল সভাপতি মাসুদ খান, উপজেলা কৃষক দলের সাবেক সভাপতি মশিউর রহমান, খাউলিয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান, খাউলিয়া ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারি মো. শহিদুল ইসলাম হাওলাদার, সদস্য মো. মোস্তাফিজুর রহমান, মো. সুমন খান, আবদুর রব, মো. আবুল বাসার।
এ ছাড়া আটক আরিফুল ইসলাম, মো. বাদল শরিফ, মো. ইমদাদুল ইসলাম হাওলাদার, মো. মিন্টু হাওলাদার ও এস এম ফেরদৌসের দলীয় পরিচয় জানা যায়নি।
মোরেলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, আটক বিএনপি ও জামায়াতের নেতা–কর্মীরা নাশকতার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। ঘটনাস্থল থেকে তিনটি অবিস্ফোরিত, একটি বিস্ফোরিত ককটেলসহ বেশ কিছু আলামত জব্দ করা হয়েছে। মামলার পর আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠনো হয়েছে।
তবে বাগেরহাট জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মোজাফফর রহমান আলম বলেন, ঢাকায় তাঁদের গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে কয়েক দিন ধরেই নেতা–কর্মীদের আটক ও গায়েবি মামলা দিচ্ছে পুলিশ। গত কয়েক দিনে মোরেলগঞ্জ ছাড়াও বাগেরহাটের ফকিরহাট, রামপাল, কচুয়া, মোল্লাহাট, চিতলমারী, মোংলা ও সদর উপজেলা থেকে বিএনপির অর্ধশতাধিক নেতা–কর্মীকে আটক করা হয়েছে। | বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলায় নাশকতা পরিকল্পনার অভিযোগে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর ১৪ নেতা-কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। মামলা হওয়ার পর গ্রেপ্তার দেখানোর পর আজ শনিবার বিকেলে তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। |
রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে অগ্নিকাণ্ড | রাজধানীর কুর্মিটোলায় পাঁচ তারকা হোটেল লা মেরিডিয়ানে অগ্নিকাণ্ড হয়েছে। এতে কেউ হতাহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
আজ শনিবার বেলা দুইটার দিকে হোটেলটিতে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণকক্ষের কর্মকর্তা রাকিবুল হাসান।
রাকিবুল হাসান বলেন, হোটেলের নিচতলার একটি কক্ষে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তদন্ত সাপেক্ষে আগুনের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে।
সাত বছর আগে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয় পাঁচ তারকা হোটেল লা মেরিডিয়ান। | রাজধানীর কুর্মিটোলায় পাঁচ তারকা হোটেল লা মেরিডিয়ানে অগ্নিকাণ্ড হয়েছে। এতে কেউ হতাহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। |
অভিযানের নামে সিআইডির পরিদর্শকের নেতৃত্বে ডাকাতি | গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিচয়ে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ঢাকার মোহাম্মদপুরের ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলামের সাড়ে ছয় লাখ টাকার মালামাল লুট করেন একটি চক্রের কয়েকজন। পরে ওই ব্যবসায়ীর বাসায় চালানো হয় ‘অভিযান’। এ সময় লুট করা হয় আরও আড়াই লাখ টাকা। এখানেই শেষ নয়; পরে শহিদুলের ভাগনে জাবেদকে অপহরণের পর হত্যার হুমকি দিয়েও অর্থ আদায় করেন চক্রটির সদস্যরা।
পুলিশ বলেছে, এই চক্রের প্রধান পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পরিদর্শক সালাউদ্দিন করিম। তিনি সিআইডির ঢাকা মহানগর উত্তর অঞ্চলে কর্মরত। তাঁর নেতৃত্বে দীর্ঘদিন ধরে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতি, ছিনতাই ও লোকজনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অর্থ আদায় করা হচ্ছিল।
এসব কাজে পুলিশের স্টিকার লাগানো একটি মাইক্রোবাস ব্যবহার করতেন চক্রের সদস্যরা। গাড়িটিতে থাকা নম্বরপ্লেট ছিল ভুয়া। তবে পুলিশ জানিয়েছে, মাইক্রোবাসটি একটি ইনস্যুরেন্স কোম্পানির নামে নিবন্ধিত।
মালামাল ও অর্থ লুটের অভিযোগ এনে গত ১ নভেম্বর মোহাম্মদপুর থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ ও ১৮ নভেম্বর রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে সাতজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এসব ব্যক্তি হলেন সিআইডির পরিদর্শক সালাউদ্দিন করিম, তাঁর সহযোগী মো. বাবু, মেহেদী হাসান, বুলবুল চৌধুরী, মনির, শহিদুল ইসলাম ও সামিউল। তাঁদের মধ্যে সামিউল ও বাবু ঘটনার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এ বিষয়ে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, মালামাল লুট ও অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়ার পর ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজ দেখে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করা হয়। পরে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজন নিজেকে সিআইডির পরিদর্শক বলে দাবি করেছেন। বিষয়টি সিআইডিকে জানানো হয়েছে। তারা (সিআইডি) লিখিতভাবে জানালে নিশ্চিত করে বলা যাবে তিনি প্রকৃতই সিআইডিতে কর্মরত কি না।
তবে সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আজাদ রহমান প্রথম আলোকে জানান, গ্রেপ্তার হওয়া সালাউদ্দিন করিম সিআইডির পরিদর্শক। তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না, এ বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি তিনি।
সিআইডির একটি সূত্র জানায়, সালাউদ্দিন করিমের বিষয়টি নিয়ে সিআইডির ঢাকা উত্তর অঞ্চল তদন্ত করেছে। ওই তদন্ত প্রতিবেদন সিআইডি প্রধানের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনের অনুলিপি পুলিশ সদর দপ্তরেও পাঠানো হয়েছে। তবে সালাউদ্দিন করিমের বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
সেদিন যা ঘটেছিলপ্রায় ২৪ বছর ধরে মোহাম্মদপুরের লালমাটিয়া এলাকায় সিগারেট বিক্রির ব্যবসা করেন শহিদুল ইসলাম। খুচরা বিক্রির পাশাপাশি লালমাটিয়ার বিভিন্ন দোকানে পাইকারি দরে সিগারেট সরবরাহ করেন তিনি। খুচরা বিক্রির দোকানটি আড়ং মার্কেটের উত্তর-পশ্চিম কোণের ফুটপাতে। পাশে ফায়ার সার্ভিসের নির্মাণাধীন ভবনের নিচতলায় তিনি মজুত করা সিগারেট রাখতেন। তাঁর ভাগনে জাবেদ ব্যবসার কাজে তাঁকে সহযোগিতা করেন।
শহিদুল ইসলাম বলেন, গত ২৯ অক্টোবর দুপুরে ভাগনে জাবেদকে সিগারেট নিয়ে আসার জন্য তিনি নির্মাণাধীন ওই ভবনের নিচতলায় পাঠান। এ সময় ডিবির লোক পরিচয়ে একজন সিগারেট বিক্রির নথি দেখতে চান। তখন তাঁর (শহিদুল) সঙ্গে জাবেদ মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। কিন্তু আরও তিনজন এসে জাবেদের মুঠোফোন ছিনিয়ে নেন। সেই সঙ্গে স্টিলের বাক্সে থাকা সাড়ে ছয় লাখ টাকার মালামাল পাঁচটি বস্তায় ভরে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যান। সঙ্গে জাবেদকেও গাড়িতে তুলে নেওয়া হয়।
এরপর জাবেদকে নিয়ে ওই ব্যক্তিরা শহিদুলের বাসায় যান। সেখান থেকে আড়াই লাখ টাকা লুট করা হয় বলে মামলায় অভিযোগ করেন শহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, জাবেদকে মাইক্রোবাসে তোলার সময় তাঁকে বলা হয়, বাসায় আরও নকল সিগারেট আছে। তাঁর (শহিদুলের) স্ত্রী ও মা তখন হাসপাতালে ছিলেন। জাবেদের কাছ থেকে চাবি নিয়ে তাঁরা বাসায় ঢোকেন। তল্লাশির সময় বাসায় থাকা আড়াই লাখ টাকা নিয়ে যান তাঁরা।
ঘটনার এখানেই শেষ নয়। শহিদুল বলেন, এরপর জাবেদকে গাড়িতে তুলে নিয়ে অপহরণ করা হয়। মুক্তিপণ হিসেবে ১০ হাজার টাকা দাবি করেন চক্রের সদস্যরা। টাকা না দিলে জাবেদকে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়। তাঁদের দেওয়া বিকাশ নম্বরে ৫ হাজার টাকা পাঠালে জাবেদকে মিরপুর এলাকায় গাড়ি থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া সাতজনের কাউকেই চেনেন না বলে দাবি করেন শহিদুল। তাঁকে কেন লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়েছে, এ বিষয়েও তাঁর কোনো ধারণা নেই বলে জানান তিনি। শহিদুল বলেন, ‘যতটুকু বুঝতে পেরেছি, তাতে মনে হয়েছে, চক্রের সদস্যরা আমাকে অনেক দিন ধরে অনুসরণ করেছে।’
বিষয়টি নিয়ে শহিদুল সংবাদমাধ্যমে খুব বেশি কথা বলতে চাননি। তিনি বলেন, প্রায় সাড়ে আট লাখ টাকার মালামাল ও নগদ টাকা লুট হওয়ায় তাঁর পুঁজি শেষ হয়ে গেছে। সংবাদমাধ্যমে কথা বললে মালামাল ও টাকা কখনোই ফেরত পাবেন না বলে তাঁর আশঙ্কা।
জব্দ মাইক্রোবাস সানলাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানিরগত ১৬ নভেম্বর সিআইডির পরিদর্শককে গ্রেপ্তার করার সময় একটি টয়োটা মডেলের মাইক্রোবাস, সিআইডি লেখা জ্যাকেট ও ওয়াকিটকি জব্দ করে পুলিশ। ওই গাড়ির নম্বর ঢাকা মেট্রো চ ৫১৫৯৭৬। বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটিতে (বিআরটিএ) খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গাড়ির মালিক সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড।
তবে গাড়ির মালিকানার বিষয়ে মোহাম্মদপুর থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, এই গাড়ির মালিকানার বিষয়ে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কেউ গাড়ির মালিকানা দাবি করেনি। তবে মালিকানা নিশ্চিত হতে বিআরটিএতে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এখনো কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।
এই বিষয়ে সানলাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের পরিবহন বিভাগের প্রধান আবু সায়েম প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই মাইক্রোবাসটি কয়েক বছর আগে বিক্রি করা হয়েছে। যাঁরা কিনেছেন, তাঁরা হয়তো এখনো মালিকানা পরিবর্তন করেননি।’ তবে গাড়িটি কার কাছে বিক্রি করা হয়েছে, সেটা জানাতে পারেননি তিনি।
এদিকে আদালতে পাঠানো এক নথিতে পুলিশ উল্লেখ করেছে, জব্দ করা মাইক্রোবাসটি ব্যবহার করে মামলায় উল্লেখ করা ঘটনার মতো ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় একাধিক অপরাধ এর আগেও ঘটানো হয়েছে। | গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিচয়ে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ঢাকার মোহাম্মদপুরের ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলামের সাড়ে ছয় লাখ টাকার মালামাল লুট করেন একটি চক্রের কয়েকজন। পরে ওই ব্যবসায়ীর বাসায় চালানো হয় ‘অভিযান’। এ সময় লুট করা হয় আরও আড়াই লাখ টাকা। এখানেই শেষ নয়; পরে শহিদুলের ভাগনে জাবেদকে অপহরণের পর হত্যার হুমকি দিয়েও অর্থ আদায় করেন চক্রটির সদস্যরা। |
নগর এক্সপ্রেসের বাসে আড়াল সিলেটের ঐতিহ্য | মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার হাটিপাড়া ইউনিয়ন থেকে সিলেটে বেড়াতে এসেছিলেন সালাউদ্দিন আল মামুন ও রাশেদা আক্তার দম্পতি। গত বৃহস্পতিবার থেকে সিলেটের বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রগুলো ঘুরেছেন তাঁরা। শুক্রবার বিকেলে কিনব্রিজ এলাকায় গিয়েছিলেন। কিনব্রিজের ডান পাশে চাঁদনীঘাটে অবস্থিত ঊনবিংশ শতকের স্থাপনা আলী আমজদের ঘড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তোলেন এ দম্পতি। কিন্তু ছবিতে ঘড়ির ওপরের অংশ দেখা গেলেও নিচের অংশ ঢেকে ছিল সামনেসহ আশপাশে রাখা ‘নগর এক্সপ্রেস’-এর অনেকগুলো বাস।
সালাউদ্দিন আল মামুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আলী আমজদের ঘড়ির কথা অনেক শুনেছি। এ ঘড়ি ও কিনব্রিজ সিলেটের ঐতিহ্য। সিলেটে বেড়াতে এসেছি, এ দুটি ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা সঙ্গে ছবি তুলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ইচ্ছা পূরণ হয়নি। বাস রাখার কারণে ঘড়িটি আড়ালে পড়ে গেছে। এটি আসলে দুঃখজনক।’
শুক্রবার বিকেলে কিনব্রিজ এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, কিনব্রিজের ডান পাশে সারি বেঁধে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে বেশ কয়েকটি বাস। এর পাশেই আলী আমজদের ঘড়ি। ঘড়ির চারপাশ ঘিরে রাখা হয়েছে আরও কয়েকটি বাস। বাসগুলো ‘নগর এক্সপ্রেস’-এর। বাসগুলোর কারণে অনেকটা আড়ালে চলে গেছে আলী আমজদের ঘড়িটি।
নগরের তোপখানা এলাকার বাসিন্দা বিধান রায় বলেন, কিছুদিন আগপর্যন্ত সুরমা নদীর পাশের ‘ওয়াকওয়ে’ ঘেঁষে সিটি করপোরেশনের যানবাহনসহ নগর এক্সপ্রেসের বাসগুলোও রাখা হতো। এখন সিটি করপোরেশন তাদের অধিকাংশ যানবাহন সেখান থেকে সরিয়ে নিয়েছে। কিন্তু বাসগুলো এখনো সরিয়ে নেওয়া হয়নি। এখন কিনব্রিজ এলাকা নগর এক্সপ্রেসের স্ট্যান্ডে পরিণত হয়েছে। এ এলাকার ঐতিহ্যবাহী আলী আমজদের ঘড়িটি আড়ালে পড়ে গেছে বাসগুলোর কারণে। এটি আসলেই সিলেটের বাসিন্দা হিসেবে কাম্য নয়।
সিটি করপোরেশনের একাধিক সূত্র জানায়, সিলেট নগর ও শহরতলি এলাকার পরিবহনসংকট দূর করতে গণপরিবহন হিসেবে ২০১৯ সালে চালু হয় ‘নগর এক্সপ্রেস’। সিলেট সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে ও সিটি বাস মালিক গ্রুপের মাধ্যমে পরিচালিত এ পরিষেবা দিয়ে নগরের বাসিন্দাদের দুর্ভোগ লাঘব হবে বলে আশা করা হচ্ছিল। তবে বিভিন্ন অব্যবস্থাপনার কারণে সেটি হয়নি।
সিটি এক্সপ্রেস চালুর পর থেকে বাসগুলো কিনব্রিজ এলাকাকে ঘিরে রাখত। প্রথম দিকে ব্রিজের এক পাশে রাখা হলেও এখন রাখা হচ্ছে যত্রতত্রভাবে। সিলেট সিটি করপোরেশনের পরিবহন শাখার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আলী আকবর চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, কিনব্রিজ এলাকাটি কিছুটা ফাঁকা থাকায় বাসগুলো রাখা হয়ে থাকতে পারে। ঐতিহ্যবাহী আলী আমজদের ঘড়ি আড়াল করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিষয়টি দেখবেন।
সিটি বাস মালিক গ্রুপ আহ্বায়ক ও সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর মো. মখলিছুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, নগর এক্সপ্রেস বাসগুলো সিলেট কেন্দ্রীয় ট্রাক টার্মিনালে রাখার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেখানে বাসগুলো রাখার জন্য ছাউনি নির্মাণ করার কথাও জানিয়েছেন মেয়র। কিন্তু এখন পর্যন্ত ছাউনি নির্মাণ না হওয়ায় বাসগুলো স্থানান্তর করা যাচ্ছে না। এতে অনেকটা বাধ্য হয়ে কিনব্রিজ এলাকাসহ আশপাশে এবং নগরের সাগরদিঘীর পাড় এলাকার বর্ণমালা বিদ্যালয়ের মাঠে বাসগুলো রাখা হচ্ছে।
আলী আমজদের ঘড়ি আড়াল করে বাসগুলো রাখার বিষয়ে মখলিছুর রহমান বলেন, ‘আমরাও বুঝি, এতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবে অনেকটা অপারগ হয়ে সেখানে রাখতে হচ্ছে। বাসগুলো রাস্তায় রাখলে অনেক সময় ক্ষতি হচ্ছে। আমরা চাই, নির্ধারিত একটি স্থান সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ আমাদের দিক।’ | মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার হাটিপাড়া ইউনিয়ন থেকে সিলেটে বেড়াতে এসেছিলেন সালাউদ্দিন আল মামুন ও রাশেদা আক্তার দম্পতি। গত বৃহস্পতিবার থেকে সিলেটের বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রগুলো ঘুরেছেন তাঁরা। শুক্রবার বিকেলে কিনব্রিজ এলাকায় গিয়েছিলেন। কিনব্রিজের ডান পাশে চাঁদনীঘাটে অবস্থিত ঊনবিংশ শতকের স্থাপনা আলী আমজদের ঘড়ির সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তোলেন এ দম্পতি। কিন্তু ছবিতে ঘড়ির ওপরের অংশ দেখা গেলেও নিচের অংশ ঢেকে ছিল সামনেসহ আশপাশে রাখা ‘নগর এক্সপ্রেস’-এর অনেকগুলো বাস। |
ডেঙ্গুতে ৩ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে নতুন ভর্তি ২৬৫ জন | সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে আজ শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় আরও ২৬৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আগের দিন ডেঙ্গুতে কারও মৃত্যু হয়নি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় ১৪৪ জন এবং ঢাকার বাইরে ১২১ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ১ হাজার ১৮১ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি আছেন। তাঁদের মধ্যে ঢাকা মহানগরের ৫৩টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৬৯৭ জন এবং অন্যান্য বিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৪৮৪ জন।
এ বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৬০ হাজার ৭৮ জন। এর মধ্যে ২৬৬ জন মারা গেছেন। সবচেয়ে বেশি ১১৩ জন মারা যান গত নভেম্বরে।
২০০০ সালে দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা দিয়েছিল। ওই বছর ডেঙ্গুতে মারা যান ৯৩ জন। এরপর ডেঙ্গুর সবচেয়ে বড় প্রকোপ দেখা দেয় ২০১৯ সালে। ওই বছর মারা যান ১৭৯ জন। করোনা মহামারি শুরুর বছর, অর্থাৎ ২০২০ সালে মারা যান ৭ জন এবং পরের বছর মারা যান ১০৫ জন। | সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে আজ শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় আরও ২৬৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আগের দিন ডেঙ্গুতে কারও মৃত্যু হয়নি। |
২৪ ঘণ্টায় ১৭ জনের করোনা শনাক্ত | দেশে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে আজ শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) ১৭ জনের শরীরে করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এ সময় করোনায় কারও মৃত্যু হয়নি। এ নিয়ে টানা চার দিন করোনায় কেউ মারা যাননি।
আজ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ১ হাজার ৩৫৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ১ দশমিক ২৫। আগের দিন এ হার ছিল ১ দশমিক ১৪।
দেশে এখন পর্যন্ত ২০ লাখ ৩৬ হাজার ৭৭৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। তাঁদের মধ্যে মারা গেছেন ২৯ হাজার ৪৩৬ জন। আর সুস্থ হয়েছেন ১৯ লাখ ৮৬ হাজার ৪২২ জন।
দেশে প্রথম করোনা শনাক্ত হয় ২০২০ সালের ৮ মার্চ। এর পর থেকে এ পর্যন্ত দেশে সংক্রমণের চিত্রে কয়েক দফা ওঠানামা দেখা গেছে। গত বছরের শেষ দিক থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত করোনার অমিক্রন ধরনের দাপট চলে। পরে ধীরে ধীরে তা কমতে থাকে। | দেশে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে আজ শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) ১৭ জনের শরীরে করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এ সময় করোনায় কারও মৃত্যু হয়নি। এ নিয়ে টানা চার দিন করোনায় কেউ মারা যাননি। |
জেসিআই টিওওয়াইপি পুরস্কার পেলেন ১০ তরুণ | নিজ ক্ষেত্রে অবদান ও অর্জনের স্বীকৃতি হিসেবে এ বছরের ‘টেন আউটস্ট্যান্ডিং ইয়ং পারসনস (টিওওয়াইপি) অ্যাওয়ার্ড-২০২১’ দিয়েছে আন্তর্জাতিক সংগঠন জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল (জেসিআই) বাংলাদেশ। গতকাল শুক্রবার রাতে কক্সবাজারের একটি হোটেলে আয়োজিত দুই দিনব্যাপী জমকালো অনুষ্ঠানে এই পুরস্কার তুলে দেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এবং জেসিআই বাংলাদেশের সভাপতি নিয়াজ মোর্শেদ।
সংবাদমাধ্যমের ডিজিটাল রূপান্তর ও উদ্ভাবনী উদ্যোগের জন্য এ বছর এই পুরস্কারের অন্যতম বিজয়ী প্রথম আলোর ডিজিটাল ব্যবসার প্রধান জাবেদ সুলতান। ১০ তরুণের অন্যদের মধ্যে আছেন—মুন্নু সিরামিকসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রশীদ মাইমুনুল ইসলাম, কেএসআরএমের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান, পিএইচপি অটোমোবাইলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আকতার পারভেজ, তথ্যপ্রযুক্তি উদ্যোগে যাত্রীর সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী আজিজ আরমান, এআরকমের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী আসিফ রহমান, শপআপের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান পণ্য কর্মকর্তা আতাউর রহমান চৌধুরী, চিকিৎসক ও উন্নয়নকর্মী তাহসীন বাহার, অভিনেতা মুশফিক ফারহান এবং ইউটিউবার তৌহিদ আফ্রিদি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তারুণ্যের শক্তি কাজে লাগিয়ে ২০৪১ সালে বাংলাদেশ পরিণত হবে উন্নত দেশে। সে লক্ষ্যে জাতির পিতার স্বপ্নপূরণে কাজ করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’
জেসিআই বাংলাদেশের সভাপতি নিয়াজ মোর্শেদ বলেন, ‘টিওওয়াইপি একটি বৈশ্বিক পুরস্কার। প্রতিবছর পৃথিবীর শতাধিক দেশে এই পুরস্কার দেওয়া হয়ে থাকে। নানা ক্ষেত্রে অবদানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ায় যাঁরা ভূমিকা রাখছেন, এমন তরুণদের এই স্বীকৃতি দিয়ে থাকি। জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশর তরুণদের অন্যতম বৃহত্তম সংস্থা। সংস্থাটি দেশের ২০৪১ সালের উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে।’
জেসিআই ১৮ থেকে ৪০ বছর বয়সী তরুণদের নিয়ে গঠিত বিশ্বব্যাপী একটি সংগঠন। বর্তমানে ১০৫টির বেশি দেশে এ সংগঠনের প্রায় দুই লাখ সক্রিয় সদস্য রয়েছেন। জেসিআই বাংলাদেশ প্রতিবছর সমাজে তরুণ-তরুণীদের অবদানকে স্বীকৃতি দেওয়ার উদ্যোগ নেয়। সমাজ উন্নয়নে ভূমিকা রাখায় প্রতিবছর ১০ তরুণকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়। | নিজ ক্ষেত্রে অবদান ও অর্জনের স্বীকৃতি হিসেবে এ বছরের ‘টেন আউটস্ট্যান্ডিং ইয়ং পারসনস (টিওওয়াইপি) অ্যাওয়ার্ড-২০২১’ দিয়েছে আন্তর্জাতিক সংগঠন জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল (জেসিআই) বাংলাদেশ। গতকাল শুক্রবার রাতে কক্সবাজারের একটি হোটেলে আয়োজিত দুই দিনব্যাপী জমকালো অনুষ্ঠানে এই পুরস্কার তুলে দেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এবং জেসিআই বাংলাদেশের সভাপতি নিয়াজ মোর্শেদ। |
উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের ধারণা তিনিই আসামি | বর্তমান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেনকেই যাত্রাবাড়ী থানার হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে—এমনটি মনে করছেন বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা। বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তাদের মধ্যে ব্যক্তিগত পর্যায়ে নানামুখী আলোচনা হচ্ছে। অন্যদিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের শীর্ষ পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মাহাবুব হোসেন নামে সাবেক কোনো মন্ত্রিপরিষদ সচিব রয়েছেন কি না, সেটি তদন্তের সময় খুঁজে দেখা হবে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পাঁচজন কর্মকর্তার সঙ্গে এ নিয়ে গতকাল সোমবার কথা বলেছে প্রথম আলো। তাঁরা বলেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারে (গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর গঠিত) মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব পদে দুজনই চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে ছিলেন। এর মধ্যে মুখ্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করা মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ গত ৭ আগস্ট বাতিল করা হয়। তবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন স্বপদে বহাল থাকেন।
গত রোববার যাত্রাবাড়ী থানায় করা মামলায় সাবেক মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়াকেও আসামি করা হয়েছে। যে কারণে তাঁরা মনে করছেন, মামলায় সাবেক উল্লেখ করা হলেও বর্তমান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেনকেই (যদিও মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে মো. মাহাবুব হোসেন) আসামি করা হয়েছে। তা ছাড়া মাহাবুব হোসেন নামে সাবেক কোনো মন্ত্রিপরিষদ সচিব নেই।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ওই কর্মকর্তারা বলছেন, যেভাবে সাবেক সচিবদের একের পর এক হত্যা মামলায় আসামি করা হচ্ছে, তাতে অন্তর্বর্তী সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। মামলা নেওয়ার ক্ষেত্রে থানা–পুলিশের উচিত আরও যাচাই-বাছাই করা। তবে কারও বিরুদ্ধে অনিয়ম–দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে মামলা হতে পারে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্র জানায়, গত বছরের ৩ জানুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন মাহবুব হোসেন। তাঁর অবসরে যাওয়ার কথা ছিল গত বছরের ১৩ অক্টোবর। তবে অবসরে না পাঠিয়ে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার তাঁকে আরও এক বছরের জন্য একই পদে চুক্তি ভিত্তিতে নিয়োগ দিয়েছিল। কাগজপত্রে ১৩ অক্টোবর তাঁর চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে আগামী বৃহস্পতিবারই (১০ অক্টোবর) তাঁর শেষ কর্মদিবস। কারণ, ১১–১২ অক্টোবর সাপ্তাহিক ছুটি আর ১৩ অক্টোবর শারদীয় দুর্গাপূজার ছুটি। অবশ্য তাঁর চুক্তির মেয়াদ আবার বাড়ানো হলে সেটি ভিন্ন কথা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গুলি করে হত্যার ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানায় করা ওই মামলায় সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া ও আহমেদ কায়কাউস, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী ও ফয়েজ আহমেদ এবং সাবেক সচিব আনিছুর রহমানকে (নির্বাচন কমিশনারও ছিলেন) আসামি করা হয়েছে।
যাত্রাবাড়ী থানায় মামলাটি হয়েছিল গত ১৯ জুলাই বিকেলে ছাত্র-জনতার মিছিলে গুলি করে হত্যার ঘটনায়। সেদিন গুলিতে মেহেদী হাসান (১৮) নামের এক তরুণ নিহত হন। নিহত মেহেদীর চাচা মো. নাদিম বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন। মামলার বিষয়ে গত রোববার ও গতকাল কয়েক দফায় তাঁর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেছে প্রথম আলো; কিন্তু ফোনে তাঁকে পাওয়া যায়নি।
এ মামলার বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. ইসরাইল হাওলাদার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) গতকাল রাতে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘মাহাবুব হোসেন নামে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে কেউ আছেন কি না, সেটি তো আমরা এখনো খুঁজিনি। তদন্ত করতে গেলে সেটি খোঁজা হবে। মামলার বাদী তো মাহাবুব হোসেনকে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে মামলায় লিখে দিয়েছেন। তদন্ত শুরু হলে না বোঝা যাবে, মাহাবুব হোসেন নামে কেউ সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব কি না?’ | বর্তমান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেনকেই যাত্রাবাড়ী থানার হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে—এমনটি মনে করছেন বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা। বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তাদের মধ্যে ব্যক্তিগত পর্যায়ে নানামুখী আলোচনা হচ্ছে। অন্যদিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের শীর্ষ পর্যায়ের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মাহাবুব হোসেন নামে সাবেক কোনো মন্ত্রিপরিষদ সচিব রয়েছেন কি না, সেটি তদন্তের সময় খুঁজে দেখা হবে। |
বাড়তে থাকা যুদ্ধের ছায়ায় অক্টোবর হামলার বর্ষপূর্তি পালন ইসরায়েলের | ইসরায়েলে ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠন হামাসের নজিরবিহীন হামলার প্রথম বার্ষিকী সোমবার নানা আয়োজনে পালন করেছে দেশটি। ৭ অক্টোবরের ওই হামলার জবাবে এমন এক যুদ্ধের সূচনা হয়েছে, যার বিরুদ্ধে সারা বিশ্বে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। চলমান এ যুদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যে আরও বিস্তৃত সংঘাতের ঝুঁকি তৈরি করেছে।
সোমবার সকাল ৬টা ২৯ মিনিটে জেরুজালেম ও ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। গত বছরের ৭ অক্টোবর সকালের ঠিক এ সময়ে ইসরায়েলে রকেট হামলা শুরু করেছিল হামাস। ইসরায়েলের তথ্যমতে, হামলাকারীরা প্রায় ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা করে এবং প্রায় ২৫০ জনকে বন্দী করে গাজায় নিয়ে যায়।
সকালে জেরুজালেমে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বাসভবনের সামনে গাজায় থাকা জিম্মিদের পরিবারের সদস্যদের নেতৃত্বে প্রায় ৩০০ মানুষ জড়ো হন। সেখানে তাঁরা প্রিয়জনদের ছবি প্রদর্শন করেন। তাঁরা সেখানে মৃতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।
জিম্মি কিথ সিগেলের পুত্রবধূ ইউভাল ব্যারন বলেন, ‘আমরা এখনো ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরে আটকে আছি। এটি আতঙ্ক, ভয়, রাগ, হতাশাময় অন্তহীন একটি দিন।’গত বছরের এই দিনে ইসরায়েলের রাইম এলাকায় একটি সংগীত অনুষ্ঠানে ৩৬০ জনের বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল। সোমবার এ স্থানে স্মরণানুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেছেন ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগ।
হারজগ বলেন, ‘যাঁদের অপহরণ করা হয়েছে, হত্যা করা হয়েছে, ধর্ষণ করা হয়েছে এবং গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে, আমরা তাঁদের সব সময় স্মরণ করব। একই সময়ে আমরা অসাধারণ দৃঢ়তা দেখেছি। আমাদের জনগণ চমৎকার। আজকের এই দিনে আমরা জনগণের বন্ধন শক্তিশালী করছি এবং ঐক্যের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।’
গাজার সীমান্তবর্তী শহর ও গ্রামগুলোতেও সোমবার সারা দিন নানা অনুষ্ঠান পালিত হয়েছে। | ইসরায়েলে ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠন হামাসের নজিরবিহীন হামলার প্রথম বার্ষিকী সোমবার নানা আয়োজনে পালন করেছে দেশটি। ৭ অক্টোবরের ওই হামলার জবাবে এমন এক যুদ্ধের সূচনা হয়েছে, যার বিরুদ্ধে সারা বিশ্বে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। চলমান এ যুদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যে আরও বিস্তৃত সংঘাতের ঝুঁকি তৈরি করেছে। |
দুই জেলায় বন্যার উন্নতি, নেত্রকোনায়
১২৩ গ্রাম প্লাবিত | বৃষ্টি না থাকায় শেরপুর ও ময়মনসিংহের বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে এই দুই জেলায় এখনো অনেক মানুষ পানিবন্দী। তাঁদের জন্য ত্রাণসহায়তা প্রয়োজন। আর নেত্রকোনায় আরও তিনটি উপজেলায় বন্যার বিস্তৃতি ঘটেছে। প্লাবিত হয়েছে ১২৩টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল। জেলার ১৮৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ আছে।
গত রোববার সন্ধ্যায় বন্যার পানিতে ডুবে শেরপুরের নকলা উপজেলার গণপদ্দি ইউনিয়নের গজারিয়া গ্রামে মো. আবদুর রাজ্জাক (৫০) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এর আগে নালিতাবাড়ীতে বন্যার পানিতে ডুবে দুই ভাইসহ চারজনের মৃত্যু হয়।
শেরপুর জেলা, উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, রোববার দুপুরের পর থেকে বৃষ্টি না হওয়ায় এবং মহারশী ও সোমেশ্বরী নদীর পানি কমে যাওয়ায় গতকাল সোমবার জেলার ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী, শেরপুর সদর ও নকলা উপজেলার ২০ ইউনিয়নের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। এসব ইউনিয়নের শতাধিক গ্রাম থেকে বন্যার পানি ধীরে ধীরে নিম্নাঞ্চলে নেমে যাচ্ছে। এখনো প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দী।
গতকাল দুপুরে সরেজমিনে শেরপুর সদর উপজেলার পাকুরিয়া ও ধলা ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে দেখা যায়, ঢলের পানির তোড়ে চৈতনখিলা বটতলা থেকে বাদাতেঘরিয়া গ্রাম হয়ে ধলাকান্দা পর্যন্ত সড়কের বিভিন্ন অংশ ভেঙে গেছে এবং সড়কের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। সড়কের দুই পাশের বাদাতেঘরিয়া ও ধলা নামাপাড়া গ্রামের শতাধিক বাড়িঘর পানিতে প্লাবিত।
এ সময় কথা হয় ধলা ইউনিয়নের ধলা নামাপাড়া গ্রামের কৃষক মো. শামীম মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, দুই দিন ধরে ঘরে পানি উঠেছে। বর্তমানে পরিবার নিয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। কোনো সাহায্য পাননি।
জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, সেনাবাহিনী, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, ব্যবসায়ীসহ সবাই বন্যাদুর্গতদের জন্য এগিয়ে এসেছে।
বাড়ি থেকে বুকপানি ভেঙে এসেছেন নালিতাবাড়ীর উত্তর নাকশী গ্রামের আলেয়া বেগম (৫২)। তিনি বললেন, ‘চাইর দিন ধইরা বাড়িঘরে পানি। রান্দুনের কোনো বাও (ব্যবস্থা) নাই। বাজার থাইকা শুকনা খাওন আইনা কোনো রহম দিন কাডাইতাছি। দুঃখের বিষয় অইল, এই পর্যন্ত কোনো ত্রাণ পাইলাম না। কেউ খোঁজ নিল না।’
নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুদ রানা বলেন, চার দিনে এ পর্যন্ত ২৬ হাজার পরিবারকে রান্না করা খিচুড়ি ও শুকনা খাবারের প্যাকেট দেওয়া হয়েছে।
ময়মনসিংহের ধোবাউড়ায় অনেক এলাকায় পানি কমেছে। তবে সুপেয় পানির সংকটে ভুগছেন বন্যাকবলিত এলাকার মানুষ। গতকাল সকাল নয়টার দিকে ধোবাউড়া উপজেলা সদর ব্রিজপাড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ঊরুসমান পানি মাড়িয়ে চলাচল করছেন লোকজন। বাড়িঘরে পানি ঢুকেছে। ধোবাউড়া সদর ইউনিয়নের গুজিয়ারকান্দা গ্রামের সৌরভ সরকার জানান, রোববার থেকে তাঁদের এলাকায় পানি একই রকম আছে।
এ উপজেলায় চলমান বন্যায় লক্ষাধিক মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। ৫৮ হাজার মানুষ পানিবন্দী বলে জানিয়েছেন জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা। এ ছাড়া তলিয়ে গেছে ১১ হাজার ৭০০ হেক্টর আমন ধানের জমি।
ধোবাউড়ার ইউএনও নিশাত শারমিন বলেন, বেসরকারিভাবে কিছু ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে। সমন্বয় করে ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে।
ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনার দুর্গাপুর, কলমাকান্দার বন্যা বিস্তৃত হয়েছে নেত্রকোনা সদর, পূর্বধলা ও বারহাট্টা উপজেলা অবধি। অন্তত ২৫টি ইউনিয়নের ১২৩টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
গতকাল সকাল ১০টার দিকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কলমাকান্দার উব্দাখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। অবশ্য জেলার বড় নদী সোমেশ্বরী ও কংস নদের পানি কিছুটা কম ছিল। তবে ধনু, নেতাই, মহাদেও, মঙ্গলেশ্বরী, মগড়াসহ বিভিন্ন ছোট-বড় নদ-নদীর পানি স্থিতিশীল আছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মোফাজ্জল হোসেন বলেন, বন্যার পানির কারণে ১৮৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. নুরুজ্জামান বলেন, জেলার ১০টি উপজেলায় ১ লাখ ৩৫ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ করা হয়। আকস্মিক বন্যার কারণে ৫টি উপজেলায় ১৮ হাজার ১০৪ হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে।
জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস বলেন, বন্যা মোকাবিলায় সব প্রস্তুতি আছে। কলমাকান্দা, দুর্গাপুর, পূর্বধলা ও নেত্রকোনা সদর উপজেলার জন্য বরাদ্দ করা নগদ ৩ লাখ টাকা, ২ হাজার ৫০০ প্যাকেট শুকনা খাবার ও ৬০ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হচ্ছে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিরা] | বৃষ্টি না থাকায় শেরপুর ও ময়মনসিংহের বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে এই দুই জেলায় এখনো অনেক মানুষ পানিবন্দী। তাঁদের জন্য ত্রাণসহায়তা প্রয়োজন। আর নেত্রকোনায় আরও তিনটি উপজেলায় বন্যার বিস্তৃতি ঘটেছে। প্লাবিত হয়েছে ১২৩টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল। জেলার ১৮৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ আছে। |
বিশেষ অভিযানে মাদকের ১১ গডফাদারসহ ৮৯ শীর্ষ কারবারি গ্রেপ্তার | দেশব্যাপী এক মাসের বিশেষ অভিযানে ১১ জন গডফাদারসহ ৮৯ জন শীর্ষ মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। সোমবার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গত ৪ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবর ৫ হাজার ২৬৪টি অভিযান পরিচালনা করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। এ সময় মামলা হয় ১ হাজার ১৯৮টি। গ্রেপ্তার হন মোট ১ হাজার ২৯৯ জন। তাঁদের মধ্যে ১১ জন গডফাদারসহ ৮৯ জন শীর্ষ মাদক কারবারি রয়েছেন।
মোস্তাফিজুর রহমান জানান, অভিযানের সময় ৩ লাখ ৯ হাজার ১০১টি ইয়াবা, ৩ দশমিক ৭৬ কেজি হেরোইন, ১ দশমিক ১ কেজি আইস, ৩ হাজার ৭৭৪ বোতল ফেনসিডিল ও ২ হাজার ৪১৬ বোতল বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মদ উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধার হওয়া মাদকের মধ্যে আরও রয়েছে, বিয়ার ২ হাজার ৪১৬ ক্যান, টাপেন্টাডল ট্যাবলেট ৫ হাজার ৭৯১ পিস, চোলাই মদ ১ হাজার ৩৮০ লিটার, ৬৬৪ কেজি গাঁজা, ইনজেকশন ৪ হাজার ২২২ অ্যাম্পুল। এর বাইরে অভিযানকাল একটি শটগান, ৫১টি গুলি, ৯টি বিভিন্ন ধরনের যানবাহন এবং ২১ লাখ ১১ হাজার ৭৮০ টাকা উদ্ধার ও জব্দ করা হয়েছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ‘আমাদের প্রতি একটি অভিযোগ রয়েছে, আমরা শুধু ছোট মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেপ্তার করি বা আইনের আওতায় আনি। তবে এটি ঠিক নয়। আমরা বড় মাদক ব্যবসায়ীদেরও আইনের আওতায় আনি।’
অধিদপ্তরের বিরুদ্ধে মাদকসেবী ও মাদক ব্যবসায়ীর প্রকৃত সংখ্যা কমিয়ে দেখানোর অভিযোগের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘সংখ্যা কমানো হয়নি।’
রাজধানী ঢাকার অবৈধ বারের বিষয়ে জানতে চাইলে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বলেন, ‘কেউ অবৈধভাবে মাদক বিক্রি করতে পারবে না। এ বিষয়ে আমরা সব সময় কাজ করি। আপনাদের কাছে তথ্য থাকলেও আমাদের দিন। প্রমাণ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ | দেশব্যাপী এক মাসের বিশেষ অভিযানে ১১ জন গডফাদারসহ ৮৯ জন শীর্ষ মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। সোমবার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান। |
আবরার ফাহাদের মৃত্যুবার্ষিকীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের মৌন মিছিল | বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মৌন মিছিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল। এ কর্মসূচি থেকে নিরাপদ ও মুক্তবুদ্ধিচর্চার গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাসের দাবি জানিয়েছেন ছাত্রদলের নেতা–কর্মীরা।
সোমবার বেলা দেড়টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে মিছিল বের করেন ছাত্রদলের নেতা–কর্মীরা। সংগঠনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় ও সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপনের নেতৃত্বে মিছিলে ছাত্রদলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা–কর্মীরা অংশ নেন।
মিছিলে আবরার ফাহাদ হত্যার বিচারের দাবিসংবলিত বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড ছিল ছাত্রদলের নেতা–কর্মীদের হাতে। শহীদ মিনার থেকে শুরু হওয়া ছাত্রদলের মিছিলটি ক্যাম্পাসের দোয়েল চত্বর হয়ে টিএসসি ও কলাভবন এলাকা ঘুরে রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এসে শেষ হয়। সেখানে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন ছাত্রদলের নেতা–কর্মীরা।
কর্মসূচি শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে নাহিদুজ্জামান বলেন, ‘আবরারকে স্মরণ করে এবং জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের চেতনাকে ধারণ করে আগামীতে আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই। সে জন্যই আমাদের এই কর্মসূচি।’ | বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মৌন মিছিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল। এ কর্মসূচি থেকে নিরাপদ ও মুক্তবুদ্ধিচর্চার গণতান্ত্রিক ক্যাম্পাসের দাবি জানিয়েছেন ছাত্রদলের নেতা–কর্মীরা। |
প্রধান উপদেষ্টার ২৫ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়নে সচিবদের প্রতি মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নির্দেশ | প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস গত ৪ সেপ্টেম্বর সচিবসভায় যে ২৫ দফা নির্দেশনা ও সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন, সেগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে সচিবদের প্রতি নির্দেশনা দিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন।
২৫ দফা নির্দেশনা উল্লেখ করে সেগুলো বাস্তবায়নের বিষয়ে সম্প্রতি সচিবদের কাছে পত্র পাঠান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। এ সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ৪ সেপ্টেম্বর প্রথম সচিবসভা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে নিজের অধীন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন প্রধান উপদেষ্টা। উল্লেখ্য, সব সচিবের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হয় সচিবসভা। এতে কখনো সরকারপ্রধান উপস্থিত থাকেন, আবার কখনো এটি মন্ত্রিপরিষদ সচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।
সচিবসভার নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়নে ৩০ সেপ্টেম্বর সচিবদের কাছে পত্র পাঠান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
ওই সব নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সৃষ্ট নতুন বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সরকারের সব পর্যায়ে সংস্কার কর্মসূচি গ্রহণ এবং বাস্তবায়নে প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া ‘মার্চিং অর্ডার’ অনুসরণ করতে হবে। সৃষ্টিশীল, নাগরিকবান্ধব মানসিকতা নিয়ে প্রতিটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় সংস্কার পরিকল্পনা এবং স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য সময়ভিত্তিক কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করে বাস্তবায়ন করতে হবে।
এ ছাড়া নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে সংস্কার কর্মসূচি প্রণয়নে প্রয়োজন অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনা ও তাঁদের মতামত নেওয়া, বিবেক ও ন্যায়বোধে উজ্জীবিত হয়ে সবাইকে নিজ নিজ ক্ষেত্রে সততা, নিষ্ঠা, জবাবদিহি নিশ্চিত করে নতুন বাংলাদেশ গড়তে হবে। নতুন বাংলাদেশ গড়ার জন্য গৎবাঁধা চিন্তাভাবনা থেকে বেরিয়ে এসে চিন্তার সংস্কার করে, সৃজনশীল উপায়ে জনস্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সরকারি কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। দুর্নীতির মূলোৎপাটন করে সেবা সহজীকরণের মাধ্যমে জনগণের সর্বোচ্চ সন্তুষ্টি অর্জন করতে হবে। সেবাপ্রার্থীদের কেউ যেন ভোগান্তি, হয়রানি কিংবা কোনো কারণে দীর্ঘসূত্রতার শিকার না হন, তা নিশ্চিত করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নতির ব্যবস্থা করতে হবে।
নির্দেশনায় বলা হয়, বর্তমানে বাংলাদেশকে নিয়ে বিশ্বব্যাপী যে আগ্রহ, ইতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে, দেশের স্বার্থে তা সর্বোত্তম উপায়ে কাজে লাগাতে হবে।
এ রকমভাবে ২৫টি নির্দেশনা উল্লেখ করে সেগুলো বাস্তবায়নে সচিবদের বলেছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। | প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস গত ৪ সেপ্টেম্বর সচিবসভায় যে ২৫ দফা নির্দেশনা ও সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন, সেগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে সচিবদের প্রতি নির্দেশনা দিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। |
যুক্তরাষ্ট্রের আইআরআই প্রতিনিধিদলের সঙ্গে এবি পার্টির মতবিনিময় | যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বেসরকারি সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের (আইআরআই) প্রতিনিধিদল আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছে। সোমবার বিকেলে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ বৈঠক হয়। এ সময় অন্তর্বর্তী সরকারের নানা কর্মকাণ্ড, সংস্কারপ্রক্রিয়া ও নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়।
এবি পার্টির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এ সময় আইআরআইয়ের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক প্রোগ্রাম পরিচালক জোশুয়া রোজেনব্লাম, ভারপ্রাপ্ত আবাসিক প্রোগ্রাম ম্যানেজার ক্রিস্টোফার ব্রেনান, সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার অমিতাভ ঘোষ ও বাংলাদেশ অফিসের প্রোগ্রাম ম্যানেজার রুকসানা হক উপস্থিত ছিলেন।
এবি পার্টির প্রতিনিধিদলে ছিলেন দলের সদস্যসচিব মজিবুর রহমান, যুগ্ম সদস্যসচিব আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, যোবায়ের আহমেদ ভূঁইয়া, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল মামুন, সহকারী সদস্যসচিব ও শ্যাডো কমিটি–বিষয়ক ইনচার্জ আবদুল হক এবং এবি মহিলা পার্টির ইনচার্জ নাসরীন সুলতানা উপস্থিত ছিলেন।
নতুন প্রজন্মের রাজনীতি সম্পর্কে আইআরআই প্রতিনিধিদলকে অবহিত করেন এবি পার্টির নেতারা। তাঁরা কীভাবে নীতিভিত্তিক রাজনীতির মাধ্যমে রাজনৈতিক রূপকল্প পরিবর্তন করতে চান এবং নতুন প্রজন্মের রাজনীতি সম্পর্কে নিজেদের ভাবনা প্রতিনিধিদলকে অবহিত করেছেন। এ সময় সারা দেশে দলীয় কর্মকাণ্ড সম্প্রসারণের পরিকল্পনা, বিশেষ করে রাজধানীর বাইরে সংগঠন বিস্তারের বিষয়েও তাদের জানানো হয়।
এবি পার্টির নেতারা প্রতিনিধিদলকে বলেন, কোনো ভয়ভীতি ছাড়াই গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষায় কাজ করার এখন উপযুক্ত সময়। আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাম্প্রতিক বৈঠকের কথাও উঠে আসে। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরবর্তী কার্যক্রম নিয়ে এবি পার্টির সদস্যসচিব প্রধান উপদেষ্টার কাছে ৬টি পর্যবেক্ষণ ও ১১ দফা প্রস্তাবের বিষয়ে অবহিত করেন।
এবি পার্টির নেতারা বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের শাসনামলে বিভিন্ন গণহত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধ, মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন এবং অর্থ পাচারের বিচার ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার বিষয়ে তাঁদের চিন্তাভাবনা সম্পর্কে প্রতিনিধিদলকে অবহিত করেন।
জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হাজারো তরুণের আত্মত্যাগের ইতিহাস স্মরণ করেন এবি পার্টির নেতারা। এ সময় তাঁরা একটি নতুন প্রগতিশীল বাংলাদেশ গড়ে সত্যিকার অর্থে সবার জন্য একটি কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। এ সময় আইআরআই প্রতিনিধিদল নতুন বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে এবি পার্টির কার্যক্রমকে স্বাগত জানিয়েছে। | যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বেসরকারি সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের (আইআরআই) প্রতিনিধিদল আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছে। সোমবার বিকেলে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ বৈঠক হয়। এ সময় অন্তর্বর্তী সরকারের নানা কর্মকাণ্ড, সংস্কারপ্রক্রিয়া ও নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়। |
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও একজন প্রসিকিউটর নিয়োগ | আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও একজন প্রসিকিউটর নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সলিসিটর অনুবিভাগ সোমবার এ নিয়োগ–সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
নতুন নিয়োগ পাওয়া প্রসিকিউটর হলেন আইনজীবী মো. সাইমুম রেজা তালুকদার। তিনি সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সমমর্যাদার সুযোগ-সুবিধা পাবেন। তাঁর নিয়োগ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
এর আগে ৫ সেপ্টেম্বর চিফ প্রসিকিউটরসহ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চারজন প্রসিকিউটর নিয়োগ করা হয়। চিফ প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগ পান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। চার প্রসিকিউটর হলেন মো. মিজানুল ইসলাম, গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামিম, বি এম সুলতান মাহমুদ ও আবদুল্লাহ আল নোমান। | আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও একজন প্রসিকিউটর নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সলিসিটর অনুবিভাগ সোমবার এ নিয়োগ–সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। |
টানা দুই জয়ে শীর্ষে ইংল্যান্ড | জয়ের জন্য শেষ ওভারে ইংল্যান্ডের দরকার ছিল ৪ রান। দক্ষিণ আফ্রিকার পেসার আয়াবঙ্গা খাকার দ্বিতীয় বলেই চার মেরে ইংল্যান্ডকে ৭ উইকেটের জয় এনে দেন ন্যাট শিভার–বার্নট। নারী টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এ নিয়ে টানা দুই ম্যাচই জিতে ‘বি’ গ্রুপের শীর্ষে উঠে এল ইংল্যান্ড।
শারজা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৬ উইকেটে ১২৪ রান তোলে দক্ষিণ আফ্রিকা। ৩৯ বলে ৪২ রান করেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক লরা ভলভার্ট। পাওয়ার প্লেতে ওঠা ১ উইকেটে ৩৭ রানের মধ্যে ১৫ বলে ২২ রান ভলভার্টের। ১৬তম ওভারে দলীয় ৮৮ রানে আউট হন ভলভার্ট।
দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসে ভলভার্ট ছাড়াও দুই অঙ্কের ইনিংস আছে আরও চারটি। ১৭ বলে ২৬ রান করেন মারিজানে কাপ, ১১ বলে ২০ রানে অপরাজিত ছিলেন অ্যানেরি ডেরেকসেন, ২৬ বলে ১৮ রান করেন অ্যানেকে বোস ও ১৯ বলে ১৩ রান করেন তাজমিন ব্রিটস। ইংল্যান্ডের তিন স্পিনার সারা গ্লেন, চার্লি ডিন ও সোফি একলেস্টন মিলে ১২ ওভারে মাত্র ৫৮ রানে ৪টি উইকেট নেন। ১৫ রানে ২ উইকেট নেন একলেস্টন।
তাড়া করতে নামা ইংল্যান্ডকে বেকায়দায় ফেলতে পারত দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু একাধিক ক্যাচ ছাড়ার মাশুল দিতে হয়েছে। দুটি জুটিতে ভর করে লক্ষ্যটি টপকে গেছে ইংল্যান্ড। দ্বিতীয় উইকেটে ড্যানি ওয়াট ও এলিস কাপেসির ২৬ বলে ৩৪ এবং তৃতীয় উইকেটে ওয়াট ও ন্যাট শিভারের ৫৫ বলে ৬৪ রানের জুটিতে লক্ষ্যটি সহজ করে ফেলে ইংল্যান্ড। ৪৩ বলে ৪৩ করে ১৮তম ওভারের শেষ বলে আউট হন ড্যানি ওয়াট। ৩৬ বলে ৪৮ রানে অপরাজিত ছিলেন ন্যাট শিভার। দুজনেই দুটি ‘হাফ–চান্স’ দিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকাকে।
এই জয় ইংল্যান্ডের জন্য প্রতিশোধেরও। গত বছর নারী টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ৬ রানে হেরেছিল ইংল্যান্ড। ২ ম্যাচে ১ জয়ে মোট ২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলে তৃতীয় দক্ষিণ আফ্রিকা। সমান ম্যাচে সমান পয়েন্ট পেলেও দক্ষিণ আফ্রিকার (০.২৪৫) সঙ্গে রান রেটে এগিয়ে দ্বিতীয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ (১.১৫৪)। বাংলাদেশও ২ ম্যাচে ১ জয়ে মোট ২ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ। নিগারদের রান রেট –০.১২৫। গ্রুপের তলানিতে থাকা স্কটল্যান্ড ২ ম্যাচে জয়হীন।
দুবাইয়ে বুধবার স্কটল্যান্ড এবং শনিবার বাংলাদেশের মুখোমুখি হবে দক্ষিণ আফ্রিকা। শারজায় ইংল্যান্ডের পরবর্তী ম্যাচ রোববার স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে। দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হওয়ার আগে আগামী বৃহস্পতিবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে লড়বে বাংলাদেশ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
দক্ষিণ আফ্রিকা: ২০ ওভারে ১২৪/৬ (ভলভার্ট ৪২, কাপ ২৬, ডেরেকসেন ২০*; একলেস্টন ২/১৫, গ্লেন ১/১৮)।
ইংল্যান্ড: ১৯.২ ওভারে ১২৫/৩ (ন্যাট শিভার ৪৮*, ড্যানি ওয়াট ৪৩, এলিস ১৯; কাপ ১/১৭, নাদিন ১/২৩)।
ফল: ইংল্যান্ড ৭ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা: সোফি একলেস্টন (ইংল্যান্ড)। | জয়ের জন্য শেষ ওভারে ইংল্যান্ডের দরকার ছিল ৪ রান। দক্ষিণ আফ্রিকার পেসার আয়াবঙ্গা খাকার দ্বিতীয় বলেই চার মেরে ইংল্যান্ডকে ৭ উইকেটের জয় এনে দেন ন্যাট শিভার–বার্নট। নারী টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এ নিয়ে টানা দুই ম্যাচই জিতে ‘বি’ গ্রুপের শীর্ষে উঠে এল ইংল্যান্ড। |
এক বছরে গাজার ৪০ হাজার স্থাপনায় হামলা | গত এক বছরে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ৪০ হাজারের বেশি স্থাপনা লক্ষ্য করে বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এ সময় ৪ হাজার ৭০০ সুড়ঙ্গের সন্ধান পেয়েছে তারা। এ ছাড়া গাজার বিভিন্ন স্থানে অন্তত ১ হাজার রকেট উৎক্ষেপণ কেন্দ্র ধ্বংস করার দাবি করেছে ইসরায়েল।
ইসরায়েলে হামাসের হামলার এক বছর পূর্ণ হয়েছে গতকাল। হামাসের হামলার পরপরই গাজায় পাল্টা হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। শুরু হয় সর্বাত্মক যুদ্ধ। এর এক বছর পূর্তিতে গতকাল সোমবার ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী এ তথ্য প্রকাশ করেছে।
অনুমতি সাপেক্ষে গাজা যুদ্ধে নিহত ইসরায়েলি সেনাদের একটি তালিকাও প্রকাশ করেছে দেশটির সামরিক বাহিনী। তালিকা অনুযায়ী, গত এক বছরে এই যুদ্ধে ৭২৬ জন ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৩৮০ জনেরই মৃত্যু হয়েছে ৭ অক্টোবর হামাসের আকস্মিক হামলার সময়। অপর দিকে ২৭ অক্টোবর থেকে গাজায় স্থল অভিযান শুরুর পর মৃত্যু হয়েছে বাকি ৩৪৬ সেনার। এ সময় ৪ হাজার ৫৭৬ সেনা আহত হয়েছেন। অভিযান চালানোর সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ৫৬ জন সেনা নিহত হয়েছেন। তবে তাঁদের মৃত্যু কীভাবে হয়েছে, এ বিষয়ে সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে বিস্তারিত জানানো হয়নি।
৭ অক্টোবরের বর্ষপূর্তিতে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে ৩ লাখ রিজার্ভ সেনার তালিকা করেছে তারা। তাঁদের মধ্যে ৮২ শতাংশ পুরুষ ও ১৮ শতাংশ নারী। তাঁদের প্রায় অর্ধেকের বয়স ২০ থেকে ২৯ বছরের মধ্যে।
গাজায় ইসরায়েলের হামলার পর প্রতিশোধ নেওয়ার ঘোষণা দেয় লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজুবল্লাহ। এ ছাড়া ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরাও ইসরায়েলকে হুমকি দেয়। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, যুদ্ধ শুরুর পর গাজা থেকে ইসরায়েলে অন্তত ১৩ হাজার ২০০ রকেট ছোড়া হয়েছে। এ সময় লেবানন থেকে ছোড়া হয়েছে ১২ হাজার ৪০০ রকেট। এ ছাড়া ইরান থেকে ৪০০, ইয়েমেন থেকে ১৮০ ও সিরিয়া থেকে ৬০টি রকেট ছোড়া হয়েছে ইসরায়েলে।
ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা লেবাননের ৮০০–এর বেশি যোদ্ধাকে হত্যা করেছে। এ সময় ৪ হাজার ৯০০টি স্থাপনা লক্ষ্য করে বিমান হামলা ও প্রায় ৬ হাজার স্থাপনায় স্থল হামলা চালানো হয়েছে। এ সময় দখল করা পশ্চিম তীর ও জর্ডান উপত্যকা থেকে ৫ হাজারের বেশি সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে তারা।
গাজা যুদ্ধের বর্ষপূর্তিতে দেওয়া তথ্যে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, গত এক বছরে তারা হামাসের আটজন ব্রিগেড কমান্ডারকে হত্যা করেছে। এ ছাড়া ৩০ জন ব্যাটালিয়ন কমান্ডার ও ১৬৫ জন কোম্পানি কমান্ডারও নিহত হয়েছেন।
গত বছরের ৭ অক্টোবর গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। এর আগে হামাস ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি নাগরিককে হত্যা ও ২৫০ জনকে জিম্মি করে। গত এক বছরে ইসরায়েলি হামলায় প্রায় ৪২ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। | গত এক বছরে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ৪০ হাজারের বেশি স্থাপনা লক্ষ্য করে বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এ সময় ৪ হাজার ৭০০ সুড়ঙ্গের সন্ধান পেয়েছে তারা। এ ছাড়া গাজার বিভিন্ন স্থানে অন্তত ১ হাজার রকেট উৎক্ষেপণ কেন্দ্র ধ্বংস করার দাবি করেছে ইসরায়েল। |
মসজিদুল আকসা রক্ষায় ঢাকায়
আলোচনা অনুষ্ঠান | ইসরায়েলি হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত ফিলিস্তিনের বায়তুল মোকাদ্দিস মসজিদুল আকসা রক্ষায় ঢাকায় ‘নুসরতে আকসা’ (আকসার সহযোগিতায়) নামে একটি আলোচনা অনুষ্ঠান হয়েছে। ‘আল মারকাজুল ইসলামী’ নামের একটি সংগঠন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
এতে দেশের কয়েকজন আলেমসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের তিনজন বিশিষ্ট ব্যক্তি বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে ফিলিস্তিন, আজাদ কাশ্মীর, ইয়েমেন ও পাকিস্তানের কয়েকজন ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব ও ইসলামি গবেষকের ধারণ করা ভিডিও বক্তব্য প্রচার করা হয়।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার জবাবে গাজায় শুরু হওয়া যুদ্ধের বর্ষপূর্তির দিন সোমবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এই আলোচনা অনুষ্ঠান হয়।
আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, অনুষ্ঠানে ফিলিস্তিনের ওলামা পরিষদের চেয়ারম্যান নাওয়াফ আত্তাকরুরী, ইয়েমেনের ইসলামি গবেষক শায়খ আবদুল্লাহ বিন আবদুল মজিদ আয-যানদানি, পাকিস্তানের কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের মহাসচিব শায়খ হানিফ জালেন্দরী, পাকিস্তানের মাওলানা আহমাদ বিন নূরী, কাজী এহসান আহমদ এবং ফিলিস্তিনের শায়খ খালেদ মিশআলের ভিডিও বক্তব্য প্রচার করা হয়। ঢাকার মোহাম্মদপুরের একটি মাদ্রাসার মুহতামিম মুফতি মাহমুদুল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ওস্তাদ মুছা আল হাফিজ, নূরুল হুদা ফয়েজী, লেখক ও গবেষক মুহাম্মদ যাইনুল আবেদিন, শরীফ মুহাম্মদ, কাকরাইল সেন্ট মেরিজ ক্যাথেড্রাল গির্জার প্রধান পুরোহিত এলবার্ট রোজারিও, বাংলাদেশ হিন্দু মহাজোটের সাধারণ সম্পাদক এম কে রায়, ঢাকা আন্তর্জাতিক বৌদ্ধবিহারের ভিক্ষু ভদন্ত স্বরুপানন্দ ভিক্ষু বক্তব্য দেন।অনুষ্ঠানের আয়োজক সংগঠন আল মারকাজুল ইসলামী আগামী ৭-৯ জানুয়ারি বিভিন্ন দেশের আলেম, ইসলামি গবেষক, লেখকদের নিয়ে ঢাকায় একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন করার ঘোষণা দিয়েছে। | ইসরায়েলি হামলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত ফিলিস্তিনের বায়তুল মোকাদ্দিস মসজিদুল আকসা রক্ষায় ঢাকায় ‘নুসরতে আকসা’ (আকসার সহযোগিতায়) নামে একটি আলোচনা অনুষ্ঠান হয়েছে। ‘আল মারকাজুল ইসলামী’ নামের একটি সংগঠন এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। |
এখন ওষুধ কিনবেন না চাল কিনবেন হাকিমপুরের মালেক মিয়া? | মালেক মিয়ার (৭৫) লিকলিকে শরীর। চশমার মোটা কাচের ভেতর দিয়েও দেখেন আবছা আবছা। অভাবের সংসারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তিনি। প্রতিদিন সকাল হলেই দুমুঠো খাবারের সন্ধানে বেরিয়ে পড়তেন। ২০ থেকে ২৫ কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে লোকজনের কাছ থেকে চেয়েচিন্তে কয়েক কেজি চাল নিয়ে নিজের কুঁড়েঘরে ফিরতেন। তা দিয়েই চলত সংসার।
এখন সেটাও আর জোটে না। গত জুন মাসে গ্রামের রাস্তায় হোঁচট খেয়ে পড়ে গিয়ে পা ভাঙে তাঁর। সেই থেকে শয্যাশায়ী তিনি। ভাঙা পা নিয়ে ভিক্ষার পথও বন্ধ এখন। ওষুধ কিনবেন নাকি খাবার কিনবেন? এ অবস্থায় ছয় মাস ধরে অনাহারে-অর্ধাহারে কাটছে মালেক মিয়ার জীবন।
মালেক মিয়ার বাড়ি দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার নন্দীপুর গ্রামে। তাঁর একমাত্র মেয়ের বিয়ের হয়ে গেছে। এখন তাঁর অভাব-অনটনের সংসারে একমাত্র সঙ্গী স্ত্রী আরজিনা বেগম। এখন তিনিই বাড়ি বাড়ি গিয়ে সাহায্য চেয়ে দুই বেলার খাবার জোটাচ্ছেন।
সম্প্রতি মালেক মিয়া বলেন, তিনি হেঁটেই ইউনিয়নের ঘাসুড়িয়া, সাতকুড়ি, দেবখন্ডা, খট্টামাধবপাড়া, পাশের কাটলা ইউনিয়নের কাটলা, রামচন্দ্রপুর, দাউদপুরের বাড়িতে বাড়িতে এবং হিলি শহরের দোকানে দোকানে গিয়ে মানুষের ভিক্ষা করে সংসার চালাতেন। পা ভেঙে কয়েক মাস ধরে বাড়িতে পড়ে আছেন।
মালেক মিয়ার প্রতিবেশী শান্ত ইসলাম বলেন, বৃদ্ধ মালেক মিয়া চোখে কম দেখেন। পড়ে গিয়ে বাঁ পায়ে আঘাত পান। প্রথমে স্থানীয় কবিরাজের নিকট কয়েক মাস ধরে চিকিৎসা নেন। সেখানে তাঁর পায়ের কোনো উন্নতি হয়নি। ৬ নভেম্বর স্থানীয় হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে গেলে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরে চিকিৎসক জানান, তাঁর বাঁ পা ভেঙে গেছে। ব্যবস্থাপত্রে কিছু ওষুধ লিখে দিলেও উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
আরজিনা বেগম বলেন, তাঁদের তো ভ্যান ভাড়া দেওয়ারই টাকা নেই। রংপুরের হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা করাবেন, এটা তো কল্পনাতীত। তাঁর স্বামী সরকার থেকে তিন মাস পর পর ১ হাজার ৫০০ টাকা বয়স্কভাতা পান। তা দিয়ে ‘নুন আনতে পান্তা ফুরায়’ দশা তাঁদের। তাঁর বয়সও ৬০ বছর হয়ে গেছে। তবে তিনি কোনো সহায়তা পান না।
খট্টামাধবপাড়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোবারক হোসেন বলেন, মালেক মিয়া গরিব ও অসহায় একজন মানুষ। তিনি ও তাঁর স্ত্রী দুজনই অন্যের সাহায্য-সহযোগিতা নিয়েই দিন পার করেন। মালেক মিয়ার পায়ের চিকিৎসার জন্য ইউনিয়ন থেকে এই মুহূর্তে আর্থিক সহযোগিতা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
মালেক মিয়া বলেন, বয়স হয়ে গেছে তাঁর। এরপরও প্রতিদিন ২০ থেকে ২৫ কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে ভাতের চাল জোগাড় করতেন। এখন কী করবেন, তা কিছুই জানেন না। | মালেক মিয়ার (৭৫) লিকলিকে শরীর। চশমার মোটা কাচের ভেতর দিয়েও দেখেন আবছা আবছা। অভাবের সংসারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তিনি। প্রতিদিন সকাল হলেই দুমুঠো খাবারের সন্ধানে বেরিয়ে পড়তেন। ২০ থেকে ২৫ কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে লোকজনের কাছ থেকে চেয়েচিন্তে কয়েক কেজি চাল নিয়ে নিজের কুঁড়েঘরে ফিরতেন। তা দিয়েই চলত সংসার। |
শাহজাদপুরে হামলার ভয়ে ১০ বছর ধরে গ্রামছাড়া ৩০০ পরিবার | ভিটাবাড়ি পুরো ফাঁকা। হামলা–ভাঙচুরের চিহ্ন এখনো স্পষ্ট। প্রায় ১০ বছর ধরে বাড়িগুলোতে কেউ থাকেন না। বিধ্বস্ত বাড়িগুলো যেন পরিণত হয়েছে ‘ভুতুরে বাড়িতে’। সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার কায়েমপুর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত সড়াতৈল গ্রামের একাংশের চিত্র এটি। ঘটনার সূত্রপাত ২০১২ সালে। জমি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে গ্রামের মোল্লা ও ডোকলা (প্রামাণিক) গোষ্ঠীর মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের পাঁচজন প্রাণ হারান, আহত হন শতাধিক মানুষ। এসব ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলাও হয়েছে। এর পর থেকেই হামলার ভয়ে গ্রামছাড়া হয়েছে মোল্লা গোষ্ঠীর প্রায় ৩০০ পরিবার।
১০ বছর ধরে গ্রামের বাড়িঘর ও দোকানপাট ফেলে রেখে বিভিন্ন স্থানে ভাসমান জীবন যাপন করছেন মোল্লা পক্ষের লোকজন। এ ঘটনায় প্রতিপক্ষের করা মামলায় আদালত থেকে অনেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। তবে প্রতিপক্ষের হামলার ভয়ে অনেকেই পালিয়ে জীবন যাপন করছেন। গত ৬ নভেম্বর বিকেলে শাহজাদপুরের তালগাছী করতোয়া কলেজ চত্বরে সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে এসব তথ্য প্রকাশ করেন কায়েমপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য সড়াতৈল গ্রামের মো. আশরাফ। তিনি সড়াতৈল গ্রামের মৃত শাহাদ মোল্লার বড় ছেলে ও মোল্লা গোষ্ঠীর অন্যতম সদস্য। সংঘর্ষের ঘটনায় ডোকলা পক্ষের করা দুটি হত্যা মামলার একটিতে ৪ নম্বর ও আরেকটিতে ১১ নম্বর আসামি আশরাফ। বর্তমানে তিনি জামিনে আছেন।
লিখিত বক্তব্যে আশরাফ ডোকলা গোষ্ঠীর লোকজনকে দাঙ্গাবাজ-সন্ত্রাসী উল্লেখ করে নিজেদের নিরাপত্তা দাবি করেন। এ সময় ওই গ্রামের ভুক্তোভোগী শতাধিক নারী–পুরুষসহ কয়েকজন স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে আশরাফ বলেন, সর্বশেষ ২০১২ সালের ১২ জুন সকালে মোল্লা ও ডোকলা গোষ্ঠীর লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে ডোকলা পক্ষের ফারাজ হোসেন নামের একজন নিহত হন। এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তির ছেলে আফগান প্রামাণিক বাদী হয়ে মোল্লা পক্ষের ৪৮ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তার এড়াতে ও প্রতিপক্ষের হামলার ভয়ে মোল্লা পক্ষের তিন শতাধিক পরিবার তাদের বাড়িঘর ফেলে রেখে বিভিন্ন স্থানে ভাসমান জীবন যাপন করছে। এদিকে বাড়িতে না থাকার সুযোগে ডোকলা পক্ষের লোকজন তাঁদের বাড়িঘরে হামলা চালান এবং ধান–চাল, গরু, টাকা, স্বর্ণালঙ্কারসহ প্রায় ছয় কোটি টাকার সম্পদ লুটপাট করেছেন। এ ছাড়া তাঁদের প্রায় ২০০ একর জমি প্রতিপক্ষের লোকজন ২০১২ সাল থেকে ভোগদখল করে আসছেন বলে দাবি করেন আশরাফ।
সংবাদ সম্মেলনের পর মঙ্গলবার দুপুরে চলনবিল–অধ্যুষিত সড়াতৈল গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, জনমানবশূন্য বাড়িগুলো ধ্বংসস্তূপের মতো পড়ে আছে। ওই গ্রামের সংযুক্ত আরব আমিরাতপ্রবাসী আবদুল করিম (৪৫) সম্প্রতি গ্রামে এসেছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ছোটবেলা থেকেই গ্রামে মোল্লা গোষ্ঠী আর ডোকলা গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ, মারামারি, ভাঙচুর—এসব দেখে আসছি। ২০১২ সালের আগে এক পক্ষ গ্রামছাড়া ছিল। এখন আবার আরেক পক্ষ গ্রামছাড়া হয়েছে।’
অভিযুক্ত ডোকলা পক্ষের একজন হলেন আবদুল আজিজের ছেলে আবুল মাজন। তিনি কায়েমপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। প্রতিপক্ষের অভিযোগগুলো অস্বীকার করে আবুল মাজন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা গ্রামের কোনো বাড়িতে হামলা বা লুটপাট করিনি। জমিও জবরদখল করছি না। কাউকেই গ্রামে আসতে বাধা দিচ্ছি না। এসব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।’ তিনি বলেন, মোল্লা গোষ্ঠীর গুটি কয়েক লোক আছেন, যাঁরা হত্যাকাণ্ডের ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত। শুধু তাঁরাই গ্রেপ্তারের ভয়ে পালিয়ে আছেন। এ ছাড়া বাকি সবাই গ্রামেই আছেন বলে তিনি দাবি করেন।
কায়েমপুর ইউপির সদস্য আবদুল কাদের বলেন, বিষয়টি মীমাংসার জন্য এলাকার গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ বেশ কয়েকবার উদ্যোগ নিয়েছেন। তবে তাতে কোনো লাভ হয়নি। গ্রামের সবাই মিলেমিশে একসঙ্গে বসবাস করুক, এটাই সবার চাওয়া।
সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই এলাকায় বিট পুলিশিং জোরদার করা হচ্ছে। সেখানে দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা যাঁরা আছেন, তাঁরা গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করছেন। গ্রাম ছেড়ে এখন যাঁরা বাইরে অবস্থান করছেন, তাঁদের সবাইকে আশ্বস্ত করে বলতে চাই, সবাই দ্রুতই নিজ বাড়িতে শান্তিতে বসবাস করতে পারবেন। ওই গ্রামে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পুলিশের। সেই লক্ষ্যেই কাজ চলছে।’ | ভিটাবাড়ি পুরো ফাঁকা। হামলা–ভাঙচুরের চিহ্ন এখনো স্পষ্ট। প্রায় ১০ বছর ধরে বাড়িগুলোতে কেউ থাকেন না। বিধ্বস্ত বাড়িগুলো যেন পরিণত হয়েছে ‘ভুতুরে বাড়িতে’। সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার কায়েমপুর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত সড়াতৈল গ্রামের একাংশের চিত্র এটি। ঘটনার সূত্রপাত ২০১২ সালে। জমি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে গ্রামের মোল্লা ও ডোকলা (প্রামাণিক) গোষ্ঠীর মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে উভয় পক্ষের পাঁচজন প্রাণ হারান, আহত হন শতাধিক মানুষ। এসব ঘটনায় পাল্টাপাল্টি মামলাও হয়েছে। এর পর থেকেই হামলার ভয়ে গ্রামছাড়া হয়েছে মোল্লা গোষ্ঠীর প্রায় ৩০০ পরিবার। |
লোকমান ফ্রান্সের ‘পাগলা সমর্থক’ | বিশ্বকাপ ফুটবল এলেই ফ্রান্সের জন্য আকুল হয়ে ওঠেন লোকমান হোসেন (৩৪)। ফ্রান্সের খেলোয়াড়দের প্রতি তাঁর ভালোবাসার শেষ নেই। সিলেট বিভাগজুড়ে ফ্রান্সের বিজয় কামনায় পতাকা, ব্যানার, ফেস্টুন, বিলবোর্ড লাগিয়ে বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছেন, ‘এবারও ফ্রান্সই বিশ্বকাপ জয় করবে’।
২০১৮ সালের রাশিয়া বিশ্বকাপে নিজের জমানো আড়াই লাখ টাকা খরচ করে পুরো সিলেট বিভাগেই বিলবোর্ড লাগিয়ে ফ্রান্স দলের হয়ে প্রচারণা চালিয়েছিলেন তিনি। তাঁর প্রত্যাশা পূরণ হয়েছিল। সেবার চ্যাম্পিয়ন হয় শেষ পর্যন্ত ফ্রান্সই।
পেশায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি লোকমান মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার মন্দিরগাঁও এলাকার প্রয়াত দরস মিয়ার ছেলে। স্ত্রী ও এক মেয়ে নিয়ে তাঁর সংসার। তাঁকে নিয়ে ২০১৮ সালের ১৯ জুলাই প্রথম আলোতে ‘বিশ্বকাপ শেষ হলেও ফ্রান্সের জার্সি পরে আছেন লোকমান’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
কাতার বিশ্বকাপের সময়ও থেমে নেই লোকমান। কিছুদিন আগে তাঁর পায়ে অস্ত্রোপচার হয়েছে। একটু সুস্থ হয়েই ফ্রান্সের সমর্থনে মাঠে নেমেছেন লোকমান। পতাকা, ব্যানার, ফেস্টুন, বিলবোর্ড লাগানোর পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে ফ্রান্সের জন্য দোয়া চাচ্ছেন।
শনিবার দুপুরে শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় ৩০টি বিলবোর্ডে লোকমান হোসেনের ছবি ও নাম সংযুক্ত করে লেখা রয়েছে ‘এবারও বিশ্বকাপ যাবে ফ্রান্সের ঘরে’। স্টেশনে আসা লোকজন লোকমানের এসব বিলবোর্ড দেখছেন। অনেকে লোকমানের সঙ্গে ছবি তুলছেন।
লোকমান হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘২০১৪ সাল থেকে আমি ফ্রান্সের জন্য টাকা জমানো শুরু করি। ২০১৮ সালের বিশ্বকাপে প্রায় আড়াই লাখ টাকা খরচ করে আমি পুরো সিলেট বিভাগে ফ্রান্সের পতাকা, ব্যানার, ফেস্টুন, বিলবোর্ড ইত্যাদি লাগাই। গ্রামে–গঞ্জে প্রজেক্টর লাগিয়ে মানুষকে খেলা দেখার সুযোগ করে দিয়েছি। প্রথম প্রথম সবাই আমাকে অন্য চোখে দেখলেও এখন সবাই আমাকে “ফ্রান্স–ভক্ত লোকমান” হিসেবেই চেনে। ২০১৮ সালে আমি বলেছিলাম, ফ্রান্স বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হবে। ফ্রান্স চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। এ বছরও ফ্রান্স দুর্দান্ত খেলা উপহার দিচ্ছে। এ বছরও বিশ্বকাপ চলে যাবে ফ্রান্সের ঘরে।’
লোকমান বলেন, ‘আমি চার-পাঁচ মাস ধরে অসুস্থ। আমার পায়ে ইনফেকশন হওয়ার কারণে পায়ের কিছু জায়গা থেকে অস্ত্রোপচার করে মাংস কেটে ফেলতে হয়েছে। এই কারণে আমি এ বছর এখানে-ওখানে তেমন দৌড়াতে পারছি না। তবুও এ বছর প্রায় ৫০ হাজার টাকার মতো খরচ করে বিভিন্ন জায়গায় বিলবোর্ড লাগাচ্ছি।’
লোকমানের এলাকার বাসিন্দা মো. আলামিন বলেন, শ্রীমঙ্গল উপজেলায় ফ্রান্স–ভক্ত লোকমান বললে অনেকেই তাঁকে চেনেন। তাঁর মতো এমন সমর্থক ব্রাজিল-আর্জেন্টিনারও নেই। বিশ্বকাপ ফুটবল খেলা এলে তিনি ফ্রান্স নিয়ে আলাদা কিছু করেন। খেলায় ফ্রান্স জয়ী হলে তিনি নিজ উদ্যোগে লোকজন নিয়ে মিছিল বের করেন। গত বছর তিনি প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, ফ্রান্স না জিতলে তিনি জার্সি খুলবেন না। ফ্রান্স বিজয়ী হওয়ার পর তিনি গা থেকে জার্সি খুলেছিলেন। ফ্রান্স চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর গত বছর নিজের টাকায় তিনি মিষ্টি বিতরণ করেছিলেন। তিনি ফ্রান্সের পাগলা সমর্থক। | বিশ্বকাপ ফুটবল এলেই ফ্রান্সের জন্য আকুল হয়ে ওঠেন লোকমান হোসেন (৩৪)। ফ্রান্সের খেলোয়াড়দের প্রতি তাঁর ভালোবাসার শেষ নেই। সিলেট বিভাগজুড়ে ফ্রান্সের বিজয় কামনায় পতাকা, ব্যানার, ফেস্টুন, বিলবোর্ড লাগিয়ে বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছেন, ‘এবারও ফ্রান্সই বিশ্বকাপ জয় করবে’। |
শতাধিক ভবন পরিত্যক্ত | কুড়িগ্রামে মাঠপর্যায়ে কর্মরত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের (ব্লক সুপারভাইজার) জন্য নির্মিত আবাসিক ভবনগুলো (কোয়ার্টার) অবহেলা ও অযত্নে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে কৃষি কর্মকর্তারা এসব ভবনে থাকেন না। ফলে চুরি হয়ে গেছে অনেক ভবনের দরজা-জানালা, দেয়ালের ইটসহ মূল্যবান উপকরণ। ভবনের প্রাঙ্গণ ঝোপ-জঙ্গল আর আবর্জনায় পূর্ণ।
উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ব্লক সুপারভাইজারদের বর্তমানে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা বলা হয়। ১৯৮৮ থেকে ১৯৯৬ সালের মধ্যে ব্লক সুপারভাইজার (বিএস) কৃষি কর্মকর্তাদের আবাসনের জন্য জেলার ৯ উপজেলায় প্রায় ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ১১৫টি বিএস কোয়ার্টার নির্মাণ করা হয়। মোট জমির পরিমাণ প্রায় ১৩ একর। একটি বিএস কোয়ার্টারে দুটি পরিবার থাকতে পারবেন। বর্তমানে সদর, নাগেশ্বরী ও রাজারহাট উপজেলার মাত্র ৭টি কোয়ার্টারে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা থাকছেন।
উলিপুর উপজেলার ধরণীবাড়ি ইউনিয়ন বিএস কোয়ার্টার ঘুরে দেখা যায়, কোয়ার্টারে দুটি পরিবার বসবাস করছেন। তাঁদের একজন আমানত ব্যাপারী ও অন্যজন দীলিপ চন্দ্র শীল। আমানত ব্যাপারী বলেন, তিনি স্থানীয় বাজারে ব্যবসা করেন। আর দীলিপ চন্দ্র আছেন আট বছর ধরে।
আমানত ব্যাপারী বলেন, ধরলার ভাঙনে ভিটামাটি হারিয়ে পরিবার নিয়ে এই পরিত্যক্ত ভবনে এসে ওঠেন। সে সময় ভবন প্রাঙ্গণ ঝোপ-জঙ্গলে ভরা ছিল। অনেক রাত পর্যন্ত জুয়া ও মাদকসেবীদের আড্ডা হতো। সরকার চাইলে যে কোনো সময় তিনি ভবন ছেড়ে দিতে রাজি আছেন। তিনি বলেন, ‘এক যুগ ধরে এখানে বসবাস করছি, কখনো কোনো অফিসার আসেন নাই। এত সুন্দর বিল্ডিং বাড়ি অবহেলা ও অযত্নে ক্ষয়ে যাচ্ছিল, অনেক রুমের জানালা–দরজা চুরি হয়ে গেছিল।’
ধরণীবাড়ী ইউনিয়নের ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা হামিদুর রহমান বলেন, ‘আমার বাড়ি এই ইউনিয়নেই। তা ছাড়া কোয়ার্টারগুলো বসবাসের অনুপযোগী। তাই পরিবার নিয়ে বাস করি না।’ বিএস কোয়ার্টারে অন্য লোক বসবাস করে কীভাবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা আমি বলতে পারব না, স্যার জানেন।’
ধরণীবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এরশাদুল হক বলেন, প্রতিটি ইউনিয়নের তিনটি ওয়ার্ডে একজন করে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু অধিকাংশ ইউনিয়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা এসব কোয়ার্টারে থাকেন না। পরিত্যক্ত এসব ভবন সংস্কার করে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা এখানে থাকলে কৃষকদের উপকার হতো।
সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের নয়ারহাট বাজার ও ভেরভেরিতে অবস্থিত দুটি বিএস কোয়ার্টার ঘুরে দেখা গেছে, একতলা দুটি ভবনের ছাদ ও দেয়ালের পলেস্তারা খুলে পড়েছে। নেই দরজা-জানালার চৌকাঠ ও ইট। কোয়ার্টারের ভেতরে ঝোপ-জঙ্গলে পূর্ণ। কক্ষের ভেতরে স্থানীয় ব্যক্তিরা খড় রেখেছেন। কোনো কোনো কক্ষের মেঝেতে মলমূত্র ছড়িয়ে আছে। হলোখানা ইউনিয়নের বিএস কোয়ার্টারে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড লাগিয়েছেন নিজস্ব সংগঠনের কার্যালয়ের সাইনবোর্ড।
ভেরভেরি এলাকার বাসিন্দা নূর ইসলাম জানান, আগে এই বিএস কোয়ার্টারে ব্লক সুপারভাইজারেরা বসবাস করতেন। কৃষকেরা এখানে যে কোনো সমস্যা নিয়ে তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে আসতেন। কিন্তু ২০০০ সালের পর থেকে এই কোয়ার্টারে আর কেউ থাকেন না। নজরদারির অভাবে ভবনের দরজা-জানালা চুরি হয়ে গেছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত বলেন, বিএস কোয়ার্টার সংস্কার না করায় তা ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে যায়। ফলে সেখানে কৃষি কর্মকর্তারা বসবাস করতে চান না। তবে বিএস কোয়ার্টারে বসবাসের জন্য ফি বাবদ ৫০ টাকা করে ভাড়া প্রতি মাসে তাঁদের বেতন থেকে কাটা হয়।
বিপ্লব কুমার মোহন্ত আরও বলেন, জেলার নয়টি উপজেলায় ১১৫টি বিএস কোয়ার্টার রয়েছে। এর মধ্যে সাতটি ভবন জমির আগের মালিকেরা দখল করে নিয়েছেন। এ ছাড়া উলিপুর, ভূরুঙ্গামারী ও রাজারহাট উপজেলার সাতটি বেদখল হয়ে গেছে বলে তাঁদের কাছে তথ্য আছে। পরিত্যক্ত এসব কোয়ার্টার মেরামত করতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে জানানো হবে। অন্য লোক বসবাস করেন, সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। | কুড়িগ্রামে মাঠপর্যায়ে কর্মরত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের (ব্লক সুপারভাইজার) জন্য নির্মিত আবাসিক ভবনগুলো (কোয়ার্টার) অবহেলা ও অযত্নে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে কৃষি কর্মকর্তারা এসব ভবনে থাকেন না। ফলে চুরি হয়ে গেছে অনেক ভবনের দরজা-জানালা, দেয়ালের ইটসহ মূল্যবান উপকরণ। ভবনের প্রাঙ্গণ ঝোপ-জঙ্গল আর আবর্জনায় পূর্ণ। |
‘পাঁচ বছর পরপর ভোটের এই মজাই আলাদা’ | দলবদ্ধ হয়ে নারীরা ছুটছেন এক বাড়ি থেকে অন্য বাড়ি। পাড়ার মোড়ে মোড়ে জটলা বেঁধে আড্ডাও জমেছে। মাইক বাজিয়ে নানা গানের সুরে ভোট ও দোয়া চাচ্ছেন অনেকে। টাঙানো হয়েছে পোস্টার। রংপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন ঘিরে শহরের বিভিন্ন এলাকার পাড়া–মহল্লায় চাঞ্চল্য বেড়েছে। ২৭ ডিসেম্বর এই নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে। এর আগে গত শুক্রবার প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়।
গতকাল শনিবার রাতে নগরের বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে দেখা গেছে, মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রতীকসংবলিত পোস্টার ঝুলছে। দড়ি দিয়ে রাস্তার ওপর বিদ্যুতের এক খুঁটি থেকে অন্য খুঁটি, এক গাছ থেকে আরেক গাছের মধ্যে এসব পোস্টার ঝোলানো হয়েছে। পোস্টারের আকার একই, রং সাদাকালো।
গতকাল সন্ধ্যা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত নগরের মুন্সিপাড়া, কেনারীপাড়া, কাচারি বাজার, ধাপ, পাশারিপাড়া, রাধাবল্লভ, হনুমানতলা, ইঞ্জিনিয়ারপাড়াসহ আরও কিছু এলাকায় দেখা যায়, পাড়ার মোড়গুলোয় মানুষের জটলা আগের তুলনায় বেড়েছে। চায়ের দোকানগুলোতেও বেড়েছে বেচাবিক্রি। শুক্রবার প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার এক দিনের মধ্যেই পাড়ার মোড়ে মোড়ে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের কার্যালয় খোলা হয়েছে। সেখানে টেবিল-চেয়ার পেতে ভোটের নানা কার্যক্রম আর সমীকরণে ব্যস্ত প্রার্থীদের সমর্থকেরা।
মুন্সিপাড়া মোড়ে সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা মোস্তফা জামান বলেন, মানুষের এত দিন তেমন একটা কাজ ছিল না। এখন কমবেশি সবাই কাজে নেমে গেছে। পাড়ার মোড়গুলো বিভিন্ন বয়সী মানুষের আনাগোনায় জমজমাট হয়ে উঠেছে। ভোটের নানা খোশগল্পে মানুষজনের সময়ও বেশ কেটে যাচ্ছে।
কেরানীপাড়া এলাকার বাসিন্দা রোকসানা পারভীন বলেন, এবার নির্বাচনের পরিবেশ শুরুতেই ভালো লাগছে। অনেক মানুষের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। সবাই উৎসাহ নিয়ে কথা বলছেন। সবার মধ্যে ভোটের আমেজ শুরু হয়েছে।
বেলা দুইটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত মাইকের মাধ্যমে ভোটের প্রচারণা চালানো যায়। এ জন্য সে সময় সব প্রার্থীর কর্মীরা প্রচারণায় বের হন। এতে শব্দদূষণ হচ্ছে। এ বিষয়ে রেজাউল করিম নামে এক রাজনীতিবিদ বলেন, এই কয়েক দিন মাইকের শব্দে কান ঝালাপালা হবে। তাতে কোনো অসুবিধা নেই। পাঁচ বছর পরপর সিটির এই ভোটের মজাই আলাদা। কত মানুষ আনাগোনা করছেন মানুষের দ্বারে। এসব দেখে বেশ ভালোই লাগছে। মার্কা পাওয়ার পর ভোটের উৎসব যেন শুরু হয়েছে। | দলবদ্ধ হয়ে নারীরা ছুটছেন এক বাড়ি থেকে অন্য বাড়ি। পাড়ার মোড়ে মোড়ে জটলা বেঁধে আড্ডাও জমেছে। মাইক বাজিয়ে নানা গানের সুরে ভোট ও দোয়া চাচ্ছেন অনেকে। টাঙানো হয়েছে পোস্টার। রংপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন ঘিরে শহরের বিভিন্ন এলাকার পাড়া–মহল্লায় চাঞ্চল্য বেড়েছে। ২৭ ডিসেম্বর এই নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে। এর আগে গত শুক্রবার প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়। |
দুই বছরেও উদ্ঘাটিত হয়নি হত্যার রহস্য | শেরপুরে দুই বছরেও সেনাসদস্য মো. নাজিমউদ্দিনের স্ত্রী সুরভীর (৩০) হত্যার রহস্য উদ্ঘাটিত হয়নি। এতে তাঁর পরিবার ও স্বজনদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে।
সুরভী পৌর শহরের মোল্লাপাড়া এলাকার নাজিমউদ্দিনের স্ত্রী ও সদর উপজেলার চরশেরপুর নয়াপাড়া গ্রামের মো. শফিউল্লাহর মেয়ে। নাজিমউদ্দিন ময়মনসিংহ সেনানিবাসে করপোরাল হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
২০২০ সালের ৮ অক্টোবর সদর থানার পুলিশ শহরের মোল্লাপাড়া এলাকার বাসার সীমানাপ্রাচীর-সংলগ্ন স্থান থেকে গৃহবধূ সুরভীর লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় সুরভীর বাবা শফিউল্লাহ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তদের আসামি করে সদর থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলাটি বর্তমানে জামালপুরের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত করছে।
এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পিবিআই বিভিন্ন সময়ে নিহত সুরভীর এক ভাশুরসহ (স্বামীর বড় ভাই) তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে তাঁরা আদালত থেকে জামিনে মুক্ত আছেন।
পিবিআই ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার সময় নাজিমউদ্দিন জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনের সদস্য হিসেবে আফ্রিকার সুদানে ছিলেন। স্বামী বিদেশে থাকায় সুরভী তাঁর দুই শিশুকন্যা নাফিয়া ও আলোকে নিয়ে মোল্লাপাড়া এলাকার নিজ বাসায় থাকতেন। ২০২০ সালের ৭ অক্টোবর রাতে অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তরা সুরভীর বাসার বিদ্যুতের লাইন কেটে দেয়। এ সময় দুই মেয়েকে ঘুম পাড়িয়ে সুরভী ঘর থেকে বের হয়ে প্রতিবেশী সেলিম মাস্টারকে তাঁর বাসায় বিদ্যুৎ না থাকার বিষয়টি জানান। এর পর থেকে সুরভীর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরদিন ৮ অক্টোবর সকালে সুরভীর বড় মেয়ে নাফিয়া ঘুম থেকে ওঠে তার মাকে বাসার সীমানাপ্রাচীর-সংলগ্ন স্থানে পড়ে থাকতে দেখে। এ সময় তাঁর ডাক-চিৎকারে প্রতিবেশীরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। খবর পেয়ে সদর থানার পুলিশ সুরভীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে।
সুরভীর বাবা শফিউল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, দুর্বৃত্তরা তাঁর নিষ্পাপ মেয়েকে নৃশংসভাবে হত্যা করে দুটি শিশুসন্তানকে মাতৃহারা করেছে। মায়ের কথা বলে প্রায় সময় সুরভীর মেয়ে নাফিয়া ও আলো কান্নাকাটি করে। কিন্তু হত্যাকাণ্ডের দুই বছর পরও এর রহস্য উদ্ঘাটিত না হওয়ায় তার পরিবার ও স্বজনদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। মেয়ে সুরভীর হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনসহ এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।
নাজিমউদ্দিন বলেন, তিনি বিদেশে থাকাকালে তাঁর স্ত্রীকে খুন করা হয়। কিন্তু কেন ও কী কারণে তাঁকে (সুরভী) হত্যা করা হলো, তা এখন পর্যন্ত জানতে পারেননি। মামলার তদন্তকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তিনি একাধিকবার কথা বলেছেন। তাঁরা আশ্বাসও দিয়েছেন। তাই স্ত্রী সুরভীর হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন ও প্রকৃত অপরাধীদের শনাক্তপূর্বক বিচারের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আবেদন জানান তিনি।
এ ব্যাপারে পিবিআই জামালপুরের পুলিশ সুপার এম এম সালাহ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, মামলাটি তাঁরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছেন। সুরভীর স্বামী বিদেশে থাকাকালে তাঁকে কেউ উত্ত্যক্ত করত কি না বা প্রতিবেশীদের সঙ্গে কোনো বিরোধ ছিল কি না—সে বিষয়গুলো ধরে মামলার তদন্ত কাজ চলছে। আশা করা যায়, দ্রুতই হত্যারহস্য উদ্ঘাটন করতে তাঁরা সক্ষম হবেন।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৯ অক্টোবর প্রথম আলোয় ‘সেনাসদস্যের স্ত্রীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। | শেরপুরে দুই বছরেও সেনাসদস্য মো. নাজিমউদ্দিনের স্ত্রী সুরভীর (৩০) হত্যার রহস্য উদ্ঘাটিত হয়নি। এতে তাঁর পরিবার ও স্বজনদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। |
নানার বাড়ির পুকুরে ডুবে তিন বছরের শিশুর মৃত্যু | মাদারীপুর সদর উপজেলায় পানিতে ডুবে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আজ রোববার সকালে উপজেলার পাঁচখোলা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। মৃত শিশুটির নাম আফিয়া আক্তার (৩)। সে পাঁচখোলা এলাকার রহিম মাদবরের নাতনি এবং মাগুরা জেলার বোয়ালখালী এলাকার আশরাফুল শেখ ও ঊর্মি আক্তার দম্পতির মেয়ে।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক সপ্তাহ আগে মায়ের সঙ্গে মাগুরা থেকে নানার বাড়ি মাদারীপুরে বেড়াতে আসে শিশু আফিয়া। আজ সকালে বাড়ির পাশের পুকুরপাড়ে খেলতে গিয়ে পানিতে পড়ে যায় সে। তাকে খুঁজে না পেয়ে স্বজনেরা চারদিকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। একপর্যায়ে পুকুরের পানি থেকে তাকে উদ্ধার করেন স্বজনেরা। পরে তাকে দ্রুত মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আফিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন।
মাদারীপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা শাওলিন আফরোজ বলেন, শিশুটিকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। দীর্ঘক্ষণ পানিতে থাকায় নিশ্বাস বন্ধ হয়ে শিশুটির মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
সদর মডেল থানার সহকারী উপপরিদর্শক কামরুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় শিশুটির পরিবার থানায় কোনো অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। | মাদারীপুর সদর উপজেলায় পানিতে ডুবে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আজ রোববার সকালে উপজেলার পাঁচখোলা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। মৃত শিশুটির নাম আফিয়া আক্তার (৩)। সে পাঁচখোলা এলাকার রহিম মাদবরের নাতনি এবং মাগুরা জেলার বোয়ালখালী এলাকার আশরাফুল শেখ ও ঊর্মি আক্তার দম্পতির মেয়ে। |
কাল ফখরুল-আব্বাসের জামিন শুনানি | পল্টন থানার মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের জামিন আবেদন করা হয়েছে। আজ রোববার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে এ আবেদন করা হয়েছে। আগামীকাল সোমবার জামিন আবেদন বিষয়ে শুনানির দিন ঠিক করেছেন আদালত।
প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন।
আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল বলেন, পল্টন থানার মামলায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাস, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম, বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানিসহ অন্তত ১৫ জনের জামিন আবেদন করা হয়েছে। আগামীকাল জামিন আবেদন বিষয় শুনানির দিন ঠিক করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে আটক করে পুলিশ। রাজধানীর নয়াপল্টনে পুলিশের ওপর হামলার পরিকল্পনা ও উসকানি দেওয়ার অভিযোগে পল্টন থানায় করা মামলায় গত শুক্রবার তাঁদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
গত বুধবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতা–কর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় পল্টন, মতিঝিল, রমনা ও শাহজাহানপুর থানায় পৃথক চারটি মামলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার পল্টন ও মতিঝিল থানার পৃথক দুটি মামলায় বিএনপির ২৩ নেতা-কর্মীর বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এ ছাড়া বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসসহ ৪৪৫ জনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। তবে সেদিন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান ও আবদুল কাদের ভূঁইয়ার জামিন দিয়েছেন আদালত। | পল্টন থানার মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের জামিন আবেদন করা হয়েছে। আজ রোববার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে এ আবেদন করা হয়েছে। আগামীকাল সোমবার জামিন আবেদন বিষয়ে শুনানির দিন ঠিক করেছেন আদালত। |
মানিকছড়িতে নিজ বাড়ি থেকে প্রবাসীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার | খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলায় নিজ বাড়ি থেকে এক প্রবাসীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার রাতে উপজেলার সেমুতাং গ্যাসফিল্ড এলাকার বাড়ি থেকে সাজ্জাদ হোসেন (২৪) নামের ওই তরুণের লাশটি উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সেমুতাং গ্যাসফিল্ড এলাকার প্রাচীরঘেরা ওই বাড়িতে সাজ্জাদ হোসেন ও তাঁর ভাই থাকতেন। গতকাল রাত ১১টার দিকে এক ভাই মুঠোফোনে রিচার্জ করতে দোকানে গেলে দুর্বৃত্তরা ঘরে ঢুকে সাজ্জাদকে গলা কেটে হত্যা করে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ রাতেই লাশ উদ্ধার করেছে।
মানিকছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহনূর আলম প্রথম আলোকে বলেন, হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটনে পুলিশ কাজ শুরু করেছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে। | খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলায় নিজ বাড়ি থেকে এক প্রবাসীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার রাতে উপজেলার সেমুতাং গ্যাসফিল্ড এলাকার বাড়ি থেকে সাজ্জাদ হোসেন (২৪) নামের ওই তরুণের লাশটি উদ্ধার করা হয়। |
চবির ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন নিয়ে ঢাকায় সভা | চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সুবর্ণজয়ন্তী-২০২৩ আয়োজন উপলক্ষে ঢাকায় প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্প্রতি ঢাকায় অবস্থানরত বিভাগের সব ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থীদের আয়োজনে স্থানীয় একটি হোটেলে ‘ঢাকা ওয়ার্ম আপ সেশন’ শীর্ষক এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় নবম থেকে ৫০তম ব্যাচের বিপুলসংখ্যক প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। আ ন ম ওয়াজেদ আলীর সঞ্চালনায় ও বিভাগের চেয়ারম্যান আবু মুহাম্মদ আতিকুর রহমানের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সুবর্ণজয়ন্তী আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ও দৈনিক পূর্বকোণের চেয়ারম্যান জসীম উদ্দিন চৌধুরী, কমিটির সদস্যসচিব অধ্যাপক মুহাম্মদ মুয়াজ্জম হোসেন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আবদুল আওয়াল খান, অধ্যাপক মুহাম্মদ আবদুল্লাহ মামুন, অধ্যাপক সেলিনা আকতার, অধ্যাপক এ কে এম তফজল হক, মোহাম্মদ রোসাঙ্গীর বাচ্চু, সাইদুর রহমান, সোশ্যাল ইসলামিক ব্যাংকের সাবেক এমডি কাজী ওসমান আলি, শাহজালাল ইসলামী ব্যাকের সাবেক এমডি শহীদুল ইসলাম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক আবদুল আউয়াল, মাসুদ চৌধুরী, ওয়াকিল রহমান, আলমগীর কবির, ইকবাল হোসেন, শাহিনুর মিঠু, মোরশেদ, সাজ্জাদ প্রমুখ।
সভায় সুবর্ণজয়ন্তী পালনের বিভিন্ন দিক নিয়ে সবার সঙ্গে মতবিনিময় করা হয়। সভায় ‘সাফল্যের উচ্ছ্বাসে ম্যানেজমেন্ট পঞ্চাশে’ স্লোগানে সুবর্ণজয়ন্তী সফলভাবে আয়োজনে সবাই দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। সভা শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। | চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সুবর্ণজয়ন্তী-২০২৩ আয়োজন উপলক্ষে ঢাকায় প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্প্রতি ঢাকায় অবস্থানরত বিভাগের সব ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থীদের আয়োজনে স্থানীয় একটি হোটেলে ‘ঢাকা ওয়ার্ম আপ সেশন’ শীর্ষক এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। |
বাসচাপায় সেনাসদস্য নিহত, ছেলের আকিকার আনন্দ হঠাৎ রূপ নিল বিষাদে | ছেলের আকিকার জন্য ছুটি নিয়ে বাড়িতে এসেছিলেন সেনাসদস্য নাইচ আলী (২৯)। আকিকার জন্য গরু জবাই করে প্রতিবেশী ও স্বজনদের মধ্যে মাংসও বিলি করেছেন। দুপুরে বাড়িতে আয়োজন করেছিলেন খাওয়াদাওয়ার। কিন্তু ছেলের আকিকার আনন্দ সড়ক দুর্ঘটনায় হঠাৎ বিষাদে রূপ নিয়েছে। আকিকার অনুষ্ঠানের জন্য বাজার করতে গিয়ে বাসচাপায় সেনাসদস্য নাইচ আলী নিহত হয়েছেন।
আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর পৌর শহরের উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের সামনের সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত নাইচ আলী আক্কেলপুর উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের মহিতুড় গ্রামের আক্কাস আলীর ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সেনাসদস্য নাইচ আলী দুই সন্তানের জনক। মেয়ের বয়স তিন আর ছেলে নবজাতক। আজ বাড়িতে নবজাতক ছেলের আকিকা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন তিনি। সকালে বাড়িতে গরু জবাই করে স্বজন ও প্রতিবেশীদের মধ্যে মাংস বিলি করেন। দুপুরে বাড়িতে খাওয়াদাওয়ার আয়োজন ছিল। ছেলের আকিকার বাজার করতে মোটরসাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। পৌর শহরের উপজেলা পরিষদের সামনের সড়কে পৌঁছালে একটি মোটরসাইকেলকে সাইড দিতে গিয়ে সড়কের ওপর পড়ে যান তিনি। তখন পেছন থেকে আসা আক্কেলপুরগামী একটি যাত্রীবাহী বাস তাঁকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে নাইচ আলী নিহত হন।
প্রত্যক্ষদর্শী ফারুখ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ভ্যানে উঠে আক্কেলপুর থেকে বাড়ি যাচ্ছিলাম। উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের পাশে সিঙ্গার শোরুমের কাছে হঠাৎ একটি মোটরসাইকেল বাসের নিচে পড়ে যায়। বাসটি তাঁর ওপর দিয়ে চলে যায়।’
মহিতুড় গ্রামের বাসিন্দা ও গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য বাবু হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, নাইচ আলী তাঁর আত্মীয়। কয়েক দিন আগে তিনি ছেলের বাবা হয়েছেন। নবজাতক ছেলের আকিকার জন্য ছুটি নিয়ে বাড়িতে এসেছিলেন। আজ সকালে আকিকার গরু জবাই করে মাংস বিলি করেছেন। মোটরসাইকেল নিয়ে ছেলের আকিকার বাজার করতে গিয়ে বাসের চাপায় মারা গেছেন। তাঁর মৃত্যুতে গ্রামবাসী সবাই মর্মাহত।
আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু বকর সিদ্দিক প্রথম আলোকে বলেন, বাসচাপায় সেনাসদস্য নাইচ আলী নিহত হয়েছেন। দুর্ঘটনার পর বাসটি জব্দের পাশাপাশি চালককে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি। লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। | ছেলের আকিকার জন্য ছুটি নিয়ে বাড়িতে এসেছিলেন সেনাসদস্য নাইচ আলী (২৯)। আকিকার জন্য গরু জবাই করে প্রতিবেশী ও স্বজনদের মধ্যে মাংসও বিলি করেছেন। দুপুরে বাড়িতে আয়োজন করেছিলেন খাওয়াদাওয়ার। কিন্তু ছেলের আকিকার আনন্দ সড়ক দুর্ঘটনায় হঠাৎ বিষাদে রূপ নিয়েছে। আকিকার অনুষ্ঠানের জন্য বাজার করতে গিয়ে বাসচাপায় সেনাসদস্য নাইচ আলী নিহত হয়েছেন। |
বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নেতা-কর্মীরা, কক্ষে কক্ষে তাণ্ডবের অভিযোগ | রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অবশেষে প্রবেশ করতে পেরেছেন দলটির নেতা-কর্মীরা। প্রবেশের পর কার্যালয় ঘুরে দেখেছেন দলটির দপ্তরের দায়িত্বে থাকা নেতা সৈয়দ এমরান সালেহ। তিনি অভিযোগ করেছেন, কার্যালয়ে তাণ্ডব চালানো হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র খোয়া গেছে।
আজ রোববার বেলা একটার দিকে কয়েকজন আইনজীবীকে সঙ্গে নিয়ে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যান এমরান সালেহ। বেলা সোয়া একটার দিকে তিনি গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে কার্যালয়ের বিভিন্ন কক্ষ ঘুরে দেখেন। বেলা আড়াইটার দিকে তিনি প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেন।
এমরান সালেহ বলেন, দুই দিন আগে নিরাপত্তারক্ষীর কাছে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ফটকের চাবি বুঝিয়ে দেয় পুলিশ। কিন্তু নেতা-কর্মীদের কার্যালয়ে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তা ছাড়া ঢোকার মতো পরিস্থিতিও ছিল না। আজ তাঁরা ঢুকতে পেরেছেন।
১০ ডিসেম্বর বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশের কর্মসূচি ছিল। তার আগে ৭ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে দলটির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে একজন নিহত হন। আহত হন অনেকে। সংঘর্ষের পরই কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অভিযান চালায় পুলিশ। সেখান থেকে নেতা-কর্মীদের আটক করে পুলিশ। তারপর থেকে কেন্দ্রীয় কার্যালয় তালাবদ্ধ ছিল। গতকাল শনিবার রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ হয়। এ গণসমাবেশের পরদিন আজ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢুকতে পারলেন দলটির নেতা-কর্মীরা।
এমরান সালেহ বলেন, ‘প্রায় চার দিন পর আমরা আমাদের দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢুকতে পেরেছি। বিএনপির ঢাকার গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে সরকার ও তার অনুগত প্রশাসন ৭ ডিসেম্বর আমাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তাণ্ডব চালিয়েছে। না দেখলে বোঝা যাবে না, কী ধরনের তাণ্ডব এখানে হয়েছে।’
এমরান সালেহ বলেন, দলীয় চেয়ারপারসনের কক্ষের দরজা ভাঙা। কক্ষে যে জিনিসপত্র ছিল, তা নেই। দলের ভাইস চেয়ারম্যানের দপ্তরে তাঁরা স্কাইপে সভা করেন। স্কাইপের মনিটর, সিপিইউ, ফাইলপত্রসহ কিছু সেখানে নেই। হিসাব বিভাগে কম্পিউটার, সিপিইউসহ কিছু নেই। টাকা রাখার ড্রয়ার ভাঙা। সেখানে টাকা পাওয়া যায়নি। চেকবই পাওয়া যায়নি। কম্পিউটার, সিপিইউ, প্রিন্টার, স্ক্যানার, ল্যাপটপ খোয়া গেছে। ফাইলপত্রগুলো নেই। ছাত্রদল, যুবদল, কৃষক দল, মহিলা দলসহ অন্যান্য অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের দপ্তরগুলোও তছনছ করা হয়েছে।
ঘটনা নিন্দা জানিয়ে এমরান সালেহ বলেন, ‘সরকার দেশকে লন্ডভন্ড করে দিয়েছে। একইভাবে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ও তারা লন্ডভন্ড করে দিয়েছে। আমাদের চলমান আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করতে তারা এই কাজ করেছে।’
গুরুত্বপূর্ণ নথি ও যন্ত্র খোয়া যাওয়ার বিষয়ে আইনগত কোনো পদক্ষেপ নেবেন কি না, জানতে চাইলে সৈয়দ এমরান সালেহ বলেন, কী কী জিনিস খোয়া গেছে, তার তালিকা করবেন তাঁরা। এরপর দলের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন।
এমরান সালেহ বলেন, কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পুলিশ ককটেল রেখে নাটক মঞ্চস্থ করেছিল। তাঁরা এখনো জানেন না, তাঁদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পুলিশ কী কী রেখে গেছে। এটা নিয়ে তাঁরা নিরাপত্তাহীনতায় আছেন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় তছনছ করার অভিযোগ অস্বীকার করেন রাজধানীর পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাহউদ্দিন মিয়া। তিনি বলেন, জব্দ তালিকার বাইরে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে পুলিশ কিছু আনেনি।
আজ নয়াপল্টন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, এখনো বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের পাশে পুলিশের বিপুলসংখ্যক সদস্য অবস্থান করছেন। নাইটিঙ্গেল মোড়ে সাঁজোয়া যান রাখা হয়েছে। নয়াপল্টন এলাকা দিয়ে স্বাভাবিকভাবে যানবাহন চলাচল করছে। | রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অবশেষে প্রবেশ করতে পেরেছেন দলটির নেতা-কর্মীরা। প্রবেশের পর কার্যালয় ঘুরে দেখেছেন দলটির দপ্তরের দায়িত্বে থাকা নেতা সৈয়দ এমরান সালেহ। তিনি অভিযোগ করেছেন, কার্যালয়ে তাণ্ডব চালানো হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র খোয়া গেছে। |
চুয়াডাঙ্গা আ. লীগের সম্মেলনে অর্ধলক্ষাধিক লোকের সমাগম ঘটানোর উদ্যোগ | সাত বছর পর আগামীকাল সোমবার চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন হতে যাচ্ছে। জেলা শহরের টাউন ফুটবল মাঠে অনুষ্ঠেয় এ সম্মেলনে ৫০ হাজারের বেশি মানুষের সমাগম ঘটানোর উদ্যোগ নিয়েছে দলটি। মাঠে নৌকার আদলে বিশালাকৃতির মঞ্চ তৈরি ও প্যান্ডেল বানানোর কাজ চলছে।
সম্মেলনের বিষয়ে কথা হয় জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দারের সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, চুয়াডাঙ্গার ইতিহাসে সবচেয়ে সুষ্ঠু, সুন্দর ও জাঁকজমকপূর্ণ সম্মেলনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন তাঁরা। এই সম্মেলনে ২১৮ জন কাউন্সিলর ও ৪০ হাজার ডেলিগেটের কার্ড বিতরণ করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের রাজনৈতিক দল ও সমমনা সংগঠনের প্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সব মিলে অর্ধলক্ষাধিক লোকের সমাগম ঘটানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সবার জন্য জন্য আপ্যায়নের সুব্যবস্থা করা হয়েছে।
সম্মেলন ঘিরে নতুন সাজে সেজেছে জেলা শহর চুয়াডাঙ্গা। অতিথিদের স্বাগত জানিয়ে পদপ্রত্যাশীদের ও নেতা-কর্মীদের ছবিসহ বিলবোর্ড, ব্যানার ও ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে জেলা শহর ও আশপাশের এলাকা। তৈরি করা হয়েছে অর্ধশতাধিক তোরণ। আলোকসজ্জার বর্ণিল সাজে সেজেছে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়।
দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে বর্তমান সভাপতি চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার এবং জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদুল হক বিশ্বাসের নাম আলোচনায় আছে। অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আজাদুল ইসলামের পাশাপাশি বর্তমান সহসভাপতি চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য আলি আজগার এবং সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর হান্নানের নাম জোরেশোরে শোনা যাচ্ছে।
সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ। দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ভার্চ্যুয়ালি প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম প্রধান বক্তা এবং খুলনা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আমিরুল আলম, পারভীন জামান, গ্লোরিয়া সরকার সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার কথা আছে।
২০১৫ সালের ২ ডিসেম্বর টাউন ফুটবল মাঠে জেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন ও কাউন্সিল অধিবেশন হয়েছিল। কাউন্সিলে সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দারকে সভাপতি ও আজাদুল ইসলামকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়েছিল। | সাত বছর পর আগামীকাল সোমবার চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন হতে যাচ্ছে। জেলা শহরের টাউন ফুটবল মাঠে অনুষ্ঠেয় এ সম্মেলনে ৫০ হাজারের বেশি মানুষের সমাগম ঘটানোর উদ্যোগ নিয়েছে দলটি। মাঠে নৌকার আদলে বিশালাকৃতির মঞ্চ তৈরি ও প্যান্ডেল বানানোর কাজ চলছে। |
রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে পুলিশের এই খবরদারি মানবাধিকারের পরিপন্থী | বিরোধী রাজনৈতিক দল ও ভিন্নমত দমন করার জন্য পুলিশ বাহিনী রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের ওপর খবরদারি, নাগরিকদের মুঠোফোন ও দেহ তল্লাশিসহ যে ধরনের তৎপরতা চালাচ্ছে, তা গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের সম্পূর্ণ পরিপন্থী বলে মনে করেন ২৪ বিশিষ্ট নাগরিক। আজ রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে তাঁরা এ অভিমত দিয়েছেন। পাশাপাশি এমন কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন তাঁরা।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সভা-সমাবেশের অধিকার আমাদের সংবিধানসম্মত মৌলিক অধিকার। আমরা সরকারকে এ অধিকারের লঙ্ঘন থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। বিরোধী দলগুলোর নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দমন-পীড়ন-নির্যাতন থেকে বিরত থাকার দাবি জানাচ্ছি। উপযুক্ত প্রমাণ ছাড়া যেসব বিএনপির নেতা-কর্মীরা গ্রেপ্তার হয়েছেন, তাঁদের অবিলম্বে মুক্তি প্রদানের দাবি করছি।’
ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশের স্থান নির্ধারণ নিয়ে বিতর্ক-উত্তাপের মধ্যে গত বুধবার বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলটির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এতে একজন নিহত এবং অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী আহত হন। পরদিন বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে তাঁদের বাসা থেকে আটক করে নিয়ে যায় পুলিশ। এ ছাড়া দলটির চার শতাধিক নেতা–কর্মীকে গ্রেপ্তার করে সংঘর্ষের ঘটনায় করা মামলায় আসামি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কয়েক মাস ধরে অবাধ–সুষ্ঠু নির্বাচনসহ বিভিন্ন দাবিতে দেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল বিএনপি সারা দেশে সভা–সমাবেশ আয়োজন করে যাচ্ছে। সরকারের নানা বাধা ও উসকানি সত্ত্বেও এসব সভা–সমাবেশের আয়োজন শান্তিপূর্ণ ছিল দাবি করে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘১০ ডিসেম্বর বিএনপি ঢাকায় যে সমাবেশের আয়োজন করে, তাতে সরকার যেভাবে দমন–নির্যাতন চালিয়েছে, আমরা তার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। বিশেষ করে বিএনপির প্রস্তুতি সমাবেশে পুলিশের গুলি করে একজনকে হত্যা ও আরও অনেককে আহত করা, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপির নেতা-কর্মীদের ঢালাওভাবে গ্রেপ্তার ও মামলা দায়ের এবং বিএনপি কার্যালয়ে পুলিশের হামলার ঘটনা বাক্স্বাধীনতা ও সভা-সমাবেশের অধিকারের চরম লঙ্ঘন বলে আমরা মনে করি।’
বিবৃতিদাতারা হলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এম হাফিজ উদ্দিন খান, মানবাধিকারকর্মী হামিদা হোসেন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, আইনজীবী সালমা আলী, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, মানবাধিকারকর্মী শিরিন হক, শারমীন মুরশিদ, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক, সুব্রত চৌধুরী, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মির্জা তাসলিমা সুলতানা ও নাসরিন খন্দকার, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাইদুল ইসলাম, মানবাধিকারকর্মী নূর খান, রেহনুমা আহমেদ, হানা সামস আহমেদ, নাসের বখতিয়ার, গবেষক বীণা ডি’কস্টা, সায়দিয়া গুলরুখ ও রোজিনা বেগম। | বিরোধী রাজনৈতিক দল ও ভিন্নমত দমন করার জন্য পুলিশ বাহিনী রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের ওপর খবরদারি, নাগরিকদের মুঠোফোন ও দেহ তল্লাশিসহ যে ধরনের তৎপরতা চালাচ্ছে, তা গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের সম্পূর্ণ পরিপন্থী বলে মনে করেন ২৪ বিশিষ্ট নাগরিক। আজ রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক যৌথ বিবৃতিতে তাঁরা এ অভিমত দিয়েছেন। পাশাপাশি এমন কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন তাঁরা। |
রায়পুরায় জোড়া খুনের ঘটনায় আরও দুজন গ্রেপ্তার | নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায় নির্জন কলাবাগানে জোড়া খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। আজ রোববার ভোরে কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবুল বাসার প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন রায়পুরার আদিয়াবাদ ইউনিয়নের শেরপুর গ্রামের পশ্চিমপাড়া এলাকার মো. রহমত উল্লাহ (৩২) ও মো. সাইফুল ইসলাম ওরফে ভুট্টো (১৮)। এর আগে একই এলাকার মিল্লাত হোসেন ওরফে বাইজিদ (১৮) ও কান্দাপাড়া এলাকার কাউসার মিয়াকে (২৫) গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ।
গত সোমবার দুপুরে উপজেলার আদিয়াবাদ ইউনিয়নের শেরপুর গ্রামের রফিকুল ইসলামের কলাবাগান থেকে দ্বীন ইসলাম (৩৪) ও আলী হোসেন (৪২) নামের দুজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। স্থানীয় এক কৃষক ওই বাগানের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় ওই দুই ব্যক্তির রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরে (৯৯৯) কল পেয়ে বেলা দেড়টার দিকে রায়পুরা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। পরের দিন মঙ্গলবার অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে রায়পুরা থানায় মামলা করেন নিহত আলী হোসেনের স্ত্রী রেনু বেগম।
নিহত দ্বীন ইসলাম শিবপুর উপজেলার যোশর ইউনিয়নের পাহাড়ফুলদী গ্রামের আবদুল মান্নানের ছেলে। অন্যদিকে আলী হোসেন রায়পুরা উপজেলার উত্তর বাখরনগর ইউনিয়নের লোচনপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত আলাউদ্দীনের ছেলে। দুজনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে উপর্যুপরি কুপিয়ে হত্যার পর লাশ কলাবাগানে ফেলে রেখেছিল দুর্বৃত্তরা।
পুলিশ জানিয়েছে, জোড়া খুনের ঘটনায় করা মামলায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছিল। প্রথমে বাইজিদ ও কাউসার নামের দুজনকে গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন এবং আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে দেওয়া তথ্যমতে, হত্যাকাণ্ডে মোট ছয়জন অংশ নেন। বাকি চার আসামির নাম-পরিচয় জেনে গোয়েন্দা তৎপরতা চালায় পুলিশ। তাঁদের মধ্যে দুজন কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে আত্মগোপনে ছিলেন। প্রযুক্তির সহায়তায় আজ ভোরে কুলিয়ারচরে অভিযান চালায় গোয়েন্দা পুলিশ। গ্রেপ্তার রহমত ও সাইফুল প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।
ওসি মোহাম্মদ আবুল বাসার প্রথম আলোকে বলেন, জুয়ার টাকা লেনদেনে বিরোধ ও নারী ঘটিত বিষয়ের জেরে ছয় আসামি দ্বীন ইসলাম ও আলী হোসেন নামের ওই দুজনকে কুপিয়ে হত্যা করেন। আজ গ্রেপ্তার দুজনকে আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। জোড়া খুনের ঘটনায় মোট চারজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। পলাতক অন্য দুই আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। | নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায় নির্জন কলাবাগানে জোড়া খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। আজ রোববার ভোরে কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবুল বাসার প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। |
ডেঙ্গুতে মৃত্যু নেই, নতুন রোগী ভর্তি ২২০ জন | ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল শনিবার সকাল ৮টা থেকে আজ রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত) ২২০ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ সময় ডেঙ্গুতে কেউ মারা যায়নি। গতকাল ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ২৬৫ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। মারা গিয়েছেন ৩ জন। চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ২৬৬ জন ডেঙ্গুতে মারা গেছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের সর্বশেষ ডেঙ্গু পরিস্থিতির তথ্য অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা মহানগরের হাসপাতালগুলোয় নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন ১০৪ জন, ঢাকার বাইরে ১১৬ জন।
চলতি বছরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৬০ হাজার ২৯৮। তাঁদের মধ্যে ঢাকায় ভর্তি হয়েছেন ৩৮ হাজার ১০৪ জন ও ঢাকার বাইরে ২২ হাজার ১৯৪ জন।
বর্তমানে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ১ হাজার ৬০ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি আছেন। এর মধ্যে ঢাকার সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল মিলিয়ে রোগী ভর্তি ৫৯১ জন।
চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মারা যাওয়া ২৬৬ জনের মধ্যে ঢাকা মহানগরে মারা গেছেন ১৬৪ জন এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলায় ১০২ জন।
চলতি মাসে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১২ জনের, আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২ হাজার ৯৪০ জন। ডেঙ্গুতে সবচেয়ে বেশি ১১৩ জন মারা যান গত মাসে। এ সময় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৯ হাজার ৩৩৪ জন। তবে সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন অক্টোবরে। ওই মাসে ২১ হাজার ৯৩২ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন। তাঁদের মধ্যে মারা যান ৮৬ জন।
দুই দশকের বেশি সময় ধরে ডেঙ্গু বাংলাদেশে বড় ধরনের জনস্বাস্থ্য সমস্যা। ২০০০ সালের পর থেকে প্রতিবছর বহু মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছেন এবং এতে মৃত্যুও হচ্ছে। গত বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ২৮ হাজার ৪২৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হন। এর মধ্যে ১০৫ জনের মৃত্যু হয়েছিল। | ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল শনিবার সকাল ৮টা থেকে আজ রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত) ২২০ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ সময় ডেঙ্গুতে কেউ মারা যায়নি। গতকাল ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ২৬৫ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। মারা গিয়েছেন ৩ জন। চলতি বছরে এখন পর্যন্ত ২৬৬ জন ডেঙ্গুতে মারা গেছেন। |
দেশে এসেছে ট্রেনের নতুন ১৫ কোচ, চলবে পদ্মা সেতু দিয়ে | পদ্মা সেতুর রেলপথ দিয়ে চলাচলের জন্য প্রথম ধাপে ১৫টি ব্রডগেজ কোচ দেশে পৌঁছেছে। আজ রোববার চট্টগ্রাম বন্দরে কোচগুলো জাহাজ থেকে নামানোর কাজ শেষ হয়। সেগুলো চট্টগ্রাম নগরের হালিশহরে রেলওয়ের চিটাগং গুডস পোর্ট ইয়ার্ডে (সিজিপিওয়াই) রাখা হয়েছে।
পদ্মা রেলসেতু প্রকল্পের একজন ঊর্ধ্বতন প্রকৌশলী নতুন কোচ আনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, পদ্মা রেলসেতু প্রকল্পের আওতায় চীন থেকে ১০০টি নতুন ব্রডগেজ কোচ আনা হবে। এসব কোচ দিয়ে পদ্মা সেতুর রেললাইনের ওপর ট্রেন চলবে। প্রথম ধাপে ১৫টি কোচ এসেছে। বাকি কোচগুলো ধাপে ধাপে আসবে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, পদ্মা রেলসেতু প্রকল্পের নতুন কোচগুলো গতকাল শনিবার বন্দরে এসেছে। রাতেই সেগুলো নামানো শুরু হয়। আজ এ কাজ শেষ হয়েছে।
কোচগুলো পরে চিটাগং গুডস পোর্ট ইয়ার্ড থেকে টঙ্গীতে এবং এরপর সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় নেওয়া হবে। সেখানে কোচগুলো পরীক্ষামূলক চলাচল করানো হবে বলে জানান রেলওয়ের একজন কর্মকর্তা।
গত ২৫ জুন পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করা হয়। সেতু দিয়ে যান চলাচল শুরু হয় পরদিন ২৬ জুন। শুরুতে যানবাহনের সঙ্গে একই দিন রেল চালুর পরিকল্পনা ছিল সরকারের। কিন্তু রেললাইন বসানোসহ অন্যান্য অবকাঠামোর নির্মাণকাজ এখনো পিছিয়ে আছে।
রেল কর্তৃপক্ষ বলছে, আগামী বছর জুনে পদ্মা সেতু দিয়ে রেল চলাচল শুরুর লক্ষ্য নিয়ে কাজ চলছে। পদ্মা সেতু ও এর দুই প্রান্তে রেললাইন নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালে। প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল ২০১৬ সালে। এ প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। | পদ্মা সেতুর রেলপথ দিয়ে চলাচলের জন্য প্রথম ধাপে ১৫টি ব্রডগেজ কোচ দেশে পৌঁছেছে। আজ রোববার চট্টগ্রাম বন্দরে কোচগুলো জাহাজ থেকে নামানোর কাজ শেষ হয়। সেগুলো চট্টগ্রাম নগরের হালিশহরে রেলওয়ের চিটাগং গুডস পোর্ট ইয়ার্ডে (সিজিপিওয়াই) রাখা হয়েছে। |
ডিএমপির বিশেষ অভিযানে ২৪ ঘণ্টায় গ্রেপ্তার ৩০৭ | ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) বিশেষ অভিযানে আজ রোববার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ৩০৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রাজনৈতিক নেতা-কর্মী রয়েছেন ৭৬ জন।
ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার ফারুক হোসেন প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, বিশেষ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
অপরাধ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে ১ ডিসেম্বর থেকে সারা দেশে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। ডিসেম্বরে বিজয় দিবসসহ গুরুত্বপূর্ণ কিছু দিবসকে কেন্দ্র করেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। অবশ্য বিএনপির দাবি, বিশেষ অভিযানের নামে পুলিশ তাদের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করছে।
১ ডিসেম্বর পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত ডিআইজি) মো. হাসানুজ্জামানের স্বাক্ষরিত চিঠিতে বিশেষ অভিযানের নির্দেশনা দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, পুরান ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত (সিএমএম আদালত) এলাকায় পুলিশের হেফাজত থেকে দুই জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে মহান বিজয় দিবস, খ্রিষ্টানদের বড়দিন ও ইংরেজি বর্ষবরণ (থার্টি ফার্স্ট নাইট) উদ্যাপন নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে চলমান অভিযানের পাশাপাশি ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে বিশেষ অভিযান পরিচালনার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
অন্যান্য স্থানের পাশাপাশি আবাসিক হোটেল, মেস, হোস্টেল, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, কমিউনিটি সেন্টারসহ অপরাধীদের লুকিয়ে থাকার সম্ভাব্য স্থানগুলোতে কার্যকর অভিযান পরিচালনা করতে হবে। | ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) বিশেষ অভিযানে আজ রোববার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ৩০৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রাজনৈতিক নেতা-কর্মী রয়েছেন ৭৬ জন। |