content
stringlengths 0
129k
|
---|
. . . |
ঘরের জানালা খুলে বাইরে উঁকি দেয় তমাল |
ঝোড়ো বাতাস এক ঝাপটা বৃষ্টি এনে ফেলে তার মুখে |
বৃষ্টির পর্দার মধ্যে দিয়ে যেন অন্য এক ঢাকা শহর দেখার চেষ্টা করে সে |
তবে সেই চেষ্টা সফলতা পাওয়ার কোনই কারণ নেই |
রাত দু'টো বাজে |
ঢাকা শহর আলো নয়, অন্ধকারের শহর |
এই ঝড়-বৃষ্টির রাতে ঘুম ভাঙার কারনটা ধরতে পারছে না তমাল |
কাঁথার নিচে আরাম করে ঘুমাচ্ছিল সে |
হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেছে কেন যেন |
এক মুহূর্ত পরেই অবশ্য ব্যাপারটা পরিষ্কার হয় |
জানালার নিচের চওড়া কার্নিসে একটা বিড়ালের বাচ্চা ভিজে চুপচুপে হয়ে বসে আছে |
করুণ সুরে মাঝে মাঝে মিঁউ বলে ডেকে উঠছে বারবার |
এই ডাকেই নিশ্চয়ই ঘুম ভেঙেছে তার |
তমাল বুঝতে পারে না, কী করা উচিত তার |
বিড়ালটা ভিজে কষ্ট পাচ্ছে, এটা দেখতেও ভালো লাগছে না |
আবার, ঘরে এনে কিছু করার চেষ্টা করবে কিনা, সেটাও না |
তবে, তার সব সমস্যার সমাধান করে দিলো বাচ্চাটাই |
জানালা দিয়ে এক লাফে এসে ঢুকলো তমালের ঘরে |
এসেই গা কাঁপিয়ে ঝেড়ে ফেললো বৃষ্টির পানি |
তমালের দিকে তাকিয়ে মায়া মায়া চোখে মিঁউ মিঁউ বললো কয়েক বার |
কেমন যেন মায়া লাগলো তার |
বিছানা থেকে উঠে লাইটটা জ্বালিয়ে, রান্নাঘর থেকে এক বাটি দুধ এনে দিলো তমাল |
একটু করে বাটিতে মুখ ডোবায় আর তমালের দিকে তাকিয়ে যেন না বলা কথায় ধন্যবাদ দিতে থাকে বিড়ালের বাচ্চাটা |
সপ্তাহ দু'য়েক কেটে গেছে |
কিটি এখন তমালের বেকার জীবনের নিঃসঙ্গ ঘরের বন্ধু হয়েছে যেন |
আদর করেই তমাল বাচ্চাটার নাম দিয়েছে কিটি |
ধবধবে সাদা বাচ্চাটা ঘুরে বেড়ায় ঘর জুড়ে |
অফিস থেকে ফেরত আসার পর একাকী সময়টা বাচ্চাটার সাথে ভালোই কাটে তমালের |
সন্ধ্যায় অফিস থেকে ফেরত এসে ঘরের সামনে একটা মেয়েকে শুয়ে থাকতে দেখে তমাল |
বিরক্তিতে ভুরু কুঁচকে যায় তার |
এমনিতেই আজ অফিসে বসের অনেক ঝাড়ি খেতে হয়েছে, এখন আবার কী ঝামেলা এই ঘরের দুয়ারে |
দেখে মনে হচ্ছে, বছর দশেক বছর হবে মেয়েটার |
ময়লা একটা কমলা রঙের ফ্রক পরে আছে |
ধাক্কা দেয়ার জন্য মেয়েটার হাত ধরতেই চমকে ওঠে তমাল |
ভীষণ জ্বরে যেন গা পুড়ে যাচ্ছে |
কয়েকবার ডেকে ওঠানোর চেষ্টা করে বুঝতে পারে তমাল, ডাকে সাড়া দেবার মত অবস্থা মেয়েটার নেই |
দরজা খুলে কোন রকমে পাজাকোলা করে মেয়েটাকে এনে খাটে শোয়ায় সে |
প্রতিদিন ঘরে ঢোকার সাথে সাথেই কিটি এসে পায়ের কাছে ঘোরাঘুরি করলেও আজ কেন যেন ঘরের এক কোণে গিয়ে বসে আছে |
ঘাড়ের কাছে লোমগুলো খাড়া, একই সাথে গলার গভীর থেকে কেমন যেন একটা গম্ভীর আওয়াজ করছে কিটি |
তমাল দৌড়ে বাথরুমে যায় পানির বালতি আনতে |
মেয়েটা একটু সুস্থ হয়ে উঠেছে |
জ্বর ভালো হলেও বিছানা থেকে উঠতে পারে না |
সফুরা নাম ওর |
বাবা-মা মারা যাওয়ার পর চাচা এক বাড়িতে কাজে দিয়ে গ্যেছিল |
ওই বাসায় প্রচণ্ড মারতো, খেতে দিতো না |
তাই সুযোগ বুঝেই পালিয়েছে |
এতো কিছু শুনে ওকে বের করে দিতে পারে নি তমাল |
কয়েকদিন যাক, মেয়েটা একটু সুস্থ হলে দেখা যাবে কী করা যায় |
কিটি এই তিন দিন ধরে যে কী অদ্ভূত আচরণ করছে |
এর মধ্যে তো বার দু'য়েক সফুরার দিকে তেড়ে আসেছিল খামচি দেয়ার জন্য |
গলার ভিতর থেকে ঘরঘর শব্দ করেই যাচ্ছে |
কোন খাবারও মুখে দেয় না |
সফুরাকে অসুস্থ রেখেই আজকে অফিসে যেতে হয়েছে |
সারাদিন মেয়েটার কেমন গিয়েছে কে জানে! ঝড়বৃষ্টির মধ্যে তো এমনিতেও অফিসে যেতে ভালোলাগে না |
তাড়াতাড়ি দরজা খুলে বাসায় ঢোকে সে |
রুমের বাতিটা তো জ্বলিয়েই গিয়েছিল বলে মনে পড়ে |
নিভিয়ে দিয়েছে মনে হয় সফুরা |
কিন্তু, বিছানার উপর তো কাউকে দেখা যায় না |
রান্নাঘরের দিকে এগিয়ে যায় তমাল |
অন্ধকার রান্নাঘরের দরজায় দাঁড়িয়ে কিছুই দেখা যায় না |
হঠাৎ বাইরে ঝিলিক দিয়ে ওঠা বিদ্যুৎ-এর আলোয় মেঝেতে একটা অবয়ব দেখা যায় |
মেঝেতে পড়ে আছে সফুরা |
ঘাড়টা অদ্ভূত ভঙ্গিতে বাঁকানো |
চারপাশের সাদা মেঝে লাল হয়ে আছে |
আরেকবার চমকে ওঠা আলোয় দেখে তমাল, ওই রক্তের মাঝে থেকে কতগুলো পায়ের ছাপ চলে গিয়েছে ঘরের দিকে, অনেকটা বিড়ালের পায়ের ছাপের মতো |
শেষের দিকে ছাপগুলো কেমন যেন বড় কোন প্রাণীর পায়ের ছাপের মতো হয়ে গিয়েছে |
ছাপগুলো সোজা গিয়েছে খাটের নিচের দিকে |
হঠাৎ ঘাড়ের কাছে চুলগুলো কেমন যেন দাঁড়িয়ে যায় তমালের |
বাইরে আরেকবার ঝলসে ওঠে বজ্রপাতের আলো...... |
স্বপ্ন বিলাস সম্পর্কে |
বাস্তবে মানুষ হবার চেষ্টা করে যাচ্ছি |
জীবনের নানা পথ ঘুরে ইদানীং মনে হচ্ছে গোলকধাঁধায় হারিয়েছি আমি |
পথ খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করি আর দেখে যাই চারপাশ |
ক্লান্ত হয়ে হারাই যখন স্বপ্নে, তখন আমার পৃথিবীর আমার মতো......ছন্নছাড়া, বাঁধনহারা |
আর তাই, স্বপ্ন দেখি..........স্বপ্নে বাস করি..... |
স্বপ্ন বিলাস এর সকল পোস্ট দেখুন → |
এই লেখাটি পোস্ট করা হয়েছে গল্প-এ |
স্থায়ী লিংক বুকমার্ক করুন |
← চলো না আইটেম দিতে যাই ! |
ড. মাকসুদ হেলালী, অধ্যাপক, যন্ত্রকৌশল বিভাগ, বুয়েট এবং একটি অপপ্রচার → |
14 অপার্থিব |
সামিরা বলেছেনঃ |
এপ্রিল 10, 2012; 5:57 অপরাহ্ন এ |
শেষের টুইস্টটা ভাল পাইছি |
😀 কিছুটা ভয়ও পাইছি! :: |
আমি ভাবছি বিড়ালটা নিজেই সব ভালবাসা পেতে চায় দেখে মেরে ফেলছে মেয়েটাকে |
স্বপ্ন বিলাস বলেছেনঃ |
এপ্রিল 10, 2012; 9:51 অপরাহ্ন এ |
এখনও শিশু বলেছেনঃ |
এপ্রিল 10, 2012; 10:15 অপরাহ্ন এ |
বাহ! আসলেই, শেষটা ব্যাপক হয়েছে তো!! আমি একটু হতভম্বই হয়ে গেছি পড়ে... 😳 |
স্বপ্ন বিলাস বলেছেনঃ |
এপ্রিল 10, 2012; 10:17 অপরাহ্ন এ |
রাজিন বলেছেনঃ |
এপ্রিল 10, 2012; 10:22 অপরাহ্ন এ |
খুন হইসে ... কেউ শার্লকরে ডাকো ... 😳 |
স্বপ্ন বিলাস বলেছেনঃ |
এপ্রিল 10, 2012; 10:43 অপরাহ্ন এ |
ভৌতিক গল্প লেখা ফ্লপ হইসে মনে হয় 🙁 |